2. তথায় দেখিলেন, মাঠের মধ্যে এক কূপ আছে, আর দেখ, তাহার নিকটে মেষের তিনটি পাল শয়ন করিয়া রহিয়াছে; কারণ লোকে মেষপাল সকলকে সেই কূপের জল পান করাইত; আর সেই কূপের মুখে এক বৃহৎ প্রস্তর ছিল।
|
3. সেই স্থানে পাল সকল একত্র করা হইলে লোকে কূপের মুখ হইতে প্রস্তরখান সরাইয়া মেষগণকে জল পান করাইত, পরে পুনর্ব্বার কূপের মুখে যথাস্থানে সেই প্রস্তর রাখিত।
|
7. তখন তিনি বলিলেন, দেখ, এখনও অনেক বেলা আছে; পশুপাল একত্র করণের সময় হয় নাই; তোমরা মেষগণকে জল পান করাইয়া পুনর্ব্বার চরাইতে লইয়া যাও।
|
8. তাহারা কহিল, যতক্ষণ পাল সকল একত্র না হয়, ততক্ষণ আমরা তাহা করিতে পারি না; পরে কূপের মুখ হইতে প্রস্তরখান সরান যায়; তখন আমরা মেষদিগকে জল পান করাই।
|
9. যাকোব তাহাদের সহিত এইরূপ কথাবার্ত্তা কহিতেছেন, এমন সময়ে রাহেল আপন পিতার মেষপাল লইয়া উপস্থিত হইলেন, কেননা তিনি মেষপালিকা ছিলেন।
|
10. তখন যাকোব আপন মাতুল লাবনের কন্যা রাহেলকে ও মাতুলের মেষপালকে দেখিবামাত্র নিকটে গিয়া কূপের মুখ হইতে প্রস্তরখানা সরাইয়া তাঁহার মাতুল লাবনের মেষপালকে জল পান করাইলেন।
|
12. আর আপনি যে তাঁহার পিতার কুটুম্ব ও রিবিকার পুত্র, যাকোব রাহেলকে এই পরিচয় দিলে রাহেল দৌড়িয়া গিয়া আপন পিতাকে সংবাদ দিলেন।
|
13. তাহাতে লাবন আপন ভাগিনেয় যাকােবের সংবাদ পাইয়া দৌড়িয়া তাঁহার সহিত সাক্ষাৎ করিতে গেলেন, তাঁহাকে আলিঙ্গন ও চুম্বন করিলেন, ও আপন বাটীতে লইয়া গেলেন; পরে তিনি লাবনকে উক্ত সমস্ত বৃত্তান্ত জ্ঞাত করিলেন।
|
14. তাহাতে লাবন কহিলেন, তুমি নিতান্তই আমার অস্থি ও আমার মাংস। পরে যাকোব তাঁহার গৃহে এক মাস কাল বাস করিলেন।
|
15. পরে লাবন যাকোবকে কহিলেন, তুমি কুটুম্ব বলিয়া কি বিনা বেতনে আমার দাস্যকর্ম্ম করিবে? বল দেখি, কি বেতন লইবে?
|
18. আর যাকোব রাহেলকে ভাল বাসিতেন, এজন্য তিনি উত্তর করিলেন, আপনার কনিষ্ঠা কন্যা রাহেলের জন্য আমি সাত বৎসর আপনার দাস্যকর্ম্ম করিব।
|
20. এইরূপে যাকোব রাহেলের জন্য সাত বৎসর দাস্যকর্ম্ম করিলেন; রাহেলের প্রতি তাঁহার অনুরাগ প্রযুক্ত এক এক বৎসর তাঁহার কাছে এক এক দিন মনে হইল।
|
21. পরে যাকোব লাবনকে কহিলেন, আমার নিয়মিত কাল সম্পূর্ণ হইল, এখন আমার ভার্য্যা আমাকে দিউন, আমি তাহার কাছে গমন করিব।
|
23. আর সন্ধ্যাকালে তিনি আপন কন্যা লেয়াকে লইয়া তাঁহার নিকট আনিয়া দিলেন, আর যাকোব তাঁহার কাছে গমন করিলেন।
|
25. আর প্রভাত হইলে, দেখ, তিনি লেয়া। তাহাতে যাকোব লাবনকে কহিলেন, আপনি আমার সহিত এ কি ব্যবহার করিলেন? আমি কি রাহেলের জন্য আপনার দাস্যকর্ম্ম করি নাই? তবে কেন আমাকে প্রবঞ্চনা করিলেন?
|
27. তুমি ইহার সপ্তাহ পূর্ণ কর; পরে আরও সাত বৎসর আমার দাস্যকর্ম্ম স্বীকার করিবে, সেজন্য আমরা উহাকেও তোমাকে দান করিব।
|
28. তাহাতে যাকোব সেই প্রকার করিলেন, তাঁহার সপ্তাহ পূর্ণ করিলেন; পরে লাবন তাঁহার সহিত আপন কন্যা রাহেলের বিবাহ দিলেন।
|
30. তখন তিনি রাহেলের কাছেও গমন করিলেন, এবং লেয়া অপেক্ষা রাহেলকে অধিক ভাল বাসিলেন; এবং আর সাত বৎসর লাবনের নিকট দাস্যকর্ম্ম করিলেন।
|
32. আর লেয়া গর্ভবতী হইয়া পুত্র প্রসব করিলেন, ও তাহার নাম রূবেণ পুত্রকে দেখ রাখিলেন; কেননা তিনি কহিলেন, সদাপ্রভু আমার দুঃখ দেখিয়াছেন; এখন আমার স্বামী আমাকে ভাল বাসিবেন।
|
33. পরে তিনি পুনর্ব্বার গর্ভবতী হইয়া পুত্র প্রসব করিয়া কহিলেন, সদাপ্রভু শুনিয়াছেন যে, আমি ঘৃণার পাত্রী, তাই আমাকে এই পুত্রও দিলেন; আর তাহার নাম শিমিয়োন শ্রবণ রাখিলেন।
|
34. আবার তিনি গর্ভবতী হইয়া পুত্র প্রসব করিয়া কহিলেন, এ বার আমার স্বামী আমাতে আসক্ত হইবেন, কেননা আমি তাঁহার জন্য তিন পুত্র প্রসব করিয়াছি; অতএব তাহার নাম লেবি আসক্ত রাখা গেল।
|
35. পরে পুনর্ব্বার তাঁহার গর্ভ হইলে তিনি পুত্র প্রসব করিয়া কহিলেন, এ বার আমি সদাপ্রভুর স্তব গান করি; অতএব তিনি তাহার নাম যিহূদা স্তব রাখিলেন। তৎপরে তাঁহার গর্ভনিবৃত্তি হইল।
|