পবিত্র বাইবেল

গডস গ্রেইস গিফট
এজেকিয়েল
1. যষ্ঠ বৎসরের ষষ্ঠ মাসে, মাসের পঞ্চম দিনে আমি আপন গৃহে উপবিষ্ট ছিলাম, এবং যিহূদার প্রাচীনবর্গ আমার সম্মুখে উপবিষ্ট ছিল, এমন সময়ে প্রভু সদাপ্রভু সেই স্থানে আমার উপরে হস্তার্পণ করিলেন।
2. তাহাতে আমি দৃষ্টিপাত করিলাম, আর দেখ, অগ্নির আকারের ন্যায় এক মূর্ত্তি; তাঁহার কটির আকৃতি অবধি নীচের দিকে অগ্নিময়, এবং কটি অবধি উপরের দিকে যেন জ্যোতির আকৃতি ও প্রতপ্ত ধাতুর প্রভা।
3. তিনি এক হস্তমূর্ত্তি বিস্তার করিয়া আমার মস্তকের কেশগুচ্ছ ধরিলেন, তাহাতে আত্মা আমাকে তুলিয়া পৃথিবী ও আকাশের মধ্যপথে লইয়া গেলেন, এবং ঈশ্বরীয় দর্শনক্রমে যিরূশালেমে উত্তরাভিমুখ ভিতর-দ্বারের প্রবেশ-স্থানে বসাইলেন; সেই স্থানে অন্তর্জ্বালা-জনক অন্তর্জ্বালার প্রতিমা স্থাপিত ছিল।
4. আর দেখ, সমস্থলীতে যে দৃশ্য আমি দেখিয়াছিলাম সে স্থানে ইস্রায়েলের ঈশ্বরের সেইরূপ প্রতাপ রহিয়াছে।
5. তিনি আমাকে কহিলেন, হে মনুষ্য-সন্তান, তুমি চক্ষু তুলিয়া উত্তরদিকে দৃষ্টি কর; তাহাতে আমি উত্তরদিকে চক্ষু তুলিলাম, আর দেখ যজ্ঞবেদির দ্বারের উত্তরে, প্রবেশ-স্থানে ঐ অন্তর্জ্বালার প্রতিমা রহিয়াছে।
6. আর তিনি আমাকে কহিলেন, হে মনুষ্য-সন্তান, ইহারা কি করে, তুমি কি দেখিতেছ? ইস্রায়েল-কুল আমার ধর্ম্মধাম হইতে আমাকে দূর করণার্থে এখানে অধিক ঘৃণার্হ কার্য্য করিতেছে। কিন্তু ইহার পরেও তুমি আবার কত অধিক ঘৃণার্হ কার্য্য দেখিবে।
7. তখন তিনি আমাকে প্রাঙ্গণের দ্বারে আনিলেন, এবং আমি দৃষ্টিপাত করিলাম, আর দেখ, ভিত্তির মধ্যে এক ছিদ্র।
8. তখন তিনি আমাকে কহিলেন, হে মনুষ্যসন্তান, এই ভিত্তি খুদ; যখন আমি সেই ভিত্তি খুদিলাম, দেখ, একটী দ্বার।
9. তিনি আমাকে কহিলেন, তুমি ভিতরে গিয়া দেখ, তাহারা এখানে কি কি ঘৃণার্হ কার্য্য করিতেছে।
10. তাহাতে আমি ভিতরে গিয়া দৃষ্টিপাত করিলাম, আর দেখ, সর্ব্বপ্রকার সরীসৃপের ও ঘৃণ্য পশুর আকৃতি, এবং ইস্রায়েল-কুলের সমস্ত পুত্তলি চারিদিকে ভিত্তির গাত্রে চিত্রিত রহিয়াছে;
11. আর তাহাদের সম্মুখে ইস্রায়েল কুলের প্রাচীনবর্গের সত্তর জন পুরুষ দণ্ডায়মান, এবং তাহাদের মধ্যস্থানে শাফনের পুত্র যাসনিয় দণ্ডায়মান, আর প্রত্যেকের হস্তে এক এক ধূনাচি; আর ধূপমেঘের সৌরভ ঊর্দ্ধে উঠিতেছে।
12. তখন তিনি আমাকে কহিলেন, হে মনুষ্য-সন্তান, ইস্রায়েল-কুলের প্রাচীন-বর্গ অন্ধকারে, প্রত্যেকে আপন আপন ঠাকুরঘরে, কি কি কার্য্য করে, তাহা কি তুমি দেখিলে? কারণ তাহারা বলে, সদাপ্রভু আমাদিগকে দেখিতে পান না, সদাপ্রভু দেশ ত্যাগ করিয়াছেন।
13. তিনি আমাকে আরও কহিলেন, ইহার পরেও তুমি আবার তাহাদের কৃত কত অধিক ঘৃণার্হ কার্য্য দেখিবে।
14. পরে তিনি সদাপ্রভুর গৃহের উত্তর দিকের দ্বারের প্রবেশ-স্থানে আমাকে আনিলেন; আর দেখ, সেখানে স্ত্রীলোকেরা বসিয়া তম্মুষ [দেবের] জন্য রোদন করিতেছে।
15. তখন তিনি আমাকে বলিলেন, হে মনুষ্য-সন্তান, তুমি কি ইহা দেখিলে? ইহার পরেও তুমি আবার এই সকল অপেক্ষা কত অধিক ঘৃণার্হ কার্য্য দেখিবে।
16. পরে তিনি আমাকে সদাপ্রভুর গৃহের ভিতর-প্রাঙ্গণে আনিলেন, আর দেখ, সদাপ্রভুর মন্দিরের প্রবেশ-স্থানে, বারাণ্ডার ও যজ্ঞবেদির মধ্যস্থানে, অনুমান পঁচিশ জন পুরুষ, তাহারা সদাপ্রভুর মন্দিরের দিকে পৃষ্ঠ ও পূর্ব্বদিকে মুখ ফিরাইয়া পূর্ব্বমুখে সূর্য্যের কাছে প্রণিপাত করিতেছে।
17. তখন তিনি আমাকে বলিলেন, হে মনুষ্য-সন্তান তুমি কি ইহা দেখিলে? এখানে যিহূদা-কুল যে সকল ঘৃণার্হ কার্য্য করিতেছে, তাহাদের পক্ষে কি তাহা করা লঘু বিষয়? কারণ তাহারা দেশকে দৌরাত্ম্যে পরিপূর্ণ করিয়াছে; এবং আবার ফিরিয়া আমাকে বিরক্ত করিয়াছে; আর দেখ, তাহারা আপন আপন নাসিকায় পল্লব দিতেছে।
18. অতএব আমিও কোপাবেশে কার্য্য করিব, চক্ষুলজ্জা করিব না, দয়াও করিব না; তাহারা যদ্যপি আমার কর্ণগোচরে উচ্চৈঃস্বরে চেঁচায়, তথাপি তাহাদের কথা শুনিব না।

