পবিত্র বাইবেল

গডস গ্রেইস গিফট
ইসাইয়া
1. দেখ, সদাপ্রভুর হস্ত এমন খাট নয় যে, তিনি পরিত্রাণ করিতে পারেন না; তাঁহার কর্ণ এমন ভারী নয় যে, তিনি শুনিতে পান না;
2. কিন্তু তোমাদের অপরাধ সকল তোমাদের ঈশ্বরের সহিত তোমাদের বিচ্ছেদ জন্মাইয়াছে, তোমাদের পাপ সকল তোমাদের হইতে তাঁহার শ্রীমুখ আচ্ছাদন করিয়াছে, এই জন্য তিনি শুনেন না।
3. বস্তুতঃ তোমাদের করতল রক্তে ও তোমাদের অঙ্গুলি অপরাধে অশুচি হইয়াছে, তোমাদের ওষ্ঠ মিথ্যা কথা কহিয়াছে, তোমাদের জিহ্বা দুষ্টতার কথা কহে।
4. কেহ ধার্ম্মিকতায় অভিযোগ করে না, কেহ সত্যে হেতুবাদ করে না; তাহারা অবস্তুতে নির্ভর করে, ও মিথ্যা কহে, অনিষ্ট গর্ভে ধারণ করে, অন্যায় প্রসব করে।
5. তাহারা কালসর্পের ডিম ফুটায়, ও মাকড়সার জাল বুনে; যে তাহাদের ডিম খায়, সে মারা পড়ে, তাহা ফুটিলে কালসর্প বাহির হয়।
6. তাহাদের জালের সূতায় বস্ত্র হইবে না, তাহাদের কর্ম্মে তাহারা আচ্ছাদিত হইবে না, তাহাদের কর্ম্ম সকল অধর্ম্মের কর্ম্ম, তাহাদের হস্তে দৌরাত্ম্যের কার্য্য থাকে।
7. তাহাদের চরণ দুষ্কর্ম্মের দিকে দৌড়িয়া যায়, তাহারা নির্দ্দোষের রক্তপাত করিতে ত্বরান্বিত হয়; তাহাদের চিন্তা সকল অধর্ম্মের চিন্তা, তাহাদের পথে ধ্বংস ও বিনাশ থাকে।
8. তাহারা শান্তির পথ জানে না, তাহাদের মার্গে বিচার নাই; তাহারা আপনাদের পথ বক্র করিয়াছে; যে কেহ সেই পথে যায়, সে শান্তি জানে না।
9. এই জন্য বিচার আমাদের হইতে দূরে থাকে, ধার্ম্মিকতা আমাদের সঙ্গ ধরিতে পারে না; আমরা দীপ্তির অপেক্ষা করি, কিন্তু দেখ, অন্ধকার; আলোকের অপেক্ষা করি, কিন্তু তিমিরে ভ্রমণ করি।
10. আমরা অন্ধ লোকদের ন্যায় ভিত্তির জন্য হাঁতড়াই, চক্ষুহীন লোকদের ন্যায় হাঁতড়াই; যেমন সন্ধ্যাকালে তেমনি মধ্যাহ্নে আমরা উছোট খাই, মৃতদের ন্যায় আমরা অন্ধকার-স্থানে থাকি।
11. আমরা সকলে ভল্লূকের ন্যায় গর্জ্জন করি, ঘুঘুর ন্যায় দারুণ আর্ত্তরব করি; আমরা বিচারের অপেক্ষা করি, কিন্তু তাহা নাই; ত্রাণের অপেক্ষা করি, কিন্তু তাহা আমাদের হইতে দূরবর্ত্তী।
12. কেননা তোমার সাক্ষাতে আমাদের অধর্ম্ম অনেক হইয়াছে, আমাদের পাপসমূহ আমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতেছে; ফলে আমাদের অধর্ম্ম সকল আমাদের সঙ্গে সঙ্গে রহিয়াছে, আর আমরা আপনাদের অপরাধ সকল জানি;
13. তাহা অধর্ম্ম ও সদাপ্রভুকে অস্বীকার, আপন ঈশ্বরের অনুগমন হইতে বিমুখ হওয়া, উপদ্রবের ও বিদ্রোহের কথাবার্ত্তা, মিথ্যা কথা গর্ভে ধারণ ও হৃদয় হইতে বাহির করণ।
14. আর বিচার পশ্চাতে হটিয়া পড়িয়াছে, এবং ধার্ম্মিকতা দূরে দাঁড়াইয়া রহিয়াছে; বস্তুতঃ চকে সত্য উছোট খাইয়া পড়িয়াছে, ও সরলতা প্রবেশ করিতে পায় না।
15. সত্য হারাইয়া গিয়াছে, দুষ্কর্ম্মত্যাগী লোক লুটিত হইতেছে।
16. আর সদাপ্রভু দৃষ্টিপাত করিলেন, ন্যায়বিচার না থাকাতে অসন্তুষ্ট হইলেন। তিনি দেখিলেন, কোন পুরুষ বর্ত্তমান নাই; এবং চমকিত হইলেন, কেননা অনুরোধকারী কেহ নাই; এই হেতু তাঁহারই বাহু তাঁহার জন্য পরিত্রাণ সাধন করিল, তাঁহারই ধর্ম্মশীলতা তাঁহাকে তুলিয়া ধরিল।
17. তিনি ধর্ম্মশীলতারূপ বুকপাটা বাঁধিলেন, মস্তকে ত্রাণরূপ শিরস্ত্র ধারণ করিলেন, তিনি প্রতিশোধরূপ বস্ত্র পরিধান করিলেন, পরিচ্ছদের ন্যায় উদ্যোগ-পরিহিত হইলেন।
18. লোকদের কার্য্য যেমন, তদনুসারেই তিনি প্রতিফল দিবেন; আপন বিপক্ষদিগকে ক্রোধরূপ, আপন শত্রুদিগকে প্রতিশোধরূপ দণ্ড দিবেন, উপকূল সকলকে অপকারের প্রতিফল দিবেন।
19. তাহাতে সদাপ্রভুর নাম হইতে পশ্চিম দেশীয়েরা, তাঁহার প্রতাপ হইতে সূর্য্যোদয়স্থানের লোকেরা ভীত হইবে; কারণ তিনি এমন প্রবল বন্যার ন্যায় আসিবেন, যাহা সদাপ্রভুর বায়ু দ্বারা তাড়িত ।
20. আর, এক মুক্তিদাতা আসিবেন, সিয়োনের জন্য, যাকোবের মধ্যে যাহারা অধর্ম্ম হইতে ফিরিয়া আইসে, তাহাদের জন্য, ইহা সদাপ্রভু কহেন।
21. সদাপ্রভু কহেন, তাহাদের সহিত আমার নিয়ম এই, আমার আত্মা, যিনি তোমাতে অধিষ্ঠান করিয়াছেন, ও আমার বাক্য সকল, যাহা আমি তোমার মুখে দিয়াছি, সে সকল তোমার মুখ হইতে, তোমার বংশের মুখ হইতে ও তোমার বংশোৎপন্ন বংশের মুখ হইতে অদ্যাবধি অনন্তকাল পর্য্যন্ত কখনও দূর করা যাইবে না; ইহা সদাপ্রভু কহেন।

