1. পরে ফরীশীরা ও সদ্দূকীরা নিকটে আসিয়া পরীক্ষা ভাবে তাঁহাকে নিবেদন করিল, যেন তিনি তাহাদিগকে আকাশ হইতে কোন চিহ্ন দেখান।
2. কিন্তু তিনি উত্তর করিয়া তাহাদিগকে কহিলেন, সন্ধ্যা হইলে তোমরা বলিয়া থাক, পরিষ্কার দিন হইবে, কারণ আকাশ লাল হইয়াছে।
3. আর প্রাতঃকালে বলিয়া থাক, আজ ঝড় হইবে, কারণ আকাশ লাল ও ঘোর হইয়াছে। তোমরা আকাশের লক্ষণ বুঝিতে পার, কিন্তু কালের চিহ্ন সকল বুঝিতে পার না।
4. এই কালের দুষ্ট ও ব্যভিচারী লোকেরা চিহ্নের অন্বেষণ করে, কিন্তু যোনার চিহ্ন ব্যতিরেকে আর কোন চিহ্ন তাহাদিগকে দেওয়া যাইবে না। তখন তিনি তাহাদিগকে ত্যাগ করিয়া চলিয়া গেলেন।
5. শিষ্যেরা অন্য পারে যাইবার সময়ে রুটী লইতে ভুলিয়া গিয়াছিলেন।
6. যীশু তাঁহাদিগকে কহিলেন, তোমরা সতর্ক হও, ফরীশী ও সদ্দূকীদের তাড়ী হইতে সাবধান থাক।
7. তখন তাঁহারা পরস্পর তর্ক করিয়া কহিতে লাগিলেন, আমরা যে রুটী আনি নাই।
8. তাহা বুঝিয়া যীশু কহিলেন, হে অল্পবিশ্বাসীরা, তোমাদের রুটী নাই বলিয়া কেন পরস্পর তর্ক করিতেছ?
9. এখনও কি বুঝ না, মনেও কি পড়ে না, সেই পাঁচ সহস্রের খাদ্য পাঁচখানি রুটী, আর কত ডালা তুলিয়া লইয়াছিলে?
10. এবং সেই চারি সহস্রের খাদ্য সাতখানি রুটী, আর কত ঝুড়ি তুলিয়া লইয়াছিলে?
11. তোমরা কেন বুঝ না যে, আমি তোমাদিগকে রুটীর বিষয় বলি নাই? কিন্তু তোমরা ফরীশী ও সদ্দূকীদের তাড়ী হইতে সাবধান থাক।
12. তখন তাঁহারা বুঝিলেন, তিনি রুটীর তাড়ী হইতে নয়, কিন্তু ফরীশী ও সদ্দূকীদের শিক্ষা হইতে সাবধান থাকিবার কথা বলিয়াছেন।
13. পরে যীশু কৈসরিয়া-ফিলিপীর অঞ্চলে গিয়া আপন শিষ্যদিগকে জিজ্ঞাসা করিলেন, মনুষ্যপুত্র কে, এ বিষয়ে লোকে কি বলে?
14. তাঁহারা কহিলেন, কেহ কেহ বলে, আপনি যোহন বাপ্তাইজক; কেহ কেহ বলে, আপনি এলিয়; আর কেহ কেহ বলে, আপনি যিরমিয় কিম্বা ভাববাদিগণের কোন এক জন।
15. তিনি তাঁহাদিগকে বলিলেন, কিন্তু তোমরা কি বল, আমি কে?
16. শিমোন পিতর উত্তর করিয়া কহিলেন, আপনি সেই খ্রীষ্ট, জীবন্ত ঈশ্বরের পুত্র।
17. যীশু উত্তর করিয়া তাঁহাকে কহিলেন, হে যোনার পুত্র শিমোন, ধন্য তুমি! কেননা রক্তমাংস তোমার নিকটে ইহা প্রকাশ করে নাই, কিন্তু আমার স্বর্গস্থ পিতা প্রকাশ করিয়াছেন।
18. আর আমিও তোমাকে কহিতেছি, তুমি পিতর, আর এই পাথরের উপরে আমি আপন মণ্ডলী গাঁথিব, আর পাতালের পুরদ্বার সকল তাহার বিপক্ষে প্রবল হইবে না।
19. আমি তোমাকে স্বর্গ-রাজ্যের চাবিগুলিন দিব; আর তুমি পৃথিবীতে যাহা কিছু বদ্ধ করিবে, তাহা স্বর্গে বদ্ধ হইবে, এবং পৃথিবীতে যাহা কিছু মুক্ত করিবে, তাহা স্বর্গে মুক্ত হইবে।
20. তখন তিনি শিষ্যদিগকে এই আজ্ঞা দিলেন, আমি যে সেই খ্রীষ্ট, এ কথা কাহাকেও বলিও না।
21. সেই সময় অবধি যীশু আপন শিষ্যদিগকে স্পষ্টই বলিতে লাগিলেন যে, তাঁহাকে যিরূশালেমে যাইতে হইবে, এবং প্রাচীনবর্গের, প্রধান যাজকদের ও অধ্যাপকদের হইতে অনেক দুঃখ ভোগ করিতে হইবে, ও হত হইতে হইবে, আর তৃতীয় দিবসে উঠিতে হইবে।
22. ইহাতে পিতর তাঁহাকে কাছে লইয়া অনুযোগ করিতে লাগিলেন, বলিলেন, প্রভু, ইহা আপনা হইতে দূরে থাকুক, ইহা আপনার প্রতি কখনও ঘটিবে না।
23. কিন্তু তিনি মুখ ফিরাইয়া পিতরকে কহিলেন, আমার সম্মুখ হইতে দূর হও, শয়তান, তুমি আমার বিঘ্নস্বরূপ; কেননা যাহা ঈশ্বরের, তাহা নয়, কিন্তু যাহা মনুষ্যের তাহাই তুমি ভাবিতেছ।
24. তখন যীশু আপন শিষ্যদিগকে কহিলেন, কেহ যদি আমার পশ্চাৎ আসিতে ইচ্ছা করে, তবে সে আপনাকে অস্বীকার করুক, আপন ক্রুশ তুলিয়া লউক, এবং আমার পশ্চাদগামী হউক।
25. কেননা যে কেহ আপন প্রাণ রক্ষা করিতে ইচ্ছা করে, সে তাহা হারাইবে, আর যে কেহ আমার নিমিত্তে আপন প্রাণ হারায়, সে তাহা পাইবে।
26. বস্তুতঃ মনুষ্য যদি সমুদয় জগৎ লাভ করিয়া আপন প্রাণ হারায়, তবে তাহার কি লাভ হইবে? কিম্বা মনুষ্য আপন প্রাণের পরিবর্ত্তে কি দিবে?
27. কেননা মনুষ্যপুত্র আপন দূতগণের সহিত আপন পিতার প্রতাপে আসিবেন, আর তখন প্রত্যেক ব্যক্তিকে তাহার ক্রিয়ানুসারে প্রতিফল দিবেন।
28. আমি তোমাদিগকে সত্য কহিতেছি, যাহারা এখানে দাঁড়াইয়া রহিয়াছে, তাহাদের মধ্যে এমন কয়েক জন আছে, যাহারা কোন মতে মৃত্যুর আস্বাদ পাইবে না, যে পর্য্যন্ত মনুষ্যপুত্রকে আপনার রাজ্যে আসিতে না দেখিবে।