পবিত্র বাইবেল

গডস গ্রেইস গিফট
হিব্রুদের কাছে পত্র
1. অতএব এমন বৃহৎ সাক্ষিমেঘে বেষ্টিত হওয়াতে আইস, আমরাও সমস্ত বোঝা ও সহজ বাধাজনক পাপ ফেলিয়া দিয়া ধৈর্য্যপূর্ব্বক আমাদের সম্মুখস্থ ধাবনক্ষেত্রে দৌড়ি;
2. বিশ্বাসের আদিকর্ত্তা ও সিদ্ধিকর্ত্তা যীশুর প্রতি দৃষ্টি রাখি; তিনিই আপনার সম্মুখস্থ আনন্দের নিমিত্ত ক্রুশ সহ্য করিলেন, অপমান তুচ্ছ করিলেন, এবং ঈশ্বরের সিংহাসনের দক্ষিণে উপবিষ্ট হইয়াছেন।
3. তাঁহাকেই আলোচনা কর, যিনি আপনার বিরুদ্ধে পাপিগণের এমন প্রতিবাদ সহ্য করিয়াছিলেন, যেন প্রাণের ক্লান্তিতে অবসন্ন না হও।
4. তোমরা পাপের সহিত যুদ্ধ করিতে করিতে এখনও রক্তব্যয় পর্য্যন্ত প্রতিরোধ কর নাই;
5. আর তোমরা সেই আশ্বাসবাক্য ভুলিয়া গিয়াছ, যাহা পুত্র বলিয়া তোমাদের সহিত কথাবার্ত্তা কহিতেছে, “হে আমার পুত্র, প্রভুর শাসন তুচ্ছ করিও না, তাঁহার দ্বারা অনুযুক্ত হইলে ক্লান্ত হইও না।
6. কেননা প্রভু যাহাকে প্রেম করেন, তাহাকেই শাসন করেন, যে কোন পুত্রকে গ্রহণ করেন, তাহাকেই প্রহার করেন।”
7. শাসনের জন্যই তোমরা সহ্য করিতেছ; যেমন পুত্রদের প্রতি, তেমনি ঈশ্বর তোমাদের প্রতি ব্যবহার করিতেছেন; কেননা পিতা যাহাকে শাসন না করেন, এমন পুত্র কোথায়?
8. কিন্তু তোমাদের শাসন যদি না হয়—সকলেই ত তাহার ভাগী—তবে সুতরাং তোমরা জারজ, পুত্র নও।
9. আবার আমাদের মাংসের পিতারা আমাদের শাসনকারী ছিলেন, এবং আমরা তাঁহাদিগকে সমাদর করিতাম; তবে যিনি আত্মা সকলের পিতা, আমরা কি অনেকগুণ অধিক পরিমাণে তাঁহার বশীভূত হইয়া জীবন ধারণ করিব না?
10. উহাঁরা ত অল্পদিনের নিমিত্ত, উহাঁদের যেমন বিহিত বোধ হইত, তেমনই শাসন করিতেন, কিন্তু ইনি হিতের নিমিত্তই করিতেছেন, যেন আমরা তাঁহার পবিত্রতার ভাগী হই।
11. কোন শাসনই আপাততঃ আনন্দের বিষয় বোধ হয় না, কিন্তু দুঃখের বিষয় বোধ হয়; তথাপি তদ্দ্বারা যাহাদের অভ্যাস জন্মিয়াছে, তাহা পরে তাহাদিগকে ধার্ম্মিকতার শান্তিযুক্ত ফল প্রদান করে।
12. অতএব তোমরা শিথিল হস্ত ও অবশ হাঁটু সবল কর;
13. এবং আপন আপন চরণের জন্য সরল পথ প্রস্তুত কর, যেন যাহা খঞ্জ তাহা স্থানচ্যুত না হয়, বরং সুস্থ হয়।
14. সকলের সহিত শান্তির অনুধাবন কর, এবং যাহা ব্যতিরেকে কেহই প্রভুর দর্শন পাইবে না, সেই পবিত্রতার অনুধাবন কর; সাবধান হইয়া দেখ, পাছে কেহ ঈশ্বরের অনুগ্রহ হইতে বঞ্চিত হয়;
