পবিত্র বাইবেল

গডস গ্রেইস গিফট
মার্ক
1. পরে ধর্ম্মধাম হইতে বাহিরে যাইবার সময়ে তাঁহার শিষ্যগণের মধ্যে এক জন তাঁহাকে কহিলেন, হে গুরু, দেখুন, কেমন পাথর ও কেমন গাঁথনি!
2. যীশু তাঁহাকে কহিলেন, তুমি কি এই সকল বড় বড় গাঁথনি দেখিতেছ? ইহার একখানি পাথর আর একখানি পাথরের উপরে থাকিবে না, সকলই ভূমিসাৎ হইবে।
3. পরে তিনি জৈতুন পর্ব্বতে ধর্ম্মধামের সম্মুখে বসিলে পিতর, যাকোব, যোহন ও আন্দ্রিয় বিরলে তাঁহাকে জিজ্ঞাসা করিলেন,
4. আমাদিগকে বলুন দেখি, এই সকল ঘটনা কখন্‌ হইবে? আর এই সমস্তের সিদ্ধি নিকটবর্ত্তী হইবার চিহ্নই বা কি?
5. যীশু তাঁহাদিগকে বলিতে লাগিলেন, দেখিও, কেহ যেন তোমাদিগকে না ভুলায়।
6. অনেকে আমার নাম ধরিয়া আসিবে, বলিবে, আমিই সেই, আর অনেক লোককে ভুলাইবে।
7. কিন্তু তোমরা যখন যুদ্ধের কথা ও যুদ্ধের জনরব শুনিবে, তখন ব্যাকুল হইও না; এ সকল অবশ্যই ঘটিবে, কিন্তু তখনও শেষ নয়।
8. কারণ জাতির বিপক্ষে জাতি, ও রাজ্যের বিপক্ষে রাজ্য উঠিবে। স্থানে স্থানে ভূমিকম্প হইবে; দুর্ভিক্ষ হইবে; এ সকল যাতনার আরম্ভমাত্র।
9. তোমরা আপনাদের বিষয়ে সাবধান। লোকে তোমাদিগকে বিচার-সভায় সমর্পণ করিবে, এবং তোমরা সমাজ-গৃহে প্রহারিত হইবে; আর আমার জন্য তোমরা দেশাধ্যক্ষ ও রাজাদের কাছে সাক্ষ্য দিবার নিমিত্ত তাহাদের সম্মুখে দাঁড়াইবে।
10. আর অগ্রে সর্ব্বজাতির কাছে সুসমাচার প্রচারিত হওয়া আবশ্যক।
11. কিন্তু লোকে যখন তোমাদিগকে সমর্পণ করিতে লইয়া যাইবে, তখন কি বলিবে, অগ্রে সে জন্য ভাবিত হইও না; বরং সেই দণ্ডে যে কথা তোমাদিগকে দেওয়া যাইবে, তাহাই বলিও; কেননা তোমরাই যে কথা বলিবে, তাহা নয়, কিন্তু পবিত্র আত্মাই বলিবেন।
12. তখন ভ্রাতা ভ্রাতাকে ও পিতা সন্তানকে মৃত্যুতে সমর্পণ করিবে; এবং সন্তানেরা আপন আপন মাতাপিতার বিপক্ষে উঠিয়া তাহাদিগকে বধ করাইবে।
13. আর আমার নাম প্রযুক্ত তোমরা সকলের ঘৃণিত হইবে; কিন্তু যে কেহ শেষ পর্য্যন্ত স্থির থাকিবে, সেই পরিত্রাণ পাইবে।
14. পরন্তু যখন তোমরা দেখিবে, ধ্বংসের সেই ঘৃণার্হ বস্তু যেখানে দাঁড়াইবার নয়, সেইখানে দাঁড়াইয়া আছে—যে পাঠ করে, সে বুঝুক, —তখন যাহারা যিহূদিয়াতে থাকে, তাহারা পাহাড় অঞ্চলে পলায়ন করুক;
15. এবং যে কেহ ছাদের উপরে থাকে, সে গৃহ হইতে জিনিষপত্র লইবার জন্য নীচে না নামুক ও তাহার মধ্যে প্রবেশ না করুক;
16. এবং যে কেহ ক্ষেত্রে থাকে, সে আপন বস্ত্র লইবার নিমিত্ত পশ্চাতে ফিরিয়া না যাউক।
17. হায়, সেই সময়ে গর্ভবতী এবং স্তন্যদাত্রী নারীদের সন্তাপ!
