1. পরে ইয়োব পুনর্ব্বার কথা প্রসঙ্গ করিলেন, বলিলেন,
2. আহা! যদি আমি সেইরূপ থাকিতাম, যেমন পূর্ব্বকার মাসপর্য্যায়ে ছিলাম! যেমন পূর্ব্বকার দিনপর্য্যায়ে ছিলাম, যখন ঈশ্বর আমাকে চৌকি দিতেন।
3. তখন আমার মাথার উপরে তাঁহার প্রদীপ জ্বলিত, তাঁহার আলোকে আমি অন্ধকারেও চলিতাম।
4. আমি উত্তম অবস্থায় ছিলাম, ঈশ্বরের গূঢ় মন্ত্রণা আমার তাম্বুর উপরে থাকিত;
5. তখন সর্ব্বশক্তিমান্ আমার সহায় ছিলেন, আমার সন্তানগণ আমার চারিদিকে ছিল।
6. আমার পদচিহ্ন ক্ষীরে প্রক্ষালিত হইত, আমার জন্য শৈল তৈলের নদী বহাইত।
7. আমি নগরের দিকে গিয়া পুরদ্বারে উঠিতাম, চকে আমার আসন প্রস্তুত করিতাম,
8. যুবকগণ আমাকে দেখিয়া লুকাইত, বৃদ্ধেরা উঠিয়া দাঁড়াইতেন;
9. অধ্যক্ষগণ বাক্য কথন হইতে নিবৃত্ত হইতেন, আপন আপন মুখে হাত দিয়া থাকিতেন;
10. বড় লোকেরা অবাক হইয়া থাকিতেন, তাঁহাদের জিহ্বা তালুতে লাগিয়া থাকিত;
11. আমার কথা শুনিলে কর্ণ মম সাধুবাদ করিত, আমাকে দেখিলে চক্ষু মম পক্ষে সাক্ষ্য দিত।
12. কারণ আমি আর্ত্তনাদকারী দুঃখীকে, এবং পিতৃহীন ও অসহায়কে উদ্ধার করিতাম।
13. নষ্টকল্পের আশীর্ব্বাদ আমার উপরে বর্ত্তিত; আমি বিধবার চিত্তকে আনন্দগান করাইতাম।
14. আমি ধার্ম্মিকতা পরিতাম, আর তাহা আমাকে পরিত; আমার ন্যায়বত্তা পরিচ্ছদ ও উষ্ণীষস্বরূপ ছিল।
15. আমি অন্ধের চক্ষু ছিলাম, আমি খঞ্জের চরণ ছিলাম।
16. আমি দরিদ্রগণের পিতা ছিলাম; যাহাকে না জানিতাম, তাহারও বিচারের তদন্ত করিতাম;
17. আমি অন্যায়ীর চোয়ালি ভগ্ন করিতাম, তাহার দন্ত হইতেই শিকার উদ্ধার করিতাম।
18. তখন কহিতাম, আমি নিজ বাসার মধ্যে মরিব; আমার দিন বালুকার ন্যায় বহুসংখ্যক হইবে।
19. জলের ধারে আমার মূল বিস্তৃত হয়, সমস্ত রাত্রি আমার শাখায় শিশির থাকে,
20. আমার গৌরব আমাতে সতেজ থাকে, আমার ধনুক আমার হস্তে নূতনীকৃত হয়।
21. লোকে আমারই বাক্য শুনিত, প্রতীক্ষা করিত, আমার পরামর্শের জন্য নীরব হইয়া থাকিত।
22. আমার কথার পরে তাহারা আর কথা বলিত না; মম বাক্য তাহাদের উপরে ফোটা ফোটা পড়িত।
23. তাহারা যেমন বৃষ্টির, তেমনি আমার প্রতীক্ষা করিত; যেন শেষ বর্ষার জন্য মুখ বিস্তার করিত।
24. আমি তাহাদের প্রতি হাসিলে তাহারা বিশ্বাস করিত না, তাহারা আমার মুখের দীপ্তি নিস্তেজ করিত না।
25. আমি তাহাদের পথ মনোনীত করিতাম, ও প্রধানের ন্যায় বসিতাম; সৈন্যদল মধ্যে যেমন রাজা, তেমনি থাকিতাম, শোকার্ত্তদের সান্ত্বনাকারীর ন্যায় থাকিতাম।