1. তুমি ঈশ্বরের গৃহে গমন কালে তোমার চরণ সাবধানে রাখ; কারণ হীনবুদ্ধিদের ন্যায় বলিদান করা অপেক্ষা বরং শ্রবণার্থে উপস্থিত হওয়া ভাল; কেননা উহারা যে মন্দ কার্য্য করিতেছে, তাহা বুঝে না।
2. তুমি আপন মুখকে বেগে কথা কহিতে দিও না, এবং ঈশ্বরের সাক্ষাতে কথা উচ্চারণ করিতে তোমার হৃদয় ত্বরান্বিত না হউক; কেননা ঈশ্বর স্বর্গে ও তুমি পৃথিবীতে, অতএব তোমার কথা অল্প হউক।
3. কারণ স্বপ্ন বহুকষ্টসহ উপস্থিত হয়, আর হীনবুদ্ধির রব বহুবাক্যসহ উপস্থিত হয়।
4. ঈশ্বরের নিকটে মানত করিলে তাহা পরিশোধ করিতে বিলম্ব করিও না, কারণ হীনবুদ্ধি লোকদিগেতে তাঁহার সন্তোষ নাই; যাহা মানত করিবে, তাহা পরিশোধ করিও।
5. মানত করিয়া না দেওয়া অপেক্ষা বরং তোমার মানত না করাই ভাল।
6. তোমার মাংসকে পাপ করাইতে তোমার মুখকে দিও না; এবং “উহা ভ্রম,” এমন কথা দূতের সাক্ষাতে বলিও না; ঈশ্বর কেন তোমার বাক্যে ক্রোধ করিয়া তোমার হস্তের কার্য্য নষ্ট করিবেন?
7. বস্তুতঃ স্বপ্ন ও অসারতা বহুসংখ্যাক, বাক্যেরও বাহুল্য আছে; কিন্তু তুমি ঈশ্বরকে ভয় কর।
8. তুমি দেশে দরিদ্রের পীড়ন, কিম্বা বিচারের ও ধার্ম্মিকতার খণ্ডন দেখিলে সেই ব্যাপারে চমৎকৃত হইও না, কেননা উচ্চপদান্বিত লোক অপেক্ষা উচ্চতর পদান্বিত এক রক্ষক আছেন; আবার যিনি উচ্চতম, তিনি উভয়ের কর্ত্তা।
9. আর দেশের ফল সকলেরই জন্য; ভূমির দ্বারা রাজা সেবিত হন।
10. যে ব্যক্তি রৌপ্য ভালবাসে, সে রৌপ্যে তৃপ্ত হয় না; আর যে ব্যক্তি ধনরাশি ভালবাসে, সে ধনাগমে তৃপ্ত হয় না; ইহাও অসার।
11. সম্পত্তি বাড়িলে ভোক্তাও বাড়ে; আর দৃষ্টিসুখ ব্যতীত সম্পত্তিতে স্বামীদের কি ফল দর্শে?
12. শ্রমজীবী অধিক বা অল্প আহার করুক, নিদ্রা তাহার মিষ্ট লাগে; কিন্তু ধনবানের পূর্ণতা তাহাকে নিদ্রা যাইতে দেয় না।
13. সূর্য্যের নীচে আমি এই বিষম অনিষ্ট দেখিয়াছি যে, ধনস্বামীর অনিষ্টের জন্যই ধন রক্ষিত হয়;
14. আর দুর্ঘটনায় সেই ধনের ক্ষয় হয়, এবং পুত্রের জন্ম দিলে তাহার হস্তে কিছুই নাই।
15. সে মাতৃগর্ভ হইতে উলঙ্গ আইসে; যেমন আইসে তেমনি উলঙ্গই পুনরায় চলিয়া যায়; পরিশ্রম করিলেও সে যাহা সঙ্গে করিয়া লইয়া যাইতে পারে, এমন কিছুই নাই।
16. ইহাও বিষম অনিষ্ট; সে যেমন আইসে, সর্ব্বতোভাবে তেমনি যায়; অতএব বায়ুর নিমিত্ত পরিশ্রম করিলে পর তাহার কি ফল দেখিবে?
17. আর সে ত যাবজ্জীবন অন্ধকারে আহার করে, এবং তাহার বিষম বিরক্তি, পীড়া ও ক্রোধ উপস্থিত হয়।
18. দেখ, আমি দেখিয়াছি, ইহাই উত্তম ও মনোরঞ্জক, ঈশ্বর মনুষ্যকে যে কয় দিন পরমায়ু দেন, সেই সমস্ত দিন সে যেন সূর্য্যের নীচে আপনার কর্ত্তব্য সমস্ত পরিশ্রমের মধ্যে ভোজন পান ও সুখভোগ করে, কারণ ইহাই তাহার অংশ।
19. আবার ঈশ্বর যে কোন ব্যক্তিকে ধন-সম্পত্তি দান করেন, তাহাকে তাহা ভোগ করিতে, আপন অংশ লইতে ও আপন পরিশ্রমে আনন্দ করিতে ক্ষমতা দেন, ইহাই ঈশ্বরের দান।
20. কারণ সে আপন পরমায়ুর দিন সকল তত স্মরণ করিবে না, কেননা ঈশ্বর তাহার হৃদয়ের আনন্দে তাহাকে উত্তর দেন।