পবিত্র বাইবেল

গডস গ্রেইস গিফট
লুক
1. {#1যীশুর জন্ম } [PS]সেই সময়, সম্রাট[* ল্যাটিন: কৈসর। ] অগাস্টাস, এক হুকুম জারি করলেন যে, সমগ্র রোমীয় জগতে লোকগণনা করা হবে।
2. সিরিয়ার শাসনকর্তা কুরিণিয়ের সময় এটিই ছিল প্রথম জনগণনা।
3. আর নাম তালিকাভুক্তির জন্য প্রত্যেকেই নিজের নিজের নগরে গেল। [PE]
4. [PS]যোষেফও দাউদের কুল ও বংশজাত পুরুষ হিসেবে, গালীলের নাসরৎ নগর থেকে যিহূদিয়ার অন্তর্গত দাউদের নগর বেথলেহেমের উদ্দেশে যাত্রা করলেন।
5. তিনি তাঁর বাগদত্তা স্ত্রী মরিয়মকে নিয়ে সেখানে নাম তালিকাভুক্তির জন্য গেলেন। মরিয়ম তখন সন্তানের জন্মের প্রতীক্ষায় ছিলেন।
6. তাঁরা যখন সেখানে ছিলেন, তখন সন্তানের জন্ম দেওয়ার সময় ঘনিয়ে এল।
7. মরিয়ম তাঁর প্রথম সন্তান, এক পুত্রের জন্ম দিলেন এবং শিশুটিকে কাপড়ে জড়িয়ে জাবপাত্রে শুইয়ে রাখলেন, কারণ পান্থশালায় তাদের জন্য কোনো স্থান ছিল না। [PE]
8. {#1মেষপালকদের কাছে স্বর্গদূতবাহিনী } [PS]আশেপাশের মাঠে কয়েকজন মেষপালক অবস্থিতি করছিল। তারা রাত্রিবেলা তাদের মেষপাল পাহারা দিচ্ছিল।
9. প্রভুর এক দূত তাদের সামনে আবির্ভূত হলেন, ও প্রভুর প্রতাপ তাদের চারপাশে উজ্জ্বল হওয়ায় তারা ভীতচকিত হয়ে উঠল।
10. কিন্তু দূত তাদের বললেন, “ভয় কোরো না, আমি তোমাদের কাছে এক মহা আনন্দের সুসমাচার নিয়ে এসেছি—এই আনন্দ হবে সব মানুষেরই জন্য।
11. আজ দাউদের নগরে তোমাদের জন্য এক উদ্ধারকর্তা জন্মগ্রহণ করেছেন, তিনি খ্রীষ্ট[† হিব্রু মশীহ ও গ্রিক খ্রীষ্ট, উভয়ের অর্থ, অভিষিক্ত জন। 26 পদেও তাই। ] প্রভু।
12. তোমাদের কাছে এই হবে চিহ্ন: তোমরা কাপড়ে জড়ানো এক শিশুকে জাবপাত্রে শুইয়ে রাখা অবস্থায় দেখতে পাবে।” [PE]
13.
