পবিত্র বাইবেল

গডস গ্রেইস গিফট
মার্ক
1. পরে যখন তাঁহারা যিরূশালেমের নিকটবর্ত্তী হইয়া হইয়া জৈতুন পর্ব্বতে বৈৎফগী ও বৈথনিয়া গ্রামে আসিলেন, তখন তিনি আপন শিষ্যদের মধ্যে দুই জনকে পাঠাইয়া দিলেন,
2. তাঁহাদিগকে বলিলেন, তোমাদের সম্মুখে ঐ গ্রামে যাও; তথায় প্রবেশ করিবামাত্র একটী গর্দ্দভশাবক বাঁধা দেখিতে পাইবে, যাহার উপরে কোন মানুষ কখনও বসে নাই; সেটীকে খুলিয়া আন।
3. আর যদি কেহ তোমাদিগকে বলে, এ কর্ম্ম কেন করিতেছ? তবে বলিও, ইহাতে প্রভুর প্রয়োজন আছে; তাহাতে সে তৎক্ষণাৎ সেটীকে এখানে পাঠাইয়া দিবে।
4. তখন তাঁহারা গিয়া দেখিতে পাইলেন, একটী গর্দ্দভশাবক কোন দ্বারের নিকটে, বাহিরে বাঁধা রহিয়াছে, আর তাহা খুলিতে লাগিলেন।
5. তাহাতে যাহারা সেখানে দাঁড়াইয়া ছিল, তাহাদের মধ্যে কেহ কেহ বলিল, গর্দ্দভশাবকটী খুলিয়া কি করিতেছ?
6. তাহাতে যীশু যেমন বলিয়াছিলেন, তাঁহারা উহাদিগকে সেই মত বলিলেন, আর উহারা তাঁহাদিগকে উহা লইয়া যাইতে দিল।
7. পরে তাঁহারা সেই গর্দ্দভশাবককে যীশুর নিকটে আনিয়া তাহার উপরে আপনাদের কাপড় পাতিয়া দিলেন; আর তিনি তাহার উপরে বসিলেন।
8. তখন অনেকে আপন আপন বস্ত্র পথে পাতিয়া দিল ও অন্যেরা ক্ষেত্র হইতে ডালপালা কাটিয়া পথে ছড়াইয়া দিল।
9. আর যে সকল লোক অগ্রে ও পশ্চাতে যাইতেছিল, তাহারা উচ্চৈঃস্বরে কহিতে লাগিল, হোশান্না! ধন্য তিনি, যিনি প্রভুর নামে আসিতেছেন!
10. ধন্য যে রাজ্য আসিতেছে, আমাদের পিতা দায়ূদের রাজ্য; ঊর্দ্ধলোকে হোশান্না।
11. পরে তিনি যিরূশালেমে প্রবেশ করিয়া ধর্ম্মধামে গেলেন, আর চারিদিকে দৃষ্টিপাত করিয়া সকলই দেখিয়া বেলা অবসান হওয়াতে সেই বারো জনের সঙ্গে বাহির হইয়া বৈথনিয়াতে গমন করিলেন।
12. পরদিবসে তাঁহারা বৈথনিয়া হইতে বাহির হইয়া আসিলে পর তিনি ক্ষুধার্ত্ত হইলেন;
13. এবং দূর হইতে সপত্র এক ডুমুরগাছ দেখিয়া, হয় ত তাহা হইতে কিছু ফল পাইবেন বলিয়া, কাছে গেলেন; কিন্তু নিকটে গেলে পত্র বিনা আর কিছুই দেখিতে পাইলেন না; কেননা তখন ডুমুরফলের সময় ছিল না।
14. তিনি গাছটীকে বলিলেন, এখন অবধি কেহ কখনও তোমার ফল ভোজন না করুক। এ কথা তাঁহার শিষ্যেরা শুনিতে পাইলেন।
15. পরে তাঁহারা যিরূশালেমে আসিলেন, আর তিনি ধর্ম্মধামের মধ্য গিয়া, যাহারা ধর্ম্মধামের মধ্যে ক্রয় বিক্রয় করিতেছিল, তাহাদিগকে বাহির করিয়া দিতে লাগিলেন, এবং পোদ্দারদের মেজ, ও যাহারা কপোত বিক্রয় করিতেছিল, তাহাদের আসন সকল উল্টাইয়া ফেলিলেন।
