1. বৈথনিয়ায় এক ব্যক্তি পীড়িত ছিলেন, তাঁহার নাম লাসার; তিনি মরিয়ম ও তাঁহার ভগিনী মার্থার গ্রামের লোক।
|
2. ইনি সেই মরিয়ম, যিনি প্রভুকে সুগন্ধি তৈল মাখাইয়া দেন, এবং আপন কেশ দিয়া তাঁহার চরণ মুছাইয়া দেন; তাঁহারই ভ্রাতা লাসার পীড়িত ছিলেন।
|
3. অতএব ভগিনীরা তাঁহাকে বলিয়া পাঠাইলেন, প্রভু, দেখুন, আপনি যাহাকে ভাল বাসেন তাহার পীড়া হইয়াছে। যীশু শুনিয়া কহিলেন,
|
4. এ পীড়া মৃত্যুর জন্য হয় নাই, কিন্তু ঈশ্বরের গৌরবের নিমিত্ত, যেন ঈশ্বরের পুত্র ইহা দ্বারা গৌরবান্বিত হন।
|
8. শিষ্যেরা তাঁহাকে কহিলেন, রব্বি, এই ত যিহূদীরা আপনাকে পাথর মারিবার চেষ্টা করিতেছিল, তবু আপনি আবার সেখানে যাইতেছেন?
|
9. যীশু উত্তর করিলেন, দিনে কি বারো ঘন্টা নাই? যদি কেহ দিনে চলে, সে উছোট খায় না, কেননা সে এই জগতের দীপ্তি দেখে।
|
11. তিনি এই কথা কহিলেন; আর ইহার পরে তাঁহাদিগকে বলিলেন, আমাদের বন্ধু লাসার নিদ্রা গিয়াছে, কিন্তু আমি নিদ্রা হইতে তাহাকে জাগাইতে যাইতেছি।
|
13. যীশু তাঁহার মৃত্যুর বিষয় বলিয়াছিলেন, কিন্তু তাঁহারা মনে করিলেন যে, তিনি নিদ্রাঘটিত বিশ্রামের কথা বলিতেছেন।
|
15. আর তোমাদের নিমিত্ত আনন্দ করিতেছি যে, আমি সেখানে ছিলাম না, যেন তোমরা বিশ্বাস কর; তথাপি চল, আমরা তাহার কাছে যাই।
|
16. তখন থোমা, যাঁহাকে দিদুমঃ যমজ বলে, তিনি সহ-শিষ্যদিগকে কহিলেন, চল, আমরাও যাই, যেন ইহাঁর সঙ্গে মরি।
|
19. আর যিহূদীদের অনেকে মার্থা ও মরিয়মের নিকটে আসিয়াছিল, যেন তাঁহাদের ভ্রাতার বিষয়ে তাঁহাদিগকে সান্ত্বনা দিতে পারে।
|
20. যখন মার্থা শুনিলেন, যীশু আসিতেছেন, তিনি গিয়া তাঁহার সহিত সাক্ষাৎ করিলেন, কিন্তু মরিয়ম গৃহে বসিয়া রহিলেন।
|
27. তিনি কহিলেন, হাঁ, প্রভু, আমি বিশ্বাস করিয়াছি যে, জগতে যাঁহার আগমন হইবে, আপনি সেই খ্রীষ্ট, ঈশ্বরের পুত্র।
|
28. ইহা বলিয়া তিনি চলিয়া গেলেন, আর আপন ভগিনী মরিয়মকে গোপনে ডাকিয়া কহিলেন, গুরু উপস্থিত, তোমাকে ডাকিতেছেন।
|
30. যীশু তখনও গ্রামের মধ্যে প্রবেশ করেন নাই; যেখানে মার্থা তাঁহার সহিত সাক্ষাৎ করিয়াছিলেন, সেই স্থানেই ছিলেন।
|
31. তখন যে যিহূদীরা মরিয়মের সঙ্গে গৃহমধ্যে ছিল ও তাঁহাকে সান্ত্বনা করিতেছিল, তাহারা তাঁহাকে শীঘ্র উঠিয়া বাহিরে যাইতে দেখিয়া, তাঁহার পশ্চাৎ পশ্চাৎ চলিল, মনে করিল, তিনি কবরের নিকটে রোদন করিতে যাইতেছেন।
|
32. যীশু যেখানে ছিলেন, মরিয়ম যখন সেখানে আসিলেন, তখন তাঁহাকে দেখিয়া তাঁহার চরণে পড়িয়া বলিলেন, প্রভু, আপনি যদি এখানে থাকিতেন, আমার ভাই মরিত না।
|
33. যীশু যখন দেখিলেন, তিনি রোদন করিতেছেন, ও তাঁহারা সঙ্গে সঙ্গে যে যিহূদীরা আসিয়াছিল, তাহারাও রোদন করিতেছে, তখন আত্মাতে উত্তেজিত হইয়া উঠিলেন ও উদ্বিগ্ন হইলেন, আর কহিলেন, তাহাকে কোথায় রাখিয়াছ?
