1. তৎকালে হিষ্কিয়ের সাংঘাতিক পীড়া হইয়াছিল। আর আমোসের পুত্র যিশাইয় ভাববাদী তাঁহার নিকটে আসিয়া কহিলেন, সদাপ্রভু এই কথা কহেন, তুমি আপন বাটীর ব্যবস্থা করিয়া রাখ, কেননা তোমার মৃত্যু হইবে, তুমি বাঁচিবে না।
2. তখন হিষ্কিয় ভিত্তির দিকে মুখ ফিরাইয়া সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করিয়া কহিলেন,
3. হে সদাপ্রভু, বিনয় করি, তুমি এখন স্মরণ কর; আমি তোমার সাক্ষাতে সত্যে ও একাগ্র চিত্তে চলিয়াছি, এবং তোমার দৃষ্টিতে যাহা ভাল, তাহাই করিয়াছি। আর হিষ্কিয় অতিশয় রোদন করিতে লাগিলেন।
4. তখন যিশাইয়ের নিকটে সদাপ্রভুর এই বাক্য উপস্থিত হইল,
5. যাও, হিষ্কিয়কে বল, তোমার পিতৃপুরুষ দায়ূদের ঈশ্বর সদাপ্রভু এই কথা কহেন, আমি তোমার প্রার্থনা শুনিলাম; আমি তোমার নেত্রজল দেখিলাম; দেখ, আমি তোমার আয়ু পনর বৎসর বৃদ্ধি করিব,
6. এবং অশূরের রাজার হস্ত হইতে তোমাকে ও এই নগরকে উদ্ধার করিব; আমি এই নগরের ঢালস্বরূপ হইব।
7. আর সদাপ্রভু যে কথা বলিয়াছেন, তাহা যে সফল করিবেন, তাহার এই চিহ্ন সদাপ্রভু হইতে আপনাকে দেওয়া যাইবে।
8. দেখ, আহসের সোপানে ছায়া সূর্য্যের সহিত ধাপগুলিতে যত ধাপ নামিয়া গিয়াছে, আমি তাহার দশ ধাপ পিছে ফিরাইয়া দিব। পরে সূর্য্য যত ধাপ নামিয়া গিয়াছে, তাহার দশ ধাপ ফিরিয়া গেল।
9. যিহূদার রাজা হিষ্কিয়ের লিপি; তিনি পীড়িত হইয়া যখন পীড়া হইতে আরোগ্য লাভ করেন, তখনকার লেখা।
10. আমি বলিলাম, আমার আয়ুর মধ্যাহ্নে আমি পাতালের পুরদ্বারে প্রবেশ করিব, আমার বৎসরশ্রেণীর অবশিষ্টাংশে বঞ্চিত হইলাম।
11. আমি বলিলাম, আমি সদাপ্রভুকে জীবিতদের দেশে সদাপ্রভুকে আর দেখিব না, জগন্নিবাসীদের সঙ্গে মনুষ্যকেও আর দেখিব না।
12. মেষপালকের তাম্বুর ন্যায় আমার আবাস উঠাইয়া আমা হইতে স্থানান্তর করা গেল; আমি তন্তুবায়ের ন্যায় আপন আয়ু জড়াইলাম; তিনি তাঁত হইতে আমাকে কাটিয়া ফেলিবেন; তুমি এক দিবারাত্রের মধ্যে আমাকে শেষ করিবে।
13. আমি প্রাতঃকাল পর্য্যন্ত নীরব থাকিলাম; তিনি সিংহের ন্যায় আমার অস্থি সকল চূর্ণ করেন, তুমি এক দিবারাত্রের মধ্যে আমাকে শেষ করিবে।
14. তালচোঁচের ন্যায়, সারসের ন্যায় আমি চিঁচিঁ শব্দ করিতেছিলাম, ঘুঘুর ন্যায় কাতরোক্তি করিতেছিলাম; ঊর্দ্ধদিকে দৃষ্টি করিতে করিতে আমার চক্ষু ক্ষীণ হইল; হে সদাপ্রভু, আমি উপদ্রুত, তুমি আমার প্রতিভূ হও।
15. আমি কি বলিব? তিনি আমাকে কহিলেন, এবং নিজেই সাধন করিলেন; আমার প্রাণের তিক্ততা প্রযুক্ত অবশিষ্ট বৎসর সকল আমি ধীরে ধীরে গমন করিব।
16. হে প্রভু, এই সকলের দ্বারা লোকেরা জীবিত থাকে, কেবল ইহাতেই আমার আত্মার জীবন; আমাকে সুস্থ কর, আমাকে সঞ্জীবিত কর।
17. দেখ, আমার শান্তির নিমিত্তই আমার তিক্ততা, তিক্ততা উপস্থিত হইল; কিন্তু তুমি প্রেমেই আমার প্রাণকে বিনাশকূপ হইতে উদ্ধার করিলে, তুমি ত আমার সমস্ত পাপ তোমার পশ্চাতে ফেলিয়াছ।
18. পাতাল ত তোমার স্তবগান করে না; মৃত্যু তোমার প্রশংসা করে না; গর্ত্তগামীরা তোমার সত্যের অপেক্ষা করে না।
19. জীবিত, জীবিত লোকই তোমার স্তবগান করিবে, আমি যেমন অদ্য করিতেছি; পিতা সন্তানগণকে তোমার সত্য জ্ঞাত করিবে।
20. সদাপ্রভু আমার পরিত্রাণ করিতে [সম্মত]; অতএব আমার সঙ্গীত-মালা আমরা তারযুক্ত যন্ত্রে গান করিব, যত দিন জীবিত থাকি, সদাপ্রভুর গৃহে গাহিব।
21. যিশাইয় বলিয়াছিলেন, ডুমুরফলের চাপ লইয়া ছেঁচিয়া স্ফোটকের উপরে দেওয়া হউক, তাহাতে তিনি বাঁচিবেন।
22. আর হিষ্কিয় বলিয়াছিলেন, আমি যে সদাপ্রভুর গৃহে উঠিব, ইহার চিহ্ন কি?