পবিত্র বাইবেল

গডস গ্রেইস গিফট
যেরেমিয়া

যেরেমিয়া অধ্যায় 50

1 সদাপ্রভু যিরমিয় ভাববাদী দ্বারা বাবিলের বিষয়ে, কল্‌দীয়দের দেশের বিষয়ে, যে কথা বলিয়াছিলেন, তাহা এই। 2 তোমরা জাতিগণের মধ্যে জ্ঞাত কর, প্রচার কর, ধ্বজা তুলিয়া ধর; প্রচার কর, গুপ্ত রাখিও না; বল, ‘বাবিল পরহস্তগত হইল, বেল লজ্জিত হইল, মরোদক উদ্বিগ্ন হইল; তাহার প্রতিমা সকল লজ্জিত হইল, পুত্তলি সকল ক্ষুব্ধ হইল।’ 3 কেননা উত্তরদিক্‌ হইতে এক জাতি তাহার বিরুদ্ধে উঠিয়া আসিল; সে তাহার দেশ ধ্বংস করিবে, তাহার মধ্যে কেহ বাস করিবে না; মনুষ্য ও পশু পলায়ন করিল, চলিয়া গেল। 4 সদাপ্রভু কহেন, সেই সময়ে ও সেই কালে ইস্রায়েল সন্তানগণ আসিবে, তাহারা ও যিহূদা-সন্তানগণ একসঙ্গে আসিবে, রোদন করিতে করিতে চলিয়া আসিবে, ও আপনাদের ঈশ্বর, সদাপ্রভুর অন্বেষণ করিবে। 5 তাহারা সিয়োনের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করিবে, সেই দিকে মুখ রাখিবে, বলিবে, চল, তোমরা এমন নিয়ম দ্বারা সদাপ্রভুতে আসক্ত হও, যাহা অনন্তকাল থাকিবে, যাহা কখনও লোকে ভুলিয়া যাইবে না। 6 আমার প্রজারা হারান মেষ হইয়া পড়িয়াছে, তাহাদের পালকগণ তাহাদিগকে ভ্রান্ত করিয়াছে, নানা পর্ব্বতে পথহারা করিয়া ফেলিয়াছে; উহারা পর্ব্বত হইতে উপপর্ব্বতে গমন করিয়াছে, আপনাদের শয়নস্থান ভুলিয়া গিয়াছে। 7 যাহারা তাহাদিগকে পাইয়াছে, তাহারা গ্রাস করিয়াছে; তাহাদের বিপক্ষগণ বলিয়াছে, আমাদের দোষ হয় নাই, কারণ উহারা ধর্ম্মনিবাস সদাপ্রভুর, আপনাদের পিতৃপুরুষগণের আশাভূমি সদাপ্রভুর, বিরুদ্ধে পাপ করিয়াছে। 8 তোমরা সত্বর বাবিলের মধ্য হইতে বাহির হইয়া পড়, কল্‌দীয়দের দেশ হইতে নির্গমন কর, এবং পালের অগ্রগামী ছাগের ন্যায় হও। 9 কেননা দেখ, আমি উত্তরদেশ হইতে মহাজাতি-সমাজ উত্তেজিত করিয়া বাবিলের বিরুদ্ধে গমন করাইব, তাহারা বাবিলের বিরুদ্ধে সৈন্য রচনা করিবে, তাহাতে তাহা পরহস্তগত হইবে; তাহাদের বাণ কৌশলপরায়ণ বীরের ন্যায় হইবে, বিফল হইয়া ফিরিয়া আসিবে না। 10 কল্‌দিয়া লুটবস্তু হইবে; যে সকল লোক সেই দেশ লুট করিবে, তাহারা তৃপ্ত হইবে, ইহা সদাপ্রভু কহেন। 11 ওহে তোমরা, যাহারা আমার অধিকার লুট করিতেছ, তোমরা ত আনন্দ ও উল্লাস করিতেছ, শস্যমর্দ্দনকারিণী গাভীর ন্যায় নাচিতেছ, তেজস্বী অশ্বের ন্যায় হেষ্রা রব করিতেছ; 12 এই জন্য তোমাদের মাতা অতি লজ্জিতা হইবে, তোমাদের জননী হতাশা হইবে; দেখ, জাতিগণের মধ্যে সে অন্ত হইবে, প্রান্তর, শুষ্ক স্থান ও মরুভূমি হইবে। 13 সদাপ্রভুর ক্রোধ প্রযুক্ত সে আর বসতি-স্থান হইবে না, সম্পূর্ণ ধ্বংসস্থান হইবে; যে কেহ বাবিলের নিকট দিয়া যাইবে, সে বিস্মিত হইবে, ও তাহার সমুদয় আঘাত দেখিয়া শিশ দিবে। 14 হে ধনুকে চাড়াদায়ী লোক সকল, বাবিলের বিরুদ্ধে চারিদিকে সৈন্য রচনা কর, তাহার প্রতি বাণ নিক্ষেপ কর, বাণব্যয়ে কাতর হইও না, কেননা সে সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে পাপ করিয়াছে। 