পবিত্র বাইবেল

ইন্ডিয়ান রিভাইজড ভার্সন (ISV)
রাজাবলি ১
1. [PS]রাজা শলোমন ফরৌণের মেয়েকে ছাড়া আরও অনেক বিদেশী স্ত্রীলোকদের ভালবাসতেন। তারা জাতিতে ছিল মোয়াবীয়, অম্মোনীয়, ইদোমীয়, সীদোনীয় ও হিত্তীয়।
2. তারা সেই সব জাতি থেকে এসেছিল যাদের সম্বন্ধে সদাপ্রভু ইস্রায়েলীয়দের বলেছিলেন, “তোমরা তাদের বিয়ে করবে না, কারণ তারা নিশ্চয়ই তোমাদের মন তাদের দেব দেবতাদের দিকে আকর্ষিত করবে।” কিন্তু শলোমন এইসব স্ত্রীলোকদের ভালবাসতেন।
3. তাঁর সাতশো স্ত্রী ছিল, যারা ছিল রাজপরিবারের মেয়ে; এছাড়া তাঁর তিনশো উপস্ত্রী ছিল। তাঁর স্ত্রীরা তাঁকে বিপথে নিয়ে গিয়েছিল।
4. শলোমনের বুড়ো বয়সে তাঁর স্ত্রীরা তাঁর মন অন্য দেব দেবতাদের দিকে আকর্ষিত করেছিল। তার ফলে তাঁর বাবা দায়ূদের মত তাঁর হৃদয় তাঁর ঈশ্বর সদাপ্রভুর প্রতি ভক্তিতে পূর্ণ ছিল না।
5. তিনি সীদোনীয়দের দেবী অষ্টোরতের ও অম্মোনীয়দের জঘন্য দেবতা মিল্কমের সেবা করতে লাগলেন।
6. সদাপ্রভুর চোখে যা মন্দ শলোমন তাই করলেন। তাঁর বাবা দায়ূদ যেমন সদাপ্রভুকে সম্পূর্ণভাবে ভক্তি করতেন তিনি তেমন করতেন না।
7. সেই দিন শলোমন যিরূশালেমের পূর্ব দিকের পাহাড়ের উপরে তিনি মোয়াবের জঘন্য দেবতা কমোশ ও অম্মোনীয়দের জঘন্য দেবতা মোলকের উদ্দেশ্যে উঁচু জায়গা তৈরী করলেন।
8. তাঁর সমস্ত বিদেশী স্ত্রী যারা নিজের নিজের দেবতাদের উদ্দেশ্যে ধূপ জ্বালাত ও পশু বলি দিত তাদের সকলের জন্য তিনি তাই করলেন।
9. এতে সদাপ্রভু শলোমনের উপরে ভীষণ অসন্তুষ্ট হলেন, কারণ যিনি তাঁর কাছে দুবার নিজেকে প্রকাশ করেছিলেন সেই ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর দিক থেকে তাঁর মন ফিরে গিয়েছিল।
10. তিনি অন্য দেব দেবতাদের পিছনে যেতে তাঁকে মানা করেছিলেন কিন্তু শলোমন সদাপ্রভুর আদেশ পালন করেননি।
11. কাজেই সদাপ্রভু শলোমনকে বললেন, “তোমার এই ব্যবহারের জন্য এবং আমার দেওয়া ব্যবস্থা ও নিয়ম অমান্য করবার জন্য আমি অবশ্যই তোমার কাছ থেকে রাজ্য ছিঁড়ে নিয়ে তোমার কর্মচারীকে দেব।
12. তবে তোমার বাবা দায়ূদের কথা মনে করে তোমার জীবনকালে আমি তা করব না, কিন্তু তোমার ছেলের হাত থেকে আমি তা ছিঁড়ে নেব।
13. অবশ্য রাজ্যের সবটা আমি তার কাছ থেকে ছিঁড়ে নেব না, কিন্তু আমার দাস দায়ূদের কথা এবং আমার বেছে নেওয়া যিরূশালেমের কথা মনে করে একটা গোষ্ঠী আমি তোমার ছেলেকে দেব।” [PE]
14. {শলোমনের বিপক্ষের লোকেরা। } [PS]এর পর সদাপ্রভু শলোমনের বিরুদ্ধে ইদোমীয় হদদকে শত্রু হিসাবে দাঁড় করালেন। ইদোমের রাজবংশে তার জন্ম হয়েছিল।
