পবিত্র বাইবেল

গডস গ্রেইস গিফট
প্রবচন
1. প্রজ্ঞা কি ডাকে না? বুদ্ধি কি উচ্চৈঃস্বর করে না?
2. সে পথের পার্শ্বস্থ উচ্চস্থানের চূড়ায়, মার্গ সকলের সংযোগস্থানে দাঁড়ায়;
3. সে পুরদ্বার-সমীপে, নগরের অগ্রভাগে, দ্বারের প্রবেশ-স্থানে থাকিয়া উচ্চৈঃস্বরে কহে,
4. হে মানবগণ, আমি তোমাদিগকে ডাকি, মনুষ্য-সন্তানদের কাছেই আমার বাণী।
5. হে অবোধেরা, চতুরতা শিক্ষা কর; হে হীনবুদ্ধি সকল, সুবুদ্ধিচিত্ত হও।
6. শুন, কেননা আমি উৎকৃষ্ট কথা কহিব, আমার ওষ্ঠাধরের বিকাশ ন্যায়-সঙ্গত।
7. আমার মুখ সত্য কহিবে, দুষ্টতা আমার ওষ্ঠের ঘৃণাস্পদ।
8. আমার মুখের সমস্ত বাক্য ধর্ম্মময়; তাহার মধ্যে বক্রতা বা কুটিলতা কিছুই নাই।
9. বুদ্ধিমানের কাছে সে সকল স্পষ্ট, জ্ঞানপ্রাপ্তদের কাছে সে সকল সরল।
10. আমার শাসনই গ্রহণ কর, রৌপ্য নয়, উৎকৃষ্ট সুবর্ণ অপেক্ষা জ্ঞান লও।
11. কেননা প্রজ্ঞা মুক্তা হইতেও উত্তম, কোন অভীষ্ট বস্তু তাহার সমান নয়।
12. আমি প্রজ্ঞা, চতুরতা-গৃহে বাস করি, পরিণামদর্শিতার তত্ত্ব জানি।
13. সদাপ্রভুর ভয় দুষ্টতার প্রতি ঘৃণা; অহঙ্কার, দাম্ভিকতা ও কুপথ, এবং কুটিল মুখও আমি ঘৃণা করি।
14. পরামর্শ ও বুদ্ধিকৌশল আমার, আমিই সুবিবেচনা, পরাক্রম আমার।
15. আমা দ্বারা রাজগণ রাজত্ব করেন, মন্ত্রিগণ ধর্ম্মব্যবস্থা স্থাপন করেন।
16. আমা দ্বারা শাসনকর্ত্তারা শাসন করেন, অধিপতিরা, পৃথিবীর সমস্ত বিচারকর্ত্তা, শাসন করেন।
17. যাহারা আমাকে প্রেম করে, আমিও তাহাদিগকে প্রেম করি, যাহারা সযত্নে আমার অন্বেষণ করে; তাহারা আমাকে পায়।
18. আমার কাছে রহিয়াছে ঐশ্বর্য্য ও সম্মান, অক্ষয় সম্পত্তি ও ধার্ম্মিকতা।
19. কাঞ্চন ও নির্ম্মল সুবর্ণ অপেক্ষাও আমার ফল উত্তম, উৎকৃষ্ট রৌপ্য হইতেও আমার উপস্বত্ব উত্তম।
20. আমি ধার্ম্মিকতার মার্গে গমন করি, বিচারের পথের মধ্য দিয়া গমন করি,
21. যেন, যাহারা আমাকে প্রেম করে, তাহাদিগকে সত্ত্ববান করি, তাহাদের ভাণ্ডার সকল পরিপূর্ণ করি।
22. সদাপ্রভু নিজ পথের আরম্ভে আমাকে প্রাপ্ত হইয়াছিলেন, তাঁহার কর্ম্ম সকলের পূর্ব্বে পূর্ব্বাবধি।
23. আমি স্থাপিত হইয়াছি অনাদি কালাবধি, আদি অবধি, পৃথিবীর উদ্ভবের পূর্ব্বাবধি।
24. জলধি যখন হয় নাই, তখন আমি জন্মিয়াছিলাম, যখন জলপূর্ণ উনুই সকল হয় নাই।
25. পর্ব্বত সকল স্থাপিত হইবার পূর্ব্বে, উপপর্ব্বত সকলের পূর্ব্বে আমি জন্মিয়াছিলাম;
26. তখন তিনি স্থল ও মাঠ নির্ম্মাণ করেন নাই, জগতের ধূলির প্রথম অণুও গড়েন নাই।
27. যখন তিনি আকাশমণ্ডল প্রস্তুত করেন, তখন আমি সেখানে ছিলাম; যখন তিনি জলধিপৃষ্ঠের চক্রাকার সীমা নিরূপণ করিলেন,
28. যখন তিনি ঊর্দ্ধস্থ আকাশ দৃঢ়রূপে নির্ম্মাণ করিলেন, যখন জলধির প্রবাহ সকল প্রবল হইল,
29. যখন তিনি সমুদ্রের সীমা স্থির করিলেন, যেন জল তাঁহার আজ্ঞা উল্লঙ্ঘন না করে, যখন তিনি পৃথিবীর মূল নিরূপণ করিলেন;
30. তৎকালে আমি তাঁহার কাছে কার্য্যকারী ছিলাম; আমি দিন দিন আনন্দময় ছিলাম, তাঁহার সম্মুখে নিত্য আহ্লাদ করিতাম;
31. আমি তাঁহার ভূমণ্ডলে আহ্লাদ করিতাম, মনুষ্য-সন্তানগণে আমার আনন্দ হইত।
32. অতএব বৎসগণ, এখন আমার কথা শুন; কেননা তাহারা ধন্য, যাহারা আমার পথে চলে।
33. তোমরা শাসনে অবধান কর, জ্ঞানবান হও; তাহা অগ্রাহ্য করিও না।
34. ধন্য সেই ব্যক্তি, যে আমার কথা শুনে, যে দিন দিন আমার দ্বারে জাগ্রৎ থাকে, আমার দ্বারের চৌকাঠে থাকিয়া অপেক্ষা করে।
35. কেননা যে আমাকে পায়, সে জীবন পায়, এবং সদাপ্রভুর অনুগ্রহ ভোগ করে।
36. কিন্তু যে আমার বিরুদ্ধে পাপ করে, সে আপন প্রাণের অনিষ্ট করে; যে সকল লোক আমাকে দ্বেষ করে, তাহারা মৃত্যুকে ভালবাসে।

