1. আর সদাপ্রভু মোশিকে কহিলেন,
2. তুমি ইস্রায়েল-সন্তানগণের জন্য মিদিয়নীয়দিগকে প্রতিফল দেও; তৎপরে তুমি আপন লোকদের নিকটে সংগৃহিত হইবে।
3. তখন মোশি লোকদিগকে কহিলেন, তোমাদের কতক লোক যুদ্ধার্থে সজ্জিত হউক, সদাপ্রভুর জন্য মিদিয়নকে প্রতিফল দিতে মিদিয়নের বিরুদ্ধে যাত্রা করুক।
4. তোমরা ইস্রায়েল-বংশসমূহের প্রত্যেক বংশ হইতে এক এক সহস্র লোক যুদ্ধে প্রেরণ করিবে।
5. তাহাতে ইস্রায়েলের সহস্র সহস্রের মধ্যে এক এক বংশ হইতে এক এক সহস্র মনোনীত হইলে যুদ্ধার্থে বারো সহস্র লোক সজ্জিত হইল।
6. এইরূপে মোশি এক এক বংশের এক এক সহস্র লোককে এবং ইলিয়াসর যাজকের পুত্র পীনহসকে যুদ্ধে প্রেরণ করিলেন; এবং পবিত্র স্থানের পাত্র সকল ও রণবাদ্যের তূরী পীনহসের হস্তগত ছিল।
7. পরে মোশির প্রতি সদাপ্রভুর দত্ত আজ্ঞানুসারে তাহারা মিদিয়নের সহিত যুদ্ধ করিল, ও সমস্ত পুরুষকে বধ করিল।
8. আর তাহারা মিদিয়নের রাজগণকে তাহাদের অন্য নিহত লোকদের সহিত বধ করিল; ইবি, রেকম, সূর, হূর ও রেবা, মিদিয়নের এই পাঁচ রাজাকে বধ করিল; বিয়োরের পুত্র বিলিয়মকেও খড়গ দ্বারা বধ করিল।
9. আর ইস্রায়েল-সন্তানগণ মিদিয়নের সকল স্ত্রীলোক ও বালকবালিকাদিগকে বন্দি করিয়া লইয়া গেল, এবং তাহাদের সমস্ত পশু, সমস্ত মেষপাল ও সমস্ত সম্পত্তি লুটিয়া লইল;
10. আর তাহাদের সমস্ত নিবাস-নগর ও সমস্ত ছাউনী পোড়াইয়া দিল।
11. আর তাহারা লুটিত দ্রব্য, এবং মনুষ্য কি পশু, সমস্ত ধৃত জীব সঙ্গে লইয়া চলিল।
12. তাহারা যিরীহোর নিকটবর্ত্তী যর্দ্দনতীরস্থ মোয়াবের তলভূমিতে মোশির, ইলিয়াসর যাজকের ও ইস্রায়েল-সন্তানগণের সমস্ত মণ্ডলীর নিকটে বন্দিগণকে ও যুদ্ধে ধৃত জীবগণকে এবং লুটিত দ্রব্য সকল শিবিরে লইয়া গেল।
13. আর মোশি, ইলিয়াসর যাজক ও মণ্ডলীর সমস্ত অধ্যক্ষ তাহাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করিতে শিবিরের বাহিরে গেলেন।
14. তখন যুদ্ধ হইতে প্রত্যাগত সেনাপতিদের, অর্থাৎ সহস্রপতিদের ও শতপতিদের উপরে মোশি ক্রুদ্ধ হইলেন।
15. মোশি তাহাদিগকে কহিলেন, তোমরা কি সমস্ত স্ত্রীলোককে জীবিত রাখিয়াছ?
