1. হে আমার ভ্রাতৃগণ, অনেকে উপদেশক হইও না; তোমরা জান, অন্য অপেক্ষা আমাদের ভারী বিচার হইবে।
2. কারণ আমরা সকলে অনেক প্রকারে উছোট খাই। যদি কেহ বাক্যে উছোট না খায়, তবে সে সিদ্ধ পুরুষ, সমস্ত শরীরকেই বল্গা দ্বারা বশে রাখিতে সমর্থ।
3. অশ্বেরা যেন আমাদের বাধ্য হয়, সেই জন্য আমরা যদি তাহাদের মুখে বল্গা দিই, তবে তাহাদের সমস্ত শরীরও ফিরাই।
4. আর দেখ, জাহাজগুলিও অতি প্রকাণ্ড, এবং প্রচণ্ড বায়ুতে চালিত হয়, তথাপি সে সকলকে অতি ক্ষুদ্র হাইল দ্বারা কর্ণধারের মনের ইচ্ছা যে দিকে হয়, সেই দিকে ফিরান যায়।
5. তদ্রূপ জিহ্বাও ক্ষুদ্র অঙ্গ বটে, কিন্তু মহাদর্পের কথা কহে। দেখ, কেমন অল্প অগ্নি কেমন বৃহৎ বন প্রজ্বলিত করে!
6. জিহ্বাও অগ্নি; আমাদের অঙ্গসমূহের মধ্যে জিহ্বা অধর্ম্মের জগৎ হইয়া রহিয়াছে; তাহা সমস্ত দেহ কলঙ্কিত করে, ও প্রকৃতির চক্রকে প্রজ্বলিত করে, এবং আপনি নরকানলে জ্বলিয়া উঠে।
7. কারণ পশুর ও পক্ষীর, সরীসৃপের ও সমুদ্রচর জন্তুর সমস্ত স্বভাবকে মানবস্বভাব দ্বারা দমন করিতে পারা যায় ও দমন করা গিয়াছে;
8. কিন্তু জিহ্বাকে দমন করিতে কোন মনুষ্যের সাধ্য নাই; উহা অশান্ত মন্দ বিষয়, মৃত্যুজনক বিষে পরিপূর্ণ।
9. উহার দ্বারাই আমরা প্রভু পিতার ধন্যবাদ করি, আবার উহার দ্বারাই ঈশ্বরের সাদৃশ্যে জাত মনুষ্যদিগকে শাপ দিই।
10. একই মুখ হইতে ধন্যবাদ ও শাপ বাহির হয়। হে আমার ভ্রাতৃগণ, এ সকল এমন হওয়া অনুচিত।
11. উনুই কি একই ছিদ্র দিয়া মিষ্ট ও তিক্ত দুই প্রকার জল বাহির করে?
12. হে আমার ভ্রাতৃগণ, ডুমুরগাছে কি জিতফল, অথবা দ্রাক্ষালতায় কি ডুমুরফল ধরিতে পারে? লোণা জলও মিষ্ট জল দিতে পারে না।
13. তোমাদের মধ্যে জ্ঞানবান্ ও বুদ্ধিমান্ কে? সে সদাচরণ দ্বারা জ্ঞানের মৃদুতায় নিজ ক্রিয়া দেখাইয়া দিউক।
14. কিন্তু তোমাদের হৃদয়ে যদি তিক্ত ঈর্ষা ও প্রতিযোগিতা রাখ, তবে সত্যের বিরুদ্ধে শ্লাঘা করিও না ও মিথ্যা কহিও না।
15. সেই জ্ঞান এমন নয়, যাহা উপর হইতে নামিয়া আইসে, বরং তাহা পার্থিব, প্রাণিক, পৈশাচিক।
16. কেননা যেখানে ঈর্ষা ও প্রতিযোগিতা, সেইখানে অস্থিরতা ও সমুদয় দুষ্কর্ম্ম থাকে।
17. কিন্তু যে জ্ঞান উপর হইতে আইসে, তাহা প্রথমে শুচি, পরে শান্তিপ্রিয়, ক্ষান্ত, সহজে অনুনীত, দয়া ও উত্তম উত্তম ফলে পরিপূর্ণ, ভেদাভেদবিহীন ও নিষ্কপট।
18. আর যাহারা শান্তি-আচরণ করে, তাহাদের জন্য শান্তিতে ধার্ম্মিকতাফলের বীজ বপন করা যায়।