|
37. কিন্তু তাহাদের কেহ কেহ বলিল, এই যে ব্যক্তি অন্ধের চক্ষু খুলিয়া দিয়াছেন, ইনি কি উহার মৃত্যুও নিবারণ করিতে পারিতেন না?
|
38. তাহাতে যীশু পুনর্ব্বার অন্তরে উত্তেজিত হইয়া কবরের নিকটে আসিলেন। সেই কবর একটা গহ্বর, এবং তাহার উপরে একখান পাথর ছিল।
|
39. যীশু বলিলেন, তোমরা পাথরখান সরাইয়া ফেল। মৃত ব্যক্তির ভগিনী মার্থা তাঁহাকে কহিলেন, প্রভু, এখন উহাতে দুর্গন্ধ হইয়াছে, কেননা আজ চারি দিন।
|
40. যীশু তাঁহাকে কহিলেন, আমি কি তোমাকে বলি নাই যে, যদি বিশ্বাস কর, তবে ঈশ্বরের মহিমা দেখিতে পাইবে? তখন তাহারা পাথরখান সরাইয়া ফেলিল।
|
42. আর আমি জানিতাম, তুমি সর্ব্বদা আমার কথা শুনিয়া থাক; কিন্তু এই যে সকল লোক চারিদিকে দাঁড়াইয়া আছে, ইহাদের নিমিত্তে এই কথা কহিলাম, যেন ইহারা বিশ্বাস করে যে, তুমিই আমাকে প্রেরণ করিয়াছ।
|
44. তাহাতে সেই মৃত ব্যক্তি বাহিরে আসিলেন; তাঁহার চরণ ও হস্ত কবর-বস্ত্রে বদ্ধ ছিল, এবং মুখ গামছায় বাঁধা ছিল। যীশু তাহাদিগকে কহিলেন, ইহাকে খুলিয়া দেও, ও যাইতে দেও।
|
45. তখন যিহূদীদের অনেকে, যাহারা মরিয়মের নিকট আসিয়াছিল, এবং যীশু যাহা করিলেন, দেখিয়াছিল, তাহারা তাঁহাতে বিশ্বাস করিল।
|
47. অতএব প্রধান যাজকগণ ও ফরীশীরা সভা করিয়া বলিতে লাগিল আমরা কি করি? এ ব্যক্তি ত অনেক চিহ্ন-কার্য্য করিতেছে।
|
48. আমরা যদি ইহাকে এইরূপ চলিতে দিই, তবে সকলে ইহাতে বিশ্বাস করিবে; আর রোমীয়েরা আসিয়া আমাদের স্থান ও জাতি উভয়ই কাড়িয়া লইবে।
|
50. তোমরা কিছুই বুঝ না, আর বিবেচনাও কর না যে, তোমাদের পক্ষে এটী ভাল, যেন প্রজাগণের জন্য এক ব্যক্তি মরে, আর সমস্ত জাতি বিনষ্ট না হয়।
|
51. এই কথা যে তিনি আপনা হইতে বলিলেন, তাহা নয়, কিন্তু সেই বৎসরের মহাযাজক হওয়াতে তিনি এই ভাববাণী বলিলেন যে, সেই জাতির জন্য যীশু মরিবেন।
|
52. আর কেবল সেই জাতির জন্য নয়, কিন্তু ঈশ্বরের যে সকল সন্তান ছিন্ন ভিন্ন হইয়াছিল, সেই সকলকে যেন একত্র করিয়া এক করেন, এই জন্য।
|
54. তাহাতে যীশু আর প্রকাশ্যরূপে যিহূদীদের মধ্যে যাতায়াত করিলেন না, কিন্তু তথা হইতে প্রান্তরের নিকটবর্ত্তী জনপদে ইফ্রয়িম নামক নগরে গেলেন, আর সেখানে শিষ্যদের সহিত অবস্থিতি করিলেন।
|
55. তখন যিহূদীদের নিস্তারপর্ব্ব সন্নিকট ছিল, এবং অনেক লোক আপনাদিগকে শুচি করিবার জন্য নিস্তারপর্ব্বের পূর্ব্বে জনপদ হইতে যিরূশালেমে গেল।
|
56. তাহারা যীশুর অন্বেষণ করিতে লাগিল, এবং ধর্ম্মধামে দাঁড়াইয়া পরস্পর কহিল, তোমাদের কেমন বোধ হয়? তিনি কি পর্ব্বে আসিবেন না?
|
57. আর প্রধান যাজকেরা ও ফরীশীরা আজ্ঞা করিয়াছিল যে, তিনি কোথায় আছেন, তাহা যদি কেহ জানে, তবে দেখাইয়া দিউক; যেন তাহারা তাঁহাকে ধরিতে পারে।
|