পবিত্র বাইবেল

গডস গ্রেইস গিফট
আদিপুস্তক
1. আর অব্রাহাম কটুরা নাম্নী আর এক স্ত্রীকে বিবাহ করেন।
2. তিনি তাঁহার জন্য সিম্রণ, যক্‌ষণ, মদান, মিদিয়ন, যিশ্‌বক ও শূহ, এই সকলকে প্রসব করিলেন।
3. যক্‌ষণ হইতে শিবা ও দদান জন্মে। অশূরীয়, লটূশীয় ও লিয়ূম্মীয় লোকেরা দদানের সন্তান।
4. এবং মিদিয়নের সন্তান ঐফা, এফর, হনোক, অবীদ ও ইল্‌দায়া; এই সকল কটূরার সন্তান।
5. আর অব্রাহাম ইস্‌হাককে আপনার সর্ব্বস্ব দিলেন।
6. কিন্তু আপন উপপত্নীদের সন্তানদিগকে অব্রাহাম ভিন্ন ভিন্ন দান দিয়া আপনার জীবদ্দশাতেই আপন পুত্র ইস্‌হাকের নিকট হইতে তাহাদিগকে পূর্ব্বদিকে, পূর্ব্বদেশে প্রেরণ করিলেন।
7. অব্রাহামের জীবনকাল এক শত পঁচাত্তর বৎসর; তিনি এত বৎসর জীবিত ছিলেন।
8. পরে অব্রাহাম বৃদ্ধ ও পূর্ণায়ু হইয়া শুভ বৃদ্ধাবস্থায় প্রাণত্যাগ করিয়া আপন লোকদের নিকটে সংগৃহীত হইলেন।
9. আর তাঁহার পুত্র ইস্‌হাক ও ইশ্মায়েল মম্রির সম্মুখে হেতীয় সোহরের পুত্র ইফ্রোণের ক্ষেত্রস্থিত মক্‌পেলা গুহাতে তাঁহার কবর দিলেন।
10. অব্রাহাম হেতের সন্তানদের কাছে সেই ক্ষেত্র ক্রয় করিয়াছিলেন। সেই স্থানে অব্রাহামের ও তাঁহার স্ত্রী সারার কবর দেওয়া হয়।
11. অব্রাহামের মৃত্যু হইলে পর ঈশ্বর তাঁহার পুত্র ইস্‌হাককে আশীর্ব্বাদ করিলেন; এবং ইসহাক বের্-লহয়্‌-রোয়ীর নিকটে বসতি করিলেন।
12. অব্রাহামের পুত্র ইশ্মায়েলের বংশবৃত্তান্ত এই। সারার দাসী মিস্রীয়া হাগার অব্রাহামের জন্য তাঁহাকে প্রসব করিয়াছিল।
13. আপন আপন নাম ও গোষ্ঠী আনুসারে ইশ্মায়েলের সন্তানদের নাম এই। ইশ্মায়েলের জ্যেষ্ঠ পুত্র নবায়োৎ,
14. পরে কেদর, অদ্‌বেল, মিব্‌সম,
15. মিশ্‌ম, দূমা, মসা, হদদ, তেমা, যিটূর, নাফীশ ও কেদমা।
16. এই সকল ইশ্মায়েলের সন্তান; এবং তাঁহাদের গ্রাম ও তাম্বুপল্লী অনুসারে তাঁহাদের এই এই নাম; তাঁহারা আপন আপন জাতি অনুসারে দ্বাদশ জন অধ্যক্ষ ছিলেন।
17. ইশ্মায়েলের জীবনকাল এক শত সাঁইত্রিশ বৎসর ছিল; পরে তিনি প্রাণত্যাগ করিয়া আপন লোকদের নিকটে সংগৃহীত হইলেন।
18. আর তাঁহার সন্তানগণ হবীলা অবধি অশূরিয়ার দিকে মিসরের সম্মুখস্থ শূর পর্য্যন্ত বসতি করিল; তিনি তাঁহার সকল ভ্রাতার সম্মুখে বসতিস্থান পাইলেন।
19. অব্রাহামের পুত্র ইস্‌হাকের বংশ বৃত্তান্ত এই। অব্রাহাম ইস্‌হাকের জন্ম দিয়াছিলেন।