Notes

No Verse Added

Total 66 Chapters, Current Chapter 59 of Total Chapters 66
ইসাইয়া 59
1. দেখ, সদাপ্রভুর হস্ত এমন খাট নয় যে, তিনি পরিত্রাণ করিতে পারেন না; তাঁহার কর্ণ এমন ভারী নয় যে, তিনি শুনিতে পান না;
2. কিন্তু তোমাদের অপরাধ সকল তোমাদের ঈশ্বরের সহিত তোমাদের বিচ্ছেদ জন্মাইয়াছে, তোমাদের পাপ সকল তোমাদের হইতে তাঁহার শ্রীমুখ আচ্ছাদন করিয়াছে, এই জন্য তিনি শুনেন না।
3. বস্তুতঃ তোমাদের করতল রক্তে তোমাদের অঙ্গুলি অপরাধে অশুচি হইয়াছে, তোমাদের ওষ্ঠ মিথ্যা কথা কহিয়াছে, তোমাদের জিহ্বা দুষ্টতার কথা কহে।
4. কেহ ধার্ম্মিকতায় অভিযোগ করে না, কেহ সত্যে হেতুবাদ করে না; তাহারা অবস্তুতে নির্ভর করে, মিথ্যা কহে, অনিষ্ট গর্ভে ধারণ করে, অন্যায় প্রসব করে।
5. তাহারা কালসর্পের ডিম ফুটায়, মাকড়সার জাল বুনে; যে তাহাদের ডিম খায়, সে মারা পড়ে, তাহা ফুটিলে কালসর্প বাহির হয়।
6. তাহাদের জালের সূতায় বস্ত্র হইবে না, তাহাদের কর্ম্মে তাহারা আচ্ছাদিত হইবে না, তাহাদের কর্ম্ম সকল অধর্ম্মের কর্ম্ম, তাহাদের হস্তে দৌরাত্ম্যের কার্য্য থাকে।
7. তাহাদের চরণ দুষ্কর্ম্মের দিকে দৌড়িয়া যায়, তাহারা নির্দ্দোষের রক্তপাত করিতে ত্বরান্বিত হয়; তাহাদের চিন্তা সকল অধর্ম্মের চিন্তা, তাহাদের পথে ধ্বংস বিনাশ থাকে।
8. তাহারা শান্তির পথ জানে না, তাহাদের মার্গে বিচার নাই; তাহারা আপনাদের পথ বক্র করিয়াছে; যে কেহ সেই পথে যায়, সে শান্তি জানে না।
9. এই জন্য বিচার আমাদের হইতে দূরে থাকে, ধার্ম্মিকতা আমাদের সঙ্গ ধরিতে পারে না; আমরা দীপ্তির অপেক্ষা করি, কিন্তু দেখ, অন্ধকার; আলোকের অপেক্ষা করি, কিন্তু তিমিরে ভ্রমণ করি।
10. আমরা অন্ধ লোকদের ন্যায় ভিত্তির জন্য হাঁতড়াই, চক্ষুহীন লোকদের ন্যায় হাঁতড়াই; যেমন সন্ধ্যাকালে তেমনি মধ্যাহ্নে আমরা উছোট খাই, মৃতদের ন্যায় আমরা অন্ধকার-স্থানে থাকি।
11. আমরা সকলে ভল্লূকের ন্যায় গর্জ্জন করি, ঘুঘুর ন্যায় দারুণ আর্ত্তরব করি; আমরা বিচারের অপেক্ষা করি, কিন্তু তাহা নাই; ত্রাণের অপেক্ষা করি, কিন্তু তাহা আমাদের হইতে দূরবর্ত্তী।
