1. হে সদাপ্রভু, আমার প্রার্থনা শুন, আমার আর্ত্তনাদ তোমার কাছে উপস্থিত হউক।
2. সঙ্কটের দিনে আমা হইতে মুখ লুকাইও না, আমার দিকে কর্ণপাত কর; যে দিন আমি ডাকি, ত্বরায় আমাকে উত্তর দিও।
3. কেননা আমার দিন সকল ধূমে লীন হইয়াছে, আমার অস্থি সকল জ্বলন্ত কাষ্ঠবৎ তপ্ত হইয়াছে;
4. আমার হৃদয় তৃণের ন্যায় রৌদ্রাহত হইয়া শুষ্ক হইয়াছে; আমি আহার করিতে ভুলিয়া যাই।
5. আমার হাহাকার শব্দ প্রযুক্ত আমার অস্থিগুলি মাংসে সংসক্ত হইয়াছে।
6. আমি প্রান্তরস্থ পানিভেলার তুল্য হইয়াছি, উৎসন্ন স্থানের পেচকের সমান হইয়াছি।
7. আমি সজাগ থাকি, এবং এমন হইয়াছি, যেন চটক ছাদের উপরে একাকী রহিয়াছে।
8. শত্রুরা সমস্ত দিন আমাকে তিরস্কার করে, যাহারা আমার বিরুদ্ধে ক্রোধোন্মত্ত, তাহারা আমার নাম লইয়া শাপ দেয়।
9. বস্তুতঃ আমি খাদ্যের ন্যায় ভস্ম খাইয়াছি, আমার পেয় দ্রব্যের সহিত নেত্রজল মিশাইয়াছি।
10. ইহার কারণ তোমার কোপ ও তোমার রোষ; কেননা তুমি আমাকে তুলিয়া আছাড় মারিয়াছ।
11. আমার দিন হেলিয়া পড়া ছায়ার সদৃশ, আমি তৃণের ন্যায় শুষ্ক হইতেছি।
12. কিন্তু, হে সদাপ্রভু, তুমি অনন্তকাল সমাসীন থাকিবে, তোমার স্মরণ পুরুষে পুরুষে স্থায়ী।
13. তুমি উঠিবে, সিয়োনের প্রতি করুণা করিবে; কারণ এখন তাহার প্রতি কৃপা করিবার সময়, কারণ নিরূপিত কাল উপস্থিত হইল।
14. যেহেতু তোমার দাসগণ তাহার প্রস্তরে প্রীত, তাহার ধূলির প্রতি কৃপা করিতেছে।
15. ইহাতে জাতিগণ সদাপ্রভুর নাম ভয় করিবে, পৃথিবীর সমস্ত রাজা তোমার প্রতাপে ভীত হইবে।
16. কেননা সদাপ্রভু সিয়োনকে গাঁথিয়াছেন, তিনি স্বীয় প্রতাপে দর্শন দিয়াছেন;
17. তিনি দীনহীনদের প্রার্থনার দিকে ফিরিয়াছেন, তাহাদের প্রার্থনা তুচ্ছ করেন নাই।
18. ইহা ভাবী বংশের নিমিত্ত লিখিত হইবে; এবং যে জাতি সৃষ্ট হইবে, তাহারা সদাপ্রভুর প্রশংসা করিবে।
19. কেননা তিনি আপন উচ্চ ধর্ম্মধাম হইতে অবলোকন করিলেন; সদাপ্রভু স্বর্গ হইতে পৃথিবীতে দৃষ্টিপাত করিলেন;
20. বন্দির হাহাকার শুনিবার জন্য, মৃত্যুর সন্তানদিগকে মুক্ত করিবার জন্য;
21. যেন প্রচারিত হয় সিয়োনে সদাপ্রভুর নাম, ও যিরূশালেমে তাঁহার প্রশংসা;
22. যৎকালে জাতিগণ একত্র মিলিবে, ও রাজ্য সকল মিলিবে, সদাপ্রভুর সেবা করিবার জন্য।
23. তিনি পথের মধ্যে আমার বল নত করিয়াছেন, তিনি আমার আয়ু সংক্ষেপ করিয়াছেন।
24. আমি বলিলাম, হে আমার ঈশ্বর, আয়ুর মধ্যভাগে আমাকে তুলিয়া লইও না; তোমার বৎসর সকল পুরুষে পুরুষে স্থায়ী।
25. তুমি পুরাকালে পৃথিবীর মূল স্থাপন করিয়াছ, আকাশমণ্ডলও তোমার হস্তের রচনা।
26. সে সকল বিনষ্ট হইবে, কিন্তু তুমি স্থির থাকিবে; সে সমস্ত বস্ত্রের ন্যায় জীর্ণ হইয়া পড়িবে, তুমি পরিচ্ছদের ন্যায় তাহাদিগকে খুলিবে, ও তাহাদের পরিবর্ত্তন হইবে।
27. কিন্তু তুমি যে সেই আছ, তোমার বৎসর সকল কখনও শেষ হইবে না।
28. তোমার দাসদের সন্তানগণ বসতি করিবে, তাহাদের বংশ তোমার সাক্ষাতে অটল হইবে।