Notes

No Verse Added

Total 31 Chapters, Current Chapter 8 of Total Chapters 31
প্রবচন 8:25
1. প্রজ্ঞা কি ডাকে না? বুদ্ধি কি উচ্চৈঃস্বর করে না?
2. সে পথের পার্শ্বস্থ উচ্চস্থানের চূড়ায়, মার্গ সকলের সংযোগস্থানে দাঁড়ায়;
3. সে পুরদ্বার-সমীপে, নগরের অগ্রভাগে, দ্বারের প্রবেশ-স্থানে থাকিয়া উচ্চৈঃস্বরে কহে,
4. হে মানবগণ, আমি তোমাদিগকে ডাকি, মনুষ্য-সন্তানদের কাছেই আমার বাণী।
5. হে অবোধেরা, চতুরতা শিক্ষা কর; হে হীনবুদ্ধি সকল, সুবুদ্ধিচিত্ত হও।
6. শুন, কেননা আমি উৎকৃষ্ট কথা কহিব, আমার ওষ্ঠাধরের বিকাশ ন্যায়-সঙ্গত।
7. আমার মুখ সত্য কহিবে, দুষ্টতা আমার ওষ্ঠের ঘৃণাস্পদ।
8. আমার মুখের সমস্ত বাক্য ধর্ম্মময়; তাহার মধ্যে বক্রতা বা কুটিলতা কিছুই নাই।
9. বুদ্ধিমানের কাছে সে সকল স্পষ্ট, জ্ঞানপ্রাপ্তদের কাছে সে সকল সরল।
10. আমার শাসনই গ্রহণ কর, রৌপ্য নয়, উৎকৃষ্ট সুবর্ণ অপেক্ষা জ্ঞান লও।
11. কেননা প্রজ্ঞা মুক্তা হইতেও উত্তম, কোন অভীষ্ট বস্তু তাহার সমান নয়।
12. আমি প্রজ্ঞা, চতুরতা-গৃহে বাস করি, পরিণামদর্শিতার তত্ত্ব জানি।
13. সদাপ্রভুর ভয় দুষ্টতার প্রতি ঘৃণা; অহঙ্কার, দাম্ভিকতা কুপথ, এবং কুটিল মুখও আমি ঘৃণা করি।
14. পরামর্শ বুদ্ধিকৌশল আমার, আমিই সুবিবেচনা, পরাক্রম আমার।
15. আমা দ্বারা রাজগণ রাজত্ব করেন, মন্ত্রিগণ ধর্ম্মব্যবস্থা স্থাপন করেন।
16. আমা দ্বারা শাসনকর্ত্তারা শাসন করেন, অধিপতিরা, পৃথিবীর সমস্ত বিচারকর্ত্তা, শাসন করেন।
17. যাহারা আমাকে প্রেম করে, আমিও তাহাদিগকে প্রেম করি, যাহারা সযত্নে আমার অন্বেষণ করে; তাহারা আমাকে পায়।
18. আমার কাছে রহিয়াছে ঐশ্বর্য্য সম্মান, অক্ষয় সম্পত্তি ধার্ম্মিকতা।
19. কাঞ্চন নির্ম্মল সুবর্ণ অপেক্ষাও আমার ফল উত্তম, উৎকৃষ্ট রৌপ্য হইতেও আমার উপস্বত্ব উত্তম।
20. আমি ধার্ম্মিকতার মার্গে গমন করি, বিচারের পথের মধ্য দিয়া গমন করি,