16. আর ধর্ম্মধামের মধ্য দিয়া কাহাকেও কোন পাত্র লইয়া যাইতে দিলেন না।
17. আর তিনি উপদেশ দিয়া তাহাদিগকে বলিলেন, ইহা কি লেখা নাই, “আমার গৃহকে সর্ব্বজাতির প্রার্থনা-গৃহ বলা যাইবে”? কিন্তু তোমরা ইহা “দস্যুগণের গহ্বর” করিয়াছ।
18. এ কথা শুনিয়া প্রধান যাজক ও অধ্যাপকেরা, কিরূপে তাঁহাকে বিনষ্ট করিবে, তাহারই চেষ্টা দেখিতে লাগিল; কেননা তাহারা তাঁহাকে ভয় করিত, কারণ তাঁহার উপদেশে সমস্ত লোক চমৎকৃত হইয়াছিল।
19. আর সন্ধ্যা হইলে তাঁহারা নগরের বাহিরে যাইতেন।
20. প্রাতঃকালে তাঁহারা যাইতে যাইতে দেখিলেন, সেই ডুমুরগাছটী সমূলে শুকাইয়া গিয়াছে।
21. তখন পিতর পূর্ব্বকথা স্মরণ করিয়া তাঁহাকে কহিলেন, রব্বি, দেখুন, আপনি যে ডুমুরগাছটীকে শাপ দিয়াছিলেন, সেটী শুকাইয়া গিয়াছে।
22. যীশু উত্তর করিয়া তাঁহাদিগকে কহিলেন, ঈশ্বরে বিশ্বাস রাখ।
23. আমি তোমাদিগকে সত্য কহিতেছি, যে কেহ এই পর্ব্বতকে বলে, ‘উপড়িয়া যাও, আর সমুদ্রে গিয়া পড়,’ এবং মনে মনে সন্দেহ না করে, কিন্তু বিশ্বাস করে যে, যাহা বলে তাহা ঘটিবে, তবে তাহার জন্য তাহাই হইবে।
24. এই জন্য আমি তোমাদিগকে বলি, যাহা কিছু তোমরা প্রার্থনা ও যাচ্ঞা কর, বিশ্বাস করিও যে, তাহা পাইয়াছ, তাহাতে তোমাদের জন্য তাহাই হইবে।
25. আর তোমরা যখনই প্রার্থনা করিতে দাঁড়াও, যদি কাহারও বিরুদ্ধে তোমাদের কোন কথা থাকে, তাহাকে ক্ষমা করিও;
26. যেন তোমাদের স্বর্গস্থ পিতা ও তোমাদের অপরাধ সকল ক্ষমা করেন।
27. পরে তাঁহারা আবার যিরূশালেমে আসিলেন; আর তিনি ধর্ম্মধামের মধ্যে বেড়াইতেছেন, এমন সময়ে প্রধান যাজকেরা, অধ্যাপকগণ ও প্রাচীনবর্গ তাঁহার নিকটে আসিয়া তাঁহাকে বলিল,
28. তুমি কি ক্ষমতায় এই সকল করিতেছ? এ সকল করিতে তোমাকে এই ক্ষমতা কেই বা দিয়াছে?
29. যীশু তাহাদিগকে কহিলেন, আমিও তোমাদিগকে একটী কথা জিজ্ঞাসা করিব, আমাকে উত্তর দেও, তাহা হইলে আমি তোমাদিগকে বলিব, কি ক্ষমতায় এ সকল করিতেছি।
30. যোহনের বাপ্তিস্ম স্বর্গ হইতে হইয়াছিল, না মানুষ হইতে? আমাকে উত্তর দেও।
31. তখন তাহারা পরস্পর বিচার করিয়া বলিল, যদি বলি, স্বর্গ হইতে, তাহা হইলে এ বলিবে, তবে তোমরা তাঁহাকে বিশ্বাস কর নাই কেন?
32. কিন্তু মানুষ হইতে হইল, ইহা কি বলিব? তাহারা লোকসাধারণকে ভয় করিত, কারণ সকলে যোহনকে সত্যই ভাববাদী বলিয়া মানিত।
33. অতএব তাহারা যীশুকে এই উত্তর দিল, আমরা জানি না। তখন যীশু তাহাদিগকে বলিলেন, তবে আমিও কি ক্ষমতায় এ সকল করিতেছি, তাহা তোমাদিগকে বলিব না।