15 তাহার চারিদিকে সিংহনাদ কর—সে হাতযোড় করিয়াছে, তাহার ভিত্তি সকল পতিত, তাহার প্রাচীর সকল উৎপাটিত হইয়াছে; কেননা এ সদাপ্রভুর প্রতিশোধ গ্রহণ; তোমরা উহার প্রতিশোধ লও; সে যেমন করিয়াছে, তাহার প্রতি তদ্রূপ কর। 16 বাবিল হইতে বীজবাপককে কাটিয়া ফেল, ফসল কাটিবার সময়ে যে কাস্ত্যা ধরে, তারে কাট, উৎপীড়ক খড়্‌গের ভয়ে তাহারা প্রতেকে স্ব স্ব জাতির কাছে ফিরিয়া যাইবে, প্রত্যেকে স্ব স্ব দেশের দিকে পলায়ন করিবে। 17 ইস্রায়েল ছিন্নভিন্ন মেষস্বরূপ; সিংহগণ তাহাকে তাড়াইয়া দিয়াছে; প্রথমতঃ অশূর-রাজ তাহাকে গ্রাস করিয়াছিল, এখন শেষে এই বাবিল-রাজ নবূখদ্‌রিৎসর তাহার অস্থি সকল ভগ্ন করিয়াছে। 18 এই জন্য বাহিনীগণের সদাপ্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, এই কথা কহেন, দেখ, আমি অশূর-রাজকে যেমন প্রতিফল দিয়াছি, বাবিল-রাজ ও তাহার দেশকে তেমনি প্রতিফল দিব। 19 আর ইস্রায়েলকে তাহার চরাণি-স্থানে ফিরাইয়া আনিব; সে কর্মিলের ও বাশনের উপরে চরিবে, এবং ইফ্রয়িম-পর্ব্বতমালায় ও গিলিয়দে তাহার প্রাণ তৃপ্ত হইবে। 20 সদাপ্রভু কহেন, সেই সময়ে ও সেই কালে ইস্রায়েলের অপরাধের অনুসন্ধান করা যাইবে, কিন্তু পাওয়া যাইবে না; এবং যিহূদার পাপসমূহের *অনুসন্ধান করা যাইবে , কিন্তু পাওয়া যাইবে না; কেননা আমি যাহাদিগকে অবশিষ্ট রাখি, তাহাদিগকে ক্ষমা করিব। 21 সদাপ্রভু কহেন, তুমি মরাথয়িম *দ্বিগুণদ্রোহ দেশের বিরুদ্ধে ও পদোক প্রতিফল নিবাসীদের বিরুদ্ধে উঠিয়া যাও, তাহাদের পশ্চাতে পশ্চাতে যাইয়া তাহাদিগকে নিহনন কর, নিঃশেষে বিনষ্ট কর; আমি তোমাকে যাহা যাহা করিতে আজ্ঞা করিয়াছি, তদনুসারে কর। 22 দেশে সংগ্রামের শব্দ ও মহাবিনাশের শব্দ! 23 সমস্ত পৃথিবী মুদগর কেমন ছিন্ন ও ভগ্ন হইল! জাতিগণের মধ্যে বাবিল কেমন উৎসন্ন হইল। 24 হে বাবিল, আমি তোমার জন্য ফাঁদ পাতিয়াছি, আর তুমি তাহাতে ধৃতও হইয়াছ, কিন্তু জানিতে পার নাই; তোমাকে পাওয়া গিয়াছে, আবার তুমি ধরাও পড়িয়াছ, কেননা তুমি সদাপ্রভুর সহিত যুদ্ধ করিয়াছ। 25 সদাপ্রভু আপন অস্ত্রাগার খুলিলেন, নিজ ক্রোধের অস্ত্র সকল বাহির করিয়া আনিলেন, কেননা কল্‌দীয়দের দেশে প্রভুর, বাহিনীগণের সদাপ্রভুর, কার্য্য আছে। 26 তোমরা প্রান্তসীমা হইতে তাহার বিরুদ্ধে আইস, তাহার শস্যভাণ্ডার সকল খুলিয়া দেও, রাশির ন্যায় তাহাকে ঢিবী কর, নিঃশেষে বিনষ্ট কর; তাহার কিছু অবশিষ্ট রাখিও না। 27 তাহার সমস্ত বৃষ বধ কর, তাহারা বধ্যস্থানে নামিয়া যাউক; হায় হায়, তাহাদের দিন, তাহাদের প্রতিফলের সময়, আসিয়া পড়িল! 28 ঐ তাহাদের রব, যাহারা পলাইতেছে, ও বাবিল দেশ হইতে রক্ষা পাইতেছে, যেন সিয়োনে আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর প্রতিশোধ, তাঁহার মন্দির-নিমিত্ত প্রতিশোধ, জ্ঞাত করে। 