16. দেখ, বিলিয়মের পরামর্শে তাহারাই পিয়োর দেবের বিষয়ে ইস্রায়েল-সন্তানগণকে সদাপ্রভুর বিপরীতে সত্যলঙ্ঘন করাইয়াছিল, তন্নিমিত্তই সদাপ্রভুর মণ্ডলীতে মহামারী হইয়াছিল।
17. অতএব তোমরা এখন বালকবালিকাদের মধ্যে সমস্ত বালককে বধ কর, এবং শয়নে পুরুষের পরিচয় প্রাপ্ত সমস্ত স্ত্রীলোককেও বধ কর;
18. কিন্তু যে বালিকারা শয়নে পুরুষের পরিচয় পায় নাই, তাহাদিগকে আপনাদের জন্য জীবিত রাখ।
19. আর তোমরা সাত দিন শিবিরের বাহিরে ছাউনী করিয়া থাক; তোমরা যত লোক মনুষ্যহত্যা করিয়াছ ও হত লোককে স্পর্শ করিয়াছ, সকলে তৃতীয় দিবসে ও সপ্তম দিবসে আপনাদিগকে ও আপন আপন বন্দিগণকে মুক্তপাপ কর;
20. আর যাবতীয় বস্ত্র, চর্ম্মনির্ম্মিত যাবতীয় বস্তু, ছাগলোম নির্ম্মিত যাবতীয় বস্তু ও কাষ্ঠনির্ম্মিত যাবতীয় বস্তুর বিষয় আপনাদিগকে মুক্তপাপ কর।
21. আর যাহারা যুদ্ধে গিয়াছিল, ইলিয়াসর যাজক সেই যোদ্ধাদিগকে কহিলেন, সদাপ্রভু কর্ত্তৃক মোশিকে দত্ত ব্যবস্থার এই বিধি;
22. কেবল স্বর্ণ, রৌপ্য, পিত্তল, লৌহ,
23. রাঙ্গ এ সীসা প্রভৃতি যে সকল দ্রব্য অগ্নিতে নষ্ট হয় না, সে সকল অগ্নির মধ্য দিয়া চালাইবে, তাহাতে তাহা শুচি হইবে; তথাপি তাহা অশৌচঘ্ন জলে মুক্তপাপ করিতে হইবে; কিন্তু যে যে দ্রব্য অগ্নিতে নষ্ট হয়, তাহা তোমরা জলের মধ্য দিয়া চালাইবে।
24. আর সপ্তম দিবসে তোমরা আপন আপন বস্ত্র ধৌত করিবে; তাহাতে শুচি হইবে; পরে শিবিরে প্রবেশ করিবে।
25. পরে সদাপ্রভু মোশিকে কহিলেন,
26. তুমি ও ইলিয়াসর যাজক এবং মণ্ডলীর পিতৃকুলপতিগণ যুদ্ধে ধৃত জীবগণের, অর্থাৎ বন্দি মনুষ্যদের ও পশুদের সংখ্যা গ্রহণ কর।
27. আর যুদ্ধে ধৃত সেই জীবগণকে দুই অংশ করিয়া, যে যোদ্ধারা যুদ্ধে গিয়াছিল, তাহাদের ও সমস্ত মণ্ডলীর মধ্যে বিভাগ কর।
28. আর যুদ্ধে গমনকারী যোদ্ধাদের নিকট হইতে সদাপ্রভুর নিমিত্তে কর গ্রহণ কর; মনুষ্য, গোরু, গর্দ্দভ ও মেষ,
29. এই সকলের মধ্যে পাঁচ পাঁচ শত জীবের প্রতি এক এক জীব তাহাদের অর্দ্ধাংশ হইতে লইয়া সদাপ্রভুর উদ্দেশে উত্তোলনীয় উপহার বলিয়া ইলিয়াসর যাজককে দেও।
30. আর তুমি ইস্রায়েল-সন্তানগণের অর্দ্ধাংশের মধ্যে মনুষ্য, গোরু, গর্দ্দভ ও মেষাদি সমস্ত পশুর মধ্য হইতে পঞ্চাশ পঞ্চাশ জীবের প্রতি এক এক জীব লও, এবং সদাপ্রভুর আবাসের রক্ষণীয় রক্ষাকারী লেবীয়দিগকে দেও।
31. মোশিকে সদাপ্রভু যেমন আজ্ঞা করিলেন, মোশি ও ইলিয়াসর যাজক সেইরূপ করিলেন।
32. যোদ্ধৃগণ কর্ত্তৃক লুটিত বস্তু সকল ছাড়া ঐ ধৃত জীবসমূহ ছয় লক্ষ পঁচাত্তর সহস্র মেষ,
33. [33-35] ও বাহাত্তর সহস্র গোরু, ও একষট্টি সহস্র গর্দ্দভ, আর বত্রিশ সহস্র মনুষ্য, অর্থাৎ শয়নে পুরুষের পরিচয় অপ্রাপ্ত স্ত্রীলোক ছিল।
34.