Notes

No Verse Added

Total 48 Chapters, Current Chapter 8 of Total Chapters 48
এজেকিয়েল 8
1. যষ্ঠ বৎসরের ষষ্ঠ মাসে, মাসের পঞ্চম দিনে আমি আপন গৃহে উপবিষ্ট ছিলাম, এবং যিহূদার প্রাচীনবর্গ আমার সম্মুখে উপবিষ্ট ছিল, এমন সময়ে প্রভু সদাপ্রভু সেই স্থানে আমার উপরে হস্তার্পণ করিলেন।
2. তাহাতে আমি দৃষ্টিপাত করিলাম, আর দেখ, অগ্নির আকারের ন্যায় এক মূর্ত্তি; তাঁহার কটির আকৃতি অবধি নীচের দিকে অগ্নিময়, এবং কটি অবধি উপরের দিকে যেন জ্যোতির আকৃতি প্রতপ্ত ধাতুর প্রভা।
3. তিনি এক হস্তমূর্ত্তি বিস্তার করিয়া আমার মস্তকের কেশগুচ্ছ ধরিলেন, তাহাতে আত্মা আমাকে তুলিয়া পৃথিবী আকাশের মধ্যপথে লইয়া গেলেন, এবং ঈশ্বরীয় দর্শনক্রমে যিরূশালেমে উত্তরাভিমুখ ভিতর-দ্বারের প্রবেশ-স্থানে বসাইলেন; সেই স্থানে অন্তর্জ্বালা-জনক অন্তর্জ্বালার প্রতিমা স্থাপিত ছিল।
4. আর দেখ, সমস্থলীতে যে দৃশ্য আমি দেখিয়াছিলাম সে স্থানে ইস্রায়েলের ঈশ্বরের সেইরূপ প্রতাপ রহিয়াছে।
5. তিনি আমাকে কহিলেন, হে মনুষ্য-সন্তান, তুমি চক্ষু তুলিয়া উত্তরদিকে দৃষ্টি কর; তাহাতে আমি উত্তরদিকে চক্ষু তুলিলাম, আর দেখ যজ্ঞবেদির দ্বারের উত্তরে, প্রবেশ-স্থানে অন্তর্জ্বালার প্রতিমা রহিয়াছে।
6. আর তিনি আমাকে কহিলেন, হে মনুষ্য-সন্তান, ইহারা কি করে, তুমি কি দেখিতেছ? ইস্রায়েল-কুল আমার ধর্ম্মধাম হইতে আমাকে দূর করণার্থে এখানে অধিক ঘৃণার্হ কার্য্য করিতেছে। কিন্তু ইহার পরেও তুমি আবার কত অধিক ঘৃণার্হ কার্য্য দেখিবে।
7. তখন তিনি আমাকে প্রাঙ্গণের দ্বারে আনিলেন, এবং আমি দৃষ্টিপাত করিলাম, আর দেখ, ভিত্তির মধ্যে এক ছিদ্র।
8. তখন তিনি আমাকে কহিলেন, হে মনুষ্যসন্তান, এই ভিত্তি খুদ; যখন আমি সেই ভিত্তি খুদিলাম, দেখ, একটী দ্বার।
9. তিনি আমাকে কহিলেন, তুমি ভিতরে গিয়া দেখ, তাহারা এখানে কি কি ঘৃণার্হ কার্য্য করিতেছে।
10. তাহাতে আমি ভিতরে গিয়া দৃষ্টিপাত করিলাম, আর দেখ, সর্ব্বপ্রকার সরীসৃপের ঘৃণ্য পশুর আকৃতি, এবং ইস্রায়েল-কুলের সমস্ত পুত্তলি চারিদিকে ভিত্তির গাত্রে চিত্রিত রহিয়াছে;
