পবিত্র বাইবেল

গডস গ্রেইস গিফট
গালাতীয়
1. হে অবোধ গালাতীয়েরা, কে তোমাদিগকে মুগ্ধ করিল? তোমাদেরই চক্ষের সম্মুখে যীশু খ্রীষ্ট ত ক্রুশারোপিত বলিয়া স্পষ্টাক্ষরে লিখিত হইয়াছিলেন।
2. কেবল এই কথা তোমাদের কাছে জানিতে চাহি, তোমরা কি ব্যবস্থার কার্য্য হেতু আত্মাকে পাইয়াছ? না বিশ্বাসের বার্ত্তা শ্রবণ হেতু?
3. তোমরা কি এমন অবোধ? আত্মাতে আরম্ভ করিয়া এখন কি মাংসে সমাপ্ত করিতেছ?
4. তোমরা এত দুঃখ কি বৃথাই ভোগ করিয়াছ—যদি বাস্তবিক বৃথা হইয়া থাকে?
5. বল দেখি, যিনি তোমাদিগকে আত্মা যোগাইয়া দেন ও তোমাদের মধ্যে পরাক্রম-কার্য্য সাধন করেন, তিনি কি ব্যবস্থার কার্য্য হেতু তাহা করেন? না বিশ্বাসের বার্ত্তা শ্রবণ হেতু?
6. যেমন অব্রাহাম “ঈশ্বরে বিশ্বাস করিলেন, আর তাহাই তাঁহার পক্ষে ধার্ম্মিকতা বলিয়া গণিত হইল।”
7. অতএব জানিও, যাহারা বিশ্বাসাবলম্বী, তাহারাই অব্রাহামের সন্তান।
8. আর বিশ্বাস হেতু ঈশ্বর পরজাতিদিগকে ধার্ম্মিক গণনা করেন, শাস্ত্র ইহা অগ্রে দেখিয়া অব্রাহামের কাছে আগেই সুসমাচার প্রচার করিয়াছিল, যথা, “তোমাতে সমস্ত জাতি আশীর্ব্বাদ প্রাপ্ত হইবে”।
9. অতএব যাহারা বিশ্বাসাবলম্বী, তাহারা বিশ্বাসী অব্রাহামের সহিত আশীর্ব্বাদ প্রাপ্ত হয়।
10. বাস্তবিক যাহারা ব্যবস্থার ক্রিয়াবলম্বী, তাহারা সকলে শাপের অধীন, কারণ লেখা আছে, “যে কেহ ব্যবস্থাগ্রন্থে লিখিত সমস্ত কথা পালন করিবার জন্য তাহাতে স্থির না থাকে, সে শাপগ্রস্ত”।
11. কিন্তু ব্যবস্থার দ্বারা কেহই ঈশ্বরের সাক্ষাতে ধার্ম্মিক গণিত হয় না, ইহা সুস্পষ্ট, কারণ “ধার্ম্মিক ব্যক্তি বিশ্বাস হেতু বাঁচিবে”।
12. কিন্তু ব্যবস্থা বিশ্বাসমূলক নয়, বরং “যে কেহ এই সকল পালন করে, সেই তাহাতে বাঁচিবে”।
13. খ্রীষ্টই মূল্য দিয়া আমাদিগকে ব্যবস্থার শাপ হইতে মুক্ত করিয়াছেন, কারণ তিনি আমাদের নিমিত্তে শাপস্বরূপ হইলেন; কেননা লেখা আছে, “যে কেহ গাছে টাঙ্গান যায়, সে শাপগ্রস্ত”;
14. যেন অব্রাহামের প্রাপ্ত আশীর্ব্বাদ খ্রীষ্ট যীশুতে পরজাতিগণের প্রতি বর্ত্তে, আমরা যেন বিশ্বাস দ্বারা অঙ্গীকৃত আত্মাকে প্রাপ্ত হই।
15. হে ভ্রাতৃগণ, আমি মনুষ্যের মত বলিতেছি। মনুষ্যের নিয়মপত্র হইলেও তাহা যখন স্থিরীকৃত হয়, তখন কেহ তাহা বিফল করে না, কিম্বা তাহাতে নূতন কথা যোগ করে না।