15. দায়ূদ যখন ইদোম দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছিলেন তখন তাঁর সেনাপতি যোয়াব মৃত লোকদের কবর দেবার জন্য ইদোমে গিয়েছিলেন। সেখানে থাকবার দিন তিনি ইদোমীয় সব পুরুষ লোককে মেরে ফেলেছিলেন।
16. যোয়াব ও ইস্রায়েলের সব সৈন্যেরা ছয় মাস ইদোমে ছিলেন এবং সেখানকার সব পুরুষ লোককে মেরে ফেলেছিলেন।
17. কিন্তু হদদ তার বাবার কয়েকজন ইদোমীয় কর্মচারীর সঙ্গে মিশরে পালিয়ে গিয়েছিল। সেই দিন সে ছোট ছিল।
18. তারা মিদিয়ন থেকে রওনা হয়ে পারণে গিয়েছিল এবং পরে সেখান থেকে কিছু লোক নিয়ে তারা মিশরের রাজা ফরৌণের কাছে গিয়েছিল। ফরৌণ হদদকে বাড়ি, জায়গা জমি ও খাবার দিয়েছিলেন।
19. ফরৌণ হদদের উপর এত সন্তুষ্ট হয়েছিলেন যে, ফরৌণের স্ত্রী রাণী তহ্‌পনেষের বোনের সঙ্গে তার বিয়ে দিয়েছিলেন।
20. তহ্‌পনেষের বোনের গর্ভে হদদের একটি ছেলের জন্ম হয়েছিল; সেই ছেলের নাম ছিল গনুবৎ। তহ্‌পনেষ ছেলেটিকে রাজবাড়ীতে রাখলেন এবং সেখানেই সে মায়ের দুধ খাওয়া ছাড়ল। গনুবৎ সেখানে ফরৌণের ছেলে মেয়েদের সঙ্গেই থাকত।
21. মিশরে থাকতেই হদদ শুনল যে, দায়ূদকে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে কবর দেওয়া হয়েছে এবং সেনাপতি যোয়াবও মারা গেছেন। তখন হদদ ফরৌণকে বলল, “এবার আমাকে যেতে দিন যাতে আমি আমার নিজের দেশে ফিরে যেতে পারি।”
22. ফরৌণ জিজ্ঞাসা করলেন, “এখানে তোমার কিসের অভাব হয়েছে যে, তুমি নিজের দেশে ফিরে যেতে চাইছ?” উত্তরে হদদ বলল, “কিছুরই অভাব হয়নি, কিন্তু তবুও আমাকে যেতে দিন।”
23. শলোমনের বিরুদ্ধে ঈশ্বর আর একজন শত্রু দাঁড় করালেন। সে হল ইলিয়াদার ছেলে রষোণ। সে তার মনিব সোবার রাজা হদদেষরের কাছ থেকে পালিয়ে গিয়েছিল।
24. দায়ূদ যখন সোবার সৈন্যদের মেরে ফেলেছিলেন তখন রষোণ কিছু লোক জোগাড় করে নিয়ে একটা লুটেরা দল তৈরী করে তার নেতা হয়ে বসল। এই লোকেরা দম্মেশক দখল করে সেখানে রাজত্ব করতে লাগল।
25. শলোমন যতদিন জীবিত ছিলেন ততদিন রষোণ ইস্রায়েলের সঙ্গে শত্রুতা করেছিল আর সেই দিন হদদও ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে কাজ করছিল। ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে একটা শত্রুভাব নিয়ে রষোণ অরাম দেশে রাজত্ব করত। [PE]
26. {যারবিয়াম শলোমনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করলেন। } [PS]নবাটের ছেলে যারবিয়ামও রাজা শলোমনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করলেন। তিনি ছিলেন শলোমনের কর্মচারী, সরেদা গ্রামের একজন ইফ্রয়িমীয় লোক। তাঁর মায়ের নাম ছিল সরূয়া; তিনি বিধবা ছিলেন।
27. রাজার বিরুদ্ধে যারবিয়ামের বিদ্রোহের একটা কারণ ছিল। যে দিন শলোমন মিল্লো তৈরী করছিলেন এবং তাঁর বাবা দায়ূদের শহরের দেয়ালের ভাঙ্গা অংশ মেরামত করছিলেন,
