1. আর যিহূদার সমস্ত লোক ষোড়শ বৎসর বয়স্ক উষিয়কে লইয়া তাঁহার পিতা অমৎসিয়ের পদে রাজা করিল।
2. রাজা [অমৎসিয়] আপন পিতৃলোকদের সহিত নিদ্রাগত হইলে পর তিনি এলৎ [নগর] গাঁথিলেন, এবং তাহা পুনর্ব্বার যিহূদার অধীন করিলেন।
3. উষিয় ষোড়শ বৎসর বয়সে রাজত্ব করিতে আরম্ভ করেন, এবং যিরূশালেমে বাহান্ন বৎসর কাল রাজত্ব করেন; তাঁহার মাতার নাম যিখলিয়া, তিনি যিরূশালেম-নিবাসিনী।
4. উষিয় আপন পিতা অমৎসিয়ের সমস্ত কার্য্যানুসারে সদাপ্রভুর সাক্ষাতে যাহা নায্য তাহা করিতেন।
5. আর ঈশ্বরীয় দর্শনে বুদ্ধিমান যে সখরিয়, তাঁহার জীবনকালে তিনি ঈশ্বরের অন্বেষণ করিতে থাকিলেন; আর যত কাল সদাপ্রভুর অন্বেষণ করিলেন, তত কাল ঈশ্বর তাঁহাকে কৃতকার্য্য করিলেন।
6. আর তিনি যাত্রা করিয়া পলেষ্টিয়দের সহিত যুদ্ধ করিলেন, এবং গাতের প্রাচীর, যব্নির প্রাচীর ও অস্দোদের প্রাচীর ভাঙ্গিয়া ফেলিলেন, এবং অস্দোদ অঞ্চলে ও পলেষ্টীয়দের মধ্যে কতকগুলি নগর নির্ম্মাণ করিলেন।
7. আর ঈশ্বর পলেষ্টীয়দের, গূরবাল-নিবাসী আরবীয়দের ও মিয়ূনীয়দের বিরুদ্ধে তাঁহার সাহায্য করিলেন।
8. আর অম্মোনীয়েরা উষিয়কে উপঢৌকন দিল, এবং তাঁহার নাম মিসরের সীমা পর্য্যন্ত ব্যাপ্ত হইল; কারণ তিনি অতিশয় শক্তিমান্ হইলেন।
9. আর উষিয় যিরূশালেমের কোণের দ্বারে, উপত্যকার দ্বারে ও প্রাচীরের কোণে উচ্চ গৃহ গাঁথিয়া দৃঢ় করিলেন।
10. আর তিনি প্রান্তরে কতকগুলি উচ্চ গৃহ নির্ম্মাণ করিলেন ও অনেক কূপ খুদিলেন, কেননা তাঁহার যথেষ্ট পশু-ধন ছিল, নিম্নদেশে ও সমভূমিতেও তাহাই করিলেন; এবং পর্ব্বতে ও উর্ব্বর ক্ষেত্র-সমূহে তাঁহার কৃষকগণ ও দ্রাক্ষাকৃষকগণ ছিল; কারণ তিনি কৃষিকর্ম্ম ভালবাসিতেন।
11. আবার উষিয়ের যুদ্ধকারী সৈন্য-সামন্ত ছিল; রাজার হনানীয় নামক এক জন সেনাপতির অধীনে যিয়ূয়েল লেখকের ও মাসের অধ্যক্ষের হস্তলিখিত সংখ্যানুসারে তাহারা দলে দলে যুদ্ধযাত্রা করিত।
12. পিতৃকুলপতি, বলবান বীর সর্ব্বশুদ্ধ দুই সহস্র ছয় শত জন ছিল।
13. আর তাহাদের অধীনে সৈন্যবল, শত্রুর বিরুদ্ধে রাজার সাহায্য করণার্থে বীরপরাক্রমে যুদ্ধকারী তিন লক্ষ সাত সহস্র পাঁচ শত লোক ছিল।
14. উষিয় সেই সকল সৈন্যের নিমিত্ত ঢাল, বড়শা, শিরস্ত্রাণ, বর্ম্ম ও ধনুক এবং ফিঙ্গার প্রস্তর প্রস্তুত করিলেন।