21. যেন, যাহারা আমাকে প্রেম করে, তাহাদিগকে সত্ত্ববান করি, তাহাদের ভাণ্ডার সকল পরিপূর্ণ করি।
22. সদাপ্রভু নিজ পথের আরম্ভে আমাকে প্রাপ্ত হইয়াছিলেন, তাঁহার কর্ম্ম সকলের পূর্ব্বে পূর্ব্বাবধি।
23. আমি স্থাপিত হইয়াছি অনাদি কালাবধি, আদি অবধি, পৃথিবীর উদ্ভবের পূর্ব্বাবধি।
24. জলধি যখন হয় নাই, তখন আমি জন্মিয়াছিলাম, যখন জলপূর্ণ উনুই সকল হয় নাই।
25. পর্ব্বত সকল স্থাপিত হইবার পূর্ব্বে, উপপর্ব্বত সকলের পূর্ব্বে আমি জন্মিয়াছিলাম;
26. তখন তিনি স্থল মাঠ নির্ম্মাণ করেন নাই, জগতের ধূলির প্রথম অণুও গড়েন নাই।
27. যখন তিনি আকাশমণ্ডল প্রস্তুত করেন, তখন আমি সেখানে ছিলাম; যখন তিনি জলধিপৃষ্ঠের চক্রাকার সীমা নিরূপণ করিলেন,
28. যখন তিনি ঊর্দ্ধস্থ আকাশ দৃঢ়রূপে নির্ম্মাণ করিলেন, যখন জলধির প্রবাহ সকল প্রবল হইল,
29. যখন তিনি সমুদ্রের সীমা স্থির করিলেন, যেন জল তাঁহার আজ্ঞা উল্লঙ্ঘন না করে, যখন তিনি পৃথিবীর মূল নিরূপণ করিলেন;
30. তৎকালে আমি তাঁহার কাছে কার্য্যকারী ছিলাম; আমি দিন দিন আনন্দময় ছিলাম, তাঁহার সম্মুখে নিত্য আহ্লাদ করিতাম;
31. আমি তাঁহার ভূমণ্ডলে আহ্লাদ করিতাম, মনুষ্য-সন্তানগণে আমার আনন্দ হইত।
32. অতএব বৎসগণ, এখন আমার কথা শুন; কেননা তাহারা ধন্য, যাহারা আমার পথে চলে।
33. তোমরা শাসনে অবধান কর, জ্ঞানবান হও; তাহা অগ্রাহ্য করিও না।
34. ধন্য সেই ব্যক্তি, যে আমার কথা শুনে, যে দিন দিন আমার দ্বারে জাগ্রৎ থাকে, আমার দ্বারের চৌকাঠে থাকিয়া অপেক্ষা করে।
35. কেননা যে আমাকে পায়, সে জীবন পায়, এবং সদাপ্রভুর অনুগ্রহ ভোগ করে।
36. কিন্তু যে আমার বিরুদ্ধে পাপ করে, সে আপন প্রাণের অনিষ্ট করে; যে সকল লোক আমাকে দ্বেষ করে, তাহারা মৃত্যুকে ভালবাসে।
Total 31 Chapters, Current Chapter 8 of Total Chapters 31
×

Alert

×

bengali Letters Keypad References