20. চল্লিশ বৎসর বয়সে ইস্‌হাক অরামীয় বথূয়েলের কন্যা অরামীয় লাবনের ভগিনী রিবিকাকে পদ্দন্-অরাম হইতে আনাইয়া বিবাহ করেন।
21. ইস্‌হাকের স্ত্রী বন্ধ্যা হওয়াতে তিনি তাঁহার নিমিত্তে সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করিলেন। তাহাতে সদাপ্রভু তাঁহার প্রার্থনা শুনিলেন, তাঁহার স্ত্রী রিবিকা গর্ভবতী হইলেন।
22. পরে তাঁহার গর্ভমধ্যে শিশুরা জড়াজড়ি করিল, তাহাতে তিনি কহিলেন, যদি এরূপ হয়, তবে আমি কেন বাঁচিয়া আছি? আর তিনি সদাপ্রভুর কাছে জিজ্ঞাসা করিতে গেলেন।
23. তখন সদাপ্রভু তাঁহাকে কহিলেন, তোমার জঠরে দুই জাতি আছে, ও তোমার উদর হইতে দুই বংশ বিভিন্ন হইবে; এক বংশ অন্য বংশ অপেক্ষা বলবান্ হইবে, ও জ্যেষ্ঠ কনিষ্ঠের দাস হইবে।
24. পরে প্রসবকাল সম্পূর্ণ হইল, আর দেখ, তাঁহার গর্ভে যমজ পুত্র।
25. যে প্রথমে ভূমিষ্ঠ হইল, সে রক্তবর্ণ এবং তাহার সর্ব্বাঙ্গ লোমশ বস্ত্রের সদৃশ ছিল। তাহার নাম এষৌ [লোমশ] রাখা গেল।
26. পরে তাহার ভ্রাতা ভূমিষ্ঠ হইল। তাহার হস্ত এষৌর পাদমূল ধরিয়াছিল, আর তাহার নাম যাকোব [পাদগ্রাহী] হইল; ইস্‌হাকের ষাট বৎসর বয়সে এই যমজ পুত্র হইল।
27. পরে সেই বালকেরা বড় হইলে এষৌ নিপুণ শিকারী ও প্রান্তরবিহারী হইলেন; কিন্তু যাকোব শান্ত ছিলেন, তিনি তাম্বুতে বাস করিতেন।
28. ইস্‌হাক এষৌকে ভাল বাসিতেন, কেননা তাঁহার মুখে মৃগমাংস ভাল লাগিত; কিন্তু রিবিকা যাকোবকে ভাল বাসিতেন।
29. একদা যাকোব দাইল পাক করিয়াছেন, এমন সময়ে এষৌ ক্লান্ত হইয়া প্রান্তর হইতে আসিয়া যাকোবকে কহিলেন,
30. আমি ক্লান্ত হইয়াছি, বিনয় করি, ঐ রাঙ্গা, ঐ রাঙ্গা দ্বারা অামার উদর পূর্ণ কর। এই জন্য তাঁহার নাম ইদোম [রাঙ্গা] খ্যাত হইল।
31. তখন যাকোব কহিলেন, অদ্য তোমার জ্যেষ্ঠাধিকার আমার কাছে বিক্রয় কর।
32. এষৌ বলিলেন, দেখ, আমি মৃতপ্রায়, জ্যেষ্ঠাধিকারে আমার কি লাভ?
33. যাকোব কহিলেন, তুমি অদ্য আমার কাছে দিব্য কর। তাহাতে তিনি তাঁহার কাছে দিব্য করিলেন। এইরূপে তিনি আপন জ্যেষ্ঠাধিকার যাকোবের কাছে বিক্রয় করিলেন।
34. আর যাকোব এষৌকে রুটী ও মসূরের রান্ধা দাইল দিলেন; এবং তিনি ভোজন পান করিলেন, পরে উঠিয়া চলিয়া গেলেন। এইরূপে এষৌ আপন জ্যেষ্ঠাধিকার তুচ্ছ করিলেন।