29 তোমরা বাবিলের বিরুদ্ধে ধনুর্দ্ধারীদিগকে, ধনুকে চাড়াদায়ী সকলকে, আহ্বান কর; চারিদিকে তাহার বিরুদ্ধে শিবির স্থাপন কর, কাহাকেও রক্ষা পাইতে দিও না; তাহার ক্রিয়ানুযায়ী ফল তাহাকে দেও; সে যাহা যাহা করিয়াছে, তাহার প্রতি তদনুসারে কর; কেননা সে সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে, ইস্রায়েলের পবিত্রতমের বিরুদ্ধে, দর্প করিয়াছে। 30 এই জন্য সেই দিন তাহার যুবকগণ তাহার চকে পতিত হইবে, ও তাহার সমস্ত যোদ্ধা স্তব্ধীকৃত হইবে, ইহা সদাপ্রভু বলেন। 31 হে দর্প, প্রভু, বাহিনীগণের সদাপ্রভু কহেন, দেখ, আমি তোমার বিপক্ষ, কেননা তোমার সেই দিন উপস্থিত, যে দিন আমি তোমাকে প্রতিফল দিব। 32 তখন ঐ দর্প উছোট খাইয়া পড়িবে, কেহ তাহাকে উঠাইবে না; এবং আমি তাহার সকল নগরে আগুন লাগাইয়া দিব, তাহা তাহার চারিদিকের সকলই গ্রাস করিবে। 33 বাহিনীগণের সদাপ্রভু এই কথা কহেন, ইস্রায়েল-সন্তানগণ ও যিহূদা-সন্তানগণ নির্ব্বিশেষে উপদ্রুত হইতেছে; এবং যাহারা তাহাদিগকে বন্দি-দশায় রাখিয়াছে, তাহারা তাহাদিগকে দৃঢ়রূপে ধরিয়া রাখিয়াছে, বিদায় করিতে অসম্মত রহিয়াছে। 34 তাহাদের মুক্তিদাতা বলবান্‌; ‘বাহিনীগণের সদাপ্রভু’ তাঁহার নাম; তিনি সম্পূর্ণরূপে তাহাদের বিবাদ নিষ্পন্ন করিবেন, যেন তিনি পৃথিবীকে সুস্থির করেন, ও বাবিল-নিবাসীদিগকে অস্থির করেন। 35 সদাপ্রভু কহেন, কল্‌দীয়দের উপরে, বাবিল-নিবাসীদের উপরে, বাবিলের অধ্যক্ষদের উপরে ও তাহার জ্ঞানবানদের উপরে খড়্‌গ রহিয়াছে। 36 বাচালদিগের উপরে খড়্‌গ রহিয়াছে, তাহারা হতবুদ্ধি হইবে; তাহার বীরগণের উপরে খড়্‌গ রহিয়াছে, তাহারা উদ্বিগ্ন হইবে। 37 তাহার ঘোটকদের উপরে, তাহার রথসমূহের উপরে ও তন্মধ্যস্থিত সমুদয় মিশ্রিত লোকের উপরে খড়্‌গ রহিয়াছে, তাহারা অবলাদিগের সমান হইবে; তাহারা সকল ধনকোষের উপরে খড়্‌গ রহিয়াছে, সে সকল লুট হইবে। 38 তাহার জলাধার সকলের উপরে উত্তাপ রহিয়াছে, সেগুলি শুষ্ক হইবে; কেননা সে ক্ষোদিত প্রতিমার দেশ, ও সেখানকার লোকেরা আপন আপন বিভীষিকাগণের বিষয়ে উন্মত্ত। 39 এই নিমিত্ত সেখানে বন্যপশু ও বৃকগণ বাস করিবে, এবং উষ্ট্রপক্ষী বাসা করিবে; তাহা আর কখনও লোকালয় হইবে না, পুরুষানুক্রমে সে স্থানে বসতি হইবে না। 40 সদাপ্রভু এই কথা কহেন, ঈশ্বর যখন সদোম, ঘোমরা ও তন্নিকটস্থ নগর সকল উৎপাটন করিয়াছিলেন, তখন যেরূপ হইয়াছিল, সেইরূপ হইবে; কোন ব্যক্তি সেখানে বাস করিবে না, কোন মনুষ্য-সন্তান তাহার মধ্যে প্রবাস করিবে না। 41 দেখ, উত্তরদিক্‌ হইতে এক জনসমাজ আসিতেছে, পৃথিবীর প্রান্ত হইতে এক মহাজাতি ও অনেক রাজা উত্তেজিত হইয়া আসিতেছে। 42 তাহারা ধনুক ও বড়শাধারী, নিষ্ঠুর ও করুণারহিত; তাহাদের রব সমুদ্রগর্জ্জনের তুল্য, ও তাহারা অশ্বরোহণে আসিতেছে; অয়ি বাবিল-কন্যে; তোমারই বিপরীতে যুদ্ধ করণার্থে তাহারা প্রত্যেক জন যোদ্ধার ন্যায় সুসজ্জিত হইয়াছে। 