পবিত্র বাইবেল

গডস গ্রেইস গিফট
বিচারকচরিত
1. {ইস্রায়েল বিন্যামীনদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করলো} [PS] পরে ইস্রায়েলীয়রা সবাই বাইরে এল, দান (অঞ্চল) থেকে বের-শেবা পর্যন্ত ও গিলিয়দ দেশ সমেত সমস্ত মণ্ডলী এক মানুষের মতো মিস্‌পাতে সদাপ্রভুর কাছে সমবেত হল।
2. ঈশ্বরের প্রজাদের সেই সমাজে ইস্রায়েলের সমস্ত বংশের সমস্ত জনসমাজের অধ্যক্ষ ও চারলাখ খড়গধারী পদাতিক উপস্থিত হল।
3. আর ইস্রায়েলীয়রা মিস্‌পাতে উঠে গিয়েছে, এই কথা বিন্যামীনরা শুনতে পেল। পরে ইস্রায়েলীয়রা বলল, “বল দেখি, এই খারাপ কাজ কিভাবে হল?”
4. সেই লেবীয়, মৃত স্ত্রীর পুরুষ উত্তর করে বলল্‌, “আমি ও আমার উপপত্নী রাত কাটানোর জন্য বিন্যামীনের অধিকারভুক্ত গিবিয়াতে প্রবেশ করেছিলাম।”
5. আর গিবিয়ার গৃহস্থেরা আমার বিরুদ্ধে উঠে রাত্রিবেলায় আমার জন্য গৃহের চারদিক্‌ ঘিরে রাখল। তারা আমাকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেছিল, আর আমার উপপত্নীকে ধর্ষণ করায় সে মারা গেল।
6. পরে আমি নিজ উপপত্নীকে নিয়ে খণ্ড খণ্ড করে ইস্রায়েলের অধিকারস্থ প্রদেশের সব জায়গায় পাঠালাম, কারণ তারা ইস্রায়েলের মধ্যে খারাপ কাজ করেছে।
7. দেখ, তোমরা সবাই ইস্রায়েল সন্তান; অতএব এ বিষয়ে নিজের নিজের মতামত বলে মন্ত্রণা স্থির কর।
8. তখন সকল লোক এক মানুষের মতো উঠে বলল, “আমরা কেউ নিজের তাঁবুতে যাব না, কেউ নিজের বাড়িতে ফিরে যাব না;
9. কিন্তু এখন গিবিয়ার প্রতি এই কাজ করব, আমরা গুলিবাঁটের মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে যাব।
10. আর আমরা লোকদের জন্য খাদ্য দ্রব্য আনতে ইস্রায়েল-বংশসমূহের মধ্যে একশো লোকের প্রতি দশ, হাজারের প্রতি একশো ও দশ হাজারের প্রতি এক হাজার লোক গ্রহণ করব, যেন আমরা বিন্যামীনের গিবিয়াতে গিয়ে ইস্রায়েলের মধ্যে কৃত সমস্ত খারাপ কাজ অনুসারে প্রতিফল দিতে পারি।”
11. এই ভাবে ইস্রায়েলের সমস্ত লোক এক মানুষের মতো একযোগ হয়ে ঐ নগরের প্রতিকূলে জড়ো হল।
12. পরে ইস্রায়েলের সমস্ত বংশগুলি বিন্যামীন বংশের সমস্ত জায়গায় লোক পাঠিয়ে বলল, “তোমাদের মধ্যে এ কি খারাপ কাজ হয়েছে?”