11. আর তাহাদের সম্মুখে ইস্রায়েল কুলের প্রাচীনবর্গের সত্তর জন পুরুষ দণ্ডায়মান, এবং তাহাদের মধ্যস্থানে শাফনের পুত্র যাসনিয় দণ্ডায়মান, আর প্রত্যেকের হস্তে এক এক ধূনাচি; আর ধূপমেঘের সৌরভ ঊর্দ্ধে উঠিতেছে।
12. তখন তিনি আমাকে কহিলেন, হে মনুষ্য-সন্তান, ইস্রায়েল-কুলের প্রাচীন-বর্গ অন্ধকারে, প্রত্যেকে আপন আপন ঠাকুরঘরে, কি কি কার্য্য করে, তাহা কি তুমি দেখিলে? কারণ তাহারা বলে, সদাপ্রভু আমাদিগকে দেখিতে পান না, সদাপ্রভু দেশ ত্যাগ করিয়াছেন।
13. তিনি আমাকে আরও কহিলেন, ইহার পরেও তুমি আবার তাহাদের কৃত কত অধিক ঘৃণার্হ কার্য্য দেখিবে।
14. পরে তিনি সদাপ্রভুর গৃহের উত্তর দিকের দ্বারের প্রবেশ-স্থানে আমাকে আনিলেন; আর দেখ, সেখানে স্ত্রীলোকেরা বসিয়া তম্মুষ দেবের জন্য রোদন করিতেছে।
15. তখন তিনি আমাকে বলিলেন, হে মনুষ্য-সন্তান, তুমি কি ইহা দেখিলে? ইহার পরেও তুমি আবার এই সকল অপেক্ষা কত অধিক ঘৃণার্হ কার্য্য দেখিবে।
16. পরে তিনি আমাকে সদাপ্রভুর গৃহের ভিতর-প্রাঙ্গণে আনিলেন, আর দেখ, সদাপ্রভুর মন্দিরের প্রবেশ-স্থানে, বারাণ্ডার যজ্ঞবেদির মধ্যস্থানে, অনুমান পঁচিশ জন পুরুষ, তাহারা সদাপ্রভুর মন্দিরের দিকে পৃষ্ঠ পূর্ব্বদিকে মুখ ফিরাইয়া পূর্ব্বমুখে সূর্য্যের কাছে প্রণিপাত করিতেছে।
17. তখন তিনি আমাকে বলিলেন, হে মনুষ্য-সন্তান তুমি কি ইহা দেখিলে? এখানে যিহূদা-কুল যে সকল ঘৃণার্হ কার্য্য করিতেছে, তাহাদের পক্ষে কি তাহা করা লঘু বিষয়? কারণ তাহারা দেশকে দৌরাত্ম্যে পরিপূর্ণ করিয়াছে; এবং আবার ফিরিয়া আমাকে বিরক্ত করিয়াছে; আর দেখ, তাহারা আপন আপন নাসিকায় পল্লব দিতেছে।
18. অতএব আমিও কোপাবেশে কার্য্য করিব, চক্ষুলজ্জা করিব না, দয়াও করিব না; তাহারা যদ্যপি আমার কর্ণগোচরে উচ্চৈঃস্বরে চেঁচায়, তথাপি তাহাদের কথা শুনিব না।
Total 48 Chapters, Current Chapter 8 of Total Chapters 48
×

Alert

×

bengali Letters Keypad References