43 বাবিল-রাজ তাহাদের জনশ্রুতি শুনিয়াছে, তাহার হস্ত অবশ হইল, যন্ত্রণা, প্রসবকারিণীর ন্যায় বেদনা, তাহাকে ধরিল। 44 দেখ, সে সিংহের ন্যায় যর্দ্দনের শোভাস্থান হইতে উঠিয়া সেই চিরস্থায়ী চরাণি-স্থানের বিরুদ্ধে আসিবে; কিন্তু আমি চক্ষুর নিমিষে তাহাকে তথা হইতে দূর করিয়া দিব, এবং তাহার উপরে মনোনীত লোককে নিযুক্ত করিব। কেননা আমার তুল্য কে? আমার সময় নিরূপণ কে করিবে? এবং আমার সম্মুখে দাঁড়াইবে, এমন পালক কোথায়? 45 অতএব সদাপ্রভুর মন্ত্রণা শুন, যাহা তিনি বাবিলের বিরুদ্ধে করিয়াছেন; তাঁহার সঙ্কল্প সকল শুন, যাহা তিনি কল্‌দীয়দের দেশের বিরুদ্ধে করিয়াছেন। নিশ্চয়ই লোকেরা তাহাদিগকে টানিয়া লইয়া যাইবে, পালের শাবকদিগকেও লইয়া যাইবে; নিশ্চয়ই তিনি তাহাদের চরাণি-স্থান তাহাদের সহিত উৎসন্ন করিবেন। 46 বাবিল পরহস্তগত হইয়াছে, এই শব্দে পৃথিবী কাঁপিতেছে, ও জাতিগণের মধ্যে ক্রন্দনের রব শুনা যাইতেছে।
1 সদাপ্রভু যিরমিয় ভাববাদী দ্বারা বাবিলের বিষয়ে, কল্‌দীয়দের দেশের বিষয়ে, যে কথা বলিয়াছিলেন, তাহা এই। .::. 2 তোমরা জাতিগণের মধ্যে জ্ঞাত কর, প্রচার কর, ধ্বজা তুলিয়া ধর; প্রচার কর, গুপ্ত রাখিও না; বল, ‘বাবিল পরহস্তগত হইল, বেল লজ্জিত হইল, মরোদক উদ্বিগ্ন হইল; তাহার প্রতিমা সকল লজ্জিত হইল, পুত্তলি সকল ক্ষুব্ধ হইল।’ .::. 3 কেননা উত্তরদিক্‌ হইতে এক জাতি তাহার বিরুদ্ধে উঠিয়া আসিল; সে তাহার দেশ ধ্বংস করিবে, তাহার মধ্যে কেহ বাস করিবে না; মনুষ্য ও পশু পলায়ন করিল, চলিয়া গেল। .::. 4 সদাপ্রভু কহেন, সেই সময়ে ও সেই কালে ইস্রায়েল সন্তানগণ আসিবে, তাহারা ও যিহূদা-সন্তানগণ একসঙ্গে আসিবে, রোদন করিতে করিতে চলিয়া আসিবে, ও আপনাদের ঈশ্বর, সদাপ্রভুর অন্বেষণ করিবে। .::. 5 তাহারা সিয়োনের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করিবে, সেই দিকে মুখ রাখিবে, বলিবে, চল, তোমরা এমন নিয়ম দ্বারা সদাপ্রভুতে আসক্ত হও, যাহা অনন্তকাল থাকিবে, যাহা কখনও লোকে ভুলিয়া যাইবে না। .::. 6 আমার প্রজারা হারান মেষ হইয়া পড়িয়াছে, তাহাদের পালকগণ তাহাদিগকে ভ্রান্ত করিয়াছে, নানা পর্ব্বতে পথহারা করিয়া ফেলিয়াছে; উহারা পর্ব্বত হইতে উপপর্ব্বতে গমন করিয়াছে, আপনাদের শয়নস্থান ভুলিয়া গিয়াছে। .::. 7 যাহারা তাহাদিগকে পাইয়াছে, তাহারা গ্রাস করিয়াছে; তাহাদের বিপক্ষগণ বলিয়াছে, আমাদের দোষ হয় নাই, কারণ উহারা ধর্ম্মনিবাস সদাপ্রভুর, আপনাদের পিতৃপুরুষগণের আশাভূমি সদাপ্রভুর, বিরুদ্ধে পাপ করিয়াছে। .::. 8 তোমরা সত্বর বাবিলের মধ্য হইতে বাহির হইয়া পড়, কল্‌দীয়দের দেশ হইতে নির্গমন কর, এবং পালের অগ্রগামী ছাগের ন্যায় হও। .::. 9 কেননা দেখ, আমি উত্তরদেশ হইতে মহাজাতি-সমাজ উত্তেজিত করিয়া বাবিলের বিরুদ্ধে গমন করাইব, তাহারা বাবিলের বিরুদ্ধে সৈন্য রচনা করিবে, তাহাতে তাহা পরহস্তগত হইবে; তাহাদের বাণ কৌশলপরায়ণ বীরের ন্যায় হইবে, বিফল হইয়া ফিরিয়া আসিবে না। .::. 