1 [1] ছয় দিন পরে যীশু পিতর, যাকোব ও তাঁহার ভ্রাতা যোহনকে সঙ্গে করিয়া বিরলে এক উচ্চ পর্ব্বতে লইয়া গেলেন।2 পরে তিনি তাঁহাদের সাক্ষাতে রূপান্তরিত হইলেন; তাঁহার মুখ সূর্য্যের ন্যায় দেদীপ্যমান, এবং তাঁহার বস্ত্র দীপ্তির ন্যায় শুভ্র হইল।3 আর দেখ, মোশি ও এলিয় তাঁহাদিগকে দেখা দিলেন, তাঁহারা তাঁহার সহিত কথোপকথন করিতে লাগিলেন।4 তখন পিতর যীশুকে কহিলেন, প্রভু, এখানে আমাদের থাকা ভাল; যদি আপনার ইচ্ছা হয়, তবে আমি এখানে তিনটী কুটীর নির্ম্মাণ করি, একটী আপনার জন্য, একটী মোশির জন্য এবং একটী এলিয়ের জন্য।5 তিনি কথা কহিতেছেন, এমন সময়ে দেখ, একখানি উজ্জ্বল মেঘ তাঁহাদিগকে ছায়া করিল, আর দেখ, সেই মেঘ হইতে এই বাণী হইল, ‘ইনিই আমার প্রিয় পুত্র, ইহাঁতেই আমি প্রীত, ইহাঁর কথা শুন’।6 এই কথা শুনিয়া শিষ্যেরা উবুড় হইয়া পড়িলেন, এবং অত্যন্ত ভীত হইলেন।7 পরে যীশু নিকটে আসিয়া তাঁহাদিগকে স্পর্শ করিয়া কহিলেন, উঠ, ভয় করিও না।8 তখন তাঁহারা চক্ষু তুলিয়া আর কাহাকেও দেখিতে পাইলেন না, কেবল যীশু একা ছিলেন।9 পর্ব্বত হইতে নামিবার সময়ে যীশু তাঁহাদিগকে এই আজ্ঞা করিলেন, যে পর্য্যন্ত মনুষ্যপুত্র মৃতগণের মধ্য হইতে না উঠেন, সে পর্য্যন্ত তোমরা এই দর্শনের কথা কাহাকেও বলিও না।10 তখন শিষ্যেরা তাঁহাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, তবে অধ্যাপকেরা কেন বলেন যে, প্রথমে এলিয়ের আগমন হওয়া আবশ্যক?11 তিনি উত্তর করিয়া কহিলেন, সত্য বটে, এলিয়া আসিবেন, এবং সকলই পুনঃস্থাপন করিবেন;12 কিন্তু আমি তোমাদিগকে কহিতেছি, এলিয় আসিয়া গিয়াছেন, এবং লোকেরা তাঁহাকে চিনে নাই, বরং তাঁহার প্রতি যাহা ইচ্ছা, তাহাই করিয়াছে; তদ্রূপ মনুষ্যপুত্রকেও তাহাদের হইতে দুঃখভোগ করিতে হইবে।13 তখন শিষ্যেরা বুঝিলেন যে, তিনি তাঁহাদিগকে যোহন বাপ্তাইজকের বিষয় বলিয়াছেন।14 পরে তাঁহারা লোকসমূহের নিকটে আসিলে এক ব্যক্তি তাঁহার কাছে আসিয়া জানু পাতিয়া কহিল, প্রভু,15 আমার পুত্রের প্রতি দয়া করুন, কেননা সে মৃগীরোগগ্রস্ত, এবং অত্যন্ত ক্লেশ পাইতেছে, কারণ সে বার বার আগুনে ও বার বার জলে পড়িয়া থাকে।16 আর আমি আপনার শিষ্যদের নিকটে তাহাকে আনিয়াছিলাম, কিন্তু তাঁহারা তাহাকে সুস্থ করিতে পারিলেন না।17 যীশু উত্তর করিয়া কহিলেন, হে অবিশ্বাসী ও বিপথগামী বংশ, আমি কত কাল তোমাদের সঙ্গে থাকিব? কত কাল তোমাদের প্রতি সহিষ্ণুতা করিব? তোমরা উহাকে এখানে আমার কাছে আন।18 পরে যীশু তাহাকে ধমক্ দিলেন, তাহাতে সেই ভূত তাহাকে ছাড়িয়া গেল, আর বালকটী সেই দণ্ড অবধি সুস্থ হইল।19 তখন শিষ্যেরা বিরলে যীশুর নিকটে আসিয়া কহিলেন, কি জন্য আমরা উহা ছাড়াইতে পারিলাম না?20 তিনি তাঁহাদিগকে বলিলেন, তোমাদের বিশ্বাস অল্প বলিয়া; কেননা আমি তোমাদিগকে সত্য কহিতেছি, যদি তোমাদের একটী সরিষা-দানার ন্যায় বিশ্বাস থাকে, তবে তোমরা এই পর্ব্বতকে বলিবে, ‘এখান হইতে ঐখানে সরিয়া যাও,’ আর ইহা সরিয়া যাইবে; এবং তোমাদের অসাধ্য কিছুই থাকিবে না।2122 গালীলে তাঁহাদের একত্র হইবার সময়ে যীশু তাঁহাদিগকে কহিলেন, সম্প্রতি মনুষ্যপুত্র মনুষ্যদের হস্তে সমর্পিত হইবেন;23 এবং তাহারা তাঁহাকে বধ করিবে, আর তৃতীয় দিবসে তিনি উঠিবেন। ইহাতে তাঁহারা অত্যন্ত দুঃখিত হইলেন।24 পরে তাঁহারা কফরনাহূমে আসিলে, যাহারা আধুলি আদায় করিত, তাহারা পিতরের নিকটে আসিয়া বলিল, তোমাদের গুরু কি আধুলি দেন না? তিনি কহিলেন, দিয়া থাকেন।25 পরে তিনি গৃহমধ্যে আসিলে যীশু অগ্রেই তাঁহাকে কহিলেন, শিমোন, তোমার কেমন বোধ হয়? পৃথিবীর রাজারা কাহাদের হইতে কর বা রাজস্ব গ্রহণ করিয়া থাকেন? কি আপন সন্তানদের হইতে, না অন্য লোক হইতে?26 পিতর কহিলেন, অন্য লোক হইতে। তখন যীশু তাঁহাকে কহিলেন, তবে সন্তানেরা স্বাধীন।27 তথাপি আমরা যেন উহাদের বিঘ্ন না জন্মাই, এই জন্য তুমি সমুদ্রে গিয়া বড়শী ফেল, তাহাতে প্রথমে যে মাছটী উঠিবে, সেইটী ধরিয়া তাহার মুখ খুলিলে একটী টাকা পাইবে; সেইটী লইয়া আমার এবং তোমার নিমিত্ত উহাদিগকে দেও।