1. আমার প্রাণ জীবনে ক্লান্ত হইয়াছে; আমি আপন দুঃখের কথা মুক্তকণ্ঠে বলিব, আমি প্রাণের তিক্ততায় কথা বলিব।
2. আমি ঈশ্বরকে বলিব, আমাকে দোষী করিও না; আমার সহিত কি কারণে বিবাদ করিতেছ, তাহা আমাকে জ্ঞাত কর।
3. এটী কি ভাল যে, তুমি উপদ্রব করিবে? তোমার হস্তনির্ম্মিত বস্তু তুমি তুচ্ছ করিবে? দুষ্টগণের মন্ত্রণায় প্রসন্ন হইবে?
4. তোমার চক্ষু কি মাংসময়? তোমার দৃষ্টি কি মর্ত্ত্যের দৃষ্টির ন্যায়?
5. তোমার আয়ু কি মর্ত্ত্যের আয়ুর ন্যায়? তোমার বৎসরসমূহ কি মনুষ্যের দিনসমূহের ন্যায়?
6. সেই জন্য কি আমার অপরাধের অনুসন্ধান করিতেছ, আমার পাপের অন্বেষণ করিতেছ?
7. তুমি ত জান, আমি দুষ্ট নহি, এবং তোমার হস্ত হইতে উদ্ধারকারী কেহ নাই।
8. তোমার হস্ত আমাকে গড়িয়াছে, নিরমিয়াছে, আমার সর্ব্বাঙ্গ সুসংযুক্ত [করিয়াছে], তথাপি তুমি আমাকে সংহার করিতেছ।
9. স্মরণ কর, তুমি মৃৎপাত্রের ন্যায় আমাকে গড়িয়াছ, আবার আমাকে কি ধূলিতে লীন করিবে?
10. তুমি কি দুগ্ধের ন্যায় আমাকে ঢাল নাই? ছানার ন্যায় কি আমাকে ঘনীভূত কর নাই?
11. তুমি আমাকে চর্ম্ম ও মাংস পরিহিত করিয়াছ, অস্থি ও শিরা দিয়া আমাকে বুনিয়াছ;
12. তুমি আমাকে জীবনদান ও দয়া করিয়াছ, তব তত্ত্বাবধানে মম আত্মার পালন হইতেছে।
13. তবু এ সমস্তই মনোমধ্যে গুপ্ত করিয়া রাখিয়াছ; আমি জানি, ইহা তোমার মনোরথ।
14. আমি পাপ করিলে তুমি আমার প্রতি লক্ষ্য করিবে, আমার অপরাধ ক্ষমা করিবে না।
15. আমি যদি দুষ্ট হই, আমার সন্তাপ হইবে; যদি ধার্ম্মিক হই, মস্তক তুলিতে পারিব না, আমি অবমাননায় পরিপূর্ণ হইয়াছি, আর আপনার দুঃখ দেখিতেছি।
16. [মস্তক] তুলিলে তুমি সিংহের ন্যায় আমাকে মৃগয়া করিবে, আবার আমাতে তুমি আপনাকে আশ্চর্য্য দেখাইবে।
17. তুমি আমার বিপরীতে নূতন নূতন সাক্ষী উপস্থিত করিবে, আমার প্রতি আপনার বিরক্তি বাড়াইবে; নূতন নূতন সৈন্যদল আমার প্রতিকূল।
18. কেন আমাকে গর্ভ হইতে বাহির করিয়াছিলে? আমি তথায় প্রাণত্যাগ করিতাম, কাহারও নয়নগোচর হইতাম না।
19. আমি অজাতের ন্যায় থাকিতাম, জঠর হইতেই কবরে নীত হইতাম।
20. আমার দিন কি অল্প নয়? অতএব ক্ষান্ত হও, আমাকে ছাড়, ক্ষণকাল সান্ত্বনা লাভ করি,
21. যে পর্য্যন্ত আমি সেই স্থানে না যাই, যথা হইতে আর ফিরিয়া আসিব না। তাহা তিমিরের ও মৃত্যুচ্ছায়ার দেশ,
22. সেই দেশ ঘোর অন্ধকার, তিমিরময়, তাহা মৃত্যুচ্ছায়াব্যাপ্ত, পারিপাট্য-বিহীন, তথায় দীপ্তি অন্ধকারের সমান।