10 কল্‌দিয়া লুটবস্তু হইবে; যে সকল লোক সেই দেশ লুট করিবে, তাহারা তৃপ্ত হইবে, ইহা সদাপ্রভু কহেন। .::. 11 ওহে তোমরা, যাহারা আমার অধিকার লুট করিতেছ, তোমরা ত আনন্দ ও উল্লাস করিতেছ, শস্যমর্দ্দনকারিণী গাভীর ন্যায় নাচিতেছ, তেজস্বী অশ্বের ন্যায় হেষ্রা রব করিতেছ; .::. 12 এই জন্য তোমাদের মাতা অতি লজ্জিতা হইবে, তোমাদের জননী হতাশা হইবে; দেখ, জাতিগণের মধ্যে সে অন্ত হইবে, প্রান্তর, শুষ্ক স্থান ও মরুভূমি হইবে। .::. 13 সদাপ্রভুর ক্রোধ প্রযুক্ত সে আর বসতি-স্থান হইবে না, সম্পূর্ণ ধ্বংসস্থান হইবে; যে কেহ বাবিলের নিকট দিয়া যাইবে, সে বিস্মিত হইবে, ও তাহার সমুদয় আঘাত দেখিয়া শিশ দিবে। .::. 14 হে ধনুকে চাড়াদায়ী লোক সকল, বাবিলের বিরুদ্ধে চারিদিকে সৈন্য রচনা কর, তাহার প্রতি বাণ নিক্ষেপ কর, বাণব্যয়ে কাতর হইও না, কেননা সে সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে পাপ করিয়াছে। .::. 15 তাহার চারিদিকে সিংহনাদ কর—সে হাতযোড় করিয়াছে, তাহার ভিত্তি সকল পতিত, তাহার প্রাচীর সকল উৎপাটিত হইয়াছে; কেননা এ সদাপ্রভুর প্রতিশোধ গ্রহণ; তোমরা উহার প্রতিশোধ লও; সে যেমন করিয়াছে, তাহার প্রতি তদ্রূপ কর। .::. 16 বাবিল হইতে বীজবাপককে কাটিয়া ফেল, ফসল কাটিবার সময়ে যে কাস্ত্যা ধরে, তারে কাট, উৎপীড়ক খড়্‌গের ভয়ে তাহারা প্রতেকে স্ব স্ব জাতির কাছে ফিরিয়া যাইবে, প্রত্যেকে স্ব স্ব দেশের দিকে পলায়ন করিবে। .::. 17 ইস্রায়েল ছিন্নভিন্ন মেষস্বরূপ; সিংহগণ তাহাকে তাড়াইয়া দিয়াছে; প্রথমতঃ অশূর-রাজ তাহাকে গ্রাস করিয়াছিল, এখন শেষে এই বাবিল-রাজ নবূখদ্‌রিৎসর তাহার অস্থি সকল ভগ্ন করিয়াছে। .::. 18 এই জন্য বাহিনীগণের সদাপ্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, এই কথা কহেন, দেখ, আমি অশূর-রাজকে যেমন প্রতিফল দিয়াছি, বাবিল-রাজ ও তাহার দেশকে তেমনি প্রতিফল দিব। .::. 19 আর ইস্রায়েলকে তাহার চরাণি-স্থানে ফিরাইয়া আনিব; সে কর্মিলের ও বাশনের উপরে চরিবে, এবং ইফ্রয়িম-পর্ব্বতমালায় ও গিলিয়দে তাহার প্রাণ তৃপ্ত হইবে। .::. 20 সদাপ্রভু কহেন, সেই সময়ে ও সেই কালে ইস্রায়েলের অপরাধের অনুসন্ধান করা যাইবে, কিন্তু পাওয়া যাইবে না; এবং যিহূদার পাপসমূহের *অনুসন্ধান করা যাইবে , কিন্তু পাওয়া যাইবে না; কেননা আমি যাহাদিগকে অবশিষ্ট রাখি, তাহাদিগকে ক্ষমা করিব। .::. 21 সদাপ্রভু কহেন, তুমি মরাথয়িম *দ্বিগুণদ্রোহ দেশের বিরুদ্ধে ও পদোক প্রতিফল নিবাসীদের বিরুদ্ধে উঠিয়া যাও, তাহাদের পশ্চাতে পশ্চাতে যাইয়া তাহাদিগকে নিহনন কর, নিঃশেষে বিনষ্ট কর; আমি তোমাকে যাহা যাহা করিতে আজ্ঞা করিয়াছি, তদনুসারে কর। .::. 22 দেশে সংগ্রামের শব্দ ও মহাবিনাশের শব্দ! .::. 23 সমস্ত পৃথিবী মুদগর কেমন ছিন্ন ও ভগ্ন হইল! জাতিগণের মধ্যে বাবিল কেমন উৎসন্ন হইল। .::. 