1. শলোমন প্রার্থনা সাঙ্গ করিলে পর আকাশ হইতে অগ্নি নামিয়া হোম ও বলি সকল গ্রাস করিল, এবং সদাপ্রভুর প্রতাপে গৃহ পরিপূর্ণ হইল।
2. আর যাজকগণ সদাপ্রভুর গৃহে প্রবেশ করিতে পারিল না, কারণ সদাপ্রভুর প্রতাপে সদাপ্রভুর গৃহ পরিপূর্ণ হইয়াছিল।
3. যখন অগ্নি নামিল, এবং সদাপ্রভুর প্রতাপ গৃহের উপরে [বিরাজমান] হইল, তখন ইস্রায়েল-সন্তানগণ সকলে তাহা দেখিতে পাইল, আর তাহারা নত হইয়া প্রস্তর বাঁধা ভূমিতে উবুড় হইয়া প্রণিপাত করিল, এবং সদাপ্রভুর স্তব করিয়া কহিল, তিনি মঙ্গলময়, হাঁ, তাঁহার দয়া অনন্তকালস্থায়ী।
4. পরে রাজা ও সমস্ত লোক সদাপ্রভুর সম্মুখে যজ্ঞ করিলেন।
5. শলোমন রাজা বাইশ সহস্র গোরু ও এক লক্ষ বিশ সহস্র মেষ বলিদান করিলেন। এইরূপে রাজা ও সমস্ত লোক ঈশ্বরের গৃহ প্রতিষ্ঠা করিলেন।
6. আর যাজকগণ আপন আপন পদানুসারে দণ্ডায়মান ছিল, এবং লেবীয়েরাও সদাপ্রভুর সঙ্গীত জন্য বাদ্যযন্ত্রসহ দাঁড়াইয়াছিল; যখন দায়ূদ তাহাদিগের দ্বারা প্রশংসা করেন, তখন সদাপ্রভুর দয়া অনন্তকালস্থায়ী বলিয়া যেন তাঁহার স্তব করা হয়, এই জন্য দায়ূদ রাজা সেই সকল যন্ত্র নির্ম্মাণ করিয়াছিলেন; আর তাহাদের সম্মুখে যাজকগণ তূরী বাজাইতেছিল, এবং সমস্ত ইস্রায়েল দণ্ডায়মান ছিল।
7. আর শলোমন সদাপ্রভুর গৃহের সম্মুখস্থ প্রাঙ্গণের মধ্য দেশ পবিত্র করিলেন, কেননা তিনি সে স্থানে হোমবলি সকল, এবং মঙ্গলার্থক বলির মেদ উৎসর্গ করিলেন, কারণ হোমবলি, ভক্ষ্য-নৈবেদ্য এবং সেই মেদ গ্রহণ পক্ষে শলোমনের নির্ম্মিত পিত্তলময় যজ্ঞবেদি ক্ষুদ্র ছিল।
8. এইরূপে সেই সময়ে শলোমন ও তাঁহার সঙ্গে সমস্ত ইস্রায়েল, হমাতের প্রবেশ-স্থান অবধি মিসরের স্রোত পর্য্যন্ত [দেশবাসী] অতি মহাসমাজ, সাত দিন উৎসব করিলেন।
9. পরে তাঁহারা অষ্টম দিনে উৎসব-সভা করিলেন, ফলতঃ তাঁহারা সাত দিন যজ্ঞবেদির প্রতিষ্ঠা ও সাত দিন উৎসব পালন করিলেন।
10. শলোমন সপ্তম মাসের ত্রয়োবিংশ দিনে লোকদিগকে স্ব স্ব তাম্বুতে বিদায় করিলেন। সদাপ্রভু দায়ূদের, শলোমনের ও আপন প্রজা ইস্রায়েলের যে সকল মঙ্গল করিয়াছিলেন, তৎপ্রযুক্ত তাহারা আনন্দিত ও হৃষ্টচিত্ত হইয়াছিল।
11. এইরূপে শলোমন সদাপ্রভুর গৃহ ও রাজবাটীর নির্ম্মাণ সমাপ্ত করিলেন; সদাপ্রভুর গৃহে ও আপনার বাটীতে যাহা যাহা করিতে শলোমনের মনোবাঞ্ছা হইয়াছিল, সে সমস্ত তিনি কুশলে সাধন করিলেন।
