পবিত্র বাইবেল

গডস গ্রেইস গিফট
ইসাইয়া
1. ধার্ম্মিক বিনষ্ট হইতেছে, কিন্তু কেহ সে বিষয়ে মনোযোগ করে না; সাধু মনুষ্যগণকে চয়ন করা যাইতেছে, কিন্তু কেহ বিবেচনা করে না যে, বিপদের সম্মুখ হইতে ধার্ম্মিককে চয়ন করা যাইতেছে।
2. সে শান্তিতে প্রবেশ করে; সরলপথ-গামীরা প্রত্যেকে আপন আপন শয্যার উপরে বিশ্রাম করে।
3. কিন্তু, হে গণিকার পুত্রগণ, পরদারিকের ও বেশ্যার বংশ, তোমরা নিকটবর্ত্তী হইয়া এখানে আইস।
4. তোমরা কাহাকে উপহাস কর? কাহাকে দেখিয়া মুখ বক্র ও জিহ্বা বাহির কর? তোমরা কি অধর্ম্মের সন্তান ও মিথ্যাকথার বংশ নও?
5. তোমরা এলা বৃক্ষগণের মধ্যে সমুদয় হরিৎপর্ণ বৃক্ষের তলে [দেবকামে] জ্বলিয়া থাক, তোমরা নানা উপত্যকায় ও শৈল-দরীর তলে আপন আপন বালকগণকে বধ করিয়া থাক।
6. উপত্যকার চিক্কণ প্রস্তর সকলের মধ্যে তোমার অংশ, সেইগুলিই তোমার অধিকার; তাহাদেরই উদ্দেশে তুমি পানীয় দ্রব্য ঢালিয়াছ, নৈবেদ্য উৎসর্গ করিয়াছ।
7. এই সকলেতে আমি কি ক্ষান্ত হইব? তুমি উর্চ্চ ও তুঙ্গ পর্ব্বতের উপরে তোমার শয্যা পাতিয়াছ; সেই স্থানেও তুমি বলিদান করিতে উঠিয়াছিলে;
8. আর তোমার স্মৃতিস্তম্ভ কবাটের ও চৌকাঠের পশ্চাতে রাখিয়াছ; কেননা তুমি আমাকে ছাড়িয়া আর এক জনকে পাইয়া বস্ত্র খুলিয়া খাটে উঠিয়াছ, আপন শয্যা বৃদ্ধি করিয়া উহাদের সহিত নিয়ম করিয়াছ, উহাদের শয্যা দেখিয়া তাহা ভালবাসিয়াছ।
9. আর তুমি তৈল মাখিয়া রাজার নিকটে গমন করিয়াছিলে, প্রচুর সুগন্ধিদ্রব্য ব্যবহার করিয়াছিলে, দূরদেশে আপন দূতগণকে প্রেরণ করিয়াছিলে, এবং পাতাল পর্য্যন্ত আপনাকে অবনত করিয়াছিলে।
10. তোমার যাতায়াতের আধিক্য প্রযুক্ত পথশ্রান্তা হইয়াছিলে, তথাপি ‘আশা নাই’ ইহা বল নাই; তোমার হস্তের নাড়ী টের পাইয়াছ, এজন্য তুমি ক্লান্তা হও নাই।
11. বল দেখি, কাহা হইতে এমন ত্রাসযুক্তা ও ভীতা হইয়াছ যে, মিথ্যা কথা বলিতেছ, এবং আমাকে ভুলিয়া গিয়াছ, মনে স্থান দেও নাই? আমি কি চিরকালাবধি নীরব রহি নাই, তাই বুঝি আমাকে ভয় কর না?
12. আমি তোমার ধার্ম্মিকতার তত্ত্ব দেখাইব! আর তোমার কার্য্য সকল! সে সকল তোমার উপকারী হইবে না।
13. তুমি যখন ক্রন্দন কর, তখন তোমার সঞ্চিত [পুত্তলিগণ] তোমাকে উদ্ধার করুক। কিন্তু বায়ু তাহাদিগকে উড়াইয়া লইবে, একটী নিঃশ্বাস সে সকলকে লইয়া যাইবে; কিন্তু যে ব্যক্তি আমার শরণাপন্ন সে দেশাধিকার পাইবে, ও আমার পবিত্র পর্ব্বত অধিকার করিবে।
14. আর বলা হইবে, উচ্চ কর, উচ্চ কর, পথ পরিষ্কার কর, আমার প্রজাগণের পথ হইতে বিঘ্ন দূর কর।
15. কেননা যিনি উচ্চ ও উন্নত, যিনি অনন্তকালনিবাসী, যাঁহার নাম “পবিত্র”, তিনি এই কথা কহেন, আমি ঊর্দ্ধলোকে ও পবিত্র স্থানে বাস করি, চূর্ণ ও নম্রাত্মা মনুষ্যের সঙ্গেও বাস করি, যেন নম্রদিগের আত্মাকে সঞ্জীবিত করি ও চূর্ণ লোকদের হৃদয়কে সঞ্জীবিত করি।
16. কারণ আমি নিত্য বিবাদ করিব না, সর্ব্বদা ক্রোধ করিব না; করিলে আত্মা, এবং আমার নির্ম্মিত প্রাণী সকল, আমার সম্মুখে মূর্চ্ছাপন্ন হইবে।
17. তাহার লোভরূপ অপরাধে আমি ক্রুদ্ধ হইলাম ও তাহাকে আঘাত করিলাম, আপন [মুখ] লুকাইয়া ক্রোধ করিলাম, তথাপি সে বিমুখ হইয়া আপন মনের মত পথে চলিল।
18. আমি তাহার পথ সকল দেখিয়াছি, আর তাহাকে সুস্থ করিব; আমি তাহার পথপ্রদর্শকও হইব, এবং তাহাকে ও তাহার শোকাকুলদিগকে সান্ত্বনারূপ ধন দিব।
19. আমি ওষ্ঠাধরের ফল সৃষ্টি করি; শান্তি নিকটবর্ত্তী ও দূরবর্ত্তী উভয়েরই শান্তি, ইহা সদাপ্রভু কহেন; হাঁ, আমি তাহাকে সুস্থ করিব!
20. কিন্তু দুষ্টগণ আলোড়িত সমুদ্রের তুল্য, তাহা ত স্থির হইতে পারে না, ও তাহার জলে পঙ্ক ও কর্দ্দম উঠে।
21. আমার ঈশ্বর কহেন, দুষ্ট লোকদের কিছুই শান্তি নাই।

