পবিত্র বাইবেল

গডস গ্রেইস গিফট
নেহেমিয়া
1. অর্তক্ষস্ত রাজার অধিকারের বিংশতিতম বৎসরের নীসন মাসে রাজার সম্মুখে দ্রাক্ষারস থাকাতে আমি সেই দ্রাক্ষারস লইয়া রাজাকে দিলাম। [তৎপূর্ব্বে] আমি তাঁহার সাক্ষাতে কখনও বিষণ্ণ হই নাই।
2. রাজা আমাকে কহিলেন, তোমার ত পীড়া হয় নাই, তবে মুখ কেন বিষণ্ণ হইয়াছে? ইহা ত চিত্তের বিষাদ ব্যতিরেকে আর কিছু নয়। তখন আমি অতিমাত্র ভীত হইলাম।
3. আর আমি রাজাকে কহিলাম, মহারাজ চিরজীবী হউন; আমি কেন বিষণ্ণবদন হইব না? যে নগর আমার পিতৃলোকদের কবরস্থান, তাহা ধ্বংসিত ও তাহার দ্বার সকল অগ্নিভক্ষিত হইয়াছে।
4. তখন রাজা আমাকে কহিলেন, তুমি কি ভিক্ষা চাও? তাহাতে আমি স্বর্গের ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করিলাম।
5. আর রাজাকে কহিলাম, যদি মহারাজের তুষ্টি হয়, এবং আপনার দাস যদি আপনার দৃষ্টিতে অনুগ্রহ পাইয়া থাকে, তবে আপনি আমাকে যিহূদায়, আমার পিতৃলোকদের কবরের নগরে, বিদায় করুন, যেন আমি তাহা নির্ম্মাণ করি।
6. তখন রাজা—রাজমহিষীও তাঁহার পার্শ্বে উপবিষ্টা ছিলেন—আমাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, তোমার যাত্রা কত দিনের জন্য হইবে? আর কবে ফিরিয়া আসিবে? এইরূপে রাজা সন্তুষ্ট হইয়া আমাকে বিদায় করিলেন, আর আমি তাঁহার কাছে সময় নিরূপণ করিলাম।
7. আর আমি রাজাকে কহিলাম, যদি মহারাজের তুষ্টি হয়, তবে নদী-পারস্থ দেশাধ্যক্ষেরা যেন যিহূদায় আমার উপস্থিত না হওয়া পর্য্যন্ত আমার যাত্রার সাহায্য করেন, এই জন্য তাঁহাদের নামে আমাকে পত্র দিতে আজ্ঞা হউক।
8. আর মন্দিরের পার্শ্বস্থ দুর্গ-দ্বারের ও নগর-প্রাচীরের ও আমার প্রবেশ-গৃহের কড়িকাষ্ঠের নিমিত্ত রাজার বন-রক্ষক আসফ যেন আমাকে কাষ্ঠ দেন এই জন্য তাঁহার নামেও একখানি পত্র দিতে আজ্ঞা হউক। তাহাতে আমার উপরে আমার ঈশ্বরের মঙ্গলময় হস্ত থাকায় রাজা আমাকে সে সমস্ত দিলেন।
9. পরে আমি নদী-পারস্থ দেশাধ্যক্ষদের নিকটে উপস্থিত হইয়া রাজার পত্র তাঁহাদিগকে দিলাম। রাজা সেনাপতিদিগকে ও অশ্বারোহীদিগকে আমার সঙ্গে পাঠাইয়াছিলেন।
10. আর হোরোণীয় সন্‌বল্লট ও অম্মোনীয় দাস টোবিয় যখন সংবাদ পাইল, তখন ইস্রায়েল-সন্তানদের মঙ্গল চেষ্টার জন্য এক জন লোক আসিয়াছে, ইহা বুঝিয়া অতিশয় অসন্তুষ্ট হইল।
11. আর আমি যিরূশালেমে উপস্থিত হইয়া সে স্থানে তিন দিন রহিলাম।
12. পরে আমি ও আমার সঙ্গী কয়েকটী পুরুষ, আমরা রাত্রিতে উঠিলাম; কিন্তু যিরূশালেমের জন্য যাহা করিতে ঈশ্বর আমার মনে প্রবৃত্তি দিয়াছিলেন, তাহা কাহাকেও বলি নাই; এবং আমি যে পশুর উপরে আরোহন করিয়াছিলাম, সেটী ছাড়া আর কোন পশু আমার সঙ্গে ছিল না।
13. আমি রাত্রিতে উপত্যকার দ্বার দিয়া বাহির হইয়া নাগকূপ ও সারদ্বার পর্য্যন্ত গেলাম, এবং যিরূশালেমের ভগ্ন প্রাচীর ও অগ্নিভক্ষিত দ্বার সকল দর্শন করিলাম।
14. আর উনুইর দ্বার ও রাজার পুষ্করিণী পর্য্যন্ত গেলাম, কিন্তু সেই স্থানে আমার বাহন পশুর যাইবার স্থান ছিল না।
15. তখন আমি রাত্রিকালে স্রোতের ধার দিয়া উপরে উঠিয়া প্রাচীর দেখিলাম, আর ফিরিয়া উপত্যকার দ্বার দিয়া প্রবেশ করিলাম, পরে ফিরিয়া আসিলাম।
16. কিন্তু আমি কোন্‌ স্থানে গেলাম, কি করিলাম, তাহা অধ্যক্ষেরা জ্ঞাত ছিল না, এবং তৎকাল পর্য্যন্ত আমি যিহূদীদিগকে কি যাজকদিগকে কি প্রধান লোকদিগকে কি অধ্যক্ষদিগকে কি অন্য কর্ম্মচারীদিগকে কাহাকেও তাহা বলি নাই।
17. পরে আমি তাহাদিগকে কহিলাম, আমরা কেমন দুরবস্থায় আছি, তাহা তোমরা দেখিতেছ; যিরূশালেম ধ্বংসিত ও তাহার দ্বার সকল অগ্নিতে দগ্ধ রহিয়াছে; আইস, আমরা যিরূশালেমের প্রাচীর নির্ম্মাণ করি, যেন আর গ্লানির পাত্র না থাকি।
18. পরে আমার উপরে প্রসারিত ঈশ্বরের মঙ্গলময় হস্তের কথা এবং আমার প্রতি কথিত রাজার বাক্য তাহাদিগকে জানাইলাম। তাহাতে তাহারা কহিল, চল, আমরা উঠিয়া গিয়া গাঁথি। এইরূপে তাহারা সেই সাধু কার্য্যের জন্য আপন আপন হস্ত সবল করিল।
19. কিন্তু হোরোণীয় সন্‌বল্লট, অম্মোনীয় দাস টোবিয় ও আরবীয় গেশম্‌ এই কথা শুনিয়া আমাদিগকে বিদ্রূপ ও অবজ্ঞা করিয়া কহিল, তোমরা এ কি কার্য্য করিতে উদ্যত হইলে? তোমরা কি রাজদ্রোহ করিবে?
20. তখন আমি উত্তর করিয়া তাহাদিগকে কহিলাম, যিনি স্বর্গের ঈশ্বর, তিনিই আমাদিগকে কৃতকার্য্য করিবেন; অতএব তাঁহার দাস আমরা উঠিয়া গাঁথিব; কিন্তু যিরূশালেমে তোমাদের কোন অংশ কি অধিকার কি স্মৃতিচিহ্ন নাই।

