2. আর তাঁহারা মিসর হইতে যে শস্য আনিয়াছিলেন, সে সমস্ত ভক্ষিত হইলে তাঁহাদের পিতা তাঁহাদিগকে কহিলেন, তোমরা আবার যাও, আমাদের জন্য কিছু ভক্ষ্য কিনিয়া আন।
|
3. তখন যিহূদা তাঁহাকে কহিলেন, সেই ব্যক্তি দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করিয়া আমাদিগকে বলিয়াছেন, তোমাদের ভাই তোমাদের সঙ্গে না আসিলে তোমরা আমার মুখ দেখিতে পাইবে না।
|
5. কিন্তু যদি না পাঠাও, তবে যাইব না; কেননা সে ব্যক্তি আমাদিগকে বলিয়াছেন, তোমাদের ভাই তোমাদের সঙ্গে না আসিলে তোমরা আমার মুখ দেখিতে পাইবে না।
|
6. তখন ইস্রায়েল কহিলেন, আমার সহিত এমন কুব্যবহার কেন করিয়াছ? ঐ ব্যক্তিকে কেন বলিয়াছ যে, তোমাদের আর এক ভাই আছে?
|
7. তাঁহারা কহিলেন, তিনি আমাদের বিষয়ে ও আমাদের বংশের বিষয়ে সূক্ষ্মরূপে জিজ্ঞাসা করিলেন, বলিলেন, তোমাদের পিতা কি এখনও জীবিত আছেন? তোমাদের কি আরও ভাই আছে? তাহাতে আমরা সেই কথা অনুসারে উত্তর করিয়াছিলাম। আমরা কি প্রকারে জানিব যে, তিনি বলিবেন, তোমাদের ভাইকে এখানে আন?
|
8. যিহূদা আপন পিতা ইস্রায়েলকে আরও কহিলেন, বালকটীকে আমার সঙ্গে পাঠাইয়া দেও; আমরা উঠিয়া প্রস্থান করি, তাহাতে তুমি ও আমাদের বালকেরা ও আমরা বাঁচিব; কেহ মরিব না।
|
9. আমিই তাহার জামিন হইলাম, আমারই হস্ত হইতে তাহাকে লইও, আমি যদি তোমার কাছে তাহাকে না আনি, তোমার সম্মুখে তাহাকে উপস্থিত না করি, তবে আমি যাবজ্জীবন তোমার নিকটে অপরাধী থাকিব।
|
11. তখন তাঁহাদের পিতা ইস্রায়েল তাঁহাদিগকে কহিলেন, যদি তাহাই হয়, তবে এক কর্ম্ম কর; তোমরা আপন আপন পাত্রে এই দেশের প্রশংসিত দ্রব্য,—গুগ্গুলু, মধু, সুগন্ধি দ্রব্য, গন্ধরস, পেস্তা ও বাদাম কিছু কিছু লইয়া গিয়া সেই ব্যক্তিকে উপঢৌকন দেও।
|
12. আর আপন আপন হস্তে দ্বিগুণ টাকা লও, এবং তোমাদের ছালার মুখে যে টাকা ফিরিয়া আসিয়াছে, তাহাও হস্তে করিয়া পুনরায় লইয়া যাও;
|
14. সর্ব্বশক্তিমান্ ঈশ্বর তোমাদিগকে সেই ব্যক্তির কাছে করুণার পাত্র করুন, যেন তিনি তোমাদের অন্য ভাইকে ও বিন্যামীনকে ছাড়িয়া দেন। আর যদি আমাকে পুত্রহীন হইতে হয়, তবে পুত্রহীন হইলাম।
|
15. তখন তাঁহারা সেই উপঢৌকন দ্রব্য লইলেন, আর হাতে দ্বিগুণ টাকা ও বিন্যামীনকে লইয়া যাত্রা করিলেন, এবং মিসরে গিয়া যোষেফের সম্মুখে দাঁড়াইলেন।
|
16. যোষেফ তাঁহাদের সঙ্গে বিন্যামীনকে দেখিয়া আপন গৃহাধ্যক্ষকে কহিলেন, এই কয়েকটী লোককে বাটীর ভিতরে লইয়া যাও, আর পশু মারিয়া আয়োজন কর; কেননা ইহারা মধ্যাহ্নে আমার সঙ্গে আহার করিবে।
|
