1. যিরমিয়ের কাছে সদাপ্রভুর নিকট হইতে এই বাক্য উপস্থিত হইল,
2. তুমি উঠিয়া কুম্ভকারের বাটীতে নামিয়া যাও, সেখানে আমি তোমাকে আমার বাক্য শুনাইব।
3. তখন আমি কুম্ভকারের বাটীতে নামিয়া গেলাম, আর দেখ, সে কুলালচক্রে কর্ম্ম করিতেছিল।
4. আর সে মৃত্তিকা দিয়া যে পাত্র নির্ম্মাণ করিতেছিল, তাহা যখন কুম্ভকারের হস্তে নষ্ট হইয়া গেল, তখন সে তাহা লইয়া আর এক পাত্র নির্ম্মাণ করিল, কুম্ভকারের দৃষ্টিতে যাহা ভাল, তদনুসারেই করিল।
5. পরে সদাপ্রভুর এই বাক্য আমার কাছে উপস্থিত হইল;
6. সদাপ্রভু কহেন, হে ইস্রায়েল-কুল, তোমাদের সহিত আমি কি এই কুম্ভকারের ন্যায় ব্যবহার করিতে পারি না? হে ইস্রায়েল-কুল, দেখ, যেমন কুম্ভকারের হস্তে মৃত্তিকা, তেমনি আমার হস্তে তোমরা।
7. যখন আমি কোন জাতির কিম্বা রাজ্যের বিষয়ে উন্মূলনের, উৎপাটনের ও বিনাশের কথা বলি,
8. তখন আমি যে জাতির বিষয়ে কথা বলিয়াছি, তাহারা যদি আপন দুষ্টতা হইতে ফিরে, তবে তাহাদের যে অমঙ্গল করিতে আমার মনস্থ ছিল, তাহা হইতে আমি ক্ষান্ত হইব।
9. আর যখন আমি কোন জাতির কিম্বা রাজ্যের বিষয়ে গাঁথিয়া তুলিবার ও রোপন করিবার কথা বলি,
10. তখন তাহারা যদি আমার রব না মানিয়া আমার সাক্ষাতে কদাচরণ করে, তবে তাহাদের যে মঙ্গল করিতে আমার কথা ছিল, তাহা হইতে আমি ক্ষান্ত হইব।
11. অতএব এখন তুমি গিয়া যিহূদার লোকদিগকে ও যিরূশালেম-নিবাসিগণকে বল, সদাপ্রভু এই কথা কহেন, দেখ, আমি তোমাদের বিরুদ্ধে অমঙ্গল প্রস্তুত করিতেছি, তোমাদের বিরুদ্ধে সঙ্কল্প করিতেছি; তোমরা প্রত্যেক জন আপন আপন কুপথ হইতে ফির, আপন আপন পথ ও আপন আপন ক্রিয়া ভাল কর।
12. কিন্তু তাহারা বলে, আশা নাই, কেননা আমরা আপনাদেরই সঙ্কল্পানুসারে চলিব, প্রত্যেকে আপন আপন দুষ্ট হৃদয়ের কঠিনতা অনুসারে কর্ম্ম করিব।
13. এই জন্য সদাপ্রভু এই কথা কহেন, তোমরা এখন জাতিগণের মধ্যে জিজ্ঞাসা কর, এরূপ কথা কে শুনিয়াছে? ইস্রায়েল-কুমারী নিতান্ত রোমাঞ্চজনক কর্ম্ম করিয়াছে।
14. লিবানোনের হিম কি ক্ষেত্রস্থ শৈলকে ত্যাগ করে? কিম্বা দূর হইতে আগত সুশীতল জলস্রোত কি লুপ্ত হয়?
15. বাস্তবিক আমার প্রজাগণ আমাকে ভুলিয়া গিয়াছে, তাহারা অলীক বস্তুর উদ্দেশে ধূপ জ্বালাইতেছে, এবং ইহারা তাহাদের পথে, চিরন্তর মার্গে, তাহাদের বিঘ্ন ঘটাইয়াছে, তাহারা বিপথের, অপ্রস্তুত মার্গের, পথিক হইয়াছে।
16. ইহাতে তাহারা আপন দেশকে বিস্ময়ের ও নিত্য শিশ শব্দের বিষয় করে; যে কেহ তাহার নিকট দিয়া গমন করিবে, সে বিস্ময়াপন্ন হইয়া মাথা নাড়িবে।
17. যেমন পূর্ব্বীয় বায়ু করে, তেমনি আমি শত্রুদের সম্মুখে তাহাদিগকে ছিন্নভিন্ন করিব; তাহাদের বিপদের সময়ে তাহাদিগকে পৃষ্ঠ দেখাইব, মুখ নয়।
18. তখন তাহারা কহিল, চল, আমরা যিরমিয়ের বিরুদ্ধে পরামর্শ করি, কেননা যাজকের নিকট হইতে ব্যবস্থা, জ্ঞানবানের নিকট হইতে মন্ত্রণা ও ভাববাদীর নিকট হইতে বাক্য লুপ্ত হইবে না; চল, আমরা জিহ্বা দ্বারা উহাকে প্রহার করি, উহার কোন কথায় মনোযোগ না করি।
19. হে সদাপ্রভু, আমার প্রতি মনোযোগ কর, যাহারা আমার সঙ্গে বিবাদ করে, তাহাদের রব শুন।
20. উপকারের পরিশোধে কি অপকার করা হইবে? তাহারা ত আমার প্রাণের জন্য গর্ত্ত খনন করিয়াছে। স্মরণ কর, তাহাদের হইতে তোমার ক্রোধ ফিরাইবার চেষ্টায় আমি তাহাদের পক্ষে হিতবাক্য বলিবার জন্য তোমার সম্মুখে দাঁড়াইতাম।
21. অতএব তুমি তাহাদের সন্তানগণকে দুর্ভিক্ষে সমর্পণ কর, তাহাদিগকে খড়্গের হস্তগত কর, আর তাহাদের স্ত্রীগণ পুত্রহীনা ও বিধবা হউক, তাহাদের পুরুষেরা মারীতে বিনষ্ট ও তাহাদের যুবকগণ সংগ্রামে খড়্গহত হউক।
22. তুমি তাহাদের প্রতি অকস্মাৎ সৈন্যদল উপস্থিত করিলে তাহাদের গৃহ সকল হইতে ক্রন্দনের রব শুনা যাউক; কেননা তাহারা আমাকে ধরিবার জন্য গর্ত্ত খনন করিয়াছে, ও আমার পায়ের জন্য গোপনে ফাঁদ পাতিয়াছে।
23. আর হে সদাপ্রভু, প্রাণনাশার্থে আমার বিরুদ্ধে তাহাদের কৃত সমস্ত মন্ত্রণা তুমিই জ্ঞাত আছ; তুমি তাহাদের অপরাধ ক্ষমা করিও না, তাহাদের পাপ তোমার সম্মুখ হইতে মুছিয়া ফেলিও না; তাহারা তোমার সম্মুখে নিপাতিত হউক; তুমি আপন ক্রোধের সময়ে তাহাদের প্রতি কার্য্য কর।