14. [PS]হঠাৎই বিশাল এক স্বর্গীয় দূতবাহিনী ওই দূতের সঙ্গে সম্মিলিত হয়ে ঈশ্বরের বন্দনা করে বলতে লাগলেন, [PE][QS]“ঊর্ধ্বতমলোকে ঈশ্বরের মহিমা, [QE][QS2]আর পৃথিবীতে তাঁর প্রীতির পাত্র সব মানুষের মাঝে শান্তি।” [QE]
15. [PS]স্বর্গদূতেরা তাদের ছেড়ে স্বর্গে ফিরে যাওয়ার পরে মেষপালকেরা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করল, “চলো, প্রভু আমাদের যে ঘটনার কথা জানালেন, আমরা বেথলেহেমে গিয়ে তা দেখে আসি।” [QE]
16. [PS]তারা দ্রুত সেখানে গিয়ে মরিয়ম, যোষেফ ও জাবপাত্রে শুইয়ে রাখা শিশুটিকে দেখতে পেল।
17. তারা শিশুটিকে দর্শন করার পর তাঁর সম্পর্কে যে কথা বলা হয়েছিল, সেই কথা চারদিকে ছড়িয়ে দিল।
18. যারা মেষপালকদের এই কথা শুনল, তারা সবাই হতচকিত হল।
19. কিন্তু মরিয়ম এসব বিষয় তাঁর হৃদয়ের মধ্যে সঞ্চয় করে রাখলেন, আর এ নিয়ে চিন্তা করে গেলেন।
20. যেমন তাদের বলা হয়েছিল, তেমনই সব দেখেশুনে মেষপালকেরা ঈশ্বরের গৌরব ও বন্দনা করতে করতে ফিরে গেল। [QE]
21. {#1মন্দিরে শিশু যীশু } [PS]আট দিন পরে, শিশুটির সুন্নত অনুষ্ঠানের সময়ে, তাঁর নাম রাখা হল যীশু। শিশুটি মায়ের গর্ভে আসার আগেই স্বর্গদূত তাঁর এই নাম দিয়েছিলেন। [QE]
22. [PS]মোশির বিধান অনুসারে তাঁদের শুদ্ধকরণের সময় পূর্ণ হওয়ার পর, যোষেফ ও মরিয়ম যীশুকে জেরুশালেমের মন্দিরে প্রভুর সান্নিধ্যে উপস্থিত করার জন্য নিয়ে গেলেন, যেমন
23. প্রভুর বিধান লেখা আছে, “প্রত্যেক প্রথমজাত পুরুষসন্তান প্রভুর কাছে উৎসর্গীকৃত হবে,”[‡ যাত্রা পুস্তক 13:2,12 ] এবং
24. প্রভুর বিধান অনুযায়ী তারা যেন “এক জোড়া ঘুঘু পাখি বা দুটি কপোতশাবক”[§ লেবীয় পুস্তক 12:8 ] বলির জন্য উৎসর্গ করেন। [QE]
25. [PS]সেই সময় জেরুশালেমে শিমিয়োন নামে এক ব্যক্তি ছিলেন। তিনি ছিলেন ধার্মিক ও ভক্তিপরায়ণ। তিনি ইস্রায়েলের সান্ত্বনাপ্রাপ্তির প্রতীক্ষায় ছিলেন এবং পবিত্র আত্মা তাঁর উপর অধিষ্ঠিত ছিলেন।
26. পবিত্র আত্মা তাঁর কাছে প্রকাশ করেছিলেন যে, প্রভুর মশীহকে দর্শন না করা পর্যন্ত তাঁর মৃত্যু হবে না।
27. আত্মার চালনায় তিনি মন্দির-প্রাঙ্গণে এসে উপস্থিত হলেন। বিধানের প্রথা অনুযায়ী সেই শিশু যীশুর বাবা-মা যখন তাঁকে নিয়ে এলেন,
28. শিমিয়োন তাঁকে দু-হাতে তুলে নিয়ে ঈশ্বরের স্তুতি করতে লাগলেন এবং বললেন, [QE]
29. [QS]“সার্বভৌম প্রভু, [QE][QS2]তোমার প্রতিশ্রুতিমতো এবার তুমি তোমার দাসকে শান্তিতে বিদায় দাও। [QE]
30. [QS]কারণ আমার দুই চোখ তোমার পরিত্রাণ দেখেছে, [QE]
2. [QS2]যা তুমি সমস্ত জাতির দৃষ্টিগোচরে প্রস্তুত করেছ, [QE]
32. [QS]পরজাতিদের কাছে প্রকাশিত হওয়ার জন্য [QE][QS2]ইনিই সেই জ্যোতি এবং তোমার প্রজা ইস্রায়েল জাতির জন্য গৌরব।” [QE]