24 হে বাবিল, আমি তোমার জন্য ফাঁদ পাতিয়াছি, আর তুমি তাহাতে ধৃতও হইয়াছ, কিন্তু জানিতে পার নাই; তোমাকে পাওয়া গিয়াছে, আবার তুমি ধরাও পড়িয়াছ, কেননা তুমি সদাপ্রভুর সহিত যুদ্ধ করিয়াছ। .::. 25 সদাপ্রভু আপন অস্ত্রাগার খুলিলেন, নিজ ক্রোধের অস্ত্র সকল বাহির করিয়া আনিলেন, কেননা কল্‌দীয়দের দেশে প্রভুর, বাহিনীগণের সদাপ্রভুর, কার্য্য আছে। .::. 26 তোমরা প্রান্তসীমা হইতে তাহার বিরুদ্ধে আইস, তাহার শস্যভাণ্ডার সকল খুলিয়া দেও, রাশির ন্যায় তাহাকে ঢিবী কর, নিঃশেষে বিনষ্ট কর; তাহার কিছু অবশিষ্ট রাখিও না। .::. 27 তাহার সমস্ত বৃষ বধ কর, তাহারা বধ্যস্থানে নামিয়া যাউক; হায় হায়, তাহাদের দিন, তাহাদের প্রতিফলের সময়, আসিয়া পড়িল! .::. 28 ঐ তাহাদের রব, যাহারা পলাইতেছে, ও বাবিল দেশ হইতে রক্ষা পাইতেছে, যেন সিয়োনে আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর প্রতিশোধ, তাঁহার মন্দির-নিমিত্ত প্রতিশোধ, জ্ঞাত করে। .::. 29 তোমরা বাবিলের বিরুদ্ধে ধনুর্দ্ধারীদিগকে, ধনুকে চাড়াদায়ী সকলকে, আহ্বান কর; চারিদিকে তাহার বিরুদ্ধে শিবির স্থাপন কর, কাহাকেও রক্ষা পাইতে দিও না; তাহার ক্রিয়ানুযায়ী ফল তাহাকে দেও; সে যাহা যাহা করিয়াছে, তাহার প্রতি তদনুসারে কর; কেননা সে সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে, ইস্রায়েলের পবিত্রতমের বিরুদ্ধে, দর্প করিয়াছে। .::. 30 এই জন্য সেই দিন তাহার যুবকগণ তাহার চকে পতিত হইবে, ও তাহার সমস্ত যোদ্ধা স্তব্ধীকৃত হইবে, ইহা সদাপ্রভু বলেন। .::. 31 হে দর্প, প্রভু, বাহিনীগণের সদাপ্রভু কহেন, দেখ, আমি তোমার বিপক্ষ, কেননা তোমার সেই দিন উপস্থিত, যে দিন আমি তোমাকে প্রতিফল দিব। .::. 32 তখন ঐ দর্প উছোট খাইয়া পড়িবে, কেহ তাহাকে উঠাইবে না; এবং আমি তাহার সকল নগরে আগুন লাগাইয়া দিব, তাহা তাহার চারিদিকের সকলই গ্রাস করিবে। .::. 33 বাহিনীগণের সদাপ্রভু এই কথা কহেন, ইস্রায়েল-সন্তানগণ ও যিহূদা-সন্তানগণ নির্ব্বিশেষে উপদ্রুত হইতেছে; এবং যাহারা তাহাদিগকে বন্দি-দশায় রাখিয়াছে, তাহারা তাহাদিগকে দৃঢ়রূপে ধরিয়া রাখিয়াছে, বিদায় করিতে অসম্মত রহিয়াছে। .::. 34 তাহাদের মুক্তিদাতা বলবান্‌; ‘বাহিনীগণের সদাপ্রভু’ তাঁহার নাম; তিনি সম্পূর্ণরূপে তাহাদের বিবাদ নিষ্পন্ন করিবেন, যেন তিনি পৃথিবীকে সুস্থির করেন, ও বাবিল-নিবাসীদিগকে অস্থির করেন। .::. 35 সদাপ্রভু কহেন, কল্‌দীয়দের উপরে, বাবিল-নিবাসীদের উপরে, বাবিলের অধ্যক্ষদের উপরে ও তাহার জ্ঞানবানদের উপরে খড়্‌গ রহিয়াছে। .::. 36 বাচালদিগের উপরে খড়্‌গ রহিয়াছে, তাহারা হতবুদ্ধি হইবে; তাহার বীরগণের উপরে খড়্‌গ রহিয়াছে, তাহারা উদ্বিগ্ন হইবে। .::. 37 তাহার ঘোটকদের উপরে, তাহার রথসমূহের উপরে ও তন্মধ্যস্থিত সমুদয় মিশ্রিত লোকের উপরে খড়্‌গ রহিয়াছে, তাহারা অবলাদিগের সমান হইবে; তাহারা সকল ধনকোষের উপরে খড়্‌গ রহিয়াছে, সে সকল লুট হইবে। .::. 