পবিত্র বাইবেল

গডস গ্রেইস গিফট
যাত্রাপুস্তক

Notes

No Verse Added

যাত্রাপুস্তক অধ্যায় 12

1. আর মিসর দেশে সদাপ্রভু মোশি ও হারোণকে কহিলেন, 2. এই মাস তোমাদের আদি মাস হইবে; বৎসরের সকল মাসের মধ্যে প্রথম হইবে। 3. সমস্ত ইস্রায়েল-মণ্ডলীকে এই কথা বল, তোমরা এই মাসের দশম দিনে তোমাদের পিতৃকুলানুসারে প্রত্যেক গৃহস্থ এক এক বাটীর জন্য এক একটী মেষশাবক লইবে। 4. আর মেষশাবক ভোজন করিতে যদি কাহারও পরিজন অল্প হয়, তবে সে ও তাহার গৃহের নিকটবর্ত্তী প্রতিবাসী প্রাণিগণের সংখ্যানুসারে একটী মেষশাবক লইবে। তোমরা এক এক জনের ভোজনশক্তি অনুসারে মেষশাবকের জন্য গণনা করিবে। 5. তোমাদের সেই শাবকটী নির্দ্দোষ ও প্রথম বৎসরের পুংশাবক হইবে; তোমরা মেষপালের কিম্বা ছাগপালের মধ্য হইতে তাহা লইবে; 6. আর এই মাসের চতুর্দ্দশ দিন পর্য্যন্ত রাখিবে; পরে ইস্রায়েল-মণ্ডলীর সমস্ত সমাজ সন্ধ্যাকালে সেই শাবকটী হনন করিবে। 7. আর তাহারা তাহার কিঞ্চিৎ রক্ত লইবে, এবং যে যে গৃহমধ্যে মেষশাবক ভোজন করিবে, সেই সেই গৃহের দ্বারের দুই বাজুতে ও কপালীতে তাহা লেপিয়া দিবে। 8. পরে সেই রাত্রিতে তাহার মাংস ভোজন করিবে; অগ্নিতে দগ্ধ করিয়া তাড়ীশূন্য রুটী ও তিক্ত শাকের সহিত তাহা ভোজন করিবে। 9. তোমরা তাহার মাংস কাঁচা কিম্বা জলে সিদ্ধ করিয়া খাইও না, কিন্তু অগ্নিতে দগ্ধ করিও; তাহার মুণ্ড, জঙ্ঘা ও অন্তরস্থ ভাগ। 10. আর প্রাতঃকাল পর্য্যন্ত তাহার কিছুই রাখিও না; কিন্তু প্রাতঃকাল পর্য্যন্ত যাহা অবশিষ্ট থাকে, তাহা অগ্নিতে পোড়াইয়া ফেলিও। 11. আর তোমরা এইরূপে তাহা ভোজন করিবে; কটিবন্ধন করিবে, চরণে পাদুকা দিবে, হস্তে যষ্টি লইবে ও ত্বরান্বিত হইয়া তাহা ভোজন করিবে; ইহা সদাপ্রভুর নিস্তারপর্ব্ব। 12. কেননা সেই রাত্রিতে আমি মিসর দেশের মধ্য দিয়া যাইব, এবং মিসর দেশস্থ মনুষ্যের ও পশুর যাবতীয় প্রথমজাতকে আঘাত করিব, এবং মিসরের যাবতীয় দেবের বিচার করিয়া দণ্ড দিব; আমিই সদাপ্রভু। 13. অতএব তোমরা যে যে গৃহে থাক, তোমাদের পক্ষে ঐ রক্ত চিহ্নস্বরূপে সেই সেই গৃহের উপরে থাকিবে; তাহাতে আমি যখন মিসর দেশকে আঘাত করিব, তখন সেই রক্ত দেখিলে তোমাদিগকে ছাড়িয়া অগ্রে যাইব, সংহারের আঘাত তোমাদের উপরে পড়িবে না। 14. আর এই দিন তোমাদের স্মরণীয় হইবে, এবং তোমরা এই দিনকে সদাপ্রভুর উৎসব বলিয়া পালন করিবে; পুরুষানুক্রমে চিরস্থায়ী বিধিমতে এই উৎসব পালন করিবে। 