33. [PS]যীশুর সম্পর্কে যে কথা বলা হল, তা শুনে তাঁর বাবা-মা চমৎকৃত হলেন।
34. তখন শিমিয়োন তাঁদের আশীর্বাদ করলেন এবং যীশুর মা মরিয়মকে বললেন, “এই শিশু হবেন ইস্রায়েলের অনেকের পতন ও উত্থানের কারণ এবং ইনি হবেন এক চিহ্নস্বরূপ, যার বিরুদ্ধতা করবে অনেকে,
35. ফলে অনেকের হৃদয় হবে উদ্‌ঘাটিত; আর একটি তরোয়াল তোমারও প্রাণকে বিদ্ধ করবে।” [QE]
36. {#1হান্নার ভাববাণী } [PS]সেখানে হান্না নামে এক মহিলা ভাববাদী ছিলেন। তিনি ছিলেন আশের বংশীয় পনূয়েলের মেয়ে। তাঁর অনেক বয়স হয়েছিল। বিবাহের পর তিনি স্বামীর সঙ্গে সাত বছর জীবনযাপন করেছিলেন।
37. পরে চুরাশি বছর পর্যন্ত তিনি বিধবার জীবনযাপন করেন।[* অথবা, চুরাশি বছর ধরে বিধবা হয়ে ছিলেন। ] তিনি কখনও মন্দির পরিত্যাগ করে যাননি, বরং তিনি উপোস ও প্রার্থনার সঙ্গে দিনরাত আরাধনা করতেন।
38. তিনি সেই মুহূর্তে তাদের কাছে এগিয়ে এসে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিলেন। আর যারা জেরুশালেমের মুক্তির অপেক্ষায় ছিল, তাদের সকলের কাছে শিশুটির বিষয়ে বলতে লাগলেন। [QE]
39. [PS]প্রভুর বিধান অনুযায়ী সমস্ত কাজ সম্পাদন করে যোষেফ ও মরিয়ম নিজেদের নগর গালীল প্রদেশের নাসরতে ফিরে গেলেন।
40. আর বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সেই শিশু বলীয়ান হয়ে উঠলেন; তিনি বিজ্ঞতায় পূর্ণ হলেন এবং তাঁর উপরে ঈশ্বরের অনুগ্রহ রইল। [QE]
41. {#1মন্দিরে কিশোর যীশু } [PS]যীশুর বাবা-মা প্রতি বছর নিস্তারপর্ব পালন করতে জেরুশালেমে যেতেন।
42. তাঁর যখন বারো বছর বয়স, প্রথানুসারে তাঁরা পর্বে যোগ দিতে গেলেন।
43. পর্ব শেষে তাঁর বাবা-মা যখন ঘরে ফিরে আসছিলেন, কিশোর যীশু জেরুশালেমে রয়ে গেলেন, কিন্তু এ বিষয়ে তাঁরা কিছুই জানতে পারলেন না।
44. যীশু তাঁদের দলের সঙ্গেই আছেন, ভেবে নিয়ে তাঁরা একদিনের পথ অতিক্রম করলেন। তারপর তাঁরা তাদের আত্মীয়পরিজন ও বন্ধুবান্ধবদের মধ্যে তাঁর খোঁজ করতে লাগলেন।
45. যীশুর সন্ধান না পেয়ে, তাঁকে খুঁজতে তাঁরা জেরুশালেমে ফিরে গেলেন।
46. তিন দিন পর তাঁরা তাঁকে মন্দির-প্রাঙ্গণে খুঁজে পেলেন এবং দেখলেন, যীশু শাস্ত্রগুরুদের মাঝে বসে তাঁদের কথা শুনছেন, আর বহু প্রশ্ন করছেন।
47. তাঁর বুদ্ধিমত্তা ও উত্তর দেওয়ার ক্ষমতায় প্রত্যেক শ্রোতাই বিস্মিত হচ্ছিলেন।
48. তাঁর বাবা-মা তাঁকে দেখতে পেয়ে আশ্চর্য হলেন। তাঁর মা তাঁকে বললেন, “বৎস, তুমি আমাদের সঙ্গে এরকম আচরণ করলে কেন? তোমার বাবা আর আমি কত ব্যাকুল হয়ে তোমাকে খুঁজছিলাম!” [QE]
49. [PS]তিনি বললেন, “তোমরা আমার সন্ধান করছিলে কেন? তোমরা কি জানতে না যে, আমাকে আমার পিতার গৃহে থাকতে হবে?”