13. তোমরা এখন ঐ লোকদেরকে, গিবিয়া-নিবাসী পাষণ্ড [* অযোগ্য লোকদেরকে ] দেরকে, সমর্পণ কর, আমরা তাদেরকে হত্যা করে ইস্রায়েল থেকে দুষ্টাচার বন্ধ করব। কিন্তু বিন্যামীন নিজের ভাইদের অর্থাৎ ইস্রায়েলীয়দের কথা শুনতে রাজি হল না।
14. বরং ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য বিন্যামীনরা নানা নগর থেকে গিবিয়াতে গিয়ে জড়ো হল।
15. সেই দিন নানা নগর থেকে আসা বিন্যামীনদের ছাব্বিশ হাজার খড়গধারী লোক গণনা করা হল; এরা গিবিয়া-নিবাসীদের থেকে আলাদা; তারাও সাতশো মনোনীত লোক গণনা করা হল।
16. আবার এই সকল লোকের মধ্যে সাতশো মনোনীত লোক বাঁ-হাতি ছিল; তাদের প্রত্যেক জন চুল লক্ষ্য করে ফিঙ্গার পাথর মারতে পারত, লক্ষ্যচ্যুত হত না।
17. বিন্যামীন ভিন্ন ইস্রায়েলের খড়গধারী চারলাখ লোক গণনা করা হল; এরা সবাই যোদ্ধা ছিল।
18. ইস্রায়েলীয়রা উঠে বৈথেলে গিয়ে ঈশ্বরের কাছে জিজ্ঞাসা করল; তারা বলল, “বিন্যামীনদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে আমাদের মধ্যে প্রথমে কে যাবে?” সদাপ্রভু বললেন, “প্রথমে যিহূদা যাবে।”
19. পরে ইস্রায়েলীয়রা সকালে উঠে গিবিয়ার সামনে শিবির তৈরী করল।
20. পরে ইস্রায়েলীয়রা বিন্যামীনের সঙ্গে যুদ্ধ করতে বেরিয়ে গেল; তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে ইস্রায়েলীয়রা গিবিয়ার বিরুদ্ধে সৈন্য স্থাপন করল।
21. তখন বিন্যামীনরা গিবিয়া থেকে বের হয়ে ঐ দিনের ইস্রায়েলের মধ্যে বাইশ হাজার লোককে সংহার করে ভূতলশায়ী করল।
22. পরে ইস্রায়েলীয়রা নিজেদেরকে আশ্বাস দিয়ে, প্রথম দিনের যে জায়গায় সৈন্য স্থাপন করেছিল, আবার সেই জায়গায় সৈন্য স্থাপন করল।
23. আর ইস্রায়েলীয়রা উঠে গিয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত সদাপ্রভুর সামনে কাঁদতে লাগল এবং সদাপ্রভুর কাছে জিজ্ঞাসা করল, “আমরা নিজের ভাই বিন্যামীনদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে কি আবার যাব?” সদাপ্রভু বললেন, “তার বিরুদ্ধে যাও।”
24. পরে ইস্রায়েলীয়রা দ্বিতীয় দিনের বিন্যামীনদের প্রতিকুলে উপস্থিত হল।
25. আর বিন্যামীন সেই দ্বিতীয় দিনের তাদের বিরুদ্ধে গিবিয়া থেকে বের হয়ে আবার ইস্রায়েলীয়দের মধ্যে আঠার হাজার লোককে সংহার করে ভূতলশায়ী করল, এরা সবাই খড়গধারী ছিল।
