1. পরে তৈমনীয় ইলীফস উত্তর করিয়া কহিলেন,
2. তোমার সহিত কথা কহিতে চেষ্টা করিলে কি তুমি কাতর হইবে? কিন্তু কথা কহিতে কে নিবৃত্ত হইতে পারে?
3. দেখ, তুমি অনেককে শিক্ষা দিয়াছ, তুমি দুর্ব্বল হস্ত সবল করিয়াছ।
4. তোমার বাক্য পতনোম্মুখ লোককে উঠাইয়াছে, তুমি ভগ্ন হাঁটু সবল করিয়াছ।
5. তবু এক্ষণে [দুঃখ] তোমার নিকটে আসিলে তুমি কাতর হইতেছ; তাহা তোমাকে স্পর্শ করিলে তুমি বিহ্বল হইতেছ।
6. তোমার ঈশ্বরভয় কি তোমার প্রত্যাশা নয়? তোমার পথের সিদ্ধতা কি তোমার আশাভূমি নয়?
7. মনে করিয়া দেখ, কে নির্দ্দোষ হইয়া বিনষ্ট হইয়াছে? কোথায় সরলাচারিগণ উচ্ছিন্ন হইয়াছে?
8. আমি দেখিয়াছি, যাহারা অধর্ম্মরূপ চাষ করে, যাহারা অনিষ্ট-বীজ বপন করে, তাহারা তাহাই কাটে।
9. তাহারা ঈশ্বরের ফুৎকারে বিনষ্ট হয়, তাঁহার কোপের নিশ্বাসে সংহার পায়।
10. সিংহের গর্জ্জন ও মৃগেন্দ্রের হূঙ্কার [রুদ্ধ হয়], তরুণ কেশরিগণের দন্ত ভগ্ন হয়।
11. ভক্ষ্যের অভাবে পশুরাজ প্রাণত্যাগ করে, সিংহীর শিশুগণ ছিন্নভিন্ন হয়।
12. আমার কাছে একটী বাক্য গোপনে পৌঁছিল, আমার কর্ণকুহরে তাহার ঈষৎ শব্দ আসিল।
13. রাত্রিকালীন স্বপ্নদর্শনে যখন ভাবনা জন্মে, মনুষ্য সকল যখন গভীর নিদ্রায় নিমগ্ন হয়,
14. এমন সময়ে আমার ত্রাস ও কম্প হইল, তাহা আমার অস্থি সকল বিকম্পিত করিল।
15. পরে আমার সম্মুখ দিয়া একটা বাতাস চলিয়া গেল, আমার শরীর রোমাঞ্চিত হইল।
16. তাহা দাঁড়াইয়া থাকিল, কিন্তু আমি তাহার আকৃতি নির্ণয় করিতে পারিলাম না; একটী মূর্ত্তি আমার চক্ষুর্গোচর হইল, আমি মৃদু স্বর ও এই বাণী শুনিলাম;
17. “ঈশ্বর অপেক্ষা মর্ত্ত্য কি ধার্ম্মিক হইতে পারে? নিজ নির্ম্মাতা অপেক্ষা মনুষ্য কি শুচি হইতে পারে?
18. দেখ, তিনি আপন দাসগণকেও বিশ্বাস করেন না, আপন দূতগণেতেও ত্রুটির দোষারোপ করেন।
19. তবে যাহারা মৃণ্ময় গৃহে বাস করে, যাহাদের গৃহের ভিত্তিমূল ধূলাতে স্থাপিত, যাহারা কীটের ন্যায় মর্দ্দিত হয়; তাহারা কি?
20. তাহারা প্রভাত ও সায়ংকালের মধ্যে চূর্ণ হয়; তাহারা চিরতরে বিনষ্ট হয়, কেহ চিন্তা করে না।
21. তাহাদের আন্তরিক রজ্জু কি খোলা যায় না? তাহারা অজ্ঞানাবস্থায় মরিয়া যায়।”