পবিত্র বাইবেল

গডস গ্রেইস গিফট
पশিষ্যচরিত
1. {#1অননিয় ও সাফিরা } [PS]এখন অননিয় নামে একজন ব্যক্তি, তার স্ত্রী সাফিরার সঙ্গে সম্পত্তির এক অংশ বিক্রি করল।
2. তার স্ত্রীর সম্পূর্ণ জ্ঞাতসারে, সে তার নিজের জন্য অর্থের কিছু অংশ রেখে দিল, কিন্তু অবশিষ্ট অংশ এনে প্রেরিতশিষ্যদের চরণে রাখল। [PE]
3. [PS]তখন পিতর বললেন, “অননিয়, এ কী রকম হল, শয়তান তোমার অন্তরকে এমন পূর্ণ করল যে, তুমি পবিত্র আত্মার কাছে মিথ্যা বললে এবং জমির বিক্রি করা অর্থের কিছু অংশ নিজের জন্য রেখে দিলে?
4. বিক্রি করার আগে তা কি তোমারই ছিল না? আর বিক্রি করার পরেও সেই অর্থ কি তোমারই অধিকারে ছিল না? এরকম একটি কাজ করার কথা তুমি কী করে চিন্তা করলে? তুমি মানুষের কাছে নয়, কিন্তু ঈশ্বরেরই কাছে মিথ্যা বললে।” [PE]
5. [PS]অননিয় একথা শোনামাত্র মাটিতে পড়ে গেল ও প্রাণত্যাগ করল। ওই ঘটনার কথা যারা শুনল, তারা সকলেই মহা আতঙ্কে কবলিত হল।
6. তখন যুবকেরা এগিয়ে এল, তার শরীরে কাপড় জড়ালো এবং তাকে বাইরে নিয়ে গিয়ে কবর দিল। [PE]
7. [PS]প্রায় তিন ঘণ্টা পরে তার স্ত্রী উপস্থিত হল। কী ঘটনা ঘটেছে, সে তা জানত না।
8. পিতর তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “আমাকে বলো তো, জমি বিক্রি করে তুমি ও অননিয় কি এই পরিমাণ অর্থ পেয়েছিলে?” [PE]
9. [PS]সে বলল, “হ্যাঁ, এই তার দাম।” [PE]
10. [PS]পিতর তাকে বললেন, “প্রভুর আত্মাকে পরীক্ষা করার জন্য কীভাবে তোমরা একমত হলে? দেখো! যারা তোমার স্বামীকে কবর দিয়েছে, তারা দুয়ারে এসে পড়েছে, তারা তোমাকেও বাইরে নিয়ে যাবে।” [PE][PS]সেই মুহূর্তে সে তাঁর চরণে পড়ে প্রাণত্যাগ করল। তখন যুবকেরা ভিতরে এসে দেখল সেও মারা গেছে। তারা তাকে বাইরে বয়ে নিয়ে গেল ও তার স্বামীর পাশে তাকে কবর দিল।
11. সমস্ত মণ্ডলী ও যারাই এই ঘটনার কথা শুনল, সকলেই অত্যন্ত আতঙ্কিত হয়ে উঠল। [PE]
12. {#1প্রেরিতশিষ্যরা অনেককে সুস্থ করলেন } [PS]প্রেরিতশিষ্যেরা জনসাধারণের মধ্যে অনেক অলৌকিক নিদর্শন ও বিস্ময়কর কাজ সম্পন্ন করলেন। বিশ্বাসীরা সকলে শলোমনের বারান্দায় একযোগে মিলিত হত।
13. অন্য কেউই তাদের সঙ্গে যোগ দিতে সাহস করত না, যদিও লোকেরা তাদের অত্যন্ত সমাদর করত।
14. তা সত্ত্বেও, বহু পুরুষ ও মহিলা, উত্তরোত্তর প্রভুতে বিশ্বাস করে তাদের সংখ্যা বৃদ্ধি করল।
15. শেষে এমন হল যে, লোকেরা অসুস্থ মানুষদের রাস্তার ধারে বয়ে নিয়ে গিয়ে তাদের বিছানা ও মাদুরে শুইয়ে রাখত, যেন পিতর রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় তাঁর ছায়া অন্তত কারও কারও উপরে পড়ে।