26. পরে সমস্ত ইস্রায়েলীয়রা, সমস্ত লোক, গিয়ে বৈথেলে উপস্থিত হল এবং সেই জায়গায় সদাপ্রভুর সামনে কাঁদল ও বসে থাকল এবং সেই দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত উপবাস করে সদাপ্রভুর সামনে হোম ও মঙ্গলের জন্য বলি উৎসর্গ করল।
27. সেই দিনের ঈশ্বরের নিয়ম সিন্দুক ঐ জায়গায় ছিল,
28. এবং হারোণের নাতি ইলীয়াসরের পুত্র পীনহস তার সামনে দণ্ডায়মান ছিলেন; অতএব ইস্রায়েলীয়রা সদাপ্রভুকে এই কথা জিজ্ঞাসা করল, “আমরা নিজের ভাই বিন্যামীনদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে এখনও কি আবার যাব? না থামব?” সদাপ্রভু বললেন, “যাও, কারণ কাল আমি তোমাদের হাতে তাদেরকে সমর্পণ করব।”
29. পরে ইস্রায়েল গিবিয়ার চারদিকে ঘাঁটি বসাল।
30. পরে তৃতীয় দিনের ইস্রায়েলীয়রা বিন্যামীনদের বিরুদ্ধে উঠে গিয়ে অন্যান্য দিনের র মতো গিবিয়ার কাছে সৈন্য রচনা করল।
31. তখন বিন্যামীনরা ঐ লোকদের বিরুদ্ধে বের হল এবং নগর থেকে দূরে আকর্ষিত হয়ে প্রথম বারের মতো লোকদেরকে আঘাত ও হত্যা করতে লাগল, বিশেষত বৈথেলে যাবার ও ক্ষেত্রস্থ গিবিয়াতে যাবার দুই রাজপথে তারা ইস্রায়েলের মধ্যে অনুমান ত্রিশ জনকে হত্যা করল।
32. তাতে বিন্যামীনরা বলল, “ওরা আমাদের সামনে আগের মতো পরাজিত হচ্ছে।” কিন্তু ইস্রায়েলীয়রা বলেছিল, “এস, আমরা পালিয়ে ওদেরকে নগর থেকে রাজপথে আকর্ষণ করি।”
33. অতএব ইস্রায়েলের সমস্ত লোক নিজের নিজের জায়গা থেকে উঠে গিয়ে বাল্‌-তামরে সৈন্য স্থাপন করল; ইতিমধ্যে ইস্রায়েলের লুক্কায়িত লোকেরা নিজেদের জায়গা থেকে অর্থাৎ মারে-গেবা থেকে বের হল।
34. পরে সমস্ত ইস্রায়েল থেকে দশ হাজার মনোনীত লোক গিবিয়ার সামনে আসল, তাতে ঘোরতর সংগ্রাম হল; কিন্তু ওরা জানত না যে, অমঙ্গল ওদের কাছাকাছি।
35. তখন সদাপ্রভু ইস্রায়েলের সামনে বিন্যামীনকে আঘাত করলেন, আর সে দিন ইস্রায়েলীয়রা বিন্যামীনের পঁচিশ হাজার একশো লোককে সংহার করল, এরা সবাই খড়গধারী ছিল।
36. এই ভাবে বিন্যামীনরা দেখল যে, তারা আহত হয়েছে; কারণ ইস্রায়েলের লোকেরা বিন্যামীনের কাছ থেকে পালিয়ে গিয়েছিল, যেহেতু তারা যাদেরকে গিবিয়ার বিরুদ্ধে স্থাপন করেছিল, সেই লুকিয়ে থাকা লোকদের উপরে নির্ভর করছিল।
37. ইতিমধ্যে ঐ লুকিয়ে থাকা লোকেদের উপর সত্বর গিবিয়া আক্রমণ করল, আর প্রবেশ করে খড়গধারে সব নগরকে আঘাত করল।
38. ইস্রায়েল-লোকদের ও লুক্কায়িত লোকদের মধ্যে এই চিহ্ন স্থির করা হয়েছিল, লুক্কায়িতেরা নগর থেকে ধোঁয়ার মেঘ উঠাবে।