50. যীশু তাঁদের যে কী বলছিলেন, তা কিন্তু তাঁরা বুঝতে পারলেন না। [QE]
51. [PS]এরপর তিনি তাঁদের সঙ্গে নাসরতে ফিরে গেলেন ও তাঁদের বাধ্য হয়ে রইলেন। তাঁর মা কিন্তু এই সমস্ত কথা হৃদয়ে সঞ্চয় করে রাখলেন।
52. আর যীশু জ্ঞানে ও বয়সে বেড়ে উঠতে লাগলেন এবং ঈশ্বর ও মানুষের অনুগ্রহে সমৃদ্ধ হতে থাকলেন। [QE]
Total 24 অধ্যায়গুলির, Selected অধ্যায় 2 / 24
যীশুর জন্ম 1 সেই সময়, সম্রাট[* ল্যাটিন: কৈসর। ] অগাস্টাস, এক হুকুম জারি করলেন যে, সমগ্র রোমীয় জগতে লোকগণনা করা হবে। 2 সিরিয়ার শাসনকর্তা কুরিণিয়ের সময় এটিই ছিল প্রথম জনগণনা। 3 আর নাম তালিকাভুক্তির জন্য প্রত্যেকেই নিজের নিজের নগরে গেল। 4 যোষেফও দাউদের কুল ও বংশজাত পুরুষ হিসেবে, গালীলের নাসরৎ নগর থেকে যিহূদিয়ার অন্তর্গত দাউদের নগর বেথলেহেমের উদ্দেশে যাত্রা করলেন। 5 তিনি তাঁর বাগদত্তা স্ত্রী মরিয়মকে নিয়ে সেখানে নাম তালিকাভুক্তির জন্য গেলেন। মরিয়ম তখন সন্তানের জন্মের প্রতীক্ষায় ছিলেন। 6 তাঁরা যখন সেখানে ছিলেন, তখন সন্তানের জন্ম দেওয়ার সময় ঘনিয়ে এল। 7 মরিয়ম তাঁর প্রথম সন্তান, এক পুত্রের জন্ম দিলেন এবং শিশুটিকে কাপড়ে জড়িয়ে জাবপাত্রে শুইয়ে রাখলেন, কারণ পান্থশালায় তাদের জন্য কোনো স্থান ছিল না। মেষপালকদের কাছে স্বর্গদূতবাহিনী 8 আশেপাশের মাঠে কয়েকজন মেষপালক অবস্থিতি করছিল। তারা রাত্রিবেলা তাদের মেষপাল পাহারা দিচ্ছিল। 9 প্রভুর এক দূত তাদের সামনে আবির্ভূত হলেন, ও প্রভুর প্রতাপ তাদের চারপাশে উজ্জ্বল হওয়ায় তারা ভীতচকিত হয়ে উঠল। 10 কিন্তু দূত তাদের বললেন, “ভয় কোরো না, আমি তোমাদের কাছে এক মহা আনন্দের সুসমাচার নিয়ে এসেছি—এই আনন্দ হবে সব মানুষেরই জন্য। 11 আজ দাউদের নগরে তোমাদের জন্য এক উদ্ধারকর্তা জন্মগ্রহণ করেছেন, তিনি খ্রীষ্ট[† হিব্রু মশীহ ও গ্রিক খ্রীষ্ট, উভয়ের অর্থ, অভিষিক্ত জন। 26 পদেও তাই। ] প্রভু। 12 তোমাদের কাছে এই হবে চিহ্ন: তোমরা কাপড়ে জড়ানো এক শিশুকে জাবপাত্রে শুইয়ে রাখা অবস্থায় দেখতে পাবে।” 13 14 হঠাৎই বিশাল এক স্বর্গীয় দূতবাহিনী ওই দূতের সঙ্গে সম্মিলিত হয়ে ঈশ্বরের বন্দনা করে বলতে লাগলেন, “ঊর্ধ্বতমলোকে ঈশ্বরের মহিমা, আর পৃথিবীতে তাঁর প্রীতির পাত্র সব মানুষের মাঝে শান্তি।” 15 স্বর্গদূতেরা তাদের ছেড়ে স্বর্গে ফিরে যাওয়ার পরে মেষপালকেরা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করল, “চলো, প্রভু আমাদের যে ঘটনার কথা জানালেন, আমরা বেথলেহেমে গিয়ে তা দেখে আসি।” 