1. {#1যীশু কুটিরবাস-পর্বে গেলেন } [PS]এরপর যীশু গালীল প্রদেশের চতুর্দিকে ঘুরে বেড়াতে লাগলেন, ইচ্ছাপূর্বক তিনি যিহূদিয়া থেকে দূরে রইলেন, কারণ সেখানে ইহুদিরা তাঁর প্রাণনাশের চেষ্টায় ছিল।
2. কিন্তু ইহুদিদের কুটিরবাস-পর্ব সন্নিকট হলে,
3. যীশুর ভাইয়েরা তাঁকে বলল, “এ স্থান ছেড়ে তোমার যিহূদিয়ায় যাওয়া উচিত, যেন তোমার শিষ্যেরা তোমার অলৌকিক কাজ দেখতে পায়।
4. প্রকাশ্যে পরিচিতি লাভ করতে চাইলে কেউ গোপনে কাজ করে না। তুমি যখন এই সমস্ত কাজ করছই, তখন নিজেকে জগতের সামনে প্রকাশ করো।”
5. এরকম বলার কারণ হল, এমনকি যীশুর নিজের ভাইরাও তাঁকে বিশ্বাস করত না। [PE]
6. [PS]তখন যীশু তাদের বললেন, “আমার নিরূপিত সময় এখনও আসেনি, তোমাদের পক্ষে যে কোনো সময়ই উপযুক্ত।
7. জগৎ তোমাদের ঘৃণা করতে পারে না, কিন্তু আমাকে ঘৃণা করে। কারণ জগৎ যা করে, তা যে মন্দ, তা আমি প্রকাশ করে দিই।
8. তোমরাই পর্বে যোগদান করতে যাও। আমি এখনই পর্বে যাচ্ছি না, কারণ আমার উপযুক্ত সময় এখনও আসেনি।”
9. একথা বলে তিনি গালীলেই থেকে গেলেন। [PE]
10. [PS]কিন্তু তাঁর ভাইয়েরা পর্বে চলে গেলে, তিনিও সেখানে গেলেন, তবে প্রকাশ্যে নয়, কিন্তু গোপনে।
11. পর্বের সময় ইহুদিরা যীশুর সন্ধান করছিল এবং জিজ্ঞাসা করছিল, “সেই ব্যক্তি কোথায়?” [PE]
12. [PS]ভিড়ের মধ্যে তাঁকে নিয়ে প্রচুর গুঞ্জন চলছিল। কেউ কেউ বলল, “তিনি একজন সৎ মানুষ।” [PE][PS]অন্যেরা বলল, “না, সে মানুষকে ভুল পথে চালনা করছে।”
13. কিন্তু ইহুদিদের ভয়ে কেউ তাঁর সম্পর্কে প্রকাশ্যে কোনো কথা বলল না। [PE]
14. {#1পর্বের সময় যীশুর শিক্ষা } [PS]পর্বের মাঝামাঝি সময়, যীশু মন্দির-প্রাঙ্গণে গিয়ে শিক্ষা দিতে লাগলেন।
15. ইহুদিরা বিস্মিত হয়ে জিজ্ঞাসা করল, “শিক্ষালাভ না করেও এই মানুষটি কী করে এত শাস্ত্রজ্ঞ হয়ে উঠল?” [PE]
16. [PS]যীশু উত্তর দিলেন, “এই শিক্ষা আমার নিজস্ব নয়। যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন তাঁর কাছ থেকেই আমি এই শিক্ষা পেয়েছি।
17. কেউ যদি ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করতে মনস্থির করে, তাহলে সে উপলব্ধি করতে পারবে, আমার এই শিক্ষা ঈশ্বরের কাছ থেকে এসেছে, না আমি নিজে থেকে বলেছি।
18. যে নিজের জ্ঞানের কথা বলে, সে তার গৌরবপ্রাপ্তির জন্যই তা করে, কিন্তু যে তার প্রেরণকর্তার গৌরবের জন্য কাজ করে, সে সত্যবাদী পুরুষ। তার মধ্যে কোনো মিথ্যাচার নেই।
19. মোশি কি তোমাদের বিধান দেননি? তবু তোমরা একজনও সেই বিধান পালন করো না। তোমরা কেন আমাকে হত্যা করার চেষ্টা করছ?” [PE]
20.
