1. আর তৃতীয় দিবসে গালীলের কান্না নগরে এক বিবাহ হইল, এবং যীশুর মাতা সেখানে ছিলেন;
2. আর সেই বিবাহে যীশুর ও তাঁহার শিষ্যগণেরও নিমন্ত্রণ হইয়াছিল।
3. পরে দ্রাক্ষারসের অকুলান হইলে যীশুর মাতা তাঁহাকে কহিলেন, উহাদের দ্রাক্ষারস নাই।
4. যীশু তাঁহাকে বলিলেন, হে নারি, আমার সঙ্গে তোমার বিষয় কি? আমার সময় এখনও উপস্থিত হয় নাই।
5. তাঁহার মাতা পরিচারকদিগকে কহিলেন, ইনি তোমাদিগকে যাহা কিছু বলেন, তাহাই কর।
6. সেখানে যিহূদীদের শুচীকরণ রীতি অনুসারে পাথরের ছয়টা জালা বসান ছিল, তাহার এক একটাতে দুই তিন মণ করিয়া জল ধরিত।
7. যীশু তাহাদিগকে বলিলেন, ঐ সকল জালায় জল পূর। তাহারা সেগুলি কাণায় কাণায় পূর্ণ করিল।
8. পরে তিনি তাহাদিগকে বলিলেন, এখন উহা হইতে কিছু তুলিয়া ভোজাধ্যক্ষের নিকটে লইয়া যাও। তাহারা লইয়া গেল।
9. ভোজাধ্যক্ষ যখন সেই জল, যাহা দ্রাক্ষারস হইয়া গিয়াছিল, আস্বাদন করিলেন, আর তাহা কোথা হইতে আসিল, তাহা জানিতেন না—কিন্তু যে পরিচারকেরা জল তুলিয়াছিল, তাহারা জানিত—তখন ভোজাধ্যক্ষ বরকে ডাকিয়া কহিলেন,
10. সকল লোকেই প্রথমে উত্তম দ্রাক্ষারস পরিবেষণ করে, এবং যথেষ্ট পান করা হইলে পর তাহা অপেক্ষা কিছু মন্দ পরিবেষণ করে; তুমি উত্তম দ্রাক্ষারস এখন পর্য্যন্ত রাখিয়াছ।
11. এইরূপে যীশু গালীলের কান্নাতে এই প্রথম চিহ্নকার্য্য সাধন করিলেন, নিজ মহিমা প্রকাশ করিলেন; আর তাঁহার শিষ্যেরা তাঁহাতে বিশ্বাস করিলেন।
12. পরে তিনি, তাঁহার মাতা ও ভ্রাতৃগণ এবং তাঁহার শিষ্যগণ কফরনাহূমে নামিয়া গেলেন, আর সেখানে বেশী দিন থাকিলেন না।
13. তখন যিহূদীদের নিস্তারপর্ব্ব সন্নিকট ছিল, আর যীশু যিরূশালেমে গেলেন।
14. পরে তিনি ধর্ম্মধামের মধ্যে দেখিলেন, লোকে গো, মেষ ও কপোত বিক্রয় করিতেছে, এবং পোদ্দারেরা বসিয়া আছে;
15. তখন তৃণ দ্বারা এক গাছা কশা প্রস্তুত করিয়া গো, মেষ সমস্তই ধর্ম্মধাম হইতে বাহির করিয়া দিলেন, এবং পোদ্দারদের মুদ্রা ছড়াইয়া ও মেজ উল্টাইয়া ফেলিলেন;
16. আর যাহারা কপোত বিক্রয় করিতেছিল, তাহাদিগকে কহিলেন, এ স্থান হইতে এ সকল লইয়া যাও; আমার পিতার গৃহকে বাণিজ্যের গৃহ করিও না।
17. তাঁহার শিষ্যগণের মনে পড়িল যে, লেখা আছে, “তোমার গৃহনিমিত্তক উদ্যোগ আমাকে গ্রাস করিবে।”
18. তখন যিহূদীরা উত্তর করিয়া তাঁহাকে কহিল, তুমি আমাদিগকে কি চিহ্ন দেখাইতেছ যে এই সকল করিতেছ?
19. যীশু উত্তর করিয়া তাহাদিগকে কহিলেন, তোমরা এই মন্দির ভাঙ্গিয়া ফেল, আমি তিন দিনের মধ্যে ইহা উঠাইব।
20. তখন যিহূদীরা কহিল, এই মন্দির নির্ম্মাণ করিতে ছেচল্লিশ বৎসর লাগিয়াছে; তুমি কি তিন দিনের মধ্যে ইহা উঠাইবে?
21. কিন্তু তিনি আপন দেহরূপ মন্দিরের বিষয় বলিতেছিলেন।
22. অতএব যখন তিনি মৃতগণের মধ্য হইতে উঠিলেন, তখন তাঁহার শিষ্যদিগের মনে পড়িল যে, তিনি এই কথা বলিয়াছিলেন; আর তাঁহারা শাস্ত্রে এবং যীশুর কথিত বাক্যে বিশ্বাস করিলেন।
23. তিনি নিস্তারপর্ব্বের সময়ে যখন যিরূশালেমে ছিলেন, তখন যে সকল চিহ্ন-কার্য্য সাধন করিলেন, তাহা দেখিয়া অনেকে তাঁহার নামে বিশ্বাস করিল।
24. কিন্তু যীশু আপনি তাহাদের উপরে আপনার সম্বন্ধে বিশ্বাস করিলেন না, কারণ তিনি সকলকে জানিতেন,
25. এবং কেহ যে মনুষ্যের বিষয়ে সাক্ষ্য দেয়, ইহাতে তাঁহার প্রয়োজন ছিল না; কেননা মনুষ্যের অন্তরে কি আছে, তাহা তিনি আপনি জানিতেন।