1. আর যর্দ্দনের পারস্থ সমুদয় রাজা, পর্ব্বতময় প্রদেশ ও নিম্নভূমিনিবাসী এবং লিবানোনের সম্মুখস্থ মহাসমুদ্রের সমস্ত তীরনিবাসী হিত্তীয়, ইমোরীয়, কনানীয়, পরিষীয়, হিব্বীয় ও যিবূষীয় রাজগণ এই কথা শুনিতে পাইয়া,
2. একযোগে যিহোশূয়ের ও ইস্রায়েলের সহিত যুদ্ধ করণার্থে একত্র হইলেন।
3. কিন্তু যিরীহোর প্রতি ও অয়ের প্রতি যিহোশূয় যাহা করিয়াছিলেন, তাহা যখন গিবিয়োন-নিবাসীরা শুনিল,
4. তখন তাহারাও চতুরতার সহিত কার্য্য করিল; ফলতঃ তাহারা গিয়া রাজদূতের বেশ ধারণ করিয়া আপন আপন গর্দ্দভের উপরে পুরাতন ছালা এবং দ্রাক্ষারসের পুরাতন, জীর্ণ ও তালীযুক্ত কুপা চাপাইল।
5. আর পায়ে পুরাতন ও তালীযুক্ত পাদুকা ও গাত্রে পুরাতন বস্ত্র দিল, এবং সমস্ত শুষ্ক ও ছাতাপড়া রুটী পাথেয় লইল।
6. পরে তাহারা গিল্গলস্থিত শিবিরে যিহোশূয়ের নিকটে গিয়া তাঁহাকে ও ইস্রায়েল লোকদিগকে কহিল, আমরা দূরদেশ হইতে আসিলাম; অতএব এখন আপনারা আমাদের সহিত নিয়ম স্থির করুন।
7. তখন ইস্রায়েল লোকেরা সেই হিব্বীয়দিগকে কহিল, কি জানি, তোমরা আমাদেরই মধ্যে বাস করিতেছ, তাহা হইলে আমরা তোমাদের সহিত কি প্রকারে নিয়ম স্থিত করিতে পারি?
8. তাহারা যিহোশূয়কে কহিল, আমরা আপনার দাস। তখন যিহোশূয় জিজ্ঞাসা করিলেন, তোমরা কাহারা? কোথা হইতে আসিলে? তাহারা কহিল,
9. আপনার দাস আমরা আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভুর নাম শুনিয়া অতি দূরদেশ হইতে আসিলাম, কেননা তাঁহার কীর্ত্তি, এবং তিনি মিসর দেশে যে কার্য্য করিয়াছেন,
10. আর যর্দ্দনের ওপারস্থ দুই ইমোরীয় রাজার প্রতি, হিষ্বোনের রাজা সীহোনের ও বাশনের রাজা অষ্টারোৎ-নিবাসী ওগের প্রতি যে কার্য্য করিয়াছেন, সমস্তই আমরা শুনিয়াছি।
11. আর আমাদের প্রাচীনবর্গ ও দেশনিবাসী লোক সকল আমাদিগকে কহিল, তোমরা যাত্রার জন্য হস্তে পাথেয় দ্রব্য লইয়া তাহাদের সহিত সাক্ষাৎ করিতে যাও, এবং তাহাদিগকে বল, আমরা আপনাদের দাস; অতএব এখন আপনারা আমাদের সহিত নিয়ম স্থির করুন।
12. আপনাদের নিকটে আসিবার নিমিত্ত যে দিন যাত্রা করি, সেই দিন আমরা গৃহ হইতে যে তপ্ত রুটী পাথেয় আনিয়াছিলাম, এই দেখুন, আমাদের সেই রুটী এখন শুষ্ক ও ছাতাপড়া।
13. আর যে সকল কুপা দ্রাক্ষারসে পূর্ণ করিয়াছিলাম, সেগুলি নূতন ছিল, এই দেখুন, সে সকল ছিঁড়িয়া গিয়াছে। আর আমাদের এই সকল বস্ত্র ও পাদুকা পুরাতন হইয়াছে, কেননা পথ অতি দূর।
14. তাহাতে লোকেরা তাহাদের খাদ্য দ্রব্য গ্রহণ করিল, কিন্তু সদাপ্রভুর অভিমত জিজ্ঞাসা করিল না,