16. জেরুশালেমের চারপাশের নগরগুলি থেকেও জনতা ভিড় করতে লাগল। তারা তাদের অসুস্থ মানুষদের ও যারা মন্দ-আত্মা[* বা অশুচি ] দ্বারা যন্ত্রণা পাচ্ছিল, তাদের নিয়ে আসত এবং তারা সকলেই সুস্থ হয়ে উঠত। [PE]
17. {#1প্রেরিতশিষ্যরা নির্যাতিত হলেন } [PS]এরপর মহাযাজক ও তাঁর সমস্ত সহযোগী, যারা সদ্দূকী সম্প্রদায়ের সদস্য ছিলেন, তাঁরা ঈর্ষায় পূর্ণ হয়ে উঠলেন।
18. তাঁরা প্রেরিতশিষ্যদের গ্রেপ্তার করে সরকারি কারাগারে রেখে দিলেন।
19. কিন্তু রাত্রিবেলা প্রভুর এক দূত কারাগারের দরজাগুলি খুলে দিয়ে তাঁদের বাইরে নিয়ে এলেন।
20. তিনি বললেন, “তোমরা যাও, গিয়ে মন্দির-প্রাঙ্গণে দাঁড়াও এবং জনসাধারণের কাছে এই নতুন জীবনের পূর্ণ বার্তা প্রকাশ করো।” [PE]
21. [PS]তাঁদের যেমন বলা হয়েছিল, ভোরবেলা তাঁরা মন্দির-প্রাঙ্গণে প্রবেশ করলেন এবং লোকদের শিক্ষা দিতে লাগলেন। [PE][PS]মহাযাজক ও তাঁর সহযোগীরা যখন উপস্থিত হলেন, তাঁরা ইস্রায়েলীদের প্রাচীনবর্গের সমন্বয়ে গঠিত পূর্ণ জমায়েত বা মহাসভাকে[† বা সানহেড্রিন। (ইহুদি বিচার পরিষদ) ] একত্র করলেন ও প্রেরিতশিষ্যদের নিয়ে আসার জন্য কারাগারে লোক পাঠালেন।
22. কিন্তু কারাগারে উপস্থিত হয়ে কর্মচারীরা তাঁদের সেখানে খুঁজে পেল না। তাই তারা ফেরত গিয়ে সংবাদ দিল,
23. “আমরা গিয়ে দেখলাম, কারাগার সুদৃঢ়রূপে তালাবন্ধ, রক্ষীরাও দরজায় দরজায় দাঁড়িয়ে আছে, কিন্তু আমরা সেগুলি খুলে ভিতরে কাউকে দেখতে পেলাম না।”
24. এই সংবাদ শুনে মন্দিরের রক্ষী-প্রধান ও মহাযাজক বিস্ময়বিমূঢ় হলেন। তাঁরা অবাক হয়ে ভাবতে লাগলেন যে, এর পরিণাম কী হতে পারে। [PE]
25. [PS]তখন একজন ব্যক্তি এসে বলল, “দেখুন! যাঁদের আপনারা কারাগারে রেখেছিলেন, তাঁরা মন্দির-প্রাঙ্গণে দাঁড়িয়ে লোকদের শিক্ষা দিচ্ছে।”
26. এতে রক্ষী-প্রধান তাঁর কর্মচারীদের সঙ্গে গিয়ে প্রেরিতশিষ্যদের নিয়ে এলেন। তাঁরা বলপ্রয়োগ করলেন না, কারণ লোকেরা তাঁদের উপর পাথর মারতে পারে ভেবে তাঁরা ভয় পেয়েছিলেন। [PE]
27. [PS]প্রেরিতশিষ্যদের নিয়ে এসে, তাঁরা তাঁদের মহাসভার সামনে উপস্থিত করলেন, যেন মহাযাজক তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেন।
28. তিনি বললেন, “আমরা তোমাদের এই নামে শিক্ষা না দেওয়ার জন্য কঠোর আদেশ দিয়েছিলাম, তবুও তোমরা তোমাদের উপদেশে জেরুশালেম পূর্ণ করেছ এবং সেই ব্যক্তির রক্তের জন্য আমাদেরই অপরাধী সাব্যস্ত করার উদ্দেশ্যে দৃঢ়সংকল্প হয়েছ।” [PE]
29. [PS]পিতর ও অন্য প্রেরিতশিষ্যেরা উত্তর দিলেন, “মানুষের চেয়ে আমরা বরং ঈশ্বরের আদেশই পালন করব!