12. পরে সদাপ্রভু রাত্রিতে শলোমনকে দর্শন দিয়া কহিলেন, আমি তোমার প্রার্থনা শুনিয়াছি ও যজ্ঞ-গৃহ বলিয়া এই স্থান আমার জন্য মনোনীত করিয়াছি।
13. আমি যদি আকাশ রুদ্ধ করি, আর বৃষ্টি না হয়, কিম্বা দেশ বিনষ্ট করিতে পঙ্গপালদিগকে আজ্ঞা করি, অথবা আপন প্রজাদের মধ্যে মহামারী প্রেরণ করি,
14. আমার প্রজারা, যাহাদের উপরে আমার নাম কীর্ত্তিত হইয়াছে, তাহারা যদি নম্র হইয়া প্রার্থনা করে ও আমার মুখের অন্বেষণ করে, এবং আপনাদের কুপথ হইতে ফিরে, তবে আমি স্বর্গ হইতে তাহা শুনিব, তাহাদের পাপ ক্ষমা করিব ও তাহাদের দেশ আরোগ্য করিব।
15. এই স্থানে যে প্রার্থনা হইবে, তাহার প্রতি এখন আমার চক্ষু উন্মীলিত ও কর্ণ অবহিত থাকিবে।
16. কেননা এই গৃহে যেন আমার নাম চিরকালের জন্য থাকে, এই জন্য আমি এখন ইহা মনোনীত ও পবিত্র করিলাম, এবং এই স্থানে প্রতিনিয়ত আমার চক্ষু ও আমার চিত্ত থাকিবে।
17. আর তোমার পিতা দায়ূদ যেমন চলিত, তেমনি তুমিও যদি আমার সাক্ষাতে চল, আমি তোমাকে যে সমস্ত আজ্ঞা দিয়াছি, যদি তদনুযায়ী কর্ম্ম কর, এবং আমার বিধি ও শাসন সকল পালন কর;
18. তবে, ‘ইস্রায়েলের উপরে কর্ত্তৃত্ব করিতে তোমার [বংশে] লোকের অভাব হইবে না,’ এই বলিয়া আমি তোমার পিতা দায়ূদের সহিত যে নিয়ম করিয়াছিলাম, তদনুসারে তোমার রাজসিংহাসন স্থির করিব।
19. কিন্তু যদি তোমরা [আমা হইতে] ফির ও তোমাদের সম্মুখে স্থাপিত আমার বিধি ও আজ্ঞা সকল পরিত্যাগ কর, আর গিয়া অন্য দেবগণের সেবা কর ও তাহাদের কাছে প্রণিপাত কর,
20. তবে আমি ইস্রায়েলীয়দিগকে আমার যে দেশ দিয়াছি, তাহা হইতে তাহাদিগকে সমূলে উৎপাটন করিব, এবং আপন নামের জন্য এই যে গৃহ পবিত্র করিলাম, ইহা আমার দৃষ্টিপথ হইতে দূর করিব, এবং সমস্ত জাতির মধ্যে ইহা প্রবাদের ও উপহাসের আস্পদ করিব।
21. আর এই গৃহ উচ্চ হইলেও যে কেহ ইহার নিকট দিয়া গমন করিবে, সে চমকিয়া উঠিবে ও জিজ্ঞাসা করিবে, এই দেশের ও এই গৃহের প্রতি সদাপ্রভু এমন কেন করিয়াছেন?
22. আর লোকে বলিবে, ইহার কারণ এই, যিনি এই লোকদের পিতৃপুরুষদিগকে মিসর দেশ হইতে বাহির করিয়া আনিয়াছিলেন, উহারা আপন পিতৃপুরুষদের ঈশ্বর সেই সদাপ্রভুকে ত্যাগ করিয়াছে, এবং অন্য দেবগণকে অবলম্বন করিয়া তাহাদের কাছে প্রণিপাত করিয়াছে ও তাহাদের সেবা করিয়াছে, এই জন্য তিনি তাহাদের উপরে এই সকল অমঙ্গল উপস্থিত করিলেন।