1. পরে নিস্তারপর্ব্বের ছয় দিন পূর্ব্বে যীশু বৈথনিয়াতে আসিলেন; সেখানে সেই লাসার ছিলেন, যাঁহাকে যীশু মৃতগণের মধ্য হইতে উঠাইয়াছিলেন।
|
2. তাহাতে সেই স্থানে তাঁহার নিমিত্ত ভোজ প্রস্তুত করা হইল, ও মার্থা পরিচর্য্যা করিলেন, এবং যাহারা তাঁহার সঙ্গে ভোজনে বসিয়াছিল, লাসার তাহাদের মধ্যে এক জন ছিলেন।
|
3. তখন মরিয়ম অর্দ্ধ সের বহুমূল্য জটামাংসীর আতর আনিয়া যীশুর চরণে মাখাইয়া দিলেন, এবং আপন কেশ দ্বারা তাঁহার চরণ মুছাইয়া দিলেন; তাহাতে আতরের সুগন্ধে গৃহ পরিপূর্ণ হইল।
|
4. কিন্তু ঈষ্করিয়োতীয় যিহূদা, তাঁহার শিষ্যদের মধ্যে এক জন, যে তাঁহাকে শত্রুহস্তে সমর্পণ করিবে, সে কহিল,
|
6. সে যে দরিদ্র লোকদের জন্য চিন্তা করিত বলিয়া এই কথা কহিল, তাহা নয়; কিন্তু কারণ এই, সে চোর, আর তাহার নিকটে টাকার থলী থাকাতে তাহার মধ্যে যাহা রাখা যাইত, তাহা হরণ করিত।
|
9. যিহূদীদের সাধারণ লোকেরা জানিতে পারিল যে, তিনি সেই স্থানে আছেন; আর তাহারা কেবল যীশুর নিমিত্ত আসিল, তাহা নয়, কিন্তু যে লাসারকে তিনি মৃতগণের মধ্য হইতে উঠাইয়াছিলেন, তাঁহাকেও দেখিতে আসিল।
|
13. খর্জ্জুর-পত্র লইয়া তাঁহার সহিত সাক্ষাৎ করিতে বাহির হইল, আর উচ্চৈঃস্বরে বলিতে লাগিল, হোশান্না; ধন্য তিনি, যিনি প্রভুর নামে আসিতেছেন, যিনি ইস্রায়েলের রাজা।
|
16. তাঁহার শিষ্যেরা প্রথমে এই সমস্ত বুঝিলেন না, কিন্তু যীশু যখন মহিমান্বিত হইলেন, তখন তাঁহাদের স্মরণ হইল যে, তাঁহার বিষয়ে এই সকল লিখিত ছিল, আর লোকেরা তাঁহার প্রতি এই সকল করিয়াছে।
|
17. তিনি যখন লাসারকে কবর হইতে আসিতে ডাকেন, এবং মৃতগণের মধ্য হইতে উঠান, তখন যে লোকসমূহ তাঁহার সঙ্গে ছিল, তাহারা সাক্ষ্য দিতে লাগিল।
|
18. আর এই কারণ লোকসমূহ গিয়া তাঁহার সহিত সাক্ষাৎ করিল, কেননা তাহারা শুনিয়াছিল যে, তিনি সেই চিহ্ন-কার্য্য করিয়াছেন।
|
19. তখন ফরীশীরা পরস্পর বলিতে লাগিল, তোমরা দেখিতেছ, তোমাদের সমস্ত চেষ্টা বিফল; দেখ, জগৎসংসার উহার পশ্চাদাগামী হইয়াছে।
|
21. ইহারা গালীলের বৈৎসৈদা নিবাসী ফিলিপের নিকটে আসিয়া তাঁহাকে বিনতি করিল, মহাশয়, আমরা যীশুকে দেখিতে ইচ্ছা করি।
|
24. সত্য, সত্য, আমি তোমাদিগকে বলিতেছি, গোমের বীজ যদি মৃত্তিকায় পড়িয়া না মরে, তবে তাহা একটী মাত্র থাকে; কিন্তু যদি মরে, তবে অনেক ফল উৎপন্ন করে।
|
25. যে আপন প্রাণ ভাল বাসে, সে তাহা হারায়; আর যে এই জগতে আপন প্রাণ অপ্রিয় জ্ঞান করে, সে অনন্ত জীবনের নিমিত্ত তাহা রক্ষা করিবে।
|
26. কেহ যদি আমার পরিচর্য্যা করে, তবে সে আমার পশ্চাদাগামী হউক; তাহাতে আমি যেখানে থাকি, আমার পরিচারকও সেইখানে থাকিবে; কেহ যদি আমার পরিচার্য্যা করে, তবে পিতা তাহার সম্মান করিবেন।
|
27. এখন আমার প্রাণ উদ্বিগ্ন হইয়াছে; ইহাতে কি বলিব? পিতঃ, এই সময় হইতে আমাকে রক্ষা কর? কিন্তু ইহারই নিমিত্ত আমি এই সময় পর্য্যন্ত আসিয়াছি।
|
28. পিতঃ, তোমার নাম মহিমান্বিত কর। তখন স্বর্গ হইতে এই বাণী হইল, ‘আমি তাহা মহিমান্বিত করিয়াছি, আবার মহিমান্বিত করিব।’
|
29. যে লোকসমূহ দাঁড়াইয়া শুনিয়াছিল, তাহারা বলিল, মেঘগর্জ্জন হইল; আর কেহ কেহ বলিল, কোন স্বর্গ-দূত ইহাঁর সহিত কথা কহিলেন।
|
34. তখন লোকসমূহ তাঁহাকে উত্তর করিল, আমরা ব্যবস্থা হইতে শুনিয়াছি যে, খ্রীষ্ট চিরকাল থাকেন; তবে আপনি কি প্রকারে বলিতেছেন যে, মনুষ্যপুত্রকে উচ্চীকৃত হইতে হইবে? সেই মনুষ্য পুত্র কে?