15. আর যিহোশূয় তাহাদের সহিত সন্ধি করিয়া যাহাতে তাহারা বাঁচে, এমন নিয়ম করিলেন, এবং মণ্ডলীর অধ্যক্ষগণ তাহাদের কাছে শপথ করিলেন।
16. এইরূপে তাহাদের সহিত নিয়ম স্থির করিবার পরে তিন দিন গত হইলে উহারা শুনিতে পাইল, তাহারা আমাদের নিকটস্থ এবং আমাদের মধ্যে বাস করিতেছে।
17. পরে ইস্রায়েল-সন্তানগণ যাত্রা করিয়া তৃতীয় দিবসে তাহাদের নগর সকলের কাছে উপস্থিত হইল। সেই সকল নগরের নাম গিবিয়োন, কফীরা, বেরোৎ ও কিরিয়ৎ-যিয়ারীম।
18. মণ্ডলীর অধ্যক্ষগণ ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর নামে তাহাদের কাছে দিব্য করিয়াছিলেন বলিয়া ইস্রায়েল-সন্তানগণ তাহাদিগকে আঘাত করিল না, কিন্তু সমস্ত মণ্ডলী অধ্যক্ষগণের বিরুদ্ধে বচসা করিতে লাগিল।
19. তাহাতে অধ্যক্ষেরা সকলে সমস্ত মণ্ডলীকে কহিলেন, আমরা উহাদের কাছে ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর নামে দিব্য করিয়াছি, অতএব এখন উহাদিগকে স্পর্শ করিতে পারি না।
20. আমরা উহাদের প্রতি ইহাই করিব, উহাদিগকে জীবিত রাখিব, নতুবা উহাদের কাছে যে দিব্য করিয়াছি, তৎপ্রযুক্ত আমাদের প্রতি ক্রোধ উপস্থিত হইবে।
21. অতএব অধ্যক্ষগণ তাহাদিগকে কহিলেন, উহারা জীবিত থাকুক; কিন্তু অধ্যক্ষগণের কথানুসারে তাহারা সমস্ত মণ্ডলীর নিমিত্ত কাষ্ঠছেদক ও জলবাহক হইল।
22. আর যিহোশূয় তাহাদিগকে ডাকাইয়া কহিলেন, তোমরা ত আমাদেরই মধ্যে বাস করিতেছ; তবে আমরা তোমাদের হইতে অতি দূরে থাকি, এই কথা বলিয়া কেন আমাদিগকে প্রবঞ্চনা করিলে?
23. এই নিমিত্ত তোমরা শাপগ্রস্ত হইলে; আমার ঈশ্বরের গৃহের নিমিত্তে কাষ্ঠছেদন ও জলবহন, এই দাস্যকর্ম্ম হইতে তোমরা কখনও মুক্তি পাইবে না।
24. তাহারা যিহোশূয়কে উত্তর করিয়া বলিল, আপনাদিগকে এই সমস্ত দেশ দিবার জন্য ও আপনাদের সম্মুখ হইতে এই দেশনিবাসী সমস্ত লোককে বিনাশ করিবার জন্য আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভু যে আপন দাস মোশিকে আজ্ঞা করিয়াছিলেন, তাহার নিশ্চিত সংবাদ আপনার দাস আমরা পাইয়াছিলাম, তজ্জন্য আমরা আপনাদের হইতে প্রাণভয়ে অতিশয় ভীত হইয়া এই কার্য্য করিয়াছি।
25. এখন দেখুন, আমরা আপনারই হস্তগত, আমাদের প্রতি যাহা করা আপনার ভাল ও ন্যায্য বোধ হয়, তাহাই করুন।
26. পরে তিনি তাহাদের প্রতি তাহাই করিলেন, ও ইস্রায়েল-সন্তানগণের হস্ত হইতে তাহাদিগকে রক্ষা করিলেন, তাহাতে তাহারা তাহাদিগকে বধ করিল না।
27. আর সদাপ্রভুর মনোনীত স্থানে মণ্ডলীর ও সদাপ্রভুর যজ্ঞবেদির নিমিত্ত কাষ্ঠছেদন ও জলবহন কর্ম্মে যিহোশূয় সেই দিবসে তাহাদিগকে নিযুক্ত করিলেন; তাহারা অদ্য পর্য্যন্ত তাহা করিতেছে।