1 হে ঈশ্বর, আমাকে পরিত্রাণ কর, কেননা আমার প্রাণ পর্য্যন্ত জল উঠিয়াছে।2 আমি অগাধ পঙ্কে ডুবিয়াছি, দাঁড়াইবার স্থান নাই; গভীর জলে আসিয়াছি, বন্যা আমার উপর দিয়া যাইতেছে।3 আমি ডাকিতে ডাকিতে ক্লান্ত হইয়াছি, আমার কণ্ঠ শুষ্ক হইয়াছে; আমার ঈশ্বরের অপেক্ষা করিতে করিতে আমার নয়নযুগল নিস্তেজ হইয়াছে।4 যাহারা অকারণে আমার বিদ্বেষী, তাহারা আমার মস্তকের কেশ অপেক্ষাও অনেক আমার উচ্ছেদার্থী মিথ্যাবাদী শত্রুগণ বলবান; আমি যাহা অপহরণ করি নাই, তাহাও আমাকে ফিরাইয়া দিতে হইল।5 হে ঈশ্বর, তুমি আমার মূঢ়তা জ্ঞাত আছ; আমার দোষ সকল তোমা হইতে গুপ্ত নয়।6 হে প্রভু, বাহিনীগণের সদাপ্রভু, তোমার অপেক্ষাকারিগণ আমার দ্বারা লজ্জিত না হউক; হে ইস্রায়েলের ঈশ্বর, তোমার অন্বেষণকারিগণ আমার দ্বারা অপমানিত না হউক।7 কেননা তোমারই নিমিত্ত আমি তিরস্কার সহ্য করিয়াছি, আমার মুখ লজ্জায় আচ্ছাদিত হইয়াছে।8 আমি হইয়াছি আমার ভ্রাতৃগণের কাছে বিদেশী, আমার সহোদরগণের কাছে বিজাতীয়।9 কারণ তোমার গৃহনিমিত্তক উদ্যোগ আমাকে গ্রাস করিয়াছে; যাহারা তোমাকে তিরস্কার করে, তাহাদের তিরস্কার আমার উপরে পড়িয়াছে।10 যখন আমি রোদন করিলাম, উপবাস দ্বারা প্রাণকে *ক্লেশ দিলাম, তখন তাহা আমার দুর্নামের বিষয় হইল।11 যখন আমি চট পরিধান করিলাম, তখন তাহাদের কাছে প্রবাদের বিষয় হইলাম।12 যাহারা পুরদ্বারে বসে, তাহারা আমার বিষয়ে কথাবার্ত্তা কহে; আমি সুরাপায়ীদের গীতস্বরূপ।13 কিন্তু, হে সদাপ্রভু, আমি তোমারই নিকটে প্রসন্নতার সময়ে প্রার্থনা করিতেছি; হে ঈশ্বর, তোমার দয়ার বাহুল্যে, তোমার পরিত্রাণের সত্যে, আমাকে উত্তর দেও।14 পঙ্ক হইতে আমাকে উদ্ধার কর, ডুবিয়া যাইতে দিও না; বিদ্বেষিগণ হইতে ও গভীর জল হইতে যেন উদ্ধার পাই।15 জলের বন্যা আমার উপর ছাপিয়া না উঠুক, অগাধ জল আমাকে গ্রাস না করুক; আমার উপরে কূপ আপন মুখ বদ্ধ না করুক।16 হে সদাপ্রভু, আমাকে উত্তর দেও, কেননা তোমার দয়া উত্তম; তোমার কৃপার বাহুল্যানুসারে আমার প্রতি মুখ ফিরাও।17 তোমার এই দাস হইতে মুখ আচ্ছাদন করিও না; কারণ আমি সঙ্কটাপন্ন, ত্বরায় আমাকে উত্তর দেও।18 নিকটে আসিয়া আমার প্রাণ মুক্ত কর; আমার শত্রুগণহেতু আমাকে নিষ্ক্রয় কর।19 তুমি আমার দুর্নাম, আমার লজ্জা ও আমার অপমান জান; আমার বিপক্ষেরা সকলে তোমার সম্মুখবর্ত্তী।20 তিরস্কারে আমার মনোভঙ্গ হইয়াছে, আমি অবসন্ন হইলাম, আমি সহানুভূতির অপেক্ষা করিলাম, কিন্তু তাহা নাই; সাত্ত্বনাকারীদের অপেক্ষা করিলাম, কিন্তু কাহাকেও পাইলাম না।21 আবার লোকে আমার খাদ্যের জন্য বিষ দিল, আমার পিপাসাকালে অম্লরস পান করাইল।22 তাহাদের মেজ তাহাদের সম্মুখে ফাঁদস্বরূপ হউক, শান্তিকালে তাহাদের পাশস্বরূপ হউক।23 তাহাদের চক্ষু অন্ধ হউক, যেন তাহারা দেখিতে না পায়; তুমি তাহাদের কটিদেশ চির-কম্পযুক্ত কর।24 তাহাদের উপরে তোমার ক্রোধ ঢালিয়া দেও, তোমার কোপাগ্নি তাহাদিগকে ধরুক।25 তাহাদের নিবাস শূন্য হউক, তাহাদের তাম্বুতে কেহ বাস না করুক।26 কেননা তাহারা তাহাকেই তাড়না করে, যাহাকে তুমি প্রহার করিয়াছ, তাহাদেরই ব্যথা বর্ণনা করে, যাহাদিগকে তুমি আঘাত করিয়াছ।27 তাহাদের অপরাধের উপরে অপরাধ যোগ কর, তাহারা তোমার ধর্ম্মশীলতায় প্রবেশ না করুক।28 জীবন-পুস্তক হইতে তাহাদের নাম লুপ্ত হউক, ধার্ম্মিকগণের সহিত তাহাদের অঙ্কপাত না হউক।29 কিন্তু আমি দুঃখী ও ব্যথিত, হে ঈশ্বর, তোমার পরিত্রাণ আমাকে উন্নত করুক।30 আমি গীত দ্বারা ঈশ্বরের নাম প্রশংসা করিব, স্তব দ্বারা তাঁহার মহিমা স্বীকার করিব।31 তাহাই সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে তুষ্টিকর হইবে, গোরু অপেক্ষা, শৃঙ্গ ও খুরযুক্ত বৃষ অপেক্ষা হইবে।32 নম্রগণ তাহা দেখিয়া আনন্দ করিবে; ঈশ্বরান্বেষিগণ! তোমাদের হৃদয় সঞ্জীবিত হউক।33 কেননা সদাপ্রভু দরিদ্রদের কথা শ্রবণ করেন, তিনি আপনার বন্দিগণকে তুচ্ছ করেন না।34 আকাশ ও পৃথিবী তাঁহার প্রশংসা করুক, সমুদ্র ও তন্মধ্যস্থ সর্ব্ব জঙ্গম প্রশংসা করুক।35 কেননা ঈশ্বর সিয়োনের পরিত্রাণ করিবেন, ও যিহূদার নগর সকল গাঁথিবেন; লোকে সেখানে বাস করিবে, ও অধিকার পাইবে।36 তাঁহার দাসদের বংশই তাহা ভোগ করিবে; যাহারা তাঁহার নাম ভালবাসে, তাহারা তথায় বসতি করিবে।