21. [PS]সব লোক উত্তর দিল, “তোমাকে ভূতে পেয়েছে। কে তোমাকে হত্যার চেষ্টা করছে?” [PE][PS]যীশু তাদের বললেন, “আমি মাত্র একটি অলৌকিক কাজ করেছি, আর তা দেখেই তোমরা চমৎকৃত হয়েছিলে।
22. মোশি তোমাদের সুন্নত প্রথা দিয়েছিলেন বলে (যদিও প্রকৃতপক্ষে মোশি তা দেননি, কিন্তু পিতৃপুরুষদের সময় থেকে এই প্রথার প্রচলন ছিল), তোমরা বিশ্রামদিনে শিশুকে সুন্নত করে থাকো।
23. এখন, বিশ্রামদিনে কোনো শিশুকে সুন্নত করলে যদি মোশির বিধান ভাঙা না হয়, তাহলে বিশ্রামদিনে একটি মানুষকে সম্পূর্ণ সুস্থ করেছি বলে তোমরা আমার উপর ক্রুদ্ধ হচ্ছো কেন?
24. শুধু বাহ্যিক বিষয় দেখে বিচার কোরো না, ন্যায়সংগত বিচার করো।” [PE]
25. {#1যীশুই কি সেই খ্রীষ্ট? } [PS]সেই সময় জেরুশালেমের কিছু লোক জিজ্ঞাসা করতে লাগল, “এই লোকটিকেই কি তারা হত্যা করার চেষ্টা করছেন না?
26. ইনি তো এখানে প্রকাশ্যে কথা বলছেন, অথচ তারা তাঁকে একটিও কথা বলছেন না। কর্তৃপক্ষ কি সত্যিসত্যিই মেনে নিয়েছেন যে, উনিই সেই খ্রীষ্ট?
27. যাই হোক, এই ব্যক্তি কোথা থেকে এসেছেন তা আমরা জানি, কিন্তু খ্রীষ্ট এলে কেউ জানবে না যে কোথা থেকে তাঁর আগমন হয়েছে।” [PE]
28. [PS]তারপর মন্দির-প্রাঙ্গণে শিক্ষা দেওয়ার সময় যীশু উচ্চকণ্ঠে বললেন, “এটা ঠিক যে, তোমরা আমাকে জানো এবং আমি কোথা থেকে এসেছি, তাও তোমরা জানো। আমি নিজের ইচ্ছানুসারে এখানে আসিনি, কিন্তু যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন, তিনি সত্যময়। তোমরা তাঁকে জানো না।
29. কিন্তু আমি তাঁকে জানি, কারণ আমি তাঁরই কাছ থেকে এসেছি এবং তিনিই আমাকে পাঠিয়েছেন।” [PE]
30. [PS]একথায় তারা তাঁকে বন্দি করতে চেষ্টা করল, কিন্তু কেউ তাঁর গায়ে হাত দিল না, কারণ তাঁর সময় তখনও উপস্থিত হয়নি।
31. কিন্তু লোকদের মধ্যে অনেকেই তাঁর উপর বিশ্বাস স্থাপন করল। তারা বলল, “খ্রীষ্টের আগমন হলে তিনি কি এই লোকটির চেয়ে আরও বেশি চিহ্নকাজ করে দেখাবেন?” [PE]
32.
33. [PS]ফরিশীরা লোকদিগকে তাঁর সম্পর্কে এসব বিষয়ে কানাকানি করতে শুনল। তখন প্রধান যাজকবর্গ এবং ফরিশীরা তাঁকে গ্রেপ্তার করার জন্য মন্দিরের রক্ষীদের পাঠাল। [PE][PS]যীশু বললেন, “আমি তোমাদের সঙ্গে আর অল্পকাল আছি, তারপর যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন, আমি তাঁর কাছে ফিরে যাব।
34. তোমরা আমার সন্ধান করবে, কিন্তু পাবে না। আর আমি যেখানে থাকব, তোমরা সেখানে আসতে পারো না।” [PE]
35. [PS]তখন ইহুদিরা পরস্পর বলাবলি করল, “এই লোকটি এমন কোথায় যেতে চায় যে আমরা তাঁর সন্ধান পাব না? যেখানে গ্রিকদের মধ্যে আমাদের লোকরা বিক্ষিপ্ত অবস্থায় রয়েছে, ও কি সেখানে গিয়ে গ্রিকদের শিক্ষা দিতে চায়?