18. আর প্রার্থনা করিও, যেন ইহা শীতকালে না হয়।
19. কেননা তৎকালে এরূপ ক্লেশ উপস্থিত হইবে, যেরূপ ক্লেশ ঈশ্বরের কৃত সৃষ্টির আদি অবধি এ পর্য্যন্ত কখনও হয় নাই, কখন হইবেও না।
20. আর প্রভু যদি সেই দিনের সংখ্যা কমাইয়া না দিতেন, তবে কোন প্রাণীই রক্ষা পাইত না; কিন্তু তিনি যাহাদিগকে মনোনীত করিয়াছেন, সেই মনোনীতদের জন্য সেই দিনের সংখ্যা কমাইয়া দিলেন।
21. আর তৎকালে যদি কেহ তোমাদিগকে বলে, দেখ, সেই খ্রীষ্ট এখানে, কিম্বা দেখ, ওখানে, তোমরা বিশ্বাস করিও না।
22. কেননা ভাক্ত খ্রীষ্টেরা ও ভাক্ত ভাববাদীরা উঠিবে, এবং নানা চিহ্ন ও অদ্ভুদ লক্ষণ দেখাইবে, যেন, যদি হইতে পারে, তবে মনোনীতদিগকেও ভুলায়।
23. কিন্তু তোমরা সাবধান থাকিও। দেখ, আমি পূর্ব্বেই তোমাদিগকে সকলই জানাইলাম।
24. আর সেই সময়ে, সেই ক্লেশের পরে, সূর্য্য অন্ধকার হইবে, চন্দ্র জ্যোৎস্না দিবে না,
25. আকাশ হইতে তারাগণের পতন হইবে, ও আকাশমণ্ডলের পরাক্রম সকল বিচলিত হইবে।
26. আর তখন লোকেরা দেখিবে, মনুষ্যপুত্র মহাপরাক্রম ও প্রতাপের সহিত মেঘযোগে আসিতেছেন।
27. তখন তিনি দূতগণকে প্রেরণ করিয়া পৃথিবীর সীমা অবধি আকাশের সীমা পর্য্যন্ত চারি বায়ু হইতে তাঁহার মনোনীতদিগকে একত্র করিবেন।
28. আর ডুমুরগাছ হইতে দৃষ্টান্ত শিখ; যখন তাহার শাখা কোমল হইয়া পত্র বাহির করে, তখন তোমরা জানিতে পাও গ্রীষ্মকাল সন্নিকট;
29. সেইরূপ তোমরা ঐ সকল ঘটনা দেখিলেই জানিতে পাইবে, তিনি সন্নিকট, এমন কি, দ্বারে উপস্থিত।
30. আমি তোমাদিগকে সত্য কহিতেছি, যে পর্য্যন্ত এ সমস্ত সিদ্ধ না হইবে, সে পর্য্যন্ত এই কালের লোকদের লোপ হইবে না।
31. আকাশের ও পৃথিবীর লোপ হইবে, কিন্তু আমার বাক্যের লোপ কখনও হইবে না।
32. কিন্তু সেই দিনের বা সেই দণ্ডের তত্ত্ব কেহই জানে না; স্বর্গস্থ দূতগণও জানেন না, পুত্রও জানেন না, কেবল পিতা জানেন।
33. সাবধান, তোমরা জাগিয়া থাকিও ও প্রার্থনা করিও; কেননা সে সময় কবে হইবে, তাহা জান না।
34. কোন ব্যক্তি যেন আপন বাটী ছাড়িয়া বিদেশে গিয়া প্রবাস করিতেছেন; আর তিনি আপন দাসদিগকে ক্ষমতা দিয়াছেন, প্রত্যেকের কার্য্য নিরূপণ করিয়া দিয়াছেন, এবং দ্বারীকে জাগিয়া থাকিতে আদেশ করিয়াছেন।
35. অতএব তোমরা জাগিয়া থাকিও, কেননা গৃহের কর্ত্তা কখন আসিবেন, কি সন্ধ্যাকালে, কি দুই প্রহর রাত্রিতে, কি কুকুড়াডাকের সময়ে, কি প্রাতঃকালে, তোমরা তাহা জান না;
36. তিনি হঠাৎ আসিয়া যেন তোমাদিগকে নিদ্রিত না দেখিতে পান।
37. আর আমি তোমাদিগকে যাহা বলিতেছি, তাহাই সকলকে বলি, জাগিয়া থাকিও।