15. তোমরা সাত দিন তাড়ীশূন্য রুটী খাইবে; প্রথম দিনেই আপন আপন গৃহ হইতে তাড়ী দূর করিবে, কেননা যে কেহ প্রথম দিন হইতে সপ্তম দিন পর্য্যন্ত তাড়ীযুক্ত ভক্ষ্য খাইবে, সেই প্রাণী ইস্রায়েল হইতে উচ্ছিন্ন হইবে। 16. আর প্রথম দিনে তোমাদের পবিত্র সভা হইবে, এবং সপ্তম দিনেও তোমাদের পবিত্র সভা হইবে; সেই দুই দিন প্রত্যেক প্রাণীর খাদ্য আয়োজন ব্যতিরেকে অন্য কোন কর্ম্ম করিবে না, কেবল সেই কর্ম্ম করিতে পারিবে। 17. এইরূপে তোমরা তাড়ীশূন্য রুটীর পর্ব্ব পালন করিবে, কেননা এই দিনে আমি তোমাদের বাহিনীদিগকে মিসর দেশ হইতে বাহির করিয়া আনিলাম; অতএব তোমরা পুরুষানুক্রমে চিরস্থায়ী বিধিমতে এই দিন পালন করিবে। 18. তোমরা প্রথম মাসের চতুর্দ্দশ দিনের সন্ধ্যাকাল হইতে একবিংশ দিনের সন্ধ্যাকাল পর্য্যন্ত তাড়ীশূন্য রুটী ভোজন করিও। 19. সাত দিন তোমাদের গৃহে যেন তাড়ীর লেশ না থাকে; কেননা কি প্রবাসী কি দেশজাত, যে কোন প্রাণী তাড়ীমিশ্রিত দ্রব্য খাইবে, সে ইস্রায়েল-মণ্ডলী হইতে উচ্ছিন্ন হইবে। 20. তোমরা তাড়ীযুক্ত কোন দ্রব্য খাইও না; তোমরা আপনাদের সমস্ত বাসস্থানে তাড়ীশূন্য রুটী খাইও। 21. তখন মোশি ইস্রায়েলের সমস্ত প্রাচীনবর্গকে ডাকাইয়া কহিলেন, তোমরা আপন আপন গোষ্ঠী অনুসারে এক একটী মেষশাবক বাহির করিয়া লও, নিস্তারপর্ব্বীয় বলি হনন কর। 22. আর এক আটি এসোব লইয়া ডাবরে স্থিত রক্তে ডুবাইয়া দ্বারের কপালীতে ও দুই বাজুতে ডাবরে স্থিত রক্তের কিঞ্চিৎ লাগাইয়া দিবে, এবং প্রভাত পর্য্যন্ত তোমরা কেহই গৃহদ্বারের বাহিরে যাইবে না। 23. কেননা সদাপ্রভু মিস্রীয়দিগকে আঘাত করিবার জন্য তোমাদের নিকট দিয়া গমন করিবেন, তাহাতে দ্বারের কপালীতে ও দুই বাজুতে সেই রক্ত দেখিলে সদাপ্রভু সেই দ্বার ছাড়িয়া অগ্রে যাইবেন, তোমাদের গৃহে সংহারকর্ত্তাকে প্রবেশ করিয়া আঘাত করিতে দিবেন না। 24. আর তোমরা ও যুগানুক্রমে তোমাদের সন্তানেরা বিধি বলিয়া এই রীতি পালন করিবে। 25. আর সদাপ্রভু আপন প্রতিজ্ঞানুসারে তোমাদিগকে যে দেশ দিবেন, সেই দেশে যখন প্রবিষ্ট হইবে, তখনও এই সেবার অনুষ্ঠান করিবে। 26. আর তোমাদের সন্তানগণ যখন তোমাদিগকে বলিবে, তোমাদের এই সেবার তাৎপর্য্য কি? 