Notes

No Verse Added

Total 13 Chapters, Current Chapter 2 of Total Chapters 13
1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13
নেহেমিয়া 2
1. অর্তক্ষস্ত রাজার অধিকারের বিংশতিতম বৎসরের নীসন মাসে রাজার সম্মুখে দ্রাক্ষারস থাকাতে আমি সেই দ্রাক্ষারস লইয়া রাজাকে দিলাম। তৎপূর্ব্বে আমি তাঁহার সাক্ষাতে কখনও বিষণ্ণ হই নাই।
2. রাজা আমাকে কহিলেন, তোমার পীড়া হয় নাই, তবে মুখ কেন বিষণ্ণ হইয়াছে? ইহা চিত্তের বিষাদ ব্যতিরেকে আর কিছু নয়। তখন আমি অতিমাত্র ভীত হইলাম।
3. আর আমি রাজাকে কহিলাম, মহারাজ চিরজীবী হউন; আমি কেন বিষণ্ণবদন হইব না? যে নগর আমার পিতৃলোকদের কবরস্থান, তাহা ধ্বংসিত তাহার দ্বার সকল অগ্নিভক্ষিত হইয়াছে।
4. তখন রাজা আমাকে কহিলেন, তুমি কি ভিক্ষা চাও? তাহাতে আমি স্বর্গের ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করিলাম।
5. আর রাজাকে কহিলাম, যদি মহারাজের তুষ্টি হয়, এবং আপনার দাস যদি আপনার দৃষ্টিতে অনুগ্রহ পাইয়া থাকে, তবে আপনি আমাকে যিহূদায়, আমার পিতৃলোকদের কবরের নগরে, বিদায় করুন, যেন আমি তাহা নির্ম্মাণ করি।
6. তখন রাজা—রাজমহিষীও তাঁহার পার্শ্বে উপবিষ্টা ছিলেন—আমাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, তোমার যাত্রা কত দিনের জন্য হইবে? আর কবে ফিরিয়া আসিবে? এইরূপে রাজা সন্তুষ্ট হইয়া আমাকে বিদায় করিলেন, আর আমি তাঁহার কাছে সময় নিরূপণ করিলাম।
7. আর আমি রাজাকে কহিলাম, যদি মহারাজের তুষ্টি হয়, তবে নদী-পারস্থ দেশাধ্যক্ষেরা যেন যিহূদায় আমার উপস্থিত না হওয়া পর্য্যন্ত আমার যাত্রার সাহায্য করেন, এই জন্য তাঁহাদের নামে আমাকে পত্র দিতে আজ্ঞা হউক।
8. আর মন্দিরের পার্শ্বস্থ দুর্গ-দ্বারের নগর-প্রাচীরের আমার প্রবেশ-গৃহের কড়িকাষ্ঠের নিমিত্ত রাজার বন-রক্ষক আসফ যেন আমাকে কাষ্ঠ দেন এই জন্য তাঁহার নামেও একখানি পত্র দিতে আজ্ঞা হউক। তাহাতে আমার উপরে আমার ঈশ্বরের মঙ্গলময় হস্ত থাকায় রাজা আমাকে সে সমস্ত দিলেন।
9. পরে আমি নদী-পারস্থ দেশাধ্যক্ষদের নিকটে উপস্থিত হইয়া রাজার পত্র তাঁহাদিগকে দিলাম। রাজা সেনাপতিদিগকে অশ্বারোহীদিগকে আমার সঙ্গে পাঠাইয়াছিলেন।
10. আর হোরোণীয় সন্‌বল্লট অম্মোনীয় দাস টোবিয় যখন সংবাদ পাইল, তখন ইস্রায়েল-সন্তানদের মঙ্গল চেষ্টার জন্য এক জন লোক আসিয়াছে, ইহা বুঝিয়া অতিশয় অসন্তুষ্ট হইল।