Notes

No Verse Added

Total 16 Chapters, Current Chapter 13 of Total Chapters 16
1 2 3 4
5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16
মার্ক 13
1. পরে ধর্ম্মধাম হইতে বাহিরে যাইবার সময়ে তাঁহার শিষ্যগণের মধ্যে এক জন তাঁহাকে কহিলেন, হে গুরু, দেখুন, কেমন পাথর কেমন গাঁথনি!
2. যীশু তাঁহাকে কহিলেন, তুমি কি এই সকল বড় বড় গাঁথনি দেখিতেছ? ইহার একখানি পাথর আর একখানি পাথরের উপরে থাকিবে না, সকলই ভূমিসাৎ হইবে।
3. পরে তিনি জৈতুন পর্ব্বতে ধর্ম্মধামের সম্মুখে বসিলে পিতর, যাকোব, যোহন আন্দ্রিয় বিরলে তাঁহাকে জিজ্ঞাসা করিলেন,
4. আমাদিগকে বলুন দেখি, এই সকল ঘটনা কখন্‌ হইবে? আর এই সমস্তের সিদ্ধি নিকটবর্ত্তী হইবার চিহ্নই বা কি?
5. যীশু তাঁহাদিগকে বলিতে লাগিলেন, দেখিও, কেহ যেন তোমাদিগকে না ভুলায়।
6. অনেকে আমার নাম ধরিয়া আসিবে, বলিবে, আমিই সেই, আর অনেক লোককে ভুলাইবে।
7. কিন্তু তোমরা যখন যুদ্ধের কথা যুদ্ধের জনরব শুনিবে, তখন ব্যাকুল হইও না; সকল অবশ্যই ঘটিবে, কিন্তু তখনও শেষ নয়।
8. কারণ জাতির বিপক্ষে জাতি, রাজ্যের বিপক্ষে রাজ্য উঠিবে। স্থানে স্থানে ভূমিকম্প হইবে; দুর্ভিক্ষ হইবে; সকল যাতনার আরম্ভমাত্র।
9. তোমরা আপনাদের বিষয়ে সাবধান। লোকে তোমাদিগকে বিচার-সভায় সমর্পণ করিবে, এবং তোমরা সমাজ-গৃহে প্রহারিত হইবে; আর আমার জন্য তোমরা দেশাধ্যক্ষ রাজাদের কাছে সাক্ষ্য দিবার নিমিত্ত তাহাদের সম্মুখে দাঁড়াইবে।
10. আর অগ্রে সর্ব্বজাতির কাছে সুসমাচার প্রচারিত হওয়া আবশ্যক।
11. কিন্তু লোকে যখন তোমাদিগকে সমর্পণ করিতে লইয়া যাইবে, তখন কি বলিবে, অগ্রে সে জন্য ভাবিত হইও না; বরং সেই দণ্ডে যে কথা তোমাদিগকে দেওয়া যাইবে, তাহাই বলিও; কেননা তোমরাই যে কথা বলিবে, তাহা নয়, কিন্তু পবিত্র আত্মাই বলিবেন।
12. তখন ভ্রাতা ভ্রাতাকে পিতা সন্তানকে মৃত্যুতে সমর্পণ করিবে; এবং সন্তানেরা আপন আপন মাতাপিতার বিপক্ষে উঠিয়া তাহাদিগকে বধ করাইবে।
13. আর আমার নাম প্রযুক্ত তোমরা সকলের ঘৃণিত হইবে; কিন্তু যে কেহ শেষ পর্য্যন্ত স্থির থাকিবে, সেই পরিত্রাণ পাইবে।
14. পরন্তু যখন তোমরা দেখিবে, ধ্বংসের সেই ঘৃণার্হ বস্তু যেখানে দাঁড়াইবার নয়, সেইখানে দাঁড়াইয়া আছে—যে পাঠ করে, সে বুঝুক, —তখন যাহারা যিহূদিয়াতে থাকে, তাহারা পাহাড় অঞ্চলে পলায়ন করুক;
15. এবং যে কেহ ছাদের উপরে থাকে, সে গৃহ হইতে জিনিষপত্র লইবার জন্য নীচে না নামুক তাহার মধ্যে প্রবেশ না করুক;
16. এবং যে কেহ ক্ষেত্রে থাকে, সে আপন বস্ত্র লইবার নিমিত্ত পশ্চাতে ফিরিয়া না যাউক।
17. হায়, সেই সময়ে গর্ভবতী এবং স্তন্যদাত্রী নারীদের সন্তাপ!
18. আর প্রার্থনা করিও, যেন ইহা শীতকালে না হয়।