39. অতএব ইস্রায়েল-লোকেরা সংগ্রাম করতে করতে মুখ ফেরাল। তখন বিন্যামীন তাদের অনুমান ত্রিশ জনকে আঘাত ও হত্যা করেছিল, কারণ তারা বলেছিল, প্রথম যুদ্ধের মতো এবারেও ওরা আমাদের সামনে আহত হল।
40. কিন্তু যখন নগর থেকে স্তম্ভাকারে ধূমময় মেঘ উঠতে লাগল, তখন বিন্যামীন পিছনে চেয়ে দেখল, আর দেখ, সব নগর ধূমময় হয়ে আকাশে উড়ে যাচ্ছে।
41. আর ইস্রায়েলীয়রাও মুখ ফেরাল; তাতে অমঙ্গল আমাদের ওপরে এসে পড়ল দেখে বিন্যামীনের লোকেরা ভয় পেল।
42. অতএব তারা ইস্রায়েল-লোকদের সামনে মাঠের পথের দিকে ফিরল এবং নগর কিন্তু সেই জায়গাতেও যুদ্ধ তাদের অনুবর্ত্তী হল এবং নগর সব থেকে আসা লোকেরা সেখানে তাদেরকে সংহার করল।
43. তারা চারদিকে বিন্যামীনকে ঘিরে তাড়াতে লাগল এবং সূর্য্যোদয়ের দিকে গিবিয়ার সামনের দিক পর্যন্ত তাদের বিশ্রামের জায়গায় তাদেরকে দলিত করতে লাগল।
44. তাতে বিন্যামীনের আঠার হাজার লোক হত হল, তারা সকলেই যোদ্ধা ছিল।
45. পরে অবশিষ্টেরা প্রান্তরের দিকে ফিরে রিম্মোণ পর্বতে পালিয়ে যেতে লাগল, আর ওরা রাজপথে তাদের অন্য পাঁচ হাজার লোককে হত্যা করল; পরে বেগে তাদের পিছন পিছন তাড়া করে গিদোম পর্যন্ত গিয়ে তাদের দুই হাজার লোককে আঘাত করল।
46. অতএব সেই দিন বিন্যামীনের মধ্যে খড়গধারী পঁচিশ হাজার লোক হত হল; তারা সবাই বলবান লোক ছিল।
47. কিন্তু ছয়শো লোক প্রান্তরের দিকে ফিরে রিম্মোণ পর্বতে পালিয়ে গিয়ে সেই রিম্মোণ পর্বতে চার মাস বাস করল।
48. পরে ইস্রায়েলীয়রা বিন্যামীদের প্রতিকূলে ফিরে নগরস্থ মানুষ ও পশু প্রভৃতি যা যা পাওয়া গেল, সে সবকে খড়গ দিয়ে আঘাত করল; তারা যত নগর পেল, সে সব আগুনে পুড়িয়ে দিল। [PE]

Notes

No Verse Added

Total 21 Chapters, Current Chapter 20 of Total Chapters 21
1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11
12 13 14 15 16 17 18 19 20 21
বিচারকচরিত 20:30
1. {ইস্রায়েল বিন্যামীনদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করলো} PS পরে ইস্রায়েলীয়রা সবাই বাইরে এল, দান (অঞ্চল) থেকে বের-শেবা পর্যন্ত গিলিয়দ দেশ সমেত সমস্ত মণ্ডলী এক মানুষের মতো মিস্‌পাতে সদাপ্রভুর কাছে সমবেত হল।
2. ঈশ্বরের প্রজাদের সেই সমাজে ইস্রায়েলের সমস্ত বংশের সমস্ত জনসমাজের অধ্যক্ষ চারলাখ খড়গধারী পদাতিক উপস্থিত হল।
3. আর ইস্রায়েলীয়রা মিস্‌পাতে উঠে গিয়েছে, এই কথা বিন্যামীনরা শুনতে পেল। পরে ইস্রায়েলীয়রা বলল, “বল দেখি, এই খারাপ কাজ কিভাবে হল?”