28. সেই দিন যারবিয়াম সেখানে কাজ করছিলেন এবং তাঁর কাজের বেশ সুনাম ছিল। শলোমন যখন দেখলেন যে, যুবকটি বেশ কাজের লোক তখন তিনি তাঁকে যোষেফের বংশের সমস্ত মজুরদের দেখাশোনার ভার দিলেন।
29. সেই দিন যারবিয়াম এক দিন যিরূশালেমের বাইরে গেলেন। পথে তাঁর সঙ্গে শীলোর ভাববাদী অহিয়ের দেখা হল। অহিয়ের গায়ে ছিল একটা নতুন চাদর। পথে তাঁরা দুজন ছাড়া আর কেউ ছিল না।
30. তখন অহিয় তাঁর গায়ের চাদরটা নিয়ে ছিঁড়ে বারোটা টুকরো করলেন।
31. তারপর তিনি যারবিয়ামকে বললেন, “দশটা টুকরো তুমি তুলে নাও, কারণ ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে বলছেন, ‘দেখ, আমি শলোমনের হাত থেকে রাজ্যটা ছিঁড়ে নেব এবং তোমাকে দশটা গোষ্ঠীর ভার দেব।
32. কিন্তু আমার দাস দায়ূদের জন্য ও ইস্রায়েলের সমস্ত গোষ্ঠীর এলাকা থেকে আমার বেছে নেওয়া যিরূশালেমের জন্য কেবল একটা গোষ্ঠী শলোমনের হাতে থাকবে।
33. আমি এটা করব, কারণ সেই দশ গোষ্ঠী আমাকে ত্যাগ করে সীদোনীয়দের দেবী অষ্টোরতের, মোয়াবের দেবতা কমোশের ও অম্মোনীয়দের দেবতা মিলকমের পূজা করেছে। শলোমনের বাবা দায়ূদ যেমন করতেন তারা তেমন করে নি। তারা আমার পথে চলেনি, আমার চোখে যা ঠিক তা করে নি এবং আমার নিয়ম ও নির্দেশ পালন করে নি।
34. তবুও আমি শলোমনের হাত থেকে গোটা রাজ্যটা নিয়ে নেব না। আমার দাস দায়ূদ, যাকে আমি বেছে নিয়েছিলাম এবং যে আমার আদেশ ও নিয়ম পালন করত, তার জন্যই আমি শলোমনকে সারা জীবনের জন্য রাজপদে রাখব।
35. আমি তার ছেলের হাত থেকে রাজ্যটা নিয়ে তোমার হাতে দশটা গোষ্ঠীর ভার দেব।
36. আমার বাসস্থান হিসাবে বেছে নেওয়া যিরূশালেম শহরে যেন আমার সামনে আমার দাস দায়ূদের একটা প্রদীপ থাকে সেইজন্য আমি তার ছেলেকে একটা গোষ্ঠীর ভার দেব।
37. কিন্তু আমি তোমাকেই ইস্রায়েলের উপর রাজা করব আর তুমি তোমার প্রাণের সমস্ত ইচ্ছা অনুসারে রাজত্ব করবে।
38. যদি তুমি আমার আদেশ অনুসারে কাজ কর এবং আমার পথে চল আর আমার দাস দায়ূদের মত আমার নিয়ম ও আদেশ পালন করে আমার চোখে যা ঠিক তাই কর তবে আমি তোমার সঙ্গে থাকব। আমি দায়ূদের মতই তোমার বংশে রাজপদ স্থায়ী করব এবং তোমার হাতে ইস্রায়েলকে দেব।
39. তাদের অবাধ্যতার জন্য আমি দায়ূদের বংশধরদের নীচু করব, কিন্তু চিরদিনের র জন্য নয়’।”
40. সেইজন্য শলোমন যারবিয়ামকে মেরে ফেলবার চেষ্টা করলেন, কিন্তু তিনি মিশরের রাজা শীশকের কাছে পালিয়ে গেলেন এবং শলোমনের মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকলেন। [PE]
41. {শলোমনের মৃত্যু। } [PS]রাজত্বের বাকি ঘটনার কথা, অর্থাৎ তাঁর কাজ ও জ্ঞানের কথা শলোমনের রাজত্বের ইতিহাসের বইয়ে কি লেখা নেই?
