পবিত্র বাইবেল

গডস গ্রেইস গিফট
আদিপুস্তক
1. সদাপ্রভু অব্রামকে কহিলেন, তুমি আপন দেশ, জ্ঞাতিকুটুম্ব ও পৈতৃক বাটী পরিত্যাগ করিয়া, আমি যে দেশ তোমাকে দেখাই, সেই দেশে চল।
2. আমি তোমা হইতে এক মহাজাতি উৎপন্ন করিব, এবং তোমাকে আশীর্ব্বাদ করিয়া তোমার নাম মহৎ করিব, তাহাতে তুমি আশীর্ব্বাদের আকর হইবে।
3. যাহারা তোমাকে আশীর্ব্বাদ করিবে, তাহাদিগকে আমি আশীর্ব্বাদ করিব, যে কেহ তোমাকে অভিশাপ দিবে, তাহাকে আমি অভিশাপ দিব; এবং তোমাতে ভূমণ্ডলের যাবতীয় গোষ্ঠী আশীর্ব্বাদ প্রাপ্ত হইবে
4. পরে অব্রাম সদাপ্রভুর সেই বাক্যানুসারে যাত্রা করিলেন; এবং লোটও তাঁহার সঙ্গে গেলেন। হারণ হইতে প্রস্থান কালে অব্রামের পঁচাত্তর বৎসর বয়স ছিল।
5. অব্রাম আপন স্ত্রী সারীকে ও ভ্রাতুষ্পুত্র লোটকে এবং হারণে তাঁহারা যে ধন উপার্জ্জন করিয়াছিলেন, ও যে প্রাণিগণকে লাভ করিয়াছিলেন, সে সমস্ত লইয়া কনান দেশে গমনার্থে যাত্রা করিলেন, এবং কনান দেশে আসিলেন।
6. আর অব্রাম দেশ দিয়া যাইতে যাইতে শিখিম স্থানে, মোরির এলোন বৃক্ষের নিকটে উপস্থিত হইলেন। তৎকালে কনানীয়েরা সেই দেশে বাস করিত।
7. পরে সদাপ্রভু অব্রামকে দর্শন দিয়া কহিলেন, আমি তোমার বংশকে এই দেশ দিব; আর সেই স্থানে অব্রাম সেই সদাপ্রভুর উদ্দেশে এক যজ্ঞবেদি নির্ম্মাণ করিলেন, যিনি তাঁহাকে দর্শন দিয়াছিলেন।
8. পরে তিনি ঐ স্থান ত্যাগ করিয়া পর্ব্বতে গিয়া বৈথেলের পূর্ব্বদিকে আপনার তাম্বু স্থাপন করিলেন; তাহার পশ্চিমে বৈথেল ও পূর্ব্বদিকে অয় ছিল; তিনি সে স্থানে সদাপ্রভুর উদ্দেশে এক যজ্ঞবেদি নির্ম্মাণ করিলেন, ও সদাপ্রভুর নামে ডাকিলেন।
9. পরে অব্রাম ক্রমে ক্রমে দক্ষিণে গমন করিলেন।
10. আর দেশে দুর্ভিক্ষ হইল, তখন অব্রাম মিসরে প্রবাস করিতে যাত্রা করিলেন; কেননা [কনান] দেশে ভারী দুর্ভিক্ষ হইয়াছিল।
11. আর অব্রাম যখন মিসরে প্রবেশ করিতে উদ্যত হন, তখন আপন স্ত্রী সারীকে কহিলেন, দেখ, আমি জানি, তুমি দেখিতে সুন্দরী;
12. এ কারণ মিস্রীয়েরা যখন তোমাকে দেখিবে, তখন তুমি আমার স্ত্রী বলিয়া আমাকে বধ করিবে, আর তোমাকে জীবিত রাখিবে।
13. বিনয় করি, এই কথা বলিও যে, তুমি আমার ভগিনী; যেন তোমার অনুরোধে আমার মঙ্গল হয়, ও তোমাহেতু আমার প্রাণ বাঁচে।
14. পরে অব্রাম মিসরে প্রবেশ করিলে মিস্রীয়েরা ঐ স্ত্রীকে পরমসুন্দরী দেখিল।
15. অার ফরৌণের অধ্যক্ষগণ তাঁহাকে দেখিয়া ফরৌণের সাক্ষাতে তাঁহার প্রশংসা করিলেন; তাঁহাতে সেই স্ত্রী ফরৌণের বাটীতে নীত হইলেন।
16. আর তাঁহার অনুরোধে তিনি অব্রামকে আদর করিলেন; তাহাতে অব্রাম মেষ, গোরু, গর্দ্দভ এবং দাস দাসী, গর্দ্দভী ও উষ্ট্র পাইলেন।
17. কিন্তু অব্রামের স্ত্রী সারীর জন্য সদাপ্রভু ফরৌণ ও তাঁহার পরিবারের উপরে ভারী ভারী উৎপাত ঘটাইলেন।
18. তাহাতে ফরৌণ অব্রামকে ডাকিয়া কহিলেন, আপনি আমার সহিত এ কি ব্যবহার করিলেন? উনি আপনার স্ত্রী, এ কথা আমাকে কেন বলেন নাই?
19. উহাঁকে আপনার ভগিনী কেন বলিলেন? আমি ত উহাঁকে বিবাহ করিতে লইয়াছিলাম। এখন আপনার স্ত্রীকে লইয়া চলিয়া যাউন।
20. তখন ফরৌণ লোকদিগকে তাঁহার বিষয়ে আজ্ঞা দিলেন, আর তাহারা সর্ব্বস্বের সহিত তাঁহাকে ও তাঁহার স্ত্রীকে বিদায় করিল।

