রাজাবলি ২ অধ্যায় 12
1. যেহূর সপ্তম বৎসরে যিহোয়াশ রাজত্ব করিতে আরম্ভ করিয়া যিরূশালেমে চল্লিশ বৎসর কাল রাজত্ব করেন; তাঁহার মাতার নাম সিবিয়া, তিনি বের-শেবানিবাসিনী।
2. আর যতদিন যিহোয়াদা যাজক যিহোয়াশকে উপদেশ দিতেন, ততদিন তিনি সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যাহা ন্যায্য তাহাই করিতেন।
3. তথাপি উচ্চস্থলী সকল উচ্ছিন্ন হইল না, লোকেরা তখনও উচ্চস্থলীতে বলিদান করিত ও ধূপ জ্বালাইত।
4. পরে যিহোয়াশ যাজকদিগকে কহিলেন, পবিত্র বস্তু সম্বন্ধীয় যে সকল রৌপ্য সদাপ্রভুর গৃহে আনীত হয়, প্রচলিত রৌপ্য, প্রত্যেক গণিত লোকের হিসাবে প্রাণীর মূল্যরূপে নিরূপিত রৌপ্য, ও মনুষ্যের মনের প্রবৃত্তি অনুসারে সদাপ্রভুর গৃহে আনীত রৌপ্য,
5. এই সমস্ত রৌপ্য যাজকেরা আপন আপন পরিচিত লোকদের হস্ত হইতে গ্রহণ করুক, এবং গৃহের যে কোন স্থান ভগ্ন হইয়াছে, দেখা যাইবে, তাহারা সেই সকল স্থান সারুক।
6. কিন্তু যিহোয়াশ রাজার তেইশ বৎসর পর্য্যন্ত যাজকেরা সেই গৃহের ভগ্ন স্থান সারেন নাই।
7. তাহাতে যিহোয়াশ রাজা যিহোয়াদা যাজককে ও অন্য যাজকদিগকে ডাকাইয়া কহিলেন, তোমরা গৃহের ভগ্ন স্থানগুলি কেন সারিতেছ না? অতএব এখন তোমার পরিচিত লোকদের নিকট হইতে আর টাকা লইও না, কিন্তু তাহা গৃহের ভগ্ন স্থানের জন্য দিও।
8. তখন যাজকেরা স্বীকার করিলেন যে, তাঁহারা লোকদের নিকট হইতে আর টাকা লইবেন না, এবং গৃহের ভগ্ন স্থান সারিবেন না।
9. কিন্তু যিহোয়াদা যাজক একটী সিন্দুক লইলেন, ও তাহার ডালাতে এক ছিদ্র করিয়া যজ্ঞবেদির নিকটে সদাপ্রভুর গৃহের প্রবেশস্থানের দক্ষিণ পার্শ্বে রাখিলেন; আর দ্বার-রক্ষক যাজকেরা সদাপ্রভুর গৃহে আনীত সমস্ত টাকা তাহার মধ্যে রাখিত।
10. পরে যখন তাহারা দেখিতে পাইল, সিন্দুকে অনেক টাকা জমিয়াছে, তখন রাজার লেখক ও মহাযাজক আসিয়া সদাপ্রভুর গৃহে প্রাপ্ত ঐ সকল টাকা থলীতে করিয়া গণনা করিতেন।
11. পরে তাঁহারা সেই পরিমিত টাকা কর্ম্মকারীদের হস্তে, সদাপ্রভুর গৃহের অধ্যক্ষদের হস্তে দিতেন, আর ইহাঁরা সদাপ্রভুর গৃহের কর্ম্মকারী সূত্রধর ও গাঁথকদিগকে,
12. এবং রাজ ও ভাস্করদিগকে তাহা দিতেন, এবং সদাপ্রভুর গৃহের ভগ্ন স্থান সারিবার জন্য কাষ্ঠ ও ক্ষোদিত প্রস্তর ক্রয় করিবার জন্য, ও গৃহ সারিবার নিমিত্তে যাহা যাহা লাগিত, সেই সকলের জন্য তাহা ব্যয় করিতেন।
13. কিন্তু সদাপ্রভুর গৃহের জন্য রৌপ্যডাবর, কর্ত্তরী, বাটী, তূরী, কোন স্বর্ণময় পাত্র বা রৌপ্যময় পাত্র সদাপ্রভুর গৃহে আনীত সেই রৌপ্য দ্বারা নির্ম্মিত হইল না;
14. কারণ তাঁহারা কর্ম্মকারীদিগকেই সেই টাকা দিতেন, এবং তাঁহারা তাহা লইয়া সদাপ্রভুর গৃহ সারিলেন।
15. কিন্তু উহাঁরা কর্ম্মকারীদিগকে দিবার নিমিত্তে যাঁহাদের হস্তে টাকা দিতেন, তাঁহাদের সহিত হিসাব করিতেন না, কেননা তাঁহারা বিশ্বস্তরূপে কর্ম্ম করিতেন।
16. দোষার্থক ও পাপার্থক বলি সম্বন্ধীয় যে টাকা, তাহা সদাপ্রভুর গৃহে আনীত হইত না; তাহা যাজকদেরই হইত।
17. ঐ সময়ে অরাম-রাজ হসায়েল যাত্রা করিয়া গাতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করিলেন ও তাহা হস্তগত করিলেন; পরে হসায়েল যিরূশালেমের বিরুদ্ধেও যাত্রা করিতে উন্মুখ হইলেন।
18. তাহাতে যিহূদা-রাজ যিহোয়াশ আপন পিতৃপুরুষদের অর্থাৎ যিহূদার যিহোশাফট, যিহোরাম ও অহসিয় রাজার পবিত্রীকৃত বস্তু সকল, ও আপনার পবিত্রীকৃত বস্তু সকল, এবং সদাপ্রভুর গৃহের ভাণ্ডারে ও রাজবাটীর ভাণ্ডারে যত স্বর্ণ পাওয়া গেল, সে সমস্ত লইয়া অরাম-রাজ হসায়েলের নিকটে পাঠাইয়া দিলেন, তাহাতে তিনি যিরূশালেমের সম্মুখ হইতে ফিরিয়া গেলেন।
19. যোয়াশের অবশিষ্ট কর্ম্মের বৃত্তান্ত ও সমস্ত কার্য্যের বিবরণ কি যিহূদা রাজগণের ইতিহাস পুস্তকে লিখিত নাই?
20. পরে যোয়াশের দাসেরা উঠিয়া চক্রান্ত করিল, এবং সিল্লাগামী পথস্থিত মিল্লো নামক বাটীতে তাঁহাকে আঘাত করিল।
21. ফলে শিমিয়তের পুত্র যোষাখর ও শোমরের পুত্র যিহোষাবদ, তাঁহার দুই জন দাস, তাঁহাকে আঘাত করিলে তিনি মরিলেন; পরে লোকেরা দায়ূদ-নগরে তাঁহার পিতৃলোকদের সহিত তাঁহাকে কবর দিল, এবং তাঁহার পুত্র অমৎসিয় তাঁহার পদে রাজা হইলেন।