42. শলোমন যিরূশালেমে চল্লিশ বছর ধরে গোটা ইস্রায়েল জাতির উপর রাজত্ব করেছিলেন।
43. তারপর তিনি তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে নিদ্রায় গেলেন। তাঁকে তাঁর বাবা দায়ূদের শহরে কবর দেওয়া হল। তারপর তাঁর ছেলে রহবিয়াম তাঁর জায়গায় রাজা হলেন। [PE]
Total 22 অধ্যায়গুলির, Selected অধ্যায় 11 / 22
1 রাজা শলোমন ফরৌণের মেয়েকে ছাড়া আরও অনেক বিদেশী স্ত্রীলোকদের ভালবাসতেন। তারা জাতিতে ছিল মোয়াবীয়, অম্মোনীয়, ইদোমীয়, সীদোনীয় ও হিত্তীয়। 2 তারা সেই সব জাতি থেকে এসেছিল যাদের সম্বন্ধে সদাপ্রভু ইস্রায়েলীয়দের বলেছিলেন, “তোমরা তাদের বিয়ে করবে না, কারণ তারা নিশ্চয়ই তোমাদের মন তাদের দেব দেবতাদের দিকে আকর্ষিত করবে।” কিন্তু শলোমন এইসব স্ত্রীলোকদের ভালবাসতেন। 3 তাঁর সাতশো স্ত্রী ছিল, যারা ছিল রাজপরিবারের মেয়ে; এছাড়া তাঁর তিনশো উপস্ত্রী ছিল। তাঁর স্ত্রীরা তাঁকে বিপথে নিয়ে গিয়েছিল। 4 শলোমনের বুড়ো বয়সে তাঁর স্ত্রীরা তাঁর মন অন্য দেব দেবতাদের দিকে আকর্ষিত করেছিল। তার ফলে তাঁর বাবা দায়ূদের মত তাঁর হৃদয় তাঁর ঈশ্বর সদাপ্রভুর প্রতি ভক্তিতে পূর্ণ ছিল না। 5 তিনি সীদোনীয়দের দেবী অষ্টোরতের ও অম্মোনীয়দের জঘন্য দেবতা মিল্কমের সেবা করতে লাগলেন। 6 সদাপ্রভুর চোখে যা মন্দ শলোমন তাই করলেন। তাঁর বাবা দায়ূদ যেমন সদাপ্রভুকে সম্পূর্ণভাবে ভক্তি করতেন তিনি তেমন করতেন না। 7 সেই দিন শলোমন যিরূশালেমের পূর্ব দিকের পাহাড়ের উপরে তিনি মোয়াবের জঘন্য দেবতা কমোশ ও অম্মোনীয়দের জঘন্য দেবতা মোলকের উদ্দেশ্যে উঁচু জায়গা তৈরী করলেন। 8 তাঁর সমস্ত বিদেশী স্ত্রী যারা নিজের নিজের দেবতাদের উদ্দেশ্যে ধূপ জ্বালাত ও পশু বলি দিত তাদের সকলের জন্য তিনি তাই করলেন। 9 এতে সদাপ্রভু শলোমনের উপরে ভীষণ অসন্তুষ্ট হলেন, কারণ যিনি তাঁর কাছে দুবার নিজেকে প্রকাশ করেছিলেন সেই ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর দিক থেকে তাঁর মন ফিরে গিয়েছিল। 10 তিনি অন্য দেব দেবতাদের পিছনে যেতে তাঁকে মানা করেছিলেন কিন্তু শলোমন সদাপ্রভুর আদেশ পালন করেননি। 11 কাজেই সদাপ্রভু শলোমনকে বললেন, “তোমার এই ব্যবহারের জন্য এবং আমার দেওয়া ব্যবস্থা ও নিয়ম অমান্য করবার জন্য আমি অবশ্যই তোমার কাছ থেকে রাজ্য ছিঁড়ে নিয়ে তোমার কর্মচারীকে দেব। 12 তবে তোমার বাবা দায়ূদের কথা মনে করে তোমার জীবনকালে আমি তা করব না, কিন্তু তোমার ছেলের হাত থেকে আমি তা ছিঁড়ে নেব। 13 অবশ্য রাজ্যের সবটা আমি তার কাছ থেকে ছিঁড়ে নেব না, কিন্তু আমার দাস দায়ূদের কথা এবং আমার বেছে নেওয়া যিরূশালেমের কথা মনে করে একটা গোষ্ঠী আমি তোমার ছেলেকে দেব।” 14 {শলোমনের বিপক্ষের লোকেরা। } এর পর সদাপ্রভু শলোমনের বিরুদ্ধে ইদোমীয় হদদকে শত্রু হিসাবে দাঁড় করালেন। ইদোমের রাজবংশে তার জন্ম হয়েছিল। 