15. পাছে তিক্ততার কোন মূল অঙ্কুরিত হইয়া তোমাদিগকে উৎপীড়িত করে, এবং ইহাতে অধিকাংশ লোক দূষিত হয়;
16. পাছে কেহ ব্যভিচারী বা ধর্ম্মবিরূপক হয়, যেমন এষৌ, সে ত এক বারের খাদ্যের নিমিত্ত আপন জ্যেষ্ঠাধিকার বিক্রয় করিয়াছিল।
17. তোমরা ত জান, তৎপরে যখন সে আশীর্ব্বাদের অধিকারী হইতে বাঞ্ছা করিল, তখন সজল নয়নে সযত্নে তাহার চেষ্টা করিলেও অগ্রাহ্য হইল, কারণ সে মনপরিবর্ত্তনের স্থান পাইল না।
18. কারণ তোমরা সেই স্পৃশ্য ও অগ্নিতে প্রজ্বলিত পর্ব্বত, কৃষ্ণবর্ণ মেঘ, অন্ধকার, ঝড়, তূরীর ধ্বনি ও বাক্যের শব্দ এই সকলের নিকট উপস্থিত হও নাই।
19. সেই শব্দ যাহারা শুনিয়াছিল, তাহারা প্রার্থনা করিয়াছিল, যেন তাহাদের কাছে আর কথা বলা না হয়;
20. কারণ এই আজ্ঞা তাহারা সহ্য করিতে পারিল না, “যদি কোন পশু পর্ব্বত স্পর্শ করে, তবে সেও প্রস্তারাঘাতে হত হইবে”;
21. এবং সেই দর্শন এমন ভয়ঙ্কর ছিল যে, মোশি কহিলেন, “আমি নিতান্তই ভীত ও কম্পিত হইতেছি”।
22. কিন্তু তোমরা এই সকলের নিকটে উপস্থিত হইয়াছ, যথা, সিয়োন পর্ব্বত, জীবন্ত ঈশ্বরের পুরী স্বর্গীয় যিরূশালেম, অযুত অযুত দূত,
23. স্বর্গে লিখিত প্রথমজাতদের সাধারণ সভা ও মণ্ডলী, সকলের বিচারকর্ত্তা ঈশ্বর, সিদ্ধিপ্রাপ্ত ধার্ম্মিকগণের আত্মা,
24. নূতন নিয়মের মধ্যস্থ যীশু, এবং প্রোক্ষণের রক্ত, যাহা হেবল হইতেও উত্তম কথা বলে।
25. দেখিও, যিনি কথা বলেন, তাঁহার কথা শুনিতে অসম্মত হইও না; কারণ যিনি পৃথিবীতে আদেশবাণী বলিয়াছিলেন, তাঁহার কথা শুনিতে অসম্মত হওয়াতে যখন ঐ লোকেরা রক্ষা পাইল না, তখন যিনি স্বর্গ হইতে বলিতেছেন, তাঁহা হইতে বিমুখ হইলে আমরা যে রক্ষা পাইব না, ইহা কত অধিক গুণে নিশ্চিত!
26. তৎকালে তাঁহার রব পৃথিবীকে কম্পান্বিত করিয়াছিল; কিন্তু এখন তিনি এই প্রতিজ্ঞা করিয়াছেন, “আমি আর একবার কেবল পৃথিবীকে নয়, আকাশমণ্ডলকেও কম্পান্বিত করিব।”
27. এখানে “আর একবার,” এই শব্দে নির্দ্দিষ্ট হইতেছে, সেই কম্পমান সকল বিষয় নির্ম্মিত বলিয়া দূরীকৃত হইবে, যেন অকম্পমান বিষয় সকল স্থায়ী হয়।
28. অতএব অকম্পনীয় রাজ্য পাইবার অধিকারী হওয়াতে, আইস, আমরা সেই অনুগ্রহ অবলম্বন করি, যদ্দ্বারা ভক্তি ও ভয় সহকারে ঈশ্বরের প্রীতিজনক আরাধনা করিতে পারি।
29. কেননা আমাদের ঈশ্বর গ্রাসকারী অগ্নিস্বরূপ।