15. আর যিরূশালেমে তিনি শিল্পীদের কল্পনাকৃত যন্ত্র প্রস্তুত করাইয়া তদ্দ্বারা বাণ ও বড় বড় প্রস্তর নিক্ষেপ করণার্থে দুর্গ সকলের পৃষ্ঠে ও প্রাচীরের চূড়াতে তাহা স্থাপন করিলেন। আর তাঁহার নাম দূরদেশে ব্যাপ্ত হইল, কারণ তিনি আশ্চর্য্য সাহায্য প্রাপ্ত হইয়া অতীব শক্তিমান্ হইয়া উঠিলেন।
16. কিন্তু শক্তিমান্ হইলে পর তাঁহার মন উদ্ধত হইল, তিনি দুরাচরণ করিলেন, আর তিনি আপন ঈশ্বর সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে সত্যলঙ্ঘন করিলেন; কেননা তিনি ধূপবেদির উপরে ধূপ জ্বালাইতে সদাপ্রভুর মন্দিরে প্রবেশ করিলেন।
17. তাহাতে অসরিয় যাজক ও তাঁহার সহিত সদাপ্রভুর আশী জন বীর্য্যবান্ যাজক তাঁহার পশ্চাতে প্রবেশ করিলেন।
18. তাঁহারা উষিয় রাজার সম্মুখে দাঁড়াইয়া তাঁহাকে কহিলেন, হে উষিয়, সদাপ্রভুর উদ্দেশে ধূপ জ্বালাইতে আপনার অধিকার নাই, কিন্তু হারোণ-সন্তান যে যাজকেরা ধূপ জ্বালাইবার জন্য পবিত্রীকৃত হইয়াছে, তাহাদেরই অধিকার আছে; আপনি ধর্ম্মধাম হইতে বাহির হউন, কেননা আপনি সত্যলঙ্ঘন করিয়াছেন, এ বিষয়ে সদাপ্রভু ঈশ্বর হইতে আপনার গৌরব হইবে না।
19. তখন উষিয় কোপান্বিত হইলেন, আর ধূপ জ্বালাইবার জন্য তাঁহার হস্তে এক ধূনাচি ছিল; কিন্তু তিনি যাজকদের প্রতি কোপাবিষ্ট থাকিতেই সদাপ্রভুর গৃহে যাজকদের সাক্ষাতে ধূপবেদির সমীপে তাঁহার কপালে কুষ্ঠরোগ উদয় হইল।
20. তখন প্রধান যাজক অসরিয় এবং অন্য সকল যাজক তাঁহার প্রতি দৃষ্টিপাত করিলেন, আর দেখ, তাঁহার কপালে কুষ্ঠ হইয়াছে; তখন তাঁহারা তাঁহাকে বেগে তথা হইতে দূর করিয়া দিলেন, এমন কি, তিনি আপনিও বাহিরে যাইতে ত্বরান্বিত হইলেন, কেননা সদাপ্রভু তাঁহাকে আঘাত করিয়াছিলেন।
21. আর উষিয় রাজা মরণ দিন পর্য্যন্ত কুষ্ঠরোগী হইয়া রহিলেন; কুষ্ঠী হওয়াতে তিনি স্বতন্ত্র গৃহে বাস করিলেন, কেননা তিনি সদাপ্রভুর গৃহ হইতে বিচ্ছিন্ন হইয়াছিলেন; তাহাতে তাঁহার পুত্র যোথম রাজবাটীর কর্ত্তা হইয়া দেশের লোকদের শাসন করিতে লাগিলেন।
22. উষিয়ের অবশিষ্ট কর্ম্মের বৃত্তান্ত আদ্যোপান্ত আমোসের পুত্র যিশাইয় ভাববাদী লিখিয়াছেন।
23. পরে উষিয় আপন পিতৃলোকদের সহিত নিদ্রাগত হইলে লোকেরা তাঁহার পিতৃলোকদের সহিত রাজাদের কবর-স্থানের ক্ষেত্রে তাঁহার কবর দিল, কারণ তাহারা কহিল, তিনি কুষ্ঠী। পরে তাঁহার পুত্র যোথম তাঁহার পদে রাজা হইলেন।