16 তারা দ্রুত সেখানে গিয়ে মরিয়ম, যোষেফ ও জাবপাত্রে শুইয়ে রাখা শিশুটিকে দেখতে পেল। 17 তারা শিশুটিকে দর্শন করার পর তাঁর সম্পর্কে যে কথা বলা হয়েছিল, সেই কথা চারদিকে ছড়িয়ে দিল। 18 যারা মেষপালকদের এই কথা শুনল, তারা সবাই হতচকিত হল। 19 কিন্তু মরিয়ম এসব বিষয় তাঁর হৃদয়ের মধ্যে সঞ্চয় করে রাখলেন, আর এ নিয়ে চিন্তা করে গেলেন। 20 যেমন তাদের বলা হয়েছিল, তেমনই সব দেখেশুনে মেষপালকেরা ঈশ্বরের গৌরব ও বন্দনা করতে করতে ফিরে গেল। মন্দিরে শিশু যীশু 21 আট দিন পরে, শিশুটির সুন্নত অনুষ্ঠানের সময়ে, তাঁর নাম রাখা হল যীশু। শিশুটি মায়ের গর্ভে আসার আগেই স্বর্গদূত তাঁর এই নাম দিয়েছিলেন। 22 মোশির বিধান অনুসারে তাঁদের শুদ্ধকরণের সময় পূর্ণ হওয়ার পর, যোষেফ ও মরিয়ম যীশুকে জেরুশালেমের মন্দিরে প্রভুর সান্নিধ্যে উপস্থিত করার জন্য নিয়ে গেলেন, যেমন 23 প্রভুর বিধান লেখা আছে, “প্রত্যেক প্রথমজাত পুরুষসন্তান প্রভুর কাছে উৎসর্গীকৃত হবে,” যাত্রা পুস্তক 13:2,12 এবং 24 প্রভুর বিধান অনুযায়ী তারা যেন “এক জোড়া ঘুঘু পাখি বা দুটি কপোতশাবক”§ লেবীয় পুস্তক 12:8 বলির জন্য উৎসর্গ করেন। 25 সেই সময় জেরুশালেমে শিমিয়োন নামে এক ব্যক্তি ছিলেন। তিনি ছিলেন ধার্মিক ও ভক্তিপরায়ণ। তিনি ইস্রায়েলের সান্ত্বনাপ্রাপ্তির প্রতীক্ষায় ছিলেন এবং পবিত্র আত্মা তাঁর উপর অধিষ্ঠিত ছিলেন। 26 পবিত্র আত্মা তাঁর কাছে প্রকাশ করেছিলেন যে, প্রভুর মশীহকে দর্শন না করা পর্যন্ত তাঁর মৃত্যু হবে না। 27 আত্মার চালনায় তিনি মন্দির-প্রাঙ্গণে এসে উপস্থিত হলেন। বিধানের প্রথা অনুযায়ী সেই শিশু যীশুর বাবা-মা যখন তাঁকে নিয়ে এলেন, 28 শিমিয়োন তাঁকে দু-হাতে তুলে নিয়ে ঈশ্বরের স্তুতি করতে লাগলেন এবং বললেন, 29 “সার্বভৌম প্রভু, তোমার প্রতিশ্রুতিমতো এবার তুমি তোমার দাসকে শান্তিতে বিদায় দাও। 30 কারণ আমার দুই চোখ তোমার পরিত্রাণ দেখেছে, 2 যা তুমি সমস্ত জাতির দৃষ্টিগোচরে প্রস্তুত করেছ, 32 পরজাতিদের কাছে প্রকাশিত হওয়ার জন্য ইনিই সেই জ্যোতি এবং তোমার প্রজা ইস্রায়েল জাতির জন্য গৌরব।” 33 যীশুর সম্পর্কে যে কথা বলা হল, তা শুনে তাঁর বাবা-মা চমৎকৃত হলেন। 34 তখন শিমিয়োন তাঁদের আশীর্বাদ করলেন এবং যীশুর মা মরিয়মকে বললেন, “এই শিশু হবেন ইস্রায়েলের অনেকের পতন ও উত্থানের কারণ এবং ইনি হবেন এক চিহ্নস্বরূপ, যার বিরুদ্ধতা করবে অনেকে, 35 ফলে অনেকের হৃদয় হবে উদ্‌ঘাটিত; আর একটি তরোয়াল তোমারও প্রাণকে বিদ্ধ করবে।” হান্নার ভাববাণী 36 সেখানে হান্না নামে এক মহিলা ভাববাদী ছিলেন। তিনি ছিলেন আশের বংশীয় পনূয়েলের মেয়ে। তাঁর অনেক বয়স হয়েছিল। বিবাহের পর তিনি স্বামীর সঙ্গে সাত বছর জীবনযাপন করেছিলেন। 