30. আমাদের পিতৃপুরুষদের ঈশ্বর সেই যীশুকে মৃতলোক থেকে উত্থাপিত করেছেন—যাঁকে আপনারা একটি গাছের উপরে টাঙিয়ে হত্যা করেছিলেন।
31. ঈশ্বর তাঁকে অধিপতি ও উদ্ধারকর্তা করে তাঁর ডানদিকে[‡ গ্রিক: হাতে ] উন্নীত করেছেন, যেন তিনি ইস্রায়েলকে মন পরিবর্তনের পথে চালনা করতে ও পাপের ক্ষমা দিতে পারেন।
32. আমরা এই সমস্ত বিষয়ের সাক্ষী, আর পবিত্র আত্মাও সাক্ষী, যাঁকে ঈশ্বর, যারা তাঁর আজ্ঞা পালন করে, তাদের দান করেছেন।” [PE]
33. [PS]একথা শুনে তাঁরা ক্রোধে উন্মত্ত হলেন এবং তাঁদের মৃত্যুদণ্ড দিতে চাইলেন।
34. কিন্তু গমলীয়েল নামে একজন ফরিশী, যিনি শাস্ত্রবিদ ও সর্বসাধারণের কাছে একজন গণ্যমান্য ব্যক্তি ছিলেন, তিনি উঠে দাঁড়ালেন ও আদেশ দিলেন, যেন কিছুক্ষণের জন্য ওদেরকে বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়।
35. এরপর তিনি মহাসভাকে সম্বোধন করে বললেন, “হে ইস্রায়েলী জনগণ, এই লোকেদের নিয়ে আপনারা যা করতে চলেছেন, সে সম্পর্কে সতর্কতার সঙ্গে বিবেচনা করুন।
36. কিছুদিন আগে, থুদা উপস্থিত হয়ে নিজেকে এক মহাপুরুষ বলে দাবি করেছিল এবং প্রায় চারশো মানুষ তার পাশে জড়ো হয়েছিল। সে নিহত হল ও তার অনুগামীরা ছত্রভঙ্গ হওয়ায় সবকিছুই ব্যর্থ হয়েছিল; কারো আর অস্তিত্ব রইল না।
37. তারপরে গালীলীয় যিহূদা জনগণনার সময়ে উপস্থিত হয়ে কিছু মানুষকে বিদ্রোহের পথে চালিত করল। সেও নিহত হল ও তার সমস্ত অনুগামী ছিন্নভিন্ন হয়ে পড়ল।
38. সেই কারণে, বর্তমান বিষয়টি সম্পর্কে আমি তোমাদের পরামর্শ দিই, এই লোকেরা যেমন আছে, থাকতে দাও! ওদের চলে যেতে দাও! কারণ ওদের অভিপ্রায় বা কাজকর্ম যদি মানুষ থেকে হয়, তবে তা ব্যর্থ হবে।
39. কিন্তু তা যদি ঈশ্বর থেকে হয়, তোমরা এদের আটকাতে পারবে না; তোমরা কেবলমাত্র দেখতে পাবে যে, তোমরা নিজেরাই ঈশ্বরের বিরুদ্ধে সংগ্রামে লিপ্ত হয়েছ।” [PE]
40.
