2. তাহাতে সদাপ্রভু হাৎ-সোরে রাজত্বকারী কনান-রাজ যাবীনের হস্তে তাহাদিগকে বিক্রয় করিলেন। জাতিগণের হরোশৎ-নিবাসী সীষরা তাঁহার সেনাপতি ছিলেন।
|
3. আর ইস্রায়েল-সন্তানগণ সদাপ্রভুর কাছে ক্রন্দন করিল, কেননা তাঁহার নয় শত লৌহরথ ছিল; এবং তিনি বিংশতি বৎসর পর্য্যন্ত ইস্রায়েলের প্রতি কঠোর দৌরাত্ম্য করিয়াছিলেন।
|
5. তিনি পর্ব্বতময় ইফ্রয়িম প্রদেশে রামার ও বৈথেলের মধ্যে স্থিত দবোরার খর্জ্জুর বৃক্ষ তলে অবস্থিতি করিতেন, এবং ইস্রায়েল-সন্তানগণ বিচারার্থে তাঁহার নিকটে উঠিয়া আসিত।
|
6. পরে তিনি লোক পাঠাইয়া কেদশ-নপ্তালি হইতে অবীনোয়মের পুত্র বারককে ডাকাইয়া কহিলেন, ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু কি এই আজ্ঞা করেন নাই, তাবোর পর্ব্বতে লোক লইয়া যাও, নপ্তালি-সন্তানগণের ও সবূলূন-সন্তানগণের দশ সহস্র লোক সঙ্গে করিয়া লও;
|
7. তাহাতে আমি যাবীনের সেনাপতি সীষরাকে এবং তাহার রথ সকল ও লোকসমূহকে কীশোন নদীর সমীপে তোমার নিকটে আকর্ষণ করিব; এবং তাহাকে তোমার হস্তে সমর্পণ করিব?
|
8. তখন বারক তাঁহাকে কহিলেন, তুমি যদি আমার সঙ্গে যাও, তবে আমি যাইব; কিন্তু তুমি আমার সঙ্গে না গেলে আমি যাইব না।
|
9. দবোরা কহিলেন, আমি অবশ্য তোমার সঙ্গে যাইব, কিন্তু এই যাত্রায় তোমার যশ হইবে না; কেননা সদাপ্রভু সীষরাকে একটী স্ত্রীলোকের হস্তে বিক্রয় করিবেন। পরে দবোরা উঠিয়া বারকের সহিত কেদশে গমন করিলেন।
|
10. পরে বারক কেদশে সবূলূন ও নপ্তালিকে ডাকাইলেন; আর দশ সহস্র লোক তাঁহার পশ্চাতে পশ্চাতে যাত্রা করিল, এবং দবোরাও তাঁহার সহিত গেলেন।
|
11. ঐ সময়ে কেনীয় হেবর কেনীয়দের হইতে, মোশির সম্বন্ধী হোববের সন্তানদের হইতে, পৃথক্ হইয়া কেদশের নিকটবর্ত্তী সানন্নীমস্থ এলোন বৃক্ষ পর্য্যন্ত তাম্বু স্থাপন করিয়াছিলেন।
|
13. তখন সীষরা আপন সমস্ত রথ অর্থাৎ নয় শত লৌহরথ এবং আপন সঙ্গী লোক সকলকে একত্র ডাকাইয়া জাতিগণের হরোশৎ হইতে কীশোন নদীর সমীপে গমন করিলেন।
|
14. তখন দবোরা বারককে কহিলেন, উঠ, কেননা অদ্যই সদাপ্রভু তোমার হস্তে সীষরাকে সমর্পণ করিয়াছেন; সদাপ্রভু কি তোমার অগ্রে অগ্রে যান নাই? তখন বারক ও তাঁহার অনুগামী দশ সহস্র লোক তাবোর পর্ব্বত হইতে নামিলেন।
|
15. পরে সদাপ্রভু বারকের সম্মুখে সীষরাকে এবং তাঁহার সমস্ত রথ ও সমস্ত সৈন্যকে খড়গধারে ছিন্ন ভিন্ন করিলেন; আর সীষরা রথ হইতে নামিয়া পদব্রজে পলায়ন করিলেন।
|
16. এবং বারক জাতিগণের হরোশৎ পর্য্যন্ত তাঁহার রথ সমূহের ও সৈন্যগণের পশ্চাতে ধাবমান হইলে সীষরার সমস্ত সৈন্য খড়গধারে পতিত হইল; এক জনও অবশিষ্ট রহিল না।
|
17. কিন্তু সীষরা পদব্রজে পলাইয়া কেনীয় হেবরের স্ত্রী যায়েলের তাম্বুর দিকে গেলেন; কেননা হাৎসোরের যাবীন রাজাতে ও কেনীয় হেবরের কুলে তখন ঐক্য ছিল।
|
18. আর যায়েল সীষরার সঙ্গে দেখা করিতে বাহির হইয়া তাঁহাকে কহিলেন, হে আমার প্রভু, ফিরিয়া আইসুন, আমার এখানে আইসুন, ভীত হইবেন না। তখন তিনি তাঁহার দিকে ফিরিয়া তাম্বুমধ্যে গেলে সেই স্ত্রী এক কম্বল দিয়া তাঁহাকে ঢাকিয়া রাখিলেন।
|
19. আর সীষরা তাঁহাকে কহিলেন, বিনয় করি, আমাকে একটু খাবার জল দেও, আমি পিপাসিত হইয়াছি। তাহাতে তিনি দুগ্ধের কুপা খুলিয়া পান করিতে দিলেন ও তাঁহাকে ঢাকিয়া রাখিলেন।
|
20. পরে সীষরা তাঁহাকে কহিলেন, তুমি তাম্বুদ্বারে দাঁড়াইয়া থাক; যদি কেহ আসিয়া জিজ্ঞাসা করে, এখানে কি কোন মানুষ আছে? তবে বলিও, কেহ নাই।
|
21. পরে হেবরের স্ত্রী যায়েল তাম্বুর এক গোঁজ লইলেন, ও মুদগর হস্তে করিয়া ধীরে ধীরে তাঁহার নিকটে গিয়া তাঁহার কর্ণমূলে গোঁজ এমন বিদ্ধ করিলেন যে, তাহা মৃত্তিকায় প্রবেশ করিল; কারণ তিনি নিদ্রাগত ছিলেন; এইরূপে তিনি মূর্চ্ছিত হইয়া মরিয়া গেলেন।
|
22. আর দেখ, বারক সীষরার পশ্চাতে তাড়া করিয়া যাইতে ছিলেন; তখন যায়েল তাঁহার সঙ্গে দেখা করিতে বাহিরে আসিয়া কহিলেন, আইস, তুমি যাহার অন্বেষণ করিতেছ, সেই মানুষ আমি তোমাকে দেখাই, তাহাতে তিনি তাঁহার তাম্বুতে প্রবেশ করিলেন, আর দেখ, সীষরা মৃত পড়িয়া আছেন, ও তাঁহার কর্ণমূলে গোঁজ বিদ্ধ রহিয়াছে।
|
24. আর ইস্রায়েল-সন্তানগণ যে পর্য্যন্ত কনান-রাজ যাবীনকে বিনষ্ট না করিল, সে পর্য্যন্ত কনান-রাজ যাবীনের বিরুদ্ধে তাহাদের হস্ত উত্তর উত্তর প্রবল হইয়া উঠিল।
|