37 পরে চুরাশি বছর পর্যন্ত তিনি বিধবার জীবনযাপন করেন।[* অথবা, চুরাশি বছর ধরে বিধবা হয়ে ছিলেন। ] তিনি কখনও মন্দির পরিত্যাগ করে যাননি, বরং তিনি উপোস ও প্রার্থনার সঙ্গে দিনরাত আরাধনা করতেন। 38 তিনি সেই মুহূর্তে তাদের কাছে এগিয়ে এসে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিলেন। আর যারা জেরুশালেমের মুক্তির অপেক্ষায় ছিল, তাদের সকলের কাছে শিশুটির বিষয়ে বলতে লাগলেন। 39 প্রভুর বিধান অনুযায়ী সমস্ত কাজ সম্পাদন করে যোষেফ ও মরিয়ম নিজেদের নগর গালীল প্রদেশের নাসরতে ফিরে গেলেন। 40 আর বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সেই শিশু বলীয়ান হয়ে উঠলেন; তিনি বিজ্ঞতায় পূর্ণ হলেন এবং তাঁর উপরে ঈশ্বরের অনুগ্রহ রইল। মন্দিরে কিশোর যীশু 41 যীশুর বাবা-মা প্রতি বছর নিস্তারপর্ব পালন করতে জেরুশালেমে যেতেন। 42 তাঁর যখন বারো বছর বয়স, প্রথানুসারে তাঁরা পর্বে যোগ দিতে গেলেন। 43 পর্ব শেষে তাঁর বাবা-মা যখন ঘরে ফিরে আসছিলেন, কিশোর যীশু জেরুশালেমে রয়ে গেলেন, কিন্তু এ বিষয়ে তাঁরা কিছুই জানতে পারলেন না। 44 যীশু তাঁদের দলের সঙ্গেই আছেন, ভেবে নিয়ে তাঁরা একদিনের পথ অতিক্রম করলেন। তারপর তাঁরা তাদের আত্মীয়পরিজন ও বন্ধুবান্ধবদের মধ্যে তাঁর খোঁজ করতে লাগলেন। 45 যীশুর সন্ধান না পেয়ে, তাঁকে খুঁজতে তাঁরা জেরুশালেমে ফিরে গেলেন। 46 তিন দিন পর তাঁরা তাঁকে মন্দির-প্রাঙ্গণে খুঁজে পেলেন এবং দেখলেন, যীশু শাস্ত্রগুরুদের মাঝে বসে তাঁদের কথা শুনছেন, আর বহু প্রশ্ন করছেন। 47 তাঁর বুদ্ধিমত্তা ও উত্তর দেওয়ার ক্ষমতায় প্রত্যেক শ্রোতাই বিস্মিত হচ্ছিলেন। 48 তাঁর বাবা-মা তাঁকে দেখতে পেয়ে আশ্চর্য হলেন। তাঁর মা তাঁকে বললেন, “বৎস, তুমি আমাদের সঙ্গে এরকম আচরণ করলে কেন? তোমার বাবা আর আমি কত ব্যাকুল হয়ে তোমাকে খুঁজছিলাম!” 49 তিনি বললেন, “তোমরা আমার সন্ধান করছিলে কেন? তোমরা কি জানতে না যে, আমাকে আমার পিতার গৃহে থাকতে হবে?” 50 যীশু তাঁদের যে কী বলছিলেন, তা কিন্তু তাঁরা বুঝতে পারলেন না। 51 এরপর তিনি তাঁদের সঙ্গে নাসরতে ফিরে গেলেন ও তাঁদের বাধ্য হয়ে রইলেন। তাঁর মা কিন্তু এই সমস্ত কথা হৃদয়ে সঞ্চয় করে রাখলেন। 52 আর যীশু জ্ঞানে ও বয়সে বেড়ে উঠতে লাগলেন এবং ঈশ্বর ও মানুষের অনুগ্রহে সমৃদ্ধ হতে থাকলেন।
Total 24 অধ্যায়গুলির, Selected অধ্যায় 2 / 24
×

Alert

×

Bengali Letters Keypad References