41. [PS]তাঁরা তখন তাঁর পরামর্শ গ্রহণ করল। তাঁরা প্রেরিতশিষ্যদের ভিতরে ডেকে এনে চাবুক মারলেন। তাঁরা তাঁদের আদেশ দিলেন, তাঁরা যেন যীশুর নামে কোনো কথা না বলেন। তারপর তাঁরা তাঁদের চলে যেতে দিলেন। [PE][PS]প্রেরিতশিষ্যেরা আনন্দ করতে করতে মহাসভা ত্যাগ করলেন, কারণ তাঁরা সেই নামের কারণে অপমান ভোগ করার জন্য যোগ্য বলে গণ্য হয়েছিলেন।
42. দিনের পর দিন, মন্দির-প্রাঙ্গণে ও ঘরে ঘরে, তাঁরা শিক্ষা দিতে এবং যীশুই যে সেই খ্রীষ্ট, এই সুসমাচার ঘোষণা করতে কখনও ক্ষান্ত হতেন না। [PE]
Total 28 অধ্যায়গুলির, Selected অধ্যায় 5 / 28
অননিয় ও সাফিরা 1 এখন অননিয় নামে একজন ব্যক্তি, তার স্ত্রী সাফিরার সঙ্গে সম্পত্তির এক অংশ বিক্রি করল। 2 তার স্ত্রীর সম্পূর্ণ জ্ঞাতসারে, সে তার নিজের জন্য অর্থের কিছু অংশ রেখে দিল, কিন্তু অবশিষ্ট অংশ এনে প্রেরিতশিষ্যদের চরণে রাখল। 3 তখন পিতর বললেন, “অননিয়, এ কী রকম হল, শয়তান তোমার অন্তরকে এমন পূর্ণ করল যে, তুমি পবিত্র আত্মার কাছে মিথ্যা বললে এবং জমির বিক্রি করা অর্থের কিছু অংশ নিজের জন্য রেখে দিলে? 4 বিক্রি করার আগে তা কি তোমারই ছিল না? আর বিক্রি করার পরেও সেই অর্থ কি তোমারই অধিকারে ছিল না? এরকম একটি কাজ করার কথা তুমি কী করে চিন্তা করলে? তুমি মানুষের কাছে নয়, কিন্তু ঈশ্বরেরই কাছে মিথ্যা বললে।” 5 অননিয় একথা শোনামাত্র মাটিতে পড়ে গেল ও প্রাণত্যাগ করল। ওই ঘটনার কথা যারা শুনল, তারা সকলেই মহা আতঙ্কে কবলিত হল। 6 তখন যুবকেরা এগিয়ে এল, তার শরীরে কাপড় জড়ালো এবং তাকে বাইরে নিয়ে গিয়ে কবর দিল। 7 প্রায় তিন ঘণ্টা পরে তার স্ত্রী উপস্থিত হল। কী ঘটনা ঘটেছে, সে তা জানত না। 8 পিতর তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “আমাকে বলো তো, জমি বিক্রি করে তুমি ও অননিয় কি এই পরিমাণ অর্থ পেয়েছিলে?” 9 সে বলল, “হ্যাঁ, এই তার দাম।” 10 পিতর তাকে বললেন, “প্রভুর আত্মাকে পরীক্ষা করার জন্য কীভাবে তোমরা একমত হলে? দেখো! যারা তোমার স্বামীকে কবর দিয়েছে, তারা দুয়ারে এসে পড়েছে, তারা তোমাকেও বাইরে নিয়ে যাবে।” সেই মুহূর্তে সে তাঁর চরণে পড়ে প্রাণত্যাগ করল। তখন যুবকেরা ভিতরে এসে দেখল সেও মারা গেছে। তারা তাকে বাইরে বয়ে নিয়ে গেল ও তার স্বামীর পাশে তাকে কবর দিল। 11 সমস্ত মণ্ডলী ও যারাই এই ঘটনার কথা শুনল, সকলেই অত্যন্ত আতঙ্কিত হয়ে উঠল। প্রেরিতশিষ্যরা অনেককে সুস্থ করলেন 12 প্রেরিতশিষ্যেরা জনসাধারণের মধ্যে অনেক অলৌকিক নিদর্শন ও বিস্ময়কর কাজ সম্পন্ন করলেন। বিশ্বাসীরা সকলে শলোমনের বারান্দায় একযোগে মিলিত হত। 13 অন্য কেউই তাদের সঙ্গে যোগ দিতে সাহস করত না, যদিও লোকেরা তাদের অত্যন্ত সমাদর করত। 