16. ভাল, অব্রাহামের প্রতি ও তাঁহার বংশের প্রতি প্রতিজ্ঞা সকল উক্ত হইয়াছিল। তিনি বহুবচনে ‘আর বংশ সকলের প্রতি’ না বলিয়া, একবচনে বলেন, “আর তোমার বংশের প্রতি”; সেই বংশ খ্রীষ্ট।
17. আমি এই বলি, যে নিয়ম ঈশ্বরকর্ত্তৃক পূর্ব্বে স্থিরীকৃত হইয়াছিল, চারি শত ত্রিশ বৎসর পরে, উৎপন্ন ব্যবস্থা সেই নিয়মকে উঠাইয়া দিতে পারে না, যাহাতে প্রতিজ্ঞাকে বিফল করিবে।
18. কারণ দায়াধিকার যদি ব্যবস্থামূলক হয়, তবে আর প্রতিজ্ঞামূলক হইতে পারে না; কিন্তু অব্রাহামকে ঈশ্বর প্রতিজ্ঞা দ্বারাই তাহা দান করিয়াছেন।
19. তবে ব্যবস্থা কি? অপরাধের কারণ তাহা যোগ করা হইয়াছিল, যে পর্য্যন্ত না সেই বংশ আইসেন, যাঁহার কাছে প্রতিজ্ঞা করা গিয়াছিল, আর তাহা দূতগণ দ্বারা, এক জন মধ্যস্থের হস্তে, বিধিবদ্ধ হইল।
20. এক জনের মধ্যস্থ ত হয় না, কিন্তু ঈশ্বর এক।
21. তবে ব্যবস্থা কি ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞা-কলাপের প্রতিকূল? তাহা দূরে থাকুক। ফলতঃ যদি এমন ব্যবস্থা দত্ত হইত, যাহা জীবন দান করিতে পারে, তবে ধার্ম্মিকতা অবশ্য ব্যবস্থামূলক হইত।
22. কিন্তু শাস্ত্র সকলই পাপের অধীনতায় রুদ্ধ করিয়াছে, যেন প্রতিজ্ঞার ফল, যীশু খ্রীষ্টে বিশ্বাস হেতু, বিশ্বাসীদিগকে দেওয়া যায়।
23. কিন্তু বিশ্বাস আসিবার পূর্ব্বে আমরা ব্যবস্থার অধীনে রক্ষিত হইতেছিলাম, যে বিশ্বাস পরে প্রকাশিত হইবে, তাহার অপেক্ষায় রুদ্ধ ছিলাম।
24. এই প্রকারে ব্যবস্থা খ্রীষ্টের কাছে আনিবার জন্য আমাদের পরিচালক দাস হইয়া উঠিল, যেন আমরা বিশ্বাস হেতু ধার্ম্মিক গণিত হই।
25. কিন্তু যে অবধি বিশ্বাস আসিল, সেই অবধি আমরা আর পরিচালক দাসের অধীন নহি।
26. কেননা তোমরা সকলে, খ্রীষ্ট যীশুতে বিশ্বাস দ্বারা, ঈশ্বরের পুত্র হইয়াছ;
27. কারণ তোমরা যত লোক খ্রীষ্টের উদ্দেশে বাপ্তাইজিত হইয়াছ, সকলে খ্রীষ্টকে পরিধান করিয়াছ।
28. যিহূদী কি গ্রীক আর হইতে পারে না, দাস কি স্বাধীন আর হইতে পারে না, নর ও নারী আর হইতে পারে না, কেননা খ্রীষ্ট যীশুতে তোমরা সকলেই এক।
29. আর তোমরা যদি খ্রীষ্টের হও, তবে সুতরাং অব্রাহামের বংশ, প্রতিজ্ঞানুসারে দায়াধিকারী।