Notes

No Verse Added

Total 13 Chapters, Current Chapter 12 of Total Chapters 13
1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13
হিব্রুদের কাছে পত্র 12
1. অতএব এমন বৃহৎ সাক্ষিমেঘে বেষ্টিত হওয়াতে আইস, আমরাও সমস্ত বোঝা সহজ বাধাজনক পাপ ফেলিয়া দিয়া ধৈর্য্যপূর্ব্বক আমাদের সম্মুখস্থ ধাবনক্ষেত্রে দৌড়ি;
2. বিশ্বাসের আদিকর্ত্তা সিদ্ধিকর্ত্তা যীশুর প্রতি দৃষ্টি রাখি; তিনিই আপনার সম্মুখস্থ আনন্দের নিমিত্ত ক্রুশ সহ্য করিলেন, অপমান তুচ্ছ করিলেন, এবং ঈশ্বরের সিংহাসনের দক্ষিণে উপবিষ্ট হইয়াছেন।
3. তাঁহাকেই আলোচনা কর, যিনি আপনার বিরুদ্ধে পাপিগণের এমন প্রতিবাদ সহ্য করিয়াছিলেন, যেন প্রাণের ক্লান্তিতে অবসন্ন না হও।
4. তোমরা পাপের সহিত যুদ্ধ করিতে করিতে এখনও রক্তব্যয় পর্য্যন্ত প্রতিরোধ কর নাই;
5. আর তোমরা সেই আশ্বাসবাক্য ভুলিয়া গিয়াছ, যাহা পুত্র বলিয়া তোমাদের সহিত কথাবার্ত্তা কহিতেছে, “হে আমার পুত্র, প্রভুর শাসন তুচ্ছ করিও না, তাঁহার দ্বারা অনুযুক্ত হইলে ক্লান্ত হইও না।
6. কেননা প্রভু যাহাকে প্রেম করেন, তাহাকেই শাসন করেন, যে কোন পুত্রকে গ্রহণ করেন, তাহাকেই প্রহার করেন।”
7. শাসনের জন্যই তোমরা সহ্য করিতেছ; যেমন পুত্রদের প্রতি, তেমনি ঈশ্বর তোমাদের প্রতি ব্যবহার করিতেছেন; কেননা পিতা যাহাকে শাসন না করেন, এমন পুত্র কোথায়?
8. কিন্তু তোমাদের শাসন যদি না হয়—সকলেই তাহার ভাগী—তবে সুতরাং তোমরা জারজ, পুত্র নও।
9. আবার আমাদের মাংসের পিতারা আমাদের শাসনকারী ছিলেন, এবং আমরা তাঁহাদিগকে সমাদর করিতাম; তবে যিনি আত্মা সকলের পিতা, আমরা কি অনেকগুণ অধিক পরিমাণে তাঁহার বশীভূত হইয়া জীবন ধারণ করিব না?
10. উহাঁরা অল্পদিনের নিমিত্ত, উহাঁদের যেমন বিহিত বোধ হইত, তেমনই শাসন করিতেন, কিন্তু ইনি হিতের নিমিত্তই করিতেছেন, যেন আমরা তাঁহার পবিত্রতার ভাগী হই।
11. কোন শাসনই আপাততঃ আনন্দের বিষয় বোধ হয় না, কিন্তু দুঃখের বিষয় বোধ হয়; তথাপি তদ্দ্বারা যাহাদের অভ্যাস জন্মিয়াছে, তাহা পরে তাহাদিগকে ধার্ম্মিকতার শান্তিযুক্ত ফল প্রদান করে।
12. অতএব তোমরা শিথিল হস্ত অবশ হাঁটু সবল কর;
13. এবং আপন আপন চরণের জন্য সরল পথ প্রস্তুত কর, যেন যাহা খঞ্জ তাহা স্থানচ্যুত না হয়, বরং সুস্থ হয়।
14. সকলের সহিত শান্তির অনুধাবন কর, এবং যাহা ব্যতিরেকে কেহই প্রভুর দর্শন পাইবে না, সেই পবিত্রতার অনুধাবন কর; সাবধান হইয়া দেখ, পাছে কেহ ঈশ্বরের অনুগ্রহ হইতে বঞ্চিত হয়;