Notes

No Verse Added

Total 16 Chapters, Current Chapter 11 of Total Chapters 16
1 2
3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16
মার্ক 11
1. পরে যখন তাঁহারা যিরূশালেমের নিকটবর্ত্তী হইয়া হইয়া জৈতুন পর্ব্বতে বৈৎফগী বৈথনিয়া গ্রামে আসিলেন, তখন তিনি আপন শিষ্যদের মধ্যে দুই জনকে পাঠাইয়া দিলেন,
2. তাঁহাদিগকে বলিলেন, তোমাদের সম্মুখে গ্রামে যাও; তথায় প্রবেশ করিবামাত্র একটী গর্দ্দভশাবক বাঁধা দেখিতে পাইবে, যাহার উপরে কোন মানুষ কখনও বসে নাই; সেটীকে খুলিয়া আন।
3. আর যদি কেহ তোমাদিগকে বলে, কর্ম্ম কেন করিতেছ? তবে বলিও, ইহাতে প্রভুর প্রয়োজন আছে; তাহাতে সে তৎক্ষণাৎ সেটীকে এখানে পাঠাইয়া দিবে।
4. তখন তাঁহারা গিয়া দেখিতে পাইলেন, একটী গর্দ্দভশাবক কোন দ্বারের নিকটে, বাহিরে বাঁধা রহিয়াছে, আর তাহা খুলিতে লাগিলেন।
5. তাহাতে যাহারা সেখানে দাঁড়াইয়া ছিল, তাহাদের মধ্যে কেহ কেহ বলিল, গর্দ্দভশাবকটী খুলিয়া কি করিতেছ?
6. তাহাতে যীশু যেমন বলিয়াছিলেন, তাঁহারা উহাদিগকে সেই মত বলিলেন, আর উহারা তাঁহাদিগকে উহা লইয়া যাইতে দিল।
7. পরে তাঁহারা সেই গর্দ্দভশাবককে যীশুর নিকটে আনিয়া তাহার উপরে আপনাদের কাপড় পাতিয়া দিলেন; আর তিনি তাহার উপরে বসিলেন।
8. তখন অনেকে আপন আপন বস্ত্র পথে পাতিয়া দিল অন্যেরা ক্ষেত্র হইতে ডালপালা কাটিয়া পথে ছড়াইয়া দিল।
9. আর যে সকল লোক অগ্রে পশ্চাতে যাইতেছিল, তাহারা উচ্চৈঃস্বরে কহিতে লাগিল, হোশান্না! ধন্য তিনি, যিনি প্রভুর নামে আসিতেছেন!
10. ধন্য যে রাজ্য আসিতেছে, আমাদের পিতা দায়ূদের রাজ্য; ঊর্দ্ধলোকে হোশান্না।
11. পরে তিনি যিরূশালেমে প্রবেশ করিয়া ধর্ম্মধামে গেলেন, আর চারিদিকে দৃষ্টিপাত করিয়া সকলই দেখিয়া বেলা অবসান হওয়াতে সেই বারো জনের সঙ্গে বাহির হইয়া বৈথনিয়াতে গমন করিলেন।
12. পরদিবসে তাঁহারা বৈথনিয়া হইতে বাহির হইয়া আসিলে পর তিনি ক্ষুধার্ত্ত হইলেন;
13. এবং দূর হইতে সপত্র এক ডুমুরগাছ দেখিয়া, হয় তাহা হইতে কিছু ফল পাইবেন বলিয়া, কাছে গেলেন; কিন্তু নিকটে গেলে পত্র বিনা আর কিছুই দেখিতে পাইলেন না; কেননা তখন ডুমুরফলের সময় ছিল না।
14. তিনি গাছটীকে বলিলেন, এখন অবধি কেহ কখনও তোমার ফল ভোজন না করুক। কথা তাঁহার শিষ্যেরা শুনিতে পাইলেন।
15. পরে তাঁহারা যিরূশালেমে আসিলেন, আর তিনি ধর্ম্মধামের মধ্য গিয়া, যাহারা ধর্ম্মধামের মধ্যে ক্রয় বিক্রয় করিতেছিল, তাহাদিগকে বাহির করিয়া দিতে লাগিলেন, এবং পোদ্দারদের মেজ, যাহারা কপোত বিক্রয় করিতেছিল, তাহাদের আসন সকল উল্টাইয়া ফেলিলেন।
16. আর ধর্ম্মধামের মধ্য দিয়া কাহাকেও কোন পাত্র লইয়া যাইতে দিলেন না।