Notes

No Verse Added

Total 6 Chapters, Current Chapter 3 of Total Chapters 6
1 2 3 4 5 6
গালাতীয় 3
1. হে অবোধ গালাতীয়েরা, কে তোমাদিগকে মুগ্ধ করিল? তোমাদেরই চক্ষের সম্মুখে যীশু খ্রীষ্ট ক্রুশারোপিত বলিয়া স্পষ্টাক্ষরে লিখিত হইয়াছিলেন।
2. কেবল এই কথা তোমাদের কাছে জানিতে চাহি, তোমরা কি ব্যবস্থার কার্য্য হেতু আত্মাকে পাইয়াছ? না বিশ্বাসের বার্ত্তা শ্রবণ হেতু?
3. তোমরা কি এমন অবোধ? আত্মাতে আরম্ভ করিয়া এখন কি মাংসে সমাপ্ত করিতেছ?
4. তোমরা এত দুঃখ কি বৃথাই ভোগ করিয়াছ—যদি বাস্তবিক বৃথা হইয়া থাকে?
5. বল দেখি, যিনি তোমাদিগকে আত্মা যোগাইয়া দেন তোমাদের মধ্যে পরাক্রম-কার্য্য সাধন করেন, তিনি কি ব্যবস্থার কার্য্য হেতু তাহা করেন? না বিশ্বাসের বার্ত্তা শ্রবণ হেতু?
6. যেমন অব্রাহাম “ঈশ্বরে বিশ্বাস করিলেন, আর তাহাই তাঁহার পক্ষে ধার্ম্মিকতা বলিয়া গণিত হইল।”
7. অতএব জানিও, যাহারা বিশ্বাসাবলম্বী, তাহারাই অব্রাহামের সন্তান।
8. আর বিশ্বাস হেতু ঈশ্বর পরজাতিদিগকে ধার্ম্মিক গণনা করেন, শাস্ত্র ইহা অগ্রে দেখিয়া অব্রাহামের কাছে আগেই সুসমাচার প্রচার করিয়াছিল, যথা, “তোমাতে সমস্ত জাতি আশীর্ব্বাদ প্রাপ্ত হইবে”।
9. অতএব যাহারা বিশ্বাসাবলম্বী, তাহারা বিশ্বাসী অব্রাহামের সহিত আশীর্ব্বাদ প্রাপ্ত হয়।
10. বাস্তবিক যাহারা ব্যবস্থার ক্রিয়াবলম্বী, তাহারা সকলে শাপের অধীন, কারণ লেখা আছে, “যে কেহ ব্যবস্থাগ্রন্থে লিখিত সমস্ত কথা পালন করিবার জন্য তাহাতে স্থির না থাকে, সে শাপগ্রস্ত”।
11. কিন্তু ব্যবস্থার দ্বারা কেহই ঈশ্বরের সাক্ষাতে ধার্ম্মিক গণিত হয় না, ইহা সুস্পষ্ট, কারণ “ধার্ম্মিক ব্যক্তি বিশ্বাস হেতু বাঁচিবে”।
12. কিন্তু ব্যবস্থা বিশ্বাসমূলক নয়, বরং “যে কেহ এই সকল পালন করে, সেই তাহাতে বাঁচিবে”।
13. খ্রীষ্টই মূল্য দিয়া আমাদিগকে ব্যবস্থার শাপ হইতে মুক্ত করিয়াছেন, কারণ তিনি আমাদের নিমিত্তে শাপস্বরূপ হইলেন; কেননা লেখা আছে, “যে কেহ গাছে টাঙ্গান যায়, সে শাপগ্রস্ত”;
14. যেন অব্রাহামের প্রাপ্ত আশীর্ব্বাদ খ্রীষ্ট যীশুতে পরজাতিগণের প্রতি বর্ত্তে, আমরা যেন বিশ্বাস দ্বারা অঙ্গীকৃত আত্মাকে প্রাপ্ত হই।
15. হে ভ্রাতৃগণ, আমি মনুষ্যের মত বলিতেছি। মনুষ্যের নিয়মপত্র হইলেও তাহা যখন স্থিরীকৃত হয়, তখন কেহ তাহা বিফল করে না, কিম্বা তাহাতে নূতন কথা যোগ করে না।