4. সেই লেবীয়, মৃত স্ত্রীর পুরুষ উত্তর করে বলল্‌, “আমি আমার উপপত্নী রাত কাটানোর জন্য বিন্যামীনের অধিকারভুক্ত গিবিয়াতে প্রবেশ করেছিলাম।”
5. আর গিবিয়ার গৃহস্থেরা আমার বিরুদ্ধে উঠে রাত্রিবেলায় আমার জন্য গৃহের চারদিক্‌ ঘিরে রাখল। তারা আমাকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেছিল, আর আমার উপপত্নীকে ধর্ষণ করায় সে মারা গেল।
6. পরে আমি নিজ উপপত্নীকে নিয়ে খণ্ড খণ্ড করে ইস্রায়েলের অধিকারস্থ প্রদেশের সব জায়গায় পাঠালাম, কারণ তারা ইস্রায়েলের মধ্যে খারাপ কাজ করেছে।
7. দেখ, তোমরা সবাই ইস্রায়েল সন্তান; অতএব বিষয়ে নিজের নিজের মতামত বলে মন্ত্রণা স্থির কর।
8. তখন সকল লোক এক মানুষের মতো উঠে বলল, “আমরা কেউ নিজের তাঁবুতে যাব না, কেউ নিজের বাড়িতে ফিরে যাব না;
9. কিন্তু এখন গিবিয়ার প্রতি এই কাজ করব, আমরা গুলিবাঁটের মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে যাব।
10. আর আমরা লোকদের জন্য খাদ্য দ্রব্য আনতে ইস্রায়েল-বংশসমূহের মধ্যে একশো লোকের প্রতি দশ, হাজারের প্রতি একশো দশ হাজারের প্রতি এক হাজার লোক গ্রহণ করব, যেন আমরা বিন্যামীনের গিবিয়াতে গিয়ে ইস্রায়েলের মধ্যে কৃত সমস্ত খারাপ কাজ অনুসারে প্রতিফল দিতে পারি।”
11. এই ভাবে ইস্রায়েলের সমস্ত লোক এক মানুষের মতো একযোগ হয়ে নগরের প্রতিকূলে জড়ো হল।
12. পরে ইস্রায়েলের সমস্ত বংশগুলি বিন্যামীন বংশের সমস্ত জায়গায় লোক পাঠিয়ে বলল, “তোমাদের মধ্যে কি খারাপ কাজ হয়েছে?”
13. তোমরা এখন লোকদেরকে, গিবিয়া-নিবাসী পাষণ্ড * অযোগ্য লোকদেরকে দেরকে, সমর্পণ কর, আমরা তাদেরকে হত্যা করে ইস্রায়েল থেকে দুষ্টাচার বন্ধ করব। কিন্তু বিন্যামীন নিজের ভাইদের অর্থাৎ ইস্রায়েলীয়দের কথা শুনতে রাজি হল না।
14. বরং ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য বিন্যামীনরা নানা নগর থেকে গিবিয়াতে গিয়ে জড়ো হল।
15. সেই দিন নানা নগর থেকে আসা বিন্যামীনদের ছাব্বিশ হাজার খড়গধারী লোক গণনা করা হল; এরা গিবিয়া-নিবাসীদের থেকে আলাদা; তারাও সাতশো মনোনীত লোক গণনা করা হল।
16. আবার এই সকল লোকের মধ্যে সাতশো মনোনীত লোক বাঁ-হাতি ছিল; তাদের প্রত্যেক জন চুল লক্ষ্য করে ফিঙ্গার পাথর মারতে পারত, লক্ষ্যচ্যুত হত না।
17. বিন্যামীন ভিন্ন ইস্রায়েলের খড়গধারী চারলাখ লোক গণনা করা হল; এরা সবাই যোদ্ধা ছিল।
18. ইস্রায়েলীয়রা উঠে বৈথেলে গিয়ে ঈশ্বরের কাছে জিজ্ঞাসা করল; তারা বলল, “বিন্যামীনদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে আমাদের মধ্যে প্রথমে কে যাবে?” সদাপ্রভু বললেন, “প্রথমে যিহূদা যাবে।”
19. পরে ইস্রায়েলীয়রা সকালে উঠে গিবিয়ার সামনে শিবির তৈরী করল।
