1. দায়ূদের সময়ে ক্রমাগত তিন বৎসর দুর্ভিক্ষ হয়; তাহাতে দায়ূদ সদাপ্রভুর কাছে জিজ্ঞাসা করিলে সদাপ্রভু উত্তর করিলেন, শৌলে ও তাহার কুলে রক্তপাতের দোষ রহিয়াছে, কেননা সে গিবিয়োনীয়দিগকে বধ করিয়াছিল।
2. তাহাতে রাজা গিবিয়োনীয়দিগকে ডাকাইয়া তাহাদের সহিত আলাপ করিলেন। গিবিয়োনীয়েরা ইস্রায়েল-সন্তান নয়, ইহারা ইমোরীয়দের অবশিষ্টাংশের লোক, এবং ইস্রায়েল-সন্তানগণ তাহাদের কাছে দিব্য করিয়াছিল, কিন্তু শৌল ইস্রায়েল ও যিহূদা-সন্তানদের পক্ষে উদ্যোগী হইয়া তাহাদিগকে বধ করিতে চেষ্টা করিয়াছিলেন।
3. দায়ূদ গিবিয়োনীয়দিগকে কহিলেন, আমি তোমাদের জন্য কি করিব? তোমরা যেন সদাপ্রভুর অধিকারকে আশীর্ব্বাদ কর, এই জন্য আমি কি দিয়া প্রায়শ্চিত্ত করিব?
4. গিবিয়োনীয়েরা তাঁহাকে কহিল, শৌলের সহিত কিম্বা তাহার কুলের সহিত আমাদের রৌপ্য কি স্বর্ণ বিষয়ক বিবাদ নাই, আবার ইস্রায়েলের মধ্যে কাহাকেও বধ করা আমাদের কার্য্য নয়। পরে তিনি কহিলেন, তবে তোমরা কি বল? আমি তোমাদের জন্য কি করিব?
5. তাহারা রাজাকে কহিল, যে ব্যক্তি আমাদের সংহার করিয়াছে, ও আমরা যেন ইস্রায়েলের সীমার মধ্যে কোথাও তিষ্ঠিতে না পারি, বিনষ্ট হই, এই জন্য কুমন্ত্রণা করিয়াছিল,
6. তাহার সন্তানদের মধ্যে সাত জন পুরুষ আমাদের কাছে সমর্পিত হউক; আমরা সদাপ্রভুর মনোনীত শৌলের গিবিয়াতে সদাপ্রভুর উদ্দেশে তাহাদিগকে ফাঁশি দিব। তখন রাজা কহিলেন, সমর্পণ করিব।
7. তথাপি দায়ূদের ও শৌলের পুত্র যোনাথনের মধ্যে সদাপ্রভুর নামে যে শপথ হইয়াছিল, তৎপ্রযুক্ত রাজা শৌলের পৌত্র, যোনাথনের পুত্র মফীবোশতের প্রতি করুণা করিলেন।
8. কিন্তু অয়ার কন্যা রিস্পা শৌলের জন্য অর্মোণি ও মফীবোশৎ নামে যে দুইটী পুত্র প্রসব করিয়াছিল, এবং মহোলাতীয় বর্সিল্লয়ের পুত্র অদ্রীয়েলের জন্য শৌলের কন্যা মীখল যে পাঁচটী পুত্র প্রসব করিয়াছিল, তাহাদিগকে লইয়া রাজা গিবিয়োনীয়দের হস্তে সমর্পণ করিলেন;
9. তাহাতে তাহারা ঐ পর্ব্বতে সদাপ্রভুর সম্মুখে তাহাদিগকে ফাঁশি দিল। সে সাত জন একেবারে মারা পড়িল; তাহারা প্রথম ফসল কাটার সময়ে অর্থাৎ যব কাটার আরম্ভকালে নিহত হইল।
10. পরে অয়ার কন্যা রিস্পা চট লইয়া ফসল কাটার আরম্ভাবধি যে পর্য্যন্ত আকাশ হইতে তাহাদের উপরে জল না বর্ষিল, সে পর্য্যন্ত পাষাণের উপরে আপনার শয্যারূপে সেই চটখানি পাতিয়া রাখিল, এবং দিবসে আকাশের পক্ষিগণকে ও রাত্রিতে বনপশুগণকে তাহাদের উপরে বিশ্রাম করিতে দিত না।