|
35. তখন যীশু তাহাদিগকে কহিলেন, আর অল্প কালমাত্র জ্যোতি তোমাদের মধ্যে আছে। যাবৎ তোমাদের কাছে জ্যোতি আছে, যাতায়াত কর, যেন অন্ধকার তোমাদের উপরে আসিয়া না পড়ে; আর যে ব্যক্তি অন্ধকারে যাতায়াত করে, সে কোথায় যায়, তাহা জানে না।
|
36. যাবৎ তোমাদের কাছে জ্যোতি আছে, সেই জ্যোতিতে বিশ্বাস কর, যেন তোমরা জ্যোতির সন্তান হইতে পার। যীশু এই সকল কথা বলিলেন, আর প্রস্থান করিয়া তাহাদের হইতে লুকাইলেন।
|
37. কিন্তু যদিও তিনি তাহাদের সাক্ষাতে এত চিহ্ন-কার্য্য করিয়াছিলেন, তথাপি তাহারা তাঁহাকে বিশ্বাস করিল না;
|
38. যেন যিশাইয় ভাববাদীর বাক্য পূর্ণ হয়, তিনি ত বলিয়াছিলেন, “হে প্রভু, আমরা যাহা শুনিয়াছি, তাহা কে বিশ্বাস করিয়াছে? আর প্রভুর বাহু কাহার কাছে প্রকাশিত হইয়াছে?”
|
40. “তিনি তাহাদের চক্ষু অন্ধ করিয়াছেন, তাহাদের হৃদয় কঠিন করিয়াছেন, পাছে তাহারা চক্ষে দেখে, হৃদয়ে বুঝে, এবং ফিরিয়া আইসে, আর আমি তাহাদিগকে সুস্থ করি।”
|
42. তথাপি অধ্যক্ষদের মধ্যেও অনেকে তাঁহাতে বিশ্বাস করিল; কিন্তু ফরীশীদের ভয়ে স্বীকার করিল না, পাছে সমাজচ্যুত হয়;
|
44. যীশু উচ্চৈঃস্বরে বলিলেন, যে আমাতে বিশ্বাস করে, সে আমাতে নয়, কিন্তু যিনি আমাকে পাঠাইয়াছেন, তাঁহাতেই বিশ্বাস করে;
|
47. আর যদি কেহ আমার কথা শুনিয়া পালন না করে, আমি তাহার বিচার করি না, কারণ আমি জগতের বিচার করিতে নয়, কিন্তু জগতের পরিত্রাণ করিতে আসিয়াছি।
|
48. যে আমাকে অগ্রাহ্য করে, এবং আমার কথা গ্রহণ না করে, তাহার বিচারকর্ত্তা আছে; আমি যে বাক্য বলিয়াছি, তাহাই শেষ দিনে তাহার বিচার করিবে।
|
49. কারণ আমি আপনা হইতে বলি নাই; কিন্তু কি কহিব ও কি বলিব, তাহা আমার পিতা, যিনি আমাকে পাঠাইয়াছেন, তিনিই আমাকে আজ্ঞা করিয়াছেন।
|
50. আর আমি জানি যে, তাঁহার আজ্ঞা অনন্ত জীবন। অতএব আমি যাহা যাহা বলি, তাহা পিতা আমাকে যেমন কহিয়াছেন, তেমনি বলি।
|