Notes

No Verse Added

Total 50 Chapters, Current Chapter 25 of Total Chapters 50
আদিপুস্তক 25
1. আর অব্রাহাম কটুরা নাম্নী আর এক স্ত্রীকে বিবাহ করেন।
2. তিনি তাঁহার জন্য সিম্রণ, যক্‌ষণ, মদান, মিদিয়ন, যিশ্‌বক শূহ, এই সকলকে প্রসব করিলেন।
3. যক্‌ষণ হইতে শিবা দদান জন্মে। অশূরীয়, লটূশীয় লিয়ূম্মীয় লোকেরা দদানের সন্তান।
4. এবং মিদিয়নের সন্তান ঐফা, এফর, হনোক, অবীদ ইল্‌দায়া; এই সকল কটূরার সন্তান।
5. আর অব্রাহাম ইস্‌হাককে আপনার সর্ব্বস্ব দিলেন।
6. কিন্তু আপন উপপত্নীদের সন্তানদিগকে অব্রাহাম ভিন্ন ভিন্ন দান দিয়া আপনার জীবদ্দশাতেই আপন পুত্র ইস্‌হাকের নিকট হইতে তাহাদিগকে পূর্ব্বদিকে, পূর্ব্বদেশে প্রেরণ করিলেন।
7. অব্রাহামের জীবনকাল এক শত পঁচাত্তর বৎসর; তিনি এত বৎসর জীবিত ছিলেন।
8. পরে অব্রাহাম বৃদ্ধ পূর্ণায়ু হইয়া শুভ বৃদ্ধাবস্থায় প্রাণত্যাগ করিয়া আপন লোকদের নিকটে সংগৃহীত হইলেন।
9. আর তাঁহার পুত্র ইস্‌হাক ইশ্মায়েল মম্রির সম্মুখে হেতীয় সোহরের পুত্র ইফ্রোণের ক্ষেত্রস্থিত মক্‌পেলা গুহাতে তাঁহার কবর দিলেন।
10. অব্রাহাম হেতের সন্তানদের কাছে সেই ক্ষেত্র ক্রয় করিয়াছিলেন। সেই স্থানে অব্রাহামের তাঁহার স্ত্রী সারার কবর দেওয়া হয়।
11. অব্রাহামের মৃত্যু হইলে পর ঈশ্বর তাঁহার পুত্র ইস্‌হাককে আশীর্ব্বাদ করিলেন; এবং ইসহাক বের্-লহয়্‌-রোয়ীর নিকটে বসতি করিলেন।
12. অব্রাহামের পুত্র ইশ্মায়েলের বংশবৃত্তান্ত এই। সারার দাসী মিস্রীয়া হাগার অব্রাহামের জন্য তাঁহাকে প্রসব করিয়াছিল।
13. আপন আপন নাম গোষ্ঠী আনুসারে ইশ্মায়েলের সন্তানদের নাম এই। ইশ্মায়েলের জ্যেষ্ঠ পুত্র নবায়োৎ,
14. পরে কেদর, অদ্‌বেল, মিব্‌সম,
15. মিশ্‌ম, দূমা, মসা, হদদ, তেমা, যিটূর, নাফীশ কেদমা।
16. এই সকল ইশ্মায়েলের সন্তান; এবং তাঁহাদের গ্রাম তাম্বুপল্লী অনুসারে তাঁহাদের এই এই নাম; তাঁহারা আপন আপন জাতি অনুসারে দ্বাদশ জন অধ্যক্ষ ছিলেন।
17. ইশ্মায়েলের জীবনকাল এক শত সাঁইত্রিশ বৎসর ছিল; পরে তিনি প্রাণত্যাগ করিয়া আপন লোকদের নিকটে সংগৃহীত হইলেন।
18. আর তাঁহার সন্তানগণ হবীলা অবধি অশূরিয়ার দিকে মিসরের সম্মুখস্থ শূর পর্য্যন্ত বসতি করিল; তিনি তাঁহার সকল ভ্রাতার সম্মুখে বসতিস্থান পাইলেন।
19. অব্রাহামের পুত্র ইস্‌হাকের বংশ বৃত্তান্ত এই। অব্রাহাম ইস্‌হাকের জন্ম দিয়াছিলেন।