20. পরে ইস্রায়েলীয়রা বিন্যামীনের সঙ্গে যুদ্ধ করতে বেরিয়ে গেল; তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে ইস্রায়েলীয়রা গিবিয়ার বিরুদ্ধে সৈন্য স্থাপন করল।
21. তখন বিন্যামীনরা গিবিয়া থেকে বের হয়ে দিনের ইস্রায়েলের মধ্যে বাইশ হাজার লোককে সংহার করে ভূতলশায়ী করল।
22. পরে ইস্রায়েলীয়রা নিজেদেরকে আশ্বাস দিয়ে, প্রথম দিনের যে জায়গায় সৈন্য স্থাপন করেছিল, আবার সেই জায়গায় সৈন্য স্থাপন করল।
23. আর ইস্রায়েলীয়রা উঠে গিয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত সদাপ্রভুর সামনে কাঁদতে লাগল এবং সদাপ্রভুর কাছে জিজ্ঞাসা করল, “আমরা নিজের ভাই বিন্যামীনদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে কি আবার যাব?” সদাপ্রভু বললেন, “তার বিরুদ্ধে যাও।”
24. পরে ইস্রায়েলীয়রা দ্বিতীয় দিনের বিন্যামীনদের প্রতিকুলে উপস্থিত হল।
25. আর বিন্যামীন সেই দ্বিতীয় দিনের তাদের বিরুদ্ধে গিবিয়া থেকে বের হয়ে আবার ইস্রায়েলীয়দের মধ্যে আঠার হাজার লোককে সংহার করে ভূতলশায়ী করল, এরা সবাই খড়গধারী ছিল।
26. পরে সমস্ত ইস্রায়েলীয়রা, সমস্ত লোক, গিয়ে বৈথেলে উপস্থিত হল এবং সেই জায়গায় সদাপ্রভুর সামনে কাঁদল বসে থাকল এবং সেই দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত উপবাস করে সদাপ্রভুর সামনে হোম মঙ্গলের জন্য বলি উৎসর্গ করল।
27. সেই দিনের ঈশ্বরের নিয়ম সিন্দুক জায়গায় ছিল,
28. এবং হারোণের নাতি ইলীয়াসরের পুত্র পীনহস তার সামনে দণ্ডায়মান ছিলেন; অতএব ইস্রায়েলীয়রা সদাপ্রভুকে এই কথা জিজ্ঞাসা করল, “আমরা নিজের ভাই বিন্যামীনদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে এখনও কি আবার যাব? না থামব?” সদাপ্রভু বললেন, “যাও, কারণ কাল আমি তোমাদের হাতে তাদেরকে সমর্পণ করব।”
29. পরে ইস্রায়েল গিবিয়ার চারদিকে ঘাঁটি বসাল।
30. পরে তৃতীয় দিনের ইস্রায়েলীয়রা বিন্যামীনদের বিরুদ্ধে উঠে গিয়ে অন্যান্য দিনের মতো গিবিয়ার কাছে সৈন্য রচনা করল।
31. তখন বিন্যামীনরা লোকদের বিরুদ্ধে বের হল এবং নগর থেকে দূরে আকর্ষিত হয়ে প্রথম বারের মতো লোকদেরকে আঘাত হত্যা করতে লাগল, বিশেষত বৈথেলে যাবার ক্ষেত্রস্থ গিবিয়াতে যাবার দুই রাজপথে তারা ইস্রায়েলের মধ্যে অনুমান ত্রিশ জনকে হত্যা করল।
32. তাতে বিন্যামীনরা বলল, “ওরা আমাদের সামনে আগের মতো পরাজিত হচ্ছে।” কিন্তু ইস্রায়েলীয়রা বলেছিল, “এস, আমরা পালিয়ে ওদেরকে নগর থেকে রাজপথে আকর্ষণ করি।”
33. অতএব ইস্রায়েলের সমস্ত লোক নিজের নিজের জায়গা থেকে উঠে গিয়ে বাল্‌-তামরে সৈন্য স্থাপন করল; ইতিমধ্যে ইস্রায়েলের লুক্কায়িত লোকেরা নিজেদের জায়গা থেকে অর্থাৎ মারে-গেবা থেকে বের হল।