12. কেননা তোমার সাক্ষাতে আমাদের অধর্ম্ম অনেক হইয়াছে, আমাদের পাপসমূহ আমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতেছে; ফলে আমাদের অধর্ম্ম সকল আমাদের সঙ্গে সঙ্গে রহিয়াছে, আর আমরা আপনাদের অপরাধ সকল জানি;
13. তাহা অধর্ম্ম সদাপ্রভুকে অস্বীকার, আপন ঈশ্বরের অনুগমন হইতে বিমুখ হওয়া, উপদ্রবের বিদ্রোহের কথাবার্ত্তা, মিথ্যা কথা গর্ভে ধারণ হৃদয় হইতে বাহির করণ।
14. আর বিচার পশ্চাতে হটিয়া পড়িয়াছে, এবং ধার্ম্মিকতা দূরে দাঁড়াইয়া রহিয়াছে; বস্তুতঃ চকে সত্য উছোট খাইয়া পড়িয়াছে, সরলতা প্রবেশ করিতে পায় না।
15. সত্য হারাইয়া গিয়াছে, দুষ্কর্ম্মত্যাগী লোক লুটিত হইতেছে।
16. আর সদাপ্রভু দৃষ্টিপাত করিলেন, ন্যায়বিচার না থাকাতে অসন্তুষ্ট হইলেন। তিনি দেখিলেন, কোন পুরুষ বর্ত্তমান নাই; এবং চমকিত হইলেন, কেননা অনুরোধকারী কেহ নাই; এই হেতু তাঁহারই বাহু তাঁহার জন্য পরিত্রাণ সাধন করিল, তাঁহারই ধর্ম্মশীলতা তাঁহাকে তুলিয়া ধরিল।
17. তিনি ধর্ম্মশীলতারূপ বুকপাটা বাঁধিলেন, মস্তকে ত্রাণরূপ শিরস্ত্র ধারণ করিলেন, তিনি প্রতিশোধরূপ বস্ত্র পরিধান করিলেন, পরিচ্ছদের ন্যায় উদ্যোগ-পরিহিত হইলেন।
18. লোকদের কার্য্য যেমন, তদনুসারেই তিনি প্রতিফল দিবেন; আপন বিপক্ষদিগকে ক্রোধরূপ, আপন শত্রুদিগকে প্রতিশোধরূপ দণ্ড দিবেন, উপকূল সকলকে অপকারের প্রতিফল দিবেন।
19. তাহাতে সদাপ্রভুর নাম হইতে পশ্চিম দেশীয়েরা, তাঁহার প্রতাপ হইতে সূর্য্যোদয়স্থানের লোকেরা ভীত হইবে; কারণ তিনি এমন প্রবল বন্যার ন্যায় আসিবেন, যাহা সদাপ্রভুর বায়ু দ্বারা তাড়িত
20. আর, এক মুক্তিদাতা আসিবেন, সিয়োনের জন্য, যাকোবের মধ্যে যাহারা অধর্ম্ম হইতে ফিরিয়া আইসে, তাহাদের জন্য, ইহা সদাপ্রভু কহেন।
21. সদাপ্রভু কহেন, তাহাদের সহিত আমার নিয়ম এই, আমার আত্মা, যিনি তোমাতে অধিষ্ঠান করিয়াছেন, আমার বাক্য সকল, যাহা আমি তোমার মুখে দিয়াছি, সে সকল তোমার মুখ হইতে, তোমার বংশের মুখ হইতে তোমার বংশোৎপন্ন বংশের মুখ হইতে অদ্যাবধি অনন্তকাল পর্য্যন্ত কখনও দূর করা যাইবে না; ইহা সদাপ্রভু কহেন।
Total 66 Chapters, Current Chapter 59 of Total Chapters 66
×

Alert

×

bengali Letters Keypad References