20. চল্লিশ বৎসর বয়সে ইস্‌হাক অরামীয় বথূয়েলের কন্যা অরামীয় লাবনের ভগিনী রিবিকাকে পদ্দন্-অরাম হইতে আনাইয়া বিবাহ করেন।
21. ইস্‌হাকের স্ত্রী বন্ধ্যা হওয়াতে তিনি তাঁহার নিমিত্তে সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করিলেন। তাহাতে সদাপ্রভু তাঁহার প্রার্থনা শুনিলেন, তাঁহার স্ত্রী রিবিকা গর্ভবতী হইলেন।
22. পরে তাঁহার গর্ভমধ্যে শিশুরা জড়াজড়ি করিল, তাহাতে তিনি কহিলেন, যদি এরূপ হয়, তবে আমি কেন বাঁচিয়া আছি? আর তিনি সদাপ্রভুর কাছে জিজ্ঞাসা করিতে গেলেন।
23. তখন সদাপ্রভু তাঁহাকে কহিলেন, তোমার জঠরে দুই জাতি আছে, তোমার উদর হইতে দুই বংশ বিভিন্ন হইবে; এক বংশ অন্য বংশ অপেক্ষা বলবান্ হইবে, জ্যেষ্ঠ কনিষ্ঠের দাস হইবে।
24. পরে প্রসবকাল সম্পূর্ণ হইল, আর দেখ, তাঁহার গর্ভে যমজ পুত্র।
25. যে প্রথমে ভূমিষ্ঠ হইল, সে রক্তবর্ণ এবং তাহার সর্ব্বাঙ্গ লোমশ বস্ত্রের সদৃশ ছিল। তাহার নাম এষৌ লোমশ রাখা গেল।
26. পরে তাহার ভ্রাতা ভূমিষ্ঠ হইল। তাহার হস্ত এষৌর পাদমূল ধরিয়াছিল, আর তাহার নাম যাকোব পাদগ্রাহী হইল; ইস্‌হাকের ষাট বৎসর বয়সে এই যমজ পুত্র হইল।
27. পরে সেই বালকেরা বড় হইলে এষৌ নিপুণ শিকারী প্রান্তরবিহারী হইলেন; কিন্তু যাকোব শান্ত ছিলেন, তিনি তাম্বুতে বাস করিতেন।
28. ইস্‌হাক এষৌকে ভাল বাসিতেন, কেননা তাঁহার মুখে মৃগমাংস ভাল লাগিত; কিন্তু রিবিকা যাকোবকে ভাল বাসিতেন।
29. একদা যাকোব দাইল পাক করিয়াছেন, এমন সময়ে এষৌ ক্লান্ত হইয়া প্রান্তর হইতে আসিয়া যাকোবকে কহিলেন,
30. আমি ক্লান্ত হইয়াছি, বিনয় করি, রাঙ্গা, রাঙ্গা দ্বারা অামার উদর পূর্ণ কর। এই জন্য তাঁহার নাম ইদোম রাঙ্গা খ্যাত হইল।
31. তখন যাকোব কহিলেন, অদ্য তোমার জ্যেষ্ঠাধিকার আমার কাছে বিক্রয় কর।
32. এষৌ বলিলেন, দেখ, আমি মৃতপ্রায়, জ্যেষ্ঠাধিকারে আমার কি লাভ?
33. যাকোব কহিলেন, তুমি অদ্য আমার কাছে দিব্য কর। তাহাতে তিনি তাঁহার কাছে দিব্য করিলেন। এইরূপে তিনি আপন জ্যেষ্ঠাধিকার যাকোবের কাছে বিক্রয় করিলেন।
34. আর যাকোব এষৌকে রুটী মসূরের রান্ধা দাইল দিলেন; এবং তিনি ভোজন পান করিলেন, পরে উঠিয়া চলিয়া গেলেন। এইরূপে এষৌ আপন জ্যেষ্ঠাধিকার তুচ্ছ করিলেন।
Total 50 Chapters, Current Chapter 25 of Total Chapters 50
×

Alert

×

bengali Letters Keypad References