15. পাছে তিক্ততার কোন মূল অঙ্কুরিত হইয়া তোমাদিগকে উৎপীড়িত করে, এবং ইহাতে অধিকাংশ লোক দূষিত হয়;
16. পাছে কেহ ব্যভিচারী বা ধর্ম্মবিরূপক হয়, যেমন এষৌ, সে এক বারের খাদ্যের নিমিত্ত আপন জ্যেষ্ঠাধিকার বিক্রয় করিয়াছিল।
17. তোমরা জান, তৎপরে যখন সে আশীর্ব্বাদের অধিকারী হইতে বাঞ্ছা করিল, তখন সজল নয়নে সযত্নে তাহার চেষ্টা করিলেও অগ্রাহ্য হইল, কারণ সে মনপরিবর্ত্তনের স্থান পাইল না।
18. কারণ তোমরা সেই স্পৃশ্য অগ্নিতে প্রজ্বলিত পর্ব্বত, কৃষ্ণবর্ণ মেঘ, অন্ধকার, ঝড়, তূরীর ধ্বনি বাক্যের শব্দ এই সকলের নিকট উপস্থিত হও নাই।
19. সেই শব্দ যাহারা শুনিয়াছিল, তাহারা প্রার্থনা করিয়াছিল, যেন তাহাদের কাছে আর কথা বলা না হয়;
20. কারণ এই আজ্ঞা তাহারা সহ্য করিতে পারিল না, “যদি কোন পশু পর্ব্বত স্পর্শ করে, তবে সেও প্রস্তারাঘাতে হত হইবে”;
21. এবং সেই দর্শন এমন ভয়ঙ্কর ছিল যে, মোশি কহিলেন, “আমি নিতান্তই ভীত কম্পিত হইতেছি”।
22. কিন্তু তোমরা এই সকলের নিকটে উপস্থিত হইয়াছ, যথা, সিয়োন পর্ব্বত, জীবন্ত ঈশ্বরের পুরী স্বর্গীয় যিরূশালেম, অযুত অযুত দূত,
23. স্বর্গে লিখিত প্রথমজাতদের সাধারণ সভা মণ্ডলী, সকলের বিচারকর্ত্তা ঈশ্বর, সিদ্ধিপ্রাপ্ত ধার্ম্মিকগণের আত্মা,
24. নূতন নিয়মের মধ্যস্থ যীশু, এবং প্রোক্ষণের রক্ত, যাহা হেবল হইতেও উত্তম কথা বলে।
25. দেখিও, যিনি কথা বলেন, তাঁহার কথা শুনিতে অসম্মত হইও না; কারণ যিনি পৃথিবীতে আদেশবাণী বলিয়াছিলেন, তাঁহার কথা শুনিতে অসম্মত হওয়াতে যখন লোকেরা রক্ষা পাইল না, তখন যিনি স্বর্গ হইতে বলিতেছেন, তাঁহা হইতে বিমুখ হইলে আমরা যে রক্ষা পাইব না, ইহা কত অধিক গুণে নিশ্চিত!
26. তৎকালে তাঁহার রব পৃথিবীকে কম্পান্বিত করিয়াছিল; কিন্তু এখন তিনি এই প্রতিজ্ঞা করিয়াছেন, “আমি আর একবার কেবল পৃথিবীকে নয়, আকাশমণ্ডলকেও কম্পান্বিত করিব।”
27. এখানে “আর একবার,” এই শব্দে নির্দ্দিষ্ট হইতেছে, সেই কম্পমান সকল বিষয় নির্ম্মিত বলিয়া দূরীকৃত হইবে, যেন অকম্পমান বিষয় সকল স্থায়ী হয়।
28. অতএব অকম্পনীয় রাজ্য পাইবার অধিকারী হওয়াতে, আইস, আমরা সেই অনুগ্রহ অবলম্বন করি, যদ্দ্বারা ভক্তি ভয় সহকারে ঈশ্বরের প্রীতিজনক আরাধনা করিতে পারি।
29. কেননা আমাদের ঈশ্বর গ্রাসকারী অগ্নিস্বরূপ।
Total 13 Chapters, Current Chapter 12 of Total Chapters 13
1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13
×

Alert

×

bengali Letters Keypad References