35.
36. তাহাতে যাহারা যুদ্ধে গিয়াছিল, তাহাদের প্রাপ্য অর্দ্ধাংশের সংখ্যা হইল তিন লক্ষ সাঁইত্রিশ সহস্র পাঁচ শত মেষ;
37. সেই মেষ হইতে সদাপ্রভুর লভ্য কর হইল ছয় শত পঁচাত্তরটী মেষ।
38. আর গোরু ছিল ছত্রিশ সহস্র, তাহাদের মধ্যে সদাপ্রভুর কর হইল বাহাত্তরটী।
39. আর গর্দ্দভ ছিল ত্রিশ সহস্র পাঁচ শত, তাহাদের মধ্যে সদাপ্রভুর কর হইল একষট্টিটী।
40. আর মনুষ্য ছিল ষোল সহস্র, তাহাদের মধ্যে সদাপ্রভুর কর হইল বত্রিশটী প্রাণী।
41. সদাপ্রভু মোশিকে যেমন আজ্ঞা করিলেন, তদনুসারে মোশি সেই কর অর্থাৎ সদাপ্রভুর উত্তোলনীয় উপহার ইলিয়াসর যাজককে দিলেন।
42. আর মোশি যে অর্দ্ধাংশ যোদ্ধাদের নিকট হইতে লইয়া ইস্রায়েল-সন্তানগণকে দিয়াছিলেন,
43. মণ্ডলীর সেই অর্দ্ধাংশ সংখ্যাতে তিন লক্ষ সাঁইত্রিশ সহস্র পাঁচ শত মেষ,
44. ছত্রিশ সহস্র গোরু,
45. [45-46] ত্রিশ সহস্র পাঁচ শত গর্দ্দভ, ও ষোল সহস্র মনুষ্য ছিল।
46.
47. পরে মোশি ইস্রায়েল-সন্তানগণের সেই অর্দ্ধাংশ হইতে মনুষ্যের ও পশুর মধ্যে পঞ্চাশ পঞ্চাশ জীবের প্রতি এক এক জীব লইয়া সদাপ্রভুর আবাসের রক্ষণীয় রক্ষাকারী লেবীয়দিগকে দিলেন, যেমন সদাপ্রভু মোশিকে আজ্ঞা করিলেন।
48. পরে সৈন্যসাহস্রের উপরে কর্ত্তৃত্বকারী সহস্রপতিরা ও শতপতিরা মোশির নিকটে আসিলেন;
49. আর তাঁহারা মোশিকে কহিলেন, আপনার এই দাসগণ আমাদের অধীন যোদ্ধাদের সংখ্যা গ্রহণ করিয়াছে, আমাদের মধ্যে এক জনও কমে নাই।
50. আর আমরা প্রতিজন স্বর্ণাভরণ, নূপুর, বলয়, অঙ্গুরীয়ক, কুণ্ডল ও হার, এই যে সকল পাইয়াছি, তাহা হইতে সদাপ্রভুর সম্মুখে আমাদের প্রাণের নিমিত্ত প্রায়শ্চিত্ত করিতে সদাপ্রভুর উদ্দেশে উপহার আনিয়াছি।
51. তখন মোশি ও ইলিয়াসর যাজক তাঁহাদের হইতে সেই স্বর্ণ, শিল্পিকৃত আভরণ, লইলেন।
52. আর সদাপ্রভুর উদ্দেশে নিবেদিত, সহস্রপতিদের ও শতপতিদের উত্তোলনীয় উপহারের সমস্ত স্বর্ণ ষোল সহস্র সাত শত পঞ্চাশ শেকল পরিমিত হইল।
53. যোদ্ধারা প্রত্যেকে আপনাদের নিমিত্ত লুটিত দ্রব্য লইয়াছিল।
54. পরে মোশি ও ইলিয়াসর যাজক সহস্রপতিদের ও শতপতিদের নিকট হইতে সেই স্বর্ণ গ্রহণ করিলেন, এবং সদাপ্রভুর সম্মুখে ইস্রায়েল-সন্তানগণের স্মরণার্থক চিহ্নরূপে তাহা সমাগম-তাম্বুতে আনিলেন।