19. কেননা তৎকালে এরূপ ক্লেশ উপস্থিত হইবে, যেরূপ ক্লেশ ঈশ্বরের কৃত সৃষ্টির আদি অবধি পর্য্যন্ত কখনও হয় নাই, কখন হইবেও না।
20. আর প্রভু যদি সেই দিনের সংখ্যা কমাইয়া না দিতেন, তবে কোন প্রাণীই রক্ষা পাইত না; কিন্তু তিনি যাহাদিগকে মনোনীত করিয়াছেন, সেই মনোনীতদের জন্য সেই দিনের সংখ্যা কমাইয়া দিলেন।
21. আর তৎকালে যদি কেহ তোমাদিগকে বলে, দেখ, সেই খ্রীষ্ট এখানে, কিম্বা দেখ, ওখানে, তোমরা বিশ্বাস করিও না।
22. কেননা ভাক্ত খ্রীষ্টেরা ভাক্ত ভাববাদীরা উঠিবে, এবং নানা চিহ্ন অদ্ভুদ লক্ষণ দেখাইবে, যেন, যদি হইতে পারে, তবে মনোনীতদিগকেও ভুলায়।
23. কিন্তু তোমরা সাবধান থাকিও। দেখ, আমি পূর্ব্বেই তোমাদিগকে সকলই জানাইলাম।
24. আর সেই সময়ে, সেই ক্লেশের পরে, সূর্য্য অন্ধকার হইবে, চন্দ্র জ্যোৎস্না দিবে না,
25. আকাশ হইতে তারাগণের পতন হইবে, আকাশমণ্ডলের পরাক্রম সকল বিচলিত হইবে।
26. আর তখন লোকেরা দেখিবে, মনুষ্যপুত্র মহাপরাক্রম প্রতাপের সহিত মেঘযোগে আসিতেছেন।
27. তখন তিনি দূতগণকে প্রেরণ করিয়া পৃথিবীর সীমা অবধি আকাশের সীমা পর্য্যন্ত চারি বায়ু হইতে তাঁহার মনোনীতদিগকে একত্র করিবেন।
28. আর ডুমুরগাছ হইতে দৃষ্টান্ত শিখ; যখন তাহার শাখা কোমল হইয়া পত্র বাহির করে, তখন তোমরা জানিতে পাও গ্রীষ্মকাল সন্নিকট;
29. সেইরূপ তোমরা সকল ঘটনা দেখিলেই জানিতে পাইবে, তিনি সন্নিকট, এমন কি, দ্বারে উপস্থিত।
30. আমি তোমাদিগকে সত্য কহিতেছি, যে পর্য্যন্ত সমস্ত সিদ্ধ না হইবে, সে পর্য্যন্ত এই কালের লোকদের লোপ হইবে না।
31. আকাশের পৃথিবীর লোপ হইবে, কিন্তু আমার বাক্যের লোপ কখনও হইবে না।
32. কিন্তু সেই দিনের বা সেই দণ্ডের তত্ত্ব কেহই জানে না; স্বর্গস্থ দূতগণও জানেন না, পুত্রও জানেন না, কেবল পিতা জানেন।
33. সাবধান, তোমরা জাগিয়া থাকিও প্রার্থনা করিও; কেননা সে সময় কবে হইবে, তাহা জান না।
34. কোন ব্যক্তি যেন আপন বাটী ছাড়িয়া বিদেশে গিয়া প্রবাস করিতেছেন; আর তিনি আপন দাসদিগকে ক্ষমতা দিয়াছেন, প্রত্যেকের কার্য্য নিরূপণ করিয়া দিয়াছেন, এবং দ্বারীকে জাগিয়া থাকিতে আদেশ করিয়াছেন।
35. অতএব তোমরা জাগিয়া থাকিও, কেননা গৃহের কর্ত্তা কখন আসিবেন, কি সন্ধ্যাকালে, কি দুই প্রহর রাত্রিতে, কি কুকুড়াডাকের সময়ে, কি প্রাতঃকালে, তোমরা তাহা জান না;
36. তিনি হঠাৎ আসিয়া যেন তোমাদিগকে নিদ্রিত না দেখিতে পান।
37. আর আমি তোমাদিগকে যাহা বলিতেছি, তাহাই সকলকে বলি, জাগিয়া থাকিও।
Total 16 Chapters, Current Chapter 13 of Total Chapters 16
1 2 3 4
5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16
×

Alert

×

bengali Letters Keypad References