34. পরে সমস্ত ইস্রায়েল থেকে দশ হাজার মনোনীত লোক গিবিয়ার সামনে আসল, তাতে ঘোরতর সংগ্রাম হল; কিন্তু ওরা জানত না যে, অমঙ্গল ওদের কাছাকাছি।
35. তখন সদাপ্রভু ইস্রায়েলের সামনে বিন্যামীনকে আঘাত করলেন, আর সে দিন ইস্রায়েলীয়রা বিন্যামীনের পঁচিশ হাজার একশো লোককে সংহার করল, এরা সবাই খড়গধারী ছিল।
36. এই ভাবে বিন্যামীনরা দেখল যে, তারা আহত হয়েছে; কারণ ইস্রায়েলের লোকেরা বিন্যামীনের কাছ থেকে পালিয়ে গিয়েছিল, যেহেতু তারা যাদেরকে গিবিয়ার বিরুদ্ধে স্থাপন করেছিল, সেই লুকিয়ে থাকা লোকদের উপরে নির্ভর করছিল।
37. ইতিমধ্যে লুকিয়ে থাকা লোকেদের উপর সত্বর গিবিয়া আক্রমণ করল, আর প্রবেশ করে খড়গধারে সব নগরকে আঘাত করল।
38. ইস্রায়েল-লোকদের লুক্কায়িত লোকদের মধ্যে এই চিহ্ন স্থির করা হয়েছিল, লুক্কায়িতেরা নগর থেকে ধোঁয়ার মেঘ উঠাবে।
39. অতএব ইস্রায়েল-লোকেরা সংগ্রাম করতে করতে মুখ ফেরাল। তখন বিন্যামীন তাদের অনুমান ত্রিশ জনকে আঘাত হত্যা করেছিল, কারণ তারা বলেছিল, প্রথম যুদ্ধের মতো এবারেও ওরা আমাদের সামনে আহত হল।
40. কিন্তু যখন নগর থেকে স্তম্ভাকারে ধূমময় মেঘ উঠতে লাগল, তখন বিন্যামীন পিছনে চেয়ে দেখল, আর দেখ, সব নগর ধূমময় হয়ে আকাশে উড়ে যাচ্ছে।
41. আর ইস্রায়েলীয়রাও মুখ ফেরাল; তাতে অমঙ্গল আমাদের ওপরে এসে পড়ল দেখে বিন্যামীনের লোকেরা ভয় পেল।
42. অতএব তারা ইস্রায়েল-লোকদের সামনে মাঠের পথের দিকে ফিরল এবং নগর কিন্তু সেই জায়গাতেও যুদ্ধ তাদের অনুবর্ত্তী হল এবং নগর সব থেকে আসা লোকেরা সেখানে তাদেরকে সংহার করল।
43. তারা চারদিকে বিন্যামীনকে ঘিরে তাড়াতে লাগল এবং সূর্য্যোদয়ের দিকে গিবিয়ার সামনের দিক পর্যন্ত তাদের বিশ্রামের জায়গায় তাদেরকে দলিত করতে লাগল।
44. তাতে বিন্যামীনের আঠার হাজার লোক হত হল, তারা সকলেই যোদ্ধা ছিল।
45. পরে অবশিষ্টেরা প্রান্তরের দিকে ফিরে রিম্মোণ পর্বতে পালিয়ে যেতে লাগল, আর ওরা রাজপথে তাদের অন্য পাঁচ হাজার লোককে হত্যা করল; পরে বেগে তাদের পিছন পিছন তাড়া করে গিদোম পর্যন্ত গিয়ে তাদের দুই হাজার লোককে আঘাত করল।
46. অতএব সেই দিন বিন্যামীনের মধ্যে খড়গধারী পঁচিশ হাজার লোক হত হল; তারা সবাই বলবান লোক ছিল।
47. কিন্তু ছয়শো লোক প্রান্তরের দিকে ফিরে রিম্মোণ পর্বতে পালিয়ে গিয়ে সেই রিম্মোণ পর্বতে চার মাস বাস করল।
48. পরে ইস্রায়েলীয়রা বিন্যামীদের প্রতিকূলে ফিরে নগরস্থ মানুষ পশু প্রভৃতি যা যা পাওয়া গেল, সে সবকে খড়গ দিয়ে আঘাত করল; তারা যত নগর পেল, সে সব আগুনে পুড়িয়ে দিল। PE
Total 21 Chapters, Current Chapter 20 of Total Chapters 21
1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11
12 13 14 15 16 17 18 19 20 21
×

Alert

×

bengali Letters Keypad References