15 দায়ূদ যখন ইদোম দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছিলেন তখন তাঁর সেনাপতি যোয়াব মৃত লোকদের কবর দেবার জন্য ইদোমে গিয়েছিলেন। সেখানে থাকবার দিন তিনি ইদোমীয় সব পুরুষ লোককে মেরে ফেলেছিলেন। 16 যোয়াব ও ইস্রায়েলের সব সৈন্যেরা ছয় মাস ইদোমে ছিলেন এবং সেখানকার সব পুরুষ লোককে মেরে ফেলেছিলেন। 17 কিন্তু হদদ তার বাবার কয়েকজন ইদোমীয় কর্মচারীর সঙ্গে মিশরে পালিয়ে গিয়েছিল। সেই দিন সে ছোট ছিল। 18 তারা মিদিয়ন থেকে রওনা হয়ে পারণে গিয়েছিল এবং পরে সেখান থেকে কিছু লোক নিয়ে তারা মিশরের রাজা ফরৌণের কাছে গিয়েছিল। ফরৌণ হদদকে বাড়ি, জায়গা জমি ও খাবার দিয়েছিলেন। 19 ফরৌণ হদদের উপর এত সন্তুষ্ট হয়েছিলেন যে, ফরৌণের স্ত্রী রাণী তহ্‌পনেষের বোনের সঙ্গে তার বিয়ে দিয়েছিলেন। 20 তহ্‌পনেষের বোনের গর্ভে হদদের একটি ছেলের জন্ম হয়েছিল; সেই ছেলের নাম ছিল গনুবৎ। তহ্‌পনেষ ছেলেটিকে রাজবাড়ীতে রাখলেন এবং সেখানেই সে মায়ের দুধ খাওয়া ছাড়ল। গনুবৎ সেখানে ফরৌণের ছেলে মেয়েদের সঙ্গেই থাকত। 21 মিশরে থাকতেই হদদ শুনল যে, দায়ূদকে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে কবর দেওয়া হয়েছে এবং সেনাপতি যোয়াবও মারা গেছেন। তখন হদদ ফরৌণকে বলল, “এবার আমাকে যেতে দিন যাতে আমি আমার নিজের দেশে ফিরে যেতে পারি।” 22 ফরৌণ জিজ্ঞাসা করলেন, “এখানে তোমার কিসের অভাব হয়েছে যে, তুমি নিজের দেশে ফিরে যেতে চাইছ?” উত্তরে হদদ বলল, “কিছুরই অভাব হয়নি, কিন্তু তবুও আমাকে যেতে দিন।” 23 শলোমনের বিরুদ্ধে ঈশ্বর আর একজন শত্রু দাঁড় করালেন। সে হল ইলিয়াদার ছেলে রষোণ। সে তার মনিব সোবার রাজা হদদেষরের কাছ থেকে পালিয়ে গিয়েছিল। 24 দায়ূদ যখন সোবার সৈন্যদের মেরে ফেলেছিলেন তখন রষোণ কিছু লোক জোগাড় করে নিয়ে একটা লুটেরা দল তৈরী করে তার নেতা হয়ে বসল। এই লোকেরা দম্মেশক দখল করে সেখানে রাজত্ব করতে লাগল। 25 শলোমন যতদিন জীবিত ছিলেন ততদিন রষোণ ইস্রায়েলের সঙ্গে শত্রুতা করেছিল আর সেই দিন হদদও ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে কাজ করছিল। ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে একটা শত্রুভাব নিয়ে রষোণ অরাম দেশে রাজত্ব করত। 26 {যারবিয়াম শলোমনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করলেন। } নবাটের ছেলে যারবিয়ামও রাজা শলোমনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করলেন। তিনি ছিলেন শলোমনের কর্মচারী, সরেদা গ্রামের একজন ইফ্রয়িমীয় লোক। তাঁর মায়ের নাম ছিল সরূয়া; তিনি বিধবা ছিলেন। 27 রাজার বিরুদ্ধে যারবিয়ামের বিদ্রোহের একটা কারণ ছিল। যে দিন শলোমন মিল্লো তৈরী করছিলেন এবং তাঁর বাবা দায়ূদের শহরের দেয়ালের ভাঙ্গা অংশ মেরামত করছিলেন, 28 সেই দিন যারবিয়াম সেখানে কাজ করছিলেন এবং তাঁর কাজের বেশ সুনাম ছিল। শলোমন যখন দেখলেন যে, যুবকটি বেশ কাজের লোক তখন তিনি তাঁকে যোষেফের বংশের সমস্ত মজুরদের দেখাশোনার ভার দিলেন। 