Notes

No Verse Added

Total 66 Chapters, Current Chapter 57 of Total Chapters 66
ইসাইয়া 57:5
1. ধার্ম্মিক বিনষ্ট হইতেছে, কিন্তু কেহ সে বিষয়ে মনোযোগ করে না; সাধু মনুষ্যগণকে চয়ন করা যাইতেছে, কিন্তু কেহ বিবেচনা করে না যে, বিপদের সম্মুখ হইতে ধার্ম্মিককে চয়ন করা যাইতেছে।
2. সে শান্তিতে প্রবেশ করে; সরলপথ-গামীরা প্রত্যেকে আপন আপন শয্যার উপরে বিশ্রাম করে।
3. কিন্তু, হে গণিকার পুত্রগণ, পরদারিকের বেশ্যার বংশ, তোমরা নিকটবর্ত্তী হইয়া এখানে আইস।
4. তোমরা কাহাকে উপহাস কর? কাহাকে দেখিয়া মুখ বক্র জিহ্বা বাহির কর? তোমরা কি অধর্ম্মের সন্তান মিথ্যাকথার বংশ নও?
5. তোমরা এলা বৃক্ষগণের মধ্যে সমুদয় হরিৎপর্ণ বৃক্ষের তলে দেবকামে জ্বলিয়া থাক, তোমরা নানা উপত্যকায় শৈল-দরীর তলে আপন আপন বালকগণকে বধ করিয়া থাক।
6. উপত্যকার চিক্কণ প্রস্তর সকলের মধ্যে তোমার অংশ, সেইগুলিই তোমার অধিকার; তাহাদেরই উদ্দেশে তুমি পানীয় দ্রব্য ঢালিয়াছ, নৈবেদ্য উৎসর্গ করিয়াছ।
7. এই সকলেতে আমি কি ক্ষান্ত হইব? তুমি উর্চ্চ তুঙ্গ পর্ব্বতের উপরে তোমার শয্যা পাতিয়াছ; সেই স্থানেও তুমি বলিদান করিতে উঠিয়াছিলে;
8. আর তোমার স্মৃতিস্তম্ভ কবাটের চৌকাঠের পশ্চাতে রাখিয়াছ; কেননা তুমি আমাকে ছাড়িয়া আর এক জনকে পাইয়া বস্ত্র খুলিয়া খাটে উঠিয়াছ, আপন শয্যা বৃদ্ধি করিয়া উহাদের সহিত নিয়ম করিয়াছ, উহাদের শয্যা দেখিয়া তাহা ভালবাসিয়াছ।
9. আর তুমি তৈল মাখিয়া রাজার নিকটে গমন করিয়াছিলে, প্রচুর সুগন্ধিদ্রব্য ব্যবহার করিয়াছিলে, দূরদেশে আপন দূতগণকে প্রেরণ করিয়াছিলে, এবং পাতাল পর্য্যন্ত আপনাকে অবনত করিয়াছিলে।
10. তোমার যাতায়াতের আধিক্য প্রযুক্ত পথশ্রান্তা হইয়াছিলে, তথাপি ‘আশা নাই’ ইহা বল নাই; তোমার হস্তের নাড়ী টের পাইয়াছ, এজন্য তুমি ক্লান্তা হও নাই।
