1 পরে তৈমনীয় ইলীফস উত্তর করিয়া কহিলেন,2 জ্ঞানবান কি বায়ুবৎ জ্ঞানসহ উত্তর করিবে? সে কি পূর্ব্বীয় বায়ুতে উদর পূর্ণ করিবে?3 সে কি অনর্থক কথায় বিবাদ করিবে? সে কি নিষ্ফল বাক্য কহিবে?4 তুমি ত ভয় ছাড়িয়া দিতেছ, ঈশ্বরের সাক্ষাতে প্রার্থনানুরাগ ক্ষীণ করিতেছ।5 তোমারই মুখ তোমার অপরাধ ব্যক্ত করে, তুমি ধূর্ত্তদের জিহ্বা মনোনীত করিতেছ।6 তোমারই মুখ তোমাকে দূষিতেছে, আমি নই; তোমারই ওষ্ঠাধর তোমার বিরুদ্ধে প্রমাণ দিতেছে।7 মনুষ্যদের মধ্যে তুমি কি প্রথমজাত? পর্ব্বতগণের পূর্ব্বে কি তোমার জন্ম হইয়াছিল?8 তুমি কি ঈশ্বরের গূঢ় মন্ত্রণা শুনিয়াছ? সমস্ত প্রজ্ঞা কি আত্মসাৎ করিয়াছ?9 আমরা যাহা না জানি, এমন কি জান? আমাদের যাহা অজ্ঞাত, এমন কি বুঝ?10 পক্বকেশ ও বৃদ্ধেরা আমাদের মধ্যে আছেন, তাঁহারা তোমার পিতা হইতেও বৃদ্ধ।11 ঈশ্বরের সান্ত্বনাবাক্য কি তোমার জ্ঞানে ক্ষুদ্র? তোমার সহিত কোমল আলাপ কি ক্ষুদ্র?12 তোমার মন কেন তোমাকে বিপথে টানে? তোমার চক্ষু কেন মিট্মিট্ করে?13 তুমি ত ঈশ্বরের বিরুদ্ধে তোমার আত্মা ফিরাইতেছ, সেইরূপ কথা মুখ হইতে নির্গত করিতেছ।14 মর্ত্ত্য কি যে, সে পবিত্র হইতে পারে? অবলাজাত মনুষ্য কি ধার্ম্মিক হইতে পারে?15 দেখ, তিনি আপনার পবিত্রগণেও বিশ্বাস করেন না, তাঁহার দৃষ্টিতে আকাশও নির্ম্মল নহে।16 তবে যে ঘৃণার্হ ও ভ্রষ্ট, যে জন জলের মত অধর্ম্ম পান করে, সে কি!17 আমি তোমাকে বলি, আমার কথা শুন, আমি যাহা দেখিয়াছি তাহা প্রচার করিব।18 (জ্ঞানিগণ তাহা প্রকাশ করিয়াছেন, আপনাদের পিতৃলোক হইতে পাইয়া গুপ্ত রাখেন নাই;19 কেবল তাঁহাদিগকেই দেশ দত্ত হইয়াছিল, তাঁহাদের মধ্যে অপর লোক ভ্রমণ করিত না।)20 দুরাচার যাবজ্জীবন ক্লেশ পায়, দুর্দ্দান্তের বৎসর-সংখ্যা নিরূপিত আছে।21 তাহার কর্ণকুহরে ত্রাসের শব্দ আছে, শান্তির সময়ে বিনাশক তাহাকে আক্রমণ করে।22 সে বিশ্বাস করে না যে, অন্ধকার হইতে সে ফিরিয়া আসিবে, সে খড়্গের জন্য নির্দ্ধারিত।23 সে খাদ্যের চেষ্টায় ভ্রমণ করে, বলে, তাহা কোথায়? সে জানে, অন্ধকারের দিন তাহার সন্নিকট।24 সঙ্কট ও মনস্তাপ তাহাকে ভয় দেখায়, যুদ্ধার্থ সসজ্জ রাজার ন্যায় তাহার বিরুদ্ধে প্রবল হয়।25 কারণ সে ঈশ্বরের বিরুদ্ধে হস্ত বিস্তার করিয়াছে, সর্ব্বশক্তিমানের বিরুদ্ধে আস্ফালন করিয়াছে;26 সে উচ্চগ্রীব হইয়া তাঁহার বিরুদ্ধে দৌড়িতেছে; আপনার ঢালের স্থূল অংশ সকল দেখাইয়া দৌড়িতেছে।27 যেহেতু সে আপন মেদে মুখ ঢাকিত, সে আপন কটিদেশ হৃষ্টপুষ্ট করিত;28 সে বাস করিত উৎসন্ন নগরে, সেই সকল বাটীতে, যাহাতে কেহ বাস করিত না, যাহা প্রস্তররাশি হইবার জন্য নিরূপিত ছিল।29 সে ধনী হইবে না, তাহার সম্পত্তি থাকিবে না; তাহাদের ফল ভূমিতে নুইয়া পড়িবে না।30 সে অন্ধকার হইতে প্রস্থান করিবে না; অগ্নিশিখা তাহার শাখা শুষ্ক করিবে, সে তদীয় মুখের নিঃশ্বাসে উড়িয়া যাইবে।31 সে ভ্রান্ত হইয়া অলীকতায় বিশ্বাস না করুক, কেননা অলীকতাই তাহার বেতন হইবে;32 তাহার কালের পূর্ব্বেই তাহা পরিশোধ হইবে, তাহার শাখা সতেজ হইবে না।33 দ্রাক্ষালতার ন্যায় তাহার অপক্ব ফল ঝরিয়া পড়িবে, জিত বৃক্ষের ন্যায় তাহার পুষ্প খসিয়া পড়িবে।34 পামরদের মণ্ডলী বন্ধ্যা হইবে, অগ্নি উৎকোচ-তাম্বু সকল গ্রাস করিবে।35 তাহারা অনিষ্ট গর্ভে ধারণ করে, অন্যায় প্রসব করে, তাহাদের উদরে প্রতারণা প্রস্তুত হয়।