14 তা সত্ত্বেও, বহু পুরুষ ও মহিলা, উত্তরোত্তর প্রভুতে বিশ্বাস করে তাদের সংখ্যা বৃদ্ধি করল। 15 শেষে এমন হল যে, লোকেরা অসুস্থ মানুষদের রাস্তার ধারে বয়ে নিয়ে গিয়ে তাদের বিছানা ও মাদুরে শুইয়ে রাখত, যেন পিতর রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় তাঁর ছায়া অন্তত কারও কারও উপরে পড়ে। 16 জেরুশালেমের চারপাশের নগরগুলি থেকেও জনতা ভিড় করতে লাগল। তারা তাদের অসুস্থ মানুষদের ও যারা মন্দ-আত্মা* বা অশুচি দ্বারা যন্ত্রণা পাচ্ছিল, তাদের নিয়ে আসত এবং তারা সকলেই সুস্থ হয়ে উঠত। প্রেরিতশিষ্যরা নির্যাতিত হলেন 17 এরপর মহাযাজক ও তাঁর সমস্ত সহযোগী, যারা সদ্দূকী সম্প্রদায়ের সদস্য ছিলেন, তাঁরা ঈর্ষায় পূর্ণ হয়ে উঠলেন। 18 তাঁরা প্রেরিতশিষ্যদের গ্রেপ্তার করে সরকারি কারাগারে রেখে দিলেন। 19 কিন্তু রাত্রিবেলা প্রভুর এক দূত কারাগারের দরজাগুলি খুলে দিয়ে তাঁদের বাইরে নিয়ে এলেন। 20 তিনি বললেন, “তোমরা যাও, গিয়ে মন্দির-প্রাঙ্গণে দাঁড়াও এবং জনসাধারণের কাছে এই নতুন জীবনের পূর্ণ বার্তা প্রকাশ করো।” 21 তাঁদের যেমন বলা হয়েছিল, ভোরবেলা তাঁরা মন্দির-প্রাঙ্গণে প্রবেশ করলেন এবং লোকদের শিক্ষা দিতে লাগলেন। মহাযাজক ও তাঁর সহযোগীরা যখন উপস্থিত হলেন, তাঁরা ইস্রায়েলীদের প্রাচীনবর্গের সমন্বয়ে গঠিত পূর্ণ জমায়েত বা মহাসভাকে[† বা সানহেড্রিন। (ইহুদি বিচার পরিষদ) ] একত্র করলেন ও প্রেরিতশিষ্যদের নিয়ে আসার জন্য কারাগারে লোক পাঠালেন। 22 কিন্তু কারাগারে উপস্থিত হয়ে কর্মচারীরা তাঁদের সেখানে খুঁজে পেল না। তাই তারা ফেরত গিয়ে সংবাদ দিল, 23 “আমরা গিয়ে দেখলাম, কারাগার সুদৃঢ়রূপে তালাবন্ধ, রক্ষীরাও দরজায় দরজায় দাঁড়িয়ে আছে, কিন্তু আমরা সেগুলি খুলে ভিতরে কাউকে দেখতে পেলাম না।” 24 এই সংবাদ শুনে মন্দিরের রক্ষী-প্রধান ও মহাযাজক বিস্ময়বিমূঢ় হলেন। তাঁরা অবাক হয়ে ভাবতে লাগলেন যে, এর পরিণাম কী হতে পারে। 25 তখন একজন ব্যক্তি এসে বলল, “দেখুন! যাঁদের আপনারা কারাগারে রেখেছিলেন, তাঁরা মন্দির-প্রাঙ্গণে দাঁড়িয়ে লোকদের শিক্ষা দিচ্ছে।” 26 এতে রক্ষী-প্রধান তাঁর কর্মচারীদের সঙ্গে গিয়ে প্রেরিতশিষ্যদের নিয়ে এলেন। তাঁরা বলপ্রয়োগ করলেন না, কারণ লোকেরা তাঁদের উপর পাথর মারতে পারে ভেবে তাঁরা ভয় পেয়েছিলেন। 27 প্রেরিতশিষ্যদের নিয়ে এসে, তাঁরা তাঁদের মহাসভার সামনে উপস্থিত করলেন, যেন মহাযাজক তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেন। 28 তিনি বললেন, “আমরা তোমাদের এই নামে শিক্ষা না দেওয়ার জন্য কঠোর আদেশ দিয়েছিলাম, তবুও তোমরা তোমাদের উপদেশে জেরুশালেম পূর্ণ করেছ এবং সেই ব্যক্তির রক্তের জন্য আমাদেরই অপরাধী সাব্যস্ত করার উদ্দেশ্যে দৃঢ়সংকল্প হয়েছ।” 