36. ‘তোমরা আমাকে খুঁজবে, কিন্তু পাবে না,’ আর, ‘আমি যেখানে থাকব, তোমরা সেখানে আসতে পারো না,’ একথার দ্বারা ও কী বলতে চায়?” [PE]
37. [PS]পর্বের শেষ ও প্রধান দিনটিতে যীশু দাঁড়িয়ে উচ্চকণ্ঠে বললেন, “কেউ যদি তৃষ্ণার্ত হয়, সে আমার কাছে এসে পান করুক।
38. আমাকে যে বিশ্বাস করে, শাস্ত্রের বচন অনুসারে, তার অন্তর থেকে জীবন্ত জলের স্রোতোধারা প্রবাহিত হবে।”
39. একথার দ্বারা তিনি সেই পবিত্র আত্মার কথাই বললেন। যারা তাঁকে বিশ্বাস করে, পরবর্তীকালে তারা সেই আত্মা লাভ করবে। যীশু তখনও মহিমান্বিত হননি, তাই সেই সময় পর্যন্ত পবিত্র আত্মা প্রদান করা হয়নি। [PE]
40.
41. [PS]তাঁর একথা শুনে কিছু লোক বলল, “নিশ্চয়ই, এই লোকটিই সেই ভাববাদী।” [PE][PS]অন্যেরা বলল, “ইনিই সেই খ্রীষ্ট।” [PE][PS]আবার অনেকে জিজ্ঞাসা করল, “গালীল থেকে কি খ্রীষ্টের আগমন হতে পারে?
42. শাস্ত্র কি একথা বলে না যে, দাউদ যেখানে বসবাস করতেন, সেই বেথলেহেম নগরে, দাউদের বংশে খ্রীষ্টের আগমন হবে?”
43. এভাবে যীশুকে নিয়ে লোকদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিল।
44. কয়েকজন তাঁকে গ্রেপ্তার করতে চাইলেও কেউ তাঁর গায়ে হাত দিল না। [PE]
45. {#1ইহুদি নেতাদের অবিশ্বাস }
46. [PS]মন্দিরের রক্ষীরা অবশেষে প্রধান যাজকদের ও ফরিশীদের কাছে ফিরে গেল। তারা তাদের জিজ্ঞাসা করল, “তোমরা তাকে ধরে নিয়ে এলে না কেন?” [PE]
47. [PS]রক্ষীরা বলল, “এই লোকটি যেভাবে কথা বলেন, এ পর্যন্ত আর কেউ সেভাবে কথা বলেননি।” [PE][PS]প্রত্যুত্তরে ফরিশীরা ব্যঙ্গ করে বলল, “তোমরা বলতে চাইছ, লোকটি তোমাদেরও বিভ্রান্ত করেছে।
48. কোনো নেতা বা কোনো ফরিশী কি তাকে বিশ্বাস করেছে?
49. না! কিন্তু এই যেসব লোক, যারা বিধানের কিছুই জানে না, এরা সকলে অভিশপ্ত।” [PE]
50. [PS]তখন নীকদীম, যিনি আগে যীশুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলেন এবং যিনি ছিলেন তাদেরই একজন, জিজ্ঞাসা করলেন,
51. “কোনো ব্যক্তির কথা প্রথমে না শুনে ও সে কী করে তা না জেনে, তাকে দোষী সাব্যস্ত করা কি আমাদের পক্ষে বিধানসংগত?” [PE]
52.
53. [PS]তারা উত্তর দিল, “তুমিও কি গালীলের লোক? শাস্ত্র খুঁজে দেখো, দেখতে পাবে যে, গালীল থেকে কোনো ভাববাদীই আসতে পারেন না।” [PE][PS][* কয়েকটি প্রাচীন পুঁথিতে যোহন 7:53–8:11 পাওয়া যায় না। অবশ্য প্রায় 900-টি পাণ্ডুলিপিতে এই অংশের উল্লেখ করা হয়েছে। ]তখন তারা প্রত্যেকেই নিজের নিজের ঘরে ফিরে গেল, [PE]