1. পরে ইয়োব উত্তর করিয়া কহিলেন,
2. অবশ্য তোমরাই লোক! প্রজা তোমাদের সহিত মরিয়া যাইবে!
3. কিন্তু তোমাদের ন্যায় আমারও বুদ্ধি আছে; তোমাদের হইতে আমি নিকৃষ্ট নহি; বাস্তবিক, এরূপ কথা কে না জানে?
4. আমি প্রতিবাসীর হাস্যাস্পদ হইয়াছি; ঈশ্বরকে ডাকিলে তিনি যাহাকে উত্তর দিতেন, সেই ধার্ম্মিক সিদ্ধ ব্যক্তি হাস্যাস্পদ হইয়াছে।
5. নিশ্চিন্ত লোকের জ্ঞানে বিপদ অবজ্ঞার বিষয়; যাহাদের পা পিছলিয়া যায়, তাহাদের জন্য তাহা প্রস্তুত।
6. দস্যুদের তাম্বু শান্তিযুক্ত, ঈশ্বরের ক্রোধজনকেরা নির্ব্বিঘ্নে থাকে, ঈশ্বর তাহাদের হস্তে ধন দেন।
7. পশুদিগকে জিজ্ঞাসা কর, তাহারা তোমাকে শিক্ষা দিবে; আকাশের পক্ষীগণকে জিজ্ঞাসা কর, তাহারা তোমাকে বলিয়া দিবে;
8. পৃথিবীকে বল, সে তোমাকে শিক্ষা দিবে, সমুদ্রের মৎস্যগণ তোমাকে বলিয়া দিবে।
9. এ সকল দেখিয়া কে না জানে যে, সদাপ্রভুরই হস্ত ইহা সম্পন্ন করিয়াছে;
10. তাঁহারই হস্তে সমস্ত জীবের প্রাণ, সমস্ত মানবজাতির আত্মা রহিয়াছে।
11. রসনা যেমন খাদ্যের আস্বাদ লয়, তেমনি কর্ণ কি কথার পরীক্ষা করে না?
12. প্রাচীনদের নিকটে প্রজ্ঞা আছে, দীর্ঘায়ু বুদ্ধিসমন্বিত।
13. তাঁহারই নিকটে প্রজ্ঞা ও পরাক্রম আছে, পরামর্শ ও বুদ্ধি তাঁহারই।
14. দেখ, তিনি ভাঙ্গিয়া ফেলিলে আর গড়া যায় না, তিনি মনুষ্যকে রুদ্ধ করিলে মুক্ত করা যায় না।
15. দেখ, তিনি জল বদ্ধ করিলে তাহা শুষ্ক হয়, জল পাঠাইলে তাহা পৃথিবীকে লণ্ডভণ্ড করে।
16. বল ও বুদ্ধিকৌশল তাঁহার, ভ্রান্ত ও ভ্রামক তাঁহার।
17. তিনি মন্ত্রিগণকে সর্ব্বস্বহীন করিয়া লইয়া যান, তিনি বিচারকর্ত্তাদিগকে অবোধ করেন,
18. তিনি রাজাদিগের কর্ত্তৃত্ববন্ধন মুক্ত করেন, তাঁহাদের কটিদেশে পটুকা বদ্ধ করেন,
19. যাজকগণকে সর্ব্বস্বহীন করিয়া লইয়া যান, দৃঢ়মূলদিগকে উন্মূলন করেন।
20. তিনি বিশ্বস্তদের কথা অন্যথা করেন, বৃদ্ধগণের বিবেচনা হরণ করেন।
21. তিনি কর্ত্তাদের উপরে তুচ্ছতা ঢালিয়া দেন, বিক্রমীদের কটিবন্ধন খুলিয়া ফেলেন।
22. তিনি অন্ধকার হইতে নিগূঢ়তত্ত্ব প্রকাশ করেন, মৃত্যুচ্ছায়াকে আলোর মধ্যে আনয়ন করেন।
23. তিনি জাতিগণকে বাড়ান, আবার বিনাশ করেন, জাতিদিগকে প্রসারিত করেন, আবার লইয়া যান।
24. তিনি পৃথিবীর জনাধ্যক্ষদের হৃদয় হরণ করেন, পথহীন মরুভূমিতে তাহাদিগকে ভ্রমণ করান।
25. তাহারা আঁধারে হাঁতড়িয়া বেড়ায়, আলো পায় না; তিনি তাহাদিগকে মত্তের ন্যায় ভ্রমণ করান।