29 সেই দিন যারবিয়াম এক দিন যিরূশালেমের বাইরে গেলেন। পথে তাঁর সঙ্গে শীলোর ভাববাদী অহিয়ের দেখা হল। অহিয়ের গায়ে ছিল একটা নতুন চাদর। পথে তাঁরা দুজন ছাড়া আর কেউ ছিল না। 30 তখন অহিয় তাঁর গায়ের চাদরটা নিয়ে ছিঁড়ে বারোটা টুকরো করলেন। 31 তারপর তিনি যারবিয়ামকে বললেন, “দশটা টুকরো তুমি তুলে নাও, কারণ ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে বলছেন, ‘দেখ, আমি শলোমনের হাত থেকে রাজ্যটা ছিঁড়ে নেব এবং তোমাকে দশটা গোষ্ঠীর ভার দেব। 32 কিন্তু আমার দাস দায়ূদের জন্য ও ইস্রায়েলের সমস্ত গোষ্ঠীর এলাকা থেকে আমার বেছে নেওয়া যিরূশালেমের জন্য কেবল একটা গোষ্ঠী শলোমনের হাতে থাকবে। 33 আমি এটা করব, কারণ সেই দশ গোষ্ঠী আমাকে ত্যাগ করে সীদোনীয়দের দেবী অষ্টোরতের, মোয়াবের দেবতা কমোশের ও অম্মোনীয়দের দেবতা মিলকমের পূজা করেছে। শলোমনের বাবা দায়ূদ যেমন করতেন তারা তেমন করে নি। তারা আমার পথে চলেনি, আমার চোখে যা ঠিক তা করে নি এবং আমার নিয়ম ও নির্দেশ পালন করে নি। 34 তবুও আমি শলোমনের হাত থেকে গোটা রাজ্যটা নিয়ে নেব না। আমার দাস দায়ূদ, যাকে আমি বেছে নিয়েছিলাম এবং যে আমার আদেশ ও নিয়ম পালন করত, তার জন্যই আমি শলোমনকে সারা জীবনের জন্য রাজপদে রাখব। 35 আমি তার ছেলের হাত থেকে রাজ্যটা নিয়ে তোমার হাতে দশটা গোষ্ঠীর ভার দেব। 36 আমার বাসস্থান হিসাবে বেছে নেওয়া যিরূশালেম শহরে যেন আমার সামনে আমার দাস দায়ূদের একটা প্রদীপ থাকে সেইজন্য আমি তার ছেলেকে একটা গোষ্ঠীর ভার দেব। 37 কিন্তু আমি তোমাকেই ইস্রায়েলের উপর রাজা করব আর তুমি তোমার প্রাণের সমস্ত ইচ্ছা অনুসারে রাজত্ব করবে। 38 যদি তুমি আমার আদেশ অনুসারে কাজ কর এবং আমার পথে চল আর আমার দাস দায়ূদের মত আমার নিয়ম ও আদেশ পালন করে আমার চোখে যা ঠিক তাই কর তবে আমি তোমার সঙ্গে থাকব। আমি দায়ূদের মতই তোমার বংশে রাজপদ স্থায়ী করব এবং তোমার হাতে ইস্রায়েলকে দেব। 39 তাদের অবাধ্যতার জন্য আমি দায়ূদের বংশধরদের নীচু করব, কিন্তু চিরদিনের র জন্য নয়’।” 40 সেইজন্য শলোমন যারবিয়ামকে মেরে ফেলবার চেষ্টা করলেন, কিন্তু তিনি মিশরের রাজা শীশকের কাছে পালিয়ে গেলেন এবং শলোমনের মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকলেন। 41 {শলোমনের মৃত্যু। } রাজত্বের বাকি ঘটনার কথা, অর্থাৎ তাঁর কাজ ও জ্ঞানের কথা শলোমনের রাজত্বের ইতিহাসের বইয়ে কি লেখা নেই? 42 শলোমন যিরূশালেমে চল্লিশ বছর ধরে গোটা ইস্রায়েল জাতির উপর রাজত্ব করেছিলেন। 43 তারপর তিনি তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে নিদ্রায় গেলেন। তাঁকে তাঁর বাবা দায়ূদের শহরে কবর দেওয়া হল। তারপর তাঁর ছেলে রহবিয়াম তাঁর জায়গায় রাজা হলেন।
Total 22 অধ্যায়গুলির, Selected অধ্যায় 11 / 22
×

Alert

×

Bengali Letters Keypad References