16. ভাল, অব্রাহামের প্রতি তাঁহার বংশের প্রতি প্রতিজ্ঞা সকল উক্ত হইয়াছিল। তিনি বহুবচনে ‘আর বংশ সকলের প্রতি’ না বলিয়া, একবচনে বলেন, “আর তোমার বংশের প্রতি”; সেই বংশ খ্রীষ্ট।
17. আমি এই বলি, যে নিয়ম ঈশ্বরকর্ত্তৃক পূর্ব্বে স্থিরীকৃত হইয়াছিল, চারি শত ত্রিশ বৎসর পরে, উৎপন্ন ব্যবস্থা সেই নিয়মকে উঠাইয়া দিতে পারে না, যাহাতে প্রতিজ্ঞাকে বিফল করিবে।
18. কারণ দায়াধিকার যদি ব্যবস্থামূলক হয়, তবে আর প্রতিজ্ঞামূলক হইতে পারে না; কিন্তু অব্রাহামকে ঈশ্বর প্রতিজ্ঞা দ্বারাই তাহা দান করিয়াছেন।
19. তবে ব্যবস্থা কি? অপরাধের কারণ তাহা যোগ করা হইয়াছিল, যে পর্য্যন্ত না সেই বংশ আইসেন, যাঁহার কাছে প্রতিজ্ঞা করা গিয়াছিল, আর তাহা দূতগণ দ্বারা, এক জন মধ্যস্থের হস্তে, বিধিবদ্ধ হইল।
20. এক জনের মধ্যস্থ হয় না, কিন্তু ঈশ্বর এক।
21. তবে ব্যবস্থা কি ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞা-কলাপের প্রতিকূল? তাহা দূরে থাকুক। ফলতঃ যদি এমন ব্যবস্থা দত্ত হইত, যাহা জীবন দান করিতে পারে, তবে ধার্ম্মিকতা অবশ্য ব্যবস্থামূলক হইত।
22. কিন্তু শাস্ত্র সকলই পাপের অধীনতায় রুদ্ধ করিয়াছে, যেন প্রতিজ্ঞার ফল, যীশু খ্রীষ্টে বিশ্বাস হেতু, বিশ্বাসীদিগকে দেওয়া যায়।
23. কিন্তু বিশ্বাস আসিবার পূর্ব্বে আমরা ব্যবস্থার অধীনে রক্ষিত হইতেছিলাম, যে বিশ্বাস পরে প্রকাশিত হইবে, তাহার অপেক্ষায় রুদ্ধ ছিলাম।
24. এই প্রকারে ব্যবস্থা খ্রীষ্টের কাছে আনিবার জন্য আমাদের পরিচালক দাস হইয়া উঠিল, যেন আমরা বিশ্বাস হেতু ধার্ম্মিক গণিত হই।
25. কিন্তু যে অবধি বিশ্বাস আসিল, সেই অবধি আমরা আর পরিচালক দাসের অধীন নহি।
26. কেননা তোমরা সকলে, খ্রীষ্ট যীশুতে বিশ্বাস দ্বারা, ঈশ্বরের পুত্র হইয়াছ;
27. কারণ তোমরা যত লোক খ্রীষ্টের উদ্দেশে বাপ্তাইজিত হইয়াছ, সকলে খ্রীষ্টকে পরিধান করিয়াছ।
28. যিহূদী কি গ্রীক আর হইতে পারে না, দাস কি স্বাধীন আর হইতে পারে না, নর নারী আর হইতে পারে না, কেননা খ্রীষ্ট যীশুতে তোমরা সকলেই এক।
29. আর তোমরা যদি খ্রীষ্টের হও, তবে সুতরাং অব্রাহামের বংশ, প্রতিজ্ঞানুসারে দায়াধিকারী।
Total 6 Chapters, Current Chapter 3 of Total Chapters 6
1 2 3 4 5 6
×

Alert

×

bengali Letters Keypad References