29 পিতর ও অন্য প্রেরিতশিষ্যেরা উত্তর দিলেন, “মানুষের চেয়ে আমরা বরং ঈশ্বরের আদেশই পালন করব! 30 আমাদের পিতৃপুরুষদের ঈশ্বর সেই যীশুকে মৃতলোক থেকে উত্থাপিত করেছেন—যাঁকে আপনারা একটি গাছের উপরে টাঙিয়ে হত্যা করেছিলেন। 31 ঈশ্বর তাঁকে অধিপতি ও উদ্ধারকর্তা করে তাঁর ডানদিকে গ্রিক: হাতে উন্নীত করেছেন, যেন তিনি ইস্রায়েলকে মন পরিবর্তনের পথে চালনা করতে ও পাপের ক্ষমা দিতে পারেন। 32 আমরা এই সমস্ত বিষয়ের সাক্ষী, আর পবিত্র আত্মাও সাক্ষী, যাঁকে ঈশ্বর, যারা তাঁর আজ্ঞা পালন করে, তাদের দান করেছেন।” 33 একথা শুনে তাঁরা ক্রোধে উন্মত্ত হলেন এবং তাঁদের মৃত্যুদণ্ড দিতে চাইলেন। 34 কিন্তু গমলীয়েল নামে একজন ফরিশী, যিনি শাস্ত্রবিদ ও সর্বসাধারণের কাছে একজন গণ্যমান্য ব্যক্তি ছিলেন, তিনি উঠে দাঁড়ালেন ও আদেশ দিলেন, যেন কিছুক্ষণের জন্য ওদেরকে বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়। 35 এরপর তিনি মহাসভাকে সম্বোধন করে বললেন, “হে ইস্রায়েলী জনগণ, এই লোকেদের নিয়ে আপনারা যা করতে চলেছেন, সে সম্পর্কে সতর্কতার সঙ্গে বিবেচনা করুন। 36 কিছুদিন আগে, থুদা উপস্থিত হয়ে নিজেকে এক মহাপুরুষ বলে দাবি করেছিল এবং প্রায় চারশো মানুষ তার পাশে জড়ো হয়েছিল। সে নিহত হল ও তার অনুগামীরা ছত্রভঙ্গ হওয়ায় সবকিছুই ব্যর্থ হয়েছিল; কারো আর অস্তিত্ব রইল না। 37 তারপরে গালীলীয় যিহূদা জনগণনার সময়ে উপস্থিত হয়ে কিছু মানুষকে বিদ্রোহের পথে চালিত করল। সেও নিহত হল ও তার সমস্ত অনুগামী ছিন্নভিন্ন হয়ে পড়ল। 38 সেই কারণে, বর্তমান বিষয়টি সম্পর্কে আমি তোমাদের পরামর্শ দিই, এই লোকেরা যেমন আছে, থাকতে দাও! ওদের চলে যেতে দাও! কারণ ওদের অভিপ্রায় বা কাজকর্ম যদি মানুষ থেকে হয়, তবে তা ব্যর্থ হবে। 39 কিন্তু তা যদি ঈশ্বর থেকে হয়, তোমরা এদের আটকাতে পারবে না; তোমরা কেবলমাত্র দেখতে পাবে যে, তোমরা নিজেরাই ঈশ্বরের বিরুদ্ধে সংগ্রামে লিপ্ত হয়েছ।” 40 41 তাঁরা তখন তাঁর পরামর্শ গ্রহণ করল। তাঁরা প্রেরিতশিষ্যদের ভিতরে ডেকে এনে চাবুক মারলেন। তাঁরা তাঁদের আদেশ দিলেন, তাঁরা যেন যীশুর নামে কোনো কথা না বলেন। তারপর তাঁরা তাঁদের চলে যেতে দিলেন। প্রেরিতশিষ্যেরা আনন্দ করতে করতে মহাসভা ত্যাগ করলেন, কারণ তাঁরা সেই নামের কারণে অপমান ভোগ করার জন্য যোগ্য বলে গণ্য হয়েছিলেন। 42 দিনের পর দিন, মন্দির-প্রাঙ্গণে ও ঘরে ঘরে, তাঁরা শিক্ষা দিতে এবং যীশুই যে সেই খ্রীষ্ট, এই সুসমাচার ঘোষণা করতে কখনও ক্ষান্ত হতেন না।
Total 28 অধ্যায়গুলির, Selected অধ্যায় 5 / 28
×

Alert

×

Bengali Letters Keypad References