11. পরে অয়ার কন্যা রিস্পা, শৌলের উপপত্নী, সেই যে কর্ম্ম করিল, তাহা দায়ূদ রাজাকে জ্ঞাত করা হইল।
12. তখন দায়ূদ গমন করিয়া যাবেশ-গিলিয়দের গৃহস্থগণের নিকট হইতে শৌলের অস্থি ও তাঁহার পুত্র যোনাথনের অস্থি গ্রহণ করিলেন; কেননা গিল্বোয়ে পলেষ্টীয়গণ কর্ত্তৃক শৌলের হত হইবার সময়ে তাঁহাদের দুই জনের শব পলেষ্টীয়গণ কর্ত্তৃক বৈৎশানের চকে টাঙ্গান হইলে পর উহারা সেই স্থান হইতে তাহা চুরি করিয়া আনিয়াছিল।
13. তিনি তথা হইতে শৌলের অস্থি ও তাঁহার পুত্র যোনাথনের অস্থি আনিলেন, এবং লোকেরা সেই ফাঁশি দেওয়া লোকদের অস্থিও সংগ্রহ করিল।
14. পরে তাহারা শৌলের ও তাঁহার পুত্র যোনাথনের অস্থি বিন্যামীন দেশের সেলাতে তাঁহার পিতা কীশের কবরের মধ্যে রাখিল; তাহারা রাজার আজ্ঞানুসারে সমস্ত কর্ম্ম করিল। তৎপরে দেশের জন্য ঈশ্বরের কাছে নিবেদন করা হইলে তিনি প্রসন্ন হইলেন।
15. পলেষ্টীয়দের সহিত ইস্রায়েলের আবার যুদ্ধ বাধিল; তাহাতে দায়ূদ আপন দাসগণের সঙ্গে গিয়া পলেষ্টীয়দের সহিত যুদ্ধ করিলেন; আর দায়ূদ ক্লান্ত হইলেন।
16. তখন তিন শত [শেকল] পরিমিত পিত্তলময় বড়শাধারী যিশ্বী-বনোব নামে রফার এক সন্তান নবসজ্জায় সজ্জিত হইয়া দায়ূদকে আঘাত করিতে মনস্থ করিল।
17. কিন্তু সরূয়ার পুত্র অবীশয় তাঁহার সাহায্য করিয়া সেই পলেষ্টীয়কে আঘাত ও বধ করিলেন। তখন দায়ূদের লোকেরা তাঁহার নিকটে দিব্য করিয়া কহিল, আপনি আর আমাদের সহিত যুদ্ধে যাইবেন না, ইস্রায়েলের প্রদীপ নির্ব্বাণ করিবেন না।
18. তৎপরে আর এক বার গোবে পলেষ্টীয়দের সহিত যুদ্ধ হইল; তখন হূশাতীয় সিব্বখয় রফার সন্তান সফকে বধ করিল।
19. আবার পলেষ্টীয়দের সহিত গোবে যুদ্ধ হইল; আর যারেওরগীমের পুত্র বৈৎলেহমীয় ইল্হানন তাঁতের নরাজের ন্যায় বড়শাধারী গাতীয় গলিয়াৎকে বধ করিল, ইহার বড়শা তাঁতের নরাজের ন্যায় ছিল।
20. আর এক বার গাতে যুদ্ধ হইল; আর তথায় অতি দীর্ঘকায় এক জন ছিল, প্রতিহস্তপদে তাহার ছয় ছয় অঙ্গুলি, সর্ব্বশুদ্ধ চব্বিশ অঙ্গুলি ছিল, সেও রফার সন্তান।
21. সে ইস্রায়েলকে টিট্কারি দিলে দায়ূদের ভ্রাতা শিমিয়ের পুত্র যোনাথন তাহাকে বধ করিল।
22. রফার এই চারি সন্তান গাতে জন্মিয়াছিল, ইহারা দায়ূদ ও তাঁহার দাসগণের হাতে নিপতিত হইল।