Notes

No Verse Added

Total 50 Chapters, Current Chapter 12 of Total Chapters 50
আদিপুস্তক 12
1. সদাপ্রভু অব্রামকে কহিলেন, তুমি আপন দেশ, জ্ঞাতিকুটুম্ব পৈতৃক বাটী পরিত্যাগ করিয়া, আমি যে দেশ তোমাকে দেখাই, সেই দেশে চল।
2. আমি তোমা হইতে এক মহাজাতি উৎপন্ন করিব, এবং তোমাকে আশীর্ব্বাদ করিয়া তোমার নাম মহৎ করিব, তাহাতে তুমি আশীর্ব্বাদের আকর হইবে।
3. যাহারা তোমাকে আশীর্ব্বাদ করিবে, তাহাদিগকে আমি আশীর্ব্বাদ করিব, যে কেহ তোমাকে অভিশাপ দিবে, তাহাকে আমি অভিশাপ দিব; এবং তোমাতে ভূমণ্ডলের যাবতীয় গোষ্ঠী আশীর্ব্বাদ প্রাপ্ত হইবে
4. পরে অব্রাম সদাপ্রভুর সেই বাক্যানুসারে যাত্রা করিলেন; এবং লোটও তাঁহার সঙ্গে গেলেন। হারণ হইতে প্রস্থান কালে অব্রামের পঁচাত্তর বৎসর বয়স ছিল।
5. অব্রাম আপন স্ত্রী সারীকে ভ্রাতুষ্পুত্র লোটকে এবং হারণে তাঁহারা যে ধন উপার্জ্জন করিয়াছিলেন, যে প্রাণিগণকে লাভ করিয়াছিলেন, সে সমস্ত লইয়া কনান দেশে গমনার্থে যাত্রা করিলেন, এবং কনান দেশে আসিলেন।
6. আর অব্রাম দেশ দিয়া যাইতে যাইতে শিখিম স্থানে, মোরির এলোন বৃক্ষের নিকটে উপস্থিত হইলেন। তৎকালে কনানীয়েরা সেই দেশে বাস করিত।
7. পরে সদাপ্রভু অব্রামকে দর্শন দিয়া কহিলেন, আমি তোমার বংশকে এই দেশ দিব; আর সেই স্থানে অব্রাম সেই সদাপ্রভুর উদ্দেশে এক যজ্ঞবেদি নির্ম্মাণ করিলেন, যিনি তাঁহাকে দর্শন দিয়াছিলেন।
8. পরে তিনি স্থান ত্যাগ করিয়া পর্ব্বতে গিয়া বৈথেলের পূর্ব্বদিকে আপনার তাম্বু স্থাপন করিলেন; তাহার পশ্চিমে বৈথেল পূর্ব্বদিকে অয় ছিল; তিনি সে স্থানে সদাপ্রভুর উদ্দেশে এক যজ্ঞবেদি নির্ম্মাণ করিলেন, সদাপ্রভুর নামে ডাকিলেন।
9. পরে অব্রাম ক্রমে ক্রমে দক্ষিণে গমন করিলেন।
10. আর দেশে দুর্ভিক্ষ হইল, তখন অব্রাম মিসরে প্রবাস করিতে যাত্রা করিলেন; কেননা কনান দেশে ভারী দুর্ভিক্ষ হইয়াছিল।
11. আর অব্রাম যখন মিসরে প্রবেশ করিতে উদ্যত হন, তখন আপন স্ত্রী সারীকে কহিলেন, দেখ, আমি জানি, তুমি দেখিতে সুন্দরী;
12. কারণ মিস্রীয়েরা যখন তোমাকে দেখিবে, তখন তুমি আমার স্ত্রী বলিয়া আমাকে বধ করিবে, আর তোমাকে জীবিত রাখিবে।
13. বিনয় করি, এই কথা বলিও যে, তুমি আমার ভগিনী; যেন তোমার অনুরোধে আমার মঙ্গল হয়, তোমাহেতু আমার প্রাণ বাঁচে।
14. পরে অব্রাম মিসরে প্রবেশ করিলে মিস্রীয়েরা স্ত্রীকে পরমসুন্দরী দেখিল।
15. অার ফরৌণের অধ্যক্ষগণ তাঁহাকে দেখিয়া ফরৌণের সাক্ষাতে তাঁহার প্রশংসা করিলেন; তাঁহাতে সেই স্ত্রী ফরৌণের বাটীতে নীত হইলেন।
16. আর তাঁহার অনুরোধে তিনি অব্রামকে আদর করিলেন; তাহাতে অব্রাম মেষ, গোরু, গর্দ্দভ এবং দাস দাসী, গর্দ্দভী উষ্ট্র পাইলেন।
17. কিন্তু অব্রামের স্ত্রী সারীর জন্য সদাপ্রভু ফরৌণ তাঁহার পরিবারের উপরে ভারী ভারী উৎপাত ঘটাইলেন।
18. তাহাতে ফরৌণ অব্রামকে ডাকিয়া কহিলেন, আপনি আমার সহিত কি ব্যবহার করিলেন? উনি আপনার স্ত্রী, কথা আমাকে কেন বলেন নাই?
19. উহাঁকে আপনার ভগিনী কেন বলিলেন? আমি উহাঁকে বিবাহ করিতে লইয়াছিলাম। এখন আপনার স্ত্রীকে লইয়া চলিয়া যাউন।
20. তখন ফরৌণ লোকদিগকে তাঁহার বিষয়ে আজ্ঞা দিলেন, আর তাহারা সর্ব্বস্বের সহিত তাঁহাকে তাঁহার স্ত্রীকে বিদায় করিল।
Total 50 Chapters, Current Chapter 12 of Total Chapters 50
×

Alert

×

bengali Letters Keypad References