18. কিন্তু যোষেফের বাটীতে নীত হওয়াতে তাঁহারা ভীত হইলেন, ও পরস্পর কহিলেন, পূর্ব্বে আমাদের ছালায় যে টাকা ফিরিয়া গিয়াছিল, তাহারই জন্য ইনি আমাদিগকে এখানে আনিতেছেন; এখন আমাদের উপরে পড়িয়া আক্রমণ করিবেন ও আমাদের গর্দ্দভ লইয়া আমাদিগকে দাস করিয়া রাখিবেন।
|
21. পরে উত্তরণ স্থানে গিয়া আপন আপন ছালা খুলিলাম, আর দেখুন, প্রত্যেক জনের ছালার মুখে তাহার টাকা, যথাতৌল আমাদের টাকা আছে; তাহা আমরা পুনরায় হস্তে করিয়া আনিয়াছি;
|
22. এবং ভক্ষ্য কিনিবার নিমিত্তে আরও টাকা আনিয়াছি; আমাদের সেই টাকা আমাদের ছালায় কে রাখিয়াছিল, তাহা আমরা জানি না।
|
23. সেই ব্যক্তি কহিল, তোমাদের মঙ্গল হউক, ভয় করিও না; তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের পৈতৃক ঈশ্বর তোমাদের ছালায় তোমাদিগকে গুপ্ত ধন দিয়াছেন; আমি তোমাদের টাকা পাইয়াছি। পরে সে শিমিয়োনকে তাঁহাদের নিকটে আনিল।
|
24. আর সে তাঁহাদিগকে যোষেফের বাটীর ভিতরে লইয়া গিয়া জল দিল, তাহাতে তাঁহারা পা ধুইলেন, এবং সে তাঁহাদের গর্দ্দভদিগকে আহার দিল।
|
25. আর মধ্যাহ্নে যোষেফ আসিবেন বলিয়া তাঁহারা উপঢৌকন সাজাইলেন, কেননা তাঁহারা শুনিয়াছিলেন যে, সেখানে তাঁহাদিগকে আহার করিতে হইবে।
|
26. পরে যোষেফ গৃহে আসিলে তাঁহারা হস্তস্থিত উপঢৌকন গৃহমধ্যে তাঁহার কাছে আনিলেন, ও তাঁহার সাক্ষাতে ভূমিতে প্রণিপাত করিলেন।
|
27. তখন তিনি কুশল জিজ্ঞাসা করিয়া তাঁহাদিগকে কহিলেন, তোমাদের যে বৃদ্ধ পিতার কথা বলিয়াছিলে, তাঁহার কুশল ত? তিনি কি এখনও জীবিত আছেন?
|
28. তাঁহারা কহিলেন, আপনার দাস আমাদের পিতা কুশলে আছেন, তিনি এখনও জীবিত আছেন। পরে তাঁহারা মস্তক নমনপূর্ব্বক প্রণিপাত করিলেন।
|
29. তখন যোষেফ চক্ষু তুলিয়া আপন ভাই বিন্যামীনকে, আপন সহোদরকে দেখিয়া কহিলেন, তোমাদের যে ছোট ভাইয়ের কথা আমাকে বলিয়াছিলে, সে কি এই? আর তিনি কহিলেন, বৎস, ঈশ্বর তোমার প্রতি অনুগ্রহ করুন।
|
30. তখন যোষেফ ত্বরা করিলেন, কেননা তাঁহার ভাইয়ের জন্য তাঁহার প্রাণ কাঁদিতেছিল, তাই তিনি রোদন করিবার স্থান অন্বেষণ করিলেন, আর আপন কুঠরীতে প্রবেশ করিয়া সেখানে রোদন করিলেন।
|
32. তখন তাঁহার জন্য পৃথক্ ও তাঁহার ভ্রাতৃগণের জন্য পৃথক্, এবং তাঁহার সঙ্গে ভোজনকারী মিস্রীয়দের জন্য পৃথক্ পরিবেষণ করা হইল, কেননা ইব্রীয়দের সহিত মিস্রীয়েরা আহার ব্যবহার করে না; কারণ তাহা মিস্রীয়দের ঘৃণিত কর্ম্ম।
|
33. আর তাঁহারা যোষেফের সম্মুখে জ্যেষ্ঠ জ্যেষ্ঠের স্থানে ও কনিষ্ঠ কনিষ্ঠের স্থানে বসিলেন; তখন তাঁহারা পরস্পর আশ্চর্য্য জ্ঞান করিলেন।
|
34. আর তিনি আপনার সম্মুখ হইতে ভক্ষ্যের অংশ তুলিয়া তাঁহাদিগকে পরিবেষণ করাইলেন; কিন্তু সকলের অংশ হইতে বিন্যামীনের অংশ পাঁচ গুণ অধিক ছিল। পরে তাঁহারা পান করিলেন, ও তাঁহার সহিত হৃষ্টচিত্ত হইলেন।
|