11. আর আমি যিরূশালেমে উপস্থিত হইয়া সে স্থানে তিন দিন রহিলাম।
12. পরে আমি আমার সঙ্গী কয়েকটী পুরুষ, আমরা রাত্রিতে উঠিলাম; কিন্তু যিরূশালেমের জন্য যাহা করিতে ঈশ্বর আমার মনে প্রবৃত্তি দিয়াছিলেন, তাহা কাহাকেও বলি নাই; এবং আমি যে পশুর উপরে আরোহন করিয়াছিলাম, সেটী ছাড়া আর কোন পশু আমার সঙ্গে ছিল না।
13. আমি রাত্রিতে উপত্যকার দ্বার দিয়া বাহির হইয়া নাগকূপ সারদ্বার পর্য্যন্ত গেলাম, এবং যিরূশালেমের ভগ্ন প্রাচীর অগ্নিভক্ষিত দ্বার সকল দর্শন করিলাম।
14. আর উনুইর দ্বার রাজার পুষ্করিণী পর্য্যন্ত গেলাম, কিন্তু সেই স্থানে আমার বাহন পশুর যাইবার স্থান ছিল না।
15. তখন আমি রাত্রিকালে স্রোতের ধার দিয়া উপরে উঠিয়া প্রাচীর দেখিলাম, আর ফিরিয়া উপত্যকার দ্বার দিয়া প্রবেশ করিলাম, পরে ফিরিয়া আসিলাম।
16. কিন্তু আমি কোন্‌ স্থানে গেলাম, কি করিলাম, তাহা অধ্যক্ষেরা জ্ঞাত ছিল না, এবং তৎকাল পর্য্যন্ত আমি যিহূদীদিগকে কি যাজকদিগকে কি প্রধান লোকদিগকে কি অধ্যক্ষদিগকে কি অন্য কর্ম্মচারীদিগকে কাহাকেও তাহা বলি নাই।
17. পরে আমি তাহাদিগকে কহিলাম, আমরা কেমন দুরবস্থায় আছি, তাহা তোমরা দেখিতেছ; যিরূশালেম ধ্বংসিত তাহার দ্বার সকল অগ্নিতে দগ্ধ রহিয়াছে; আইস, আমরা যিরূশালেমের প্রাচীর নির্ম্মাণ করি, যেন আর গ্লানির পাত্র না থাকি।
18. পরে আমার উপরে প্রসারিত ঈশ্বরের মঙ্গলময় হস্তের কথা এবং আমার প্রতি কথিত রাজার বাক্য তাহাদিগকে জানাইলাম। তাহাতে তাহারা কহিল, চল, আমরা উঠিয়া গিয়া গাঁথি। এইরূপে তাহারা সেই সাধু কার্য্যের জন্য আপন আপন হস্ত সবল করিল।
19. কিন্তু হোরোণীয় সন্‌বল্লট, অম্মোনীয় দাস টোবিয় আরবীয় গেশম্‌ এই কথা শুনিয়া আমাদিগকে বিদ্রূপ অবজ্ঞা করিয়া কহিল, তোমরা কি কার্য্য করিতে উদ্যত হইলে? তোমরা কি রাজদ্রোহ করিবে?
20. তখন আমি উত্তর করিয়া তাহাদিগকে কহিলাম, যিনি স্বর্গের ঈশ্বর, তিনিই আমাদিগকে কৃতকার্য্য করিবেন; অতএব তাঁহার দাস আমরা উঠিয়া গাঁথিব; কিন্তু যিরূশালেমে তোমাদের কোন অংশ কি অধিকার কি স্মৃতিচিহ্ন নাই।
Total 13 Chapters, Current Chapter 2 of Total Chapters 13
1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13
×

Alert

×

bengali Letters Keypad References