17. আর তিনি উপদেশ দিয়া তাহাদিগকে বলিলেন, ইহা কি লেখা নাই, “আমার গৃহকে সর্ব্বজাতির প্রার্থনা-গৃহ বলা যাইবে”? কিন্তু তোমরা ইহা “দস্যুগণের গহ্বর” করিয়াছ।
18. কথা শুনিয়া প্রধান যাজক অধ্যাপকেরা, কিরূপে তাঁহাকে বিনষ্ট করিবে, তাহারই চেষ্টা দেখিতে লাগিল; কেননা তাহারা তাঁহাকে ভয় করিত, কারণ তাঁহার উপদেশে সমস্ত লোক চমৎকৃত হইয়াছিল।
19. আর সন্ধ্যা হইলে তাঁহারা নগরের বাহিরে যাইতেন।
20. প্রাতঃকালে তাঁহারা যাইতে যাইতে দেখিলেন, সেই ডুমুরগাছটী সমূলে শুকাইয়া গিয়াছে।
21. তখন পিতর পূর্ব্বকথা স্মরণ করিয়া তাঁহাকে কহিলেন, রব্বি, দেখুন, আপনি যে ডুমুরগাছটীকে শাপ দিয়াছিলেন, সেটী শুকাইয়া গিয়াছে।
22. যীশু উত্তর করিয়া তাঁহাদিগকে কহিলেন, ঈশ্বরে বিশ্বাস রাখ।
23. আমি তোমাদিগকে সত্য কহিতেছি, যে কেহ এই পর্ব্বতকে বলে, ‘উপড়িয়া যাও, আর সমুদ্রে গিয়া পড়,’ এবং মনে মনে সন্দেহ না করে, কিন্তু বিশ্বাস করে যে, যাহা বলে তাহা ঘটিবে, তবে তাহার জন্য তাহাই হইবে।
24. এই জন্য আমি তোমাদিগকে বলি, যাহা কিছু তোমরা প্রার্থনা যাচ্ঞা কর, বিশ্বাস করিও যে, তাহা পাইয়াছ, তাহাতে তোমাদের জন্য তাহাই হইবে।
25. আর তোমরা যখনই প্রার্থনা করিতে দাঁড়াও, যদি কাহারও বিরুদ্ধে তোমাদের কোন কথা থাকে, তাহাকে ক্ষমা করিও;
26. যেন তোমাদের স্বর্গস্থ পিতা তোমাদের অপরাধ সকল ক্ষমা করেন।
27. পরে তাঁহারা আবার যিরূশালেমে আসিলেন; আর তিনি ধর্ম্মধামের মধ্যে বেড়াইতেছেন, এমন সময়ে প্রধান যাজকেরা, অধ্যাপকগণ প্রাচীনবর্গ তাঁহার নিকটে আসিয়া তাঁহাকে বলিল,
28. তুমি কি ক্ষমতায় এই সকল করিতেছ? সকল করিতে তোমাকে এই ক্ষমতা কেই বা দিয়াছে?
29. যীশু তাহাদিগকে কহিলেন, আমিও তোমাদিগকে একটী কথা জিজ্ঞাসা করিব, আমাকে উত্তর দেও, তাহা হইলে আমি তোমাদিগকে বলিব, কি ক্ষমতায় সকল করিতেছি।
30. যোহনের বাপ্তিস্ম স্বর্গ হইতে হইয়াছিল, না মানুষ হইতে? আমাকে উত্তর দেও।
31. তখন তাহারা পরস্পর বিচার করিয়া বলিল, যদি বলি, স্বর্গ হইতে, তাহা হইলে বলিবে, তবে তোমরা তাঁহাকে বিশ্বাস কর নাই কেন?
32. কিন্তু মানুষ হইতে হইল, ইহা কি বলিব? তাহারা লোকসাধারণকে ভয় করিত, কারণ সকলে যোহনকে সত্যই ভাববাদী বলিয়া মানিত।
33. অতএব তাহারা যীশুকে এই উত্তর দিল, আমরা জানি না। তখন যীশু তাহাদিগকে বলিলেন, তবে আমিও কি ক্ষমতায় সকল করিতেছি, তাহা তোমাদিগকে বলিব না।
Total 16 Chapters, Current Chapter 11 of Total Chapters 16
1 2
3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16
×

Alert

×

bengali Letters Keypad References