1. উঠ, দীপ্তিমতী হও, কেননা তোমার দীপ্তি উপস্থিত, সদাপ্রভুর প্রতাপ তোমার উপরে উদিত হইল।
2. কেননা, দেখ, অন্ধকার পৃথিবীকে, ঘোর তিমির জাতিগণকে, আচ্ছন্ন করিতেছে, কিন্তু তোমার উপরে সদাপ্রভু উদিত হইবেন, এবং তাঁহার প্রতাপ তোমার উপরে দৃষ্ট হইবে।
3. আর জাতিগণ তোমার দীপ্তির কাছে আগমন করিবে, রাজগণ তোমার অরুণোদয়ের আলোর কাছে আসিবে।
4. তুমি চারিদিকে চক্ষু তুলিয়া দেখ, উহারা সকলে একত্র হইয়া তোমার কাছে আসিতেছে; তোমার পুত্রগণ দূর হইতে আসিবে, তোমার কন্যাগণ কক্ষে করিয়া আনীত হইবে।
5. তখন তুমি তাহা দেখিয়া দীপ্যমান হইবে, তোমার হৃদয় স্পন্দন করিবে ও বিকসিত হইবে; কেননা সমুদ্রের দ্রব্যরাশি তোমার দিকে ফিরান যাইবে, জাতিগণের ঐশ্বর্য্য তোমার কাছে আসিবে।
6. তোমাকে আবৃত করিবে উষ্ট্রযূথ, মিদিয়নের ও ঐফার দ্রুতগামী উষ্ট্রগণ; শিবা দেশ হইতে সকলেই আসিবে; তাহারা সুবর্ণ ও কুন্দুরু আনিবে, এবং সদাপ্রভুর প্রশংসার সুসমাচার প্রচার করিবে।
7. কেদরের সমস্ত মেষপাল তোমার নিকটে একত্রীকৃত হইবে, নবায়োতের মেষগণ তোমার পরিচর্য্যা করিবে; তাহারা আমার যজ্ঞবেদির উপরে উৎসৃষ্ট হইয়া গ্রাহ্য হইবে, আর আমি আপনার ভূষণস্বরূপ গৃহ বিভূষিত করিব।
8. এ কাহারা উড়িয়া আসিতেছে, মেঘের ন্যায়, আপন আপন খোপের দিকে কপোতের ন্যায়?
9. সত্যই উপকূল সকল আমার অপেক্ষা করিবে, তর্শীশের জাহাজ সকল অগ্রগামী হইবে, দূর হইতে তোমার সন্তানদিগকে আনিবে, তাহাদের রৌপ্য ও সুবর্ণের সহিত আনিবে, তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর নামের জন্য, ইস্রায়েলের পবিত্রতমের জন্য, কেননা তিনি তোমাকে বিভূষিত করিয়াছেন।
10. আর বিজাতি-সন্তানেরা তোমার প্রাচীর গাঁথিবে, তাহাদের রাজগণ তোমার পরিচর্য্যা করিবে; কেননা আমি কোপভরে তোমাকে প্রহার করিয়াছি, কিন্তু অনুগ্রহে তোমার প্রতি করুণা করিলাম।
11. আর তোমার পুরদ্বার সকল সর্ব্বদা খোলা থাকিবে, কি দিন কি রাত্রি কখনও রুদ্ধ হইবে না; জাতিগণের ঐশ্বর্য্য তোমার কাছে আনা যাইবে, আর তাহাদের রাজগণকেও সঙ্গে আনা যাইবে।
12. কারণ যে জাতি বা রাজ্য তোমার দাসত্ব স্বীকার না করিবে, তাহা বিনষ্ট হইবে; হাঁ, সেই জাতিগণ নিঃশেষে ধ্বংসিত হইবে।
13. লিবানোনের গৌরব তোমার কাছে আসিবে, দেবদারু, তিধর ও তাশূর বৃক্ষ একত্র আসিবে, আমার পবিত্র স্থান বিভূষিত করিবার নিমিত্ত আসিবে, এবং আমি আপন চরণের স্থান গৌরবান্বিত করিব।
14. আর যাহারা তোমাকে দুঃখ দিত, তাহাদের সন্তানগণ হেঁট হইয়া তোমার নিকটে আসিবে; এবং যাহারা তোমাকে হেয়জ্ঞান করিত, তাহারা সকলে তোমার পদতলে প্রণিপাত করিবে, আর তোমাকে বলিবে, এ সদাপ্রভুর নগরী, এ ইস্রায়েলের পবিত্রতমের সিয়োন।
15. তুমি পরিত্যক্তা ও ঘৃণিতা ছিলে, তোমার মধ্য দিয়া কেহ যাতায়াত করিত না, তৎপরিবর্ত্তে আমি তোমাকে চিরস্থায়ী শ্লাঘার পাত্র, বহু পুরুষপরম্পরার আনন্দের পাত্র করিব।
16. আর তুমি জাতিগণের দুগ্ধ পান করিবে, এবং রাজগণের স্তন চুষিবে; আর জানিবে যে, আমি সদাপ্রভুই তোমার ত্রাণকর্ত্তা, তোমার মুক্তিদাতা, যাকোবের এক বীর।
17. আমি পিত্তলের পরিবর্ত্তে সুবর্ণ, এবং লৌহের পরিবর্ত্তে রৌপ্য আনিব, কাষ্ঠের পরিবর্ত্তে পিত্তল, ও প্রস্তরের পরিবর্ত্তে লৌহ আনিব; আর আমি শান্তিকে তোমার অধ্যক্ষ করিব, ধার্ম্মিকতাকে তোমার শাসনকর্ত্তা করিব।
18. আর শুনা যাইবে না—তোমার দেশে উপদ্রবের কথা, তোমার সীমার মধ্যে ধ্বংস ও বিনাশের কথা; কিন্তু তুমি আপন প্রাচীরের নাম ‘পরিত্রাণ’ রাখিবে, আপন পুরদ্বারের নাম ‘প্রশংসা’ রাখিবে।
19. সূর্য্য আর দিবসে তোমার জ্যোতিঃ হইবে না, আলোকের জন্য চন্দ্রও তোমাকে জ্যোৎস্না দিবে না, কিন্তু সদাপ্রভুই তোমার চিরজ্যোতিঃ হইবেন, তোমার ঈশ্বরই তোমার ভূষণ হইবেন।
20. তোমার সূর্য্য আর অস্তমিত হইবে না, তোমার চন্দ্র আর ডুবিয়া যাইবে না; কেননা সদাপ্রভু তোমার চিরজ্যোতিঃ হইবেন, এবং তোমার শোকের দিন সমাপ্ত হইবে।
21. আর তোমার প্রজারা সকলে ধার্ম্মিক হইবে, তাহারা চিরকাল তরে দেশ অধিকার করিবে, তাহারা আমার রোপিত তরুর শাখা, আমার হস্তের কার্য্য, যেন আমি বিভূষিত হই।
22. যে ছোট, সে সহস্র হইয়া উঠিবে, যে ক্ষুদ্র, সে বলবান্ জাতি হইয়া উঠিবে; আমি সদাপ্রভু যথাকালে ইহা সম্পন্ন করিতে সত্বর হইব।