38 তাহার জলাধার সকলের উপরে উত্তাপ রহিয়াছে, সেগুলি শুষ্ক হইবে; কেননা সে ক্ষোদিত প্রতিমার দেশ, ও সেখানকার লোকেরা আপন আপন বিভীষিকাগণের বিষয়ে উন্মত্ত। .::. 39 এই নিমিত্ত সেখানে বন্যপশু ও বৃকগণ বাস করিবে, এবং উষ্ট্রপক্ষী বাসা করিবে; তাহা আর কখনও লোকালয় হইবে না, পুরুষানুক্রমে সে স্থানে বসতি হইবে না। .::. 40 সদাপ্রভু এই কথা কহেন, ঈশ্বর যখন সদোম, ঘোমরা ও তন্নিকটস্থ নগর সকল উৎপাটন করিয়াছিলেন, তখন যেরূপ হইয়াছিল, সেইরূপ হইবে; কোন ব্যক্তি সেখানে বাস করিবে না, কোন মনুষ্য-সন্তান তাহার মধ্যে প্রবাস করিবে না। .::. 41 দেখ, উত্তরদিক্‌ হইতে এক জনসমাজ আসিতেছে, পৃথিবীর প্রান্ত হইতে এক মহাজাতি ও অনেক রাজা উত্তেজিত হইয়া আসিতেছে। .::. 42 তাহারা ধনুক ও বড়শাধারী, নিষ্ঠুর ও করুণারহিত; তাহাদের রব সমুদ্রগর্জ্জনের তুল্য, ও তাহারা অশ্বরোহণে আসিতেছে; অয়ি বাবিল-কন্যে; তোমারই বিপরীতে যুদ্ধ করণার্থে তাহারা প্রত্যেক জন যোদ্ধার ন্যায় সুসজ্জিত হইয়াছে। .::. 43 বাবিল-রাজ তাহাদের জনশ্রুতি শুনিয়াছে, তাহার হস্ত অবশ হইল, যন্ত্রণা, প্রসবকারিণীর ন্যায় বেদনা, তাহাকে ধরিল। .::. 44 দেখ, সে সিংহের ন্যায় যর্দ্দনের শোভাস্থান হইতে উঠিয়া সেই চিরস্থায়ী চরাণি-স্থানের বিরুদ্ধে আসিবে; কিন্তু আমি চক্ষুর নিমিষে তাহাকে তথা হইতে দূর করিয়া দিব, এবং তাহার উপরে মনোনীত লোককে নিযুক্ত করিব। কেননা আমার তুল্য কে? আমার সময় নিরূপণ কে করিবে? এবং আমার সম্মুখে দাঁড়াইবে, এমন পালক কোথায়? .::. 45 অতএব সদাপ্রভুর মন্ত্রণা শুন, যাহা তিনি বাবিলের বিরুদ্ধে করিয়াছেন; তাঁহার সঙ্কল্প সকল শুন, যাহা তিনি কল্‌দীয়দের দেশের বিরুদ্ধে করিয়াছেন। নিশ্চয়ই লোকেরা তাহাদিগকে টানিয়া লইয়া যাইবে, পালের শাবকদিগকেও লইয়া যাইবে; নিশ্চয়ই তিনি তাহাদের চরাণি-স্থান তাহাদের সহিত উৎসন্ন করিবেন। .::. 46 বাবিল পরহস্তগত হইয়াছে, এই শব্দে পৃথিবী কাঁপিতেছে, ও জাতিগণের মধ্যে ক্রন্দনের রব শুনা যাইতেছে। .::.
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 1  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 2  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 3  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 4  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 5  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 6  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 7  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 8  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 9  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 10  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 11  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 12  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 13  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 14  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 15  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 16  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 17  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 18  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 19  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 20  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 21  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 22  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 23  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 24  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 25  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 26  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 27  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 28  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 29  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 30  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 31  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 32  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 33  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 34  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 35  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 36  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 37  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 38  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 39  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 40  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 41  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 42  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 43  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 44  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 45  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 46  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 47  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 48  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 49  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 50  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 51  
  • যেরেমিয়া অধ্যায় 52  
×

Alert

×

Bengali Letters Keypad References