11. বল দেখি, কাহা হইতে এমন ত্রাসযুক্তা ভীতা হইয়াছ যে, মিথ্যা কথা বলিতেছ, এবং আমাকে ভুলিয়া গিয়াছ, মনে স্থান দেও নাই? আমি কি চিরকালাবধি নীরব রহি নাই, তাই বুঝি আমাকে ভয় কর না?
12. আমি তোমার ধার্ম্মিকতার তত্ত্ব দেখাইব! আর তোমার কার্য্য সকল! সে সকল তোমার উপকারী হইবে না।
13. তুমি যখন ক্রন্দন কর, তখন তোমার সঞ্চিত পুত্তলিগণ তোমাকে উদ্ধার করুক। কিন্তু বায়ু তাহাদিগকে উড়াইয়া লইবে, একটী নিঃশ্বাস সে সকলকে লইয়া যাইবে; কিন্তু যে ব্যক্তি আমার শরণাপন্ন সে দেশাধিকার পাইবে, আমার পবিত্র পর্ব্বত অধিকার করিবে।
14. আর বলা হইবে, উচ্চ কর, উচ্চ কর, পথ পরিষ্কার কর, আমার প্রজাগণের পথ হইতে বিঘ্ন দূর কর।
15. কেননা যিনি উচ্চ উন্নত, যিনি অনন্তকালনিবাসী, যাঁহার নাম “পবিত্র”, তিনি এই কথা কহেন, আমি ঊর্দ্ধলোকে পবিত্র স্থানে বাস করি, চূর্ণ নম্রাত্মা মনুষ্যের সঙ্গেও বাস করি, যেন নম্রদিগের আত্মাকে সঞ্জীবিত করি চূর্ণ লোকদের হৃদয়কে সঞ্জীবিত করি।
16. কারণ আমি নিত্য বিবাদ করিব না, সর্ব্বদা ক্রোধ করিব না; করিলে আত্মা, এবং আমার নির্ম্মিত প্রাণী সকল, আমার সম্মুখে মূর্চ্ছাপন্ন হইবে।
17. তাহার লোভরূপ অপরাধে আমি ক্রুদ্ধ হইলাম তাহাকে আঘাত করিলাম, আপন মুখ লুকাইয়া ক্রোধ করিলাম, তথাপি সে বিমুখ হইয়া আপন মনের মত পথে চলিল।
18. আমি তাহার পথ সকল দেখিয়াছি, আর তাহাকে সুস্থ করিব; আমি তাহার পথপ্রদর্শকও হইব, এবং তাহাকে তাহার শোকাকুলদিগকে সান্ত্বনারূপ ধন দিব।
19. আমি ওষ্ঠাধরের ফল সৃষ্টি করি; শান্তি নিকটবর্ত্তী দূরবর্ত্তী উভয়েরই শান্তি, ইহা সদাপ্রভু কহেন; হাঁ, আমি তাহাকে সুস্থ করিব!
20. কিন্তু দুষ্টগণ আলোড়িত সমুদ্রের তুল্য, তাহা স্থির হইতে পারে না, তাহার জলে পঙ্ক কর্দ্দম উঠে।
21. আমার ঈশ্বর কহেন, দুষ্ট লোকদের কিছুই শান্তি নাই।
Total 66 Chapters, Current Chapter 57 of Total Chapters 66
×

Alert

×

bengali Letters Keypad References