27. তোমরা কহিবে, ইহা সদাপ্রভুর উদ্দেশে নিস্তারপর্ব্বীয় যজ্ঞ, মিস্রীয়দিগকে আঘাত করিবার সময়ে তিনি মিসরে ইস্রায়েল-সন্তানদের গৃহ সকল ছাড়িয়া অগ্রে গিয়াছিলেন, আমাদের গৃহ রক্ষা করিয়াছিলেন। তখন লোকেরা মস্তক নমনপূর্ব্বক প্রণিপাত করিল। 28. পরে ইস্রায়েল-সন্তানেরা গিয়া, সদাপ্রভু মোশি ও হারোণকে যেরূপ আজ্ঞা করিয়াছিলেন, সেইরূপ করিল। 29. পরে অর্দ্ধরাত্রে এই ঘটনা হইল, সদাপ্রভু সিংহাসনে উপবিষ্ট ফরৌণের প্রথমজাত সন্তান অবধি কারাকূপস্থ বন্দির প্রথমজাত সন্তান পর্য্যন্ত মিসর দেশস্থ সমস্ত প্রথমজাত সন্তানকে ও পশুদের প্রথমজাত শাবকগণকে নিহনন করিলেন। 30. তাহাতে ফরৌণ ও তাঁহার দাসগণ এবং সমস্ত মিস্রীয় লোক রাত্রিতে উঠিল, এবং মিসরে মহাক্রন্দন হইল; কেননা যে ঘরে কেহ মরে নাই, এমন ঘরই ছিল না। 31. তখন রাত্রিকালেই ফরৌণ মোশি ও হারোণকে ডাকাইয়া কহিলেন, তোমরা উঠ, ইস্রায়েল-সন্তানদিগকে লইয়া আমার প্রজাদের মধ্য হইতে বাহির হও, তোমরা যাও, তোমাদের কথানুসারে সদাপ্রভুর সেবা কর গিয়া। 32. তোমাদের কথানুসারে মেষপাল ও গোপাল সকল সঙ্গে লইয়া চলিয়া যাও, এবং আমাকেও আশীর্ব্বাদ কর। 33. তখন লোকদিগকে শীঘ্র দেশ হইতে বিদায় করণার্থে মিস্রীয়েরা ব্যগ্র হইল; কেননা তাহারা কহিল, আমরা সকলে মারা পড়িলাম। 34. তাহাতে ময়দার তালে তাড়ী মিশাইবার পূর্ব্বে লোকেরা তাহা লইয়া কাঠুয়া সকল আপন আপন বস্ত্রে বাঁধিয়া স্কন্ধে করিল। 35. আর ইস্রায়েল-সন্তানেরা মোশির বাক্যানুসারে কার্য্য করিল; ফলে তাহারা মিস্রীয়দের কাছে রৌপ্যালঙ্কার, স্বর্ণালঙ্কার ও বস্ত্র চাহিল; 36. আর সদাপ্রভু মিস্রীয়দের দৃষ্টিতে তাহাদিগকে অনুগ্রহপাত্র করিলেন, তাই তাহারা যাহা চাহিল, মিস্রীয়েরা তাহাদিগকে তাহাই দিল। এইরূপে তাহারা মিস্রীয়দের ধন হরণ করিল। 37. তখন ইস্রায়েল-সন্তানেরা বালক ছাড়া কমবেশ ছয় লক্ষ পদাতিক পুরুষ রামিষেষ হইতে সুক্কোতে যাত্রা করিল। 38. আর তাহাদের সহিত মিশ্রিত লোকদের মহাজনতা এবং মেষ ও গো, অতি বিস্তর পশু প্রস্থান করিল। 39. পরে তাহারা মিসর হইতে আনীত ছানা ময়দার তাল দিয়া তাড়ীশূন্য পিষ্টক প্রস্তুত করিল, কেননা তাহাতে তাড়ী মিশান হয় নাই, কারণ তাহারা মিসর হইতে বহিষ্কৃত হইয়াছিল সুতরাং বিলম্ব করিতে না পারাতে আপনাদের জন্য খাদ্য দ্রব্য প্রস্তুত করে নাই। 40. ইস্রায়েল-সন্তানেরা চারি শত ত্রিশ বৎসর কাল মিসরে প্রবাস করিয়াছিল সেই চারি শত ত্রিশ বৎসরের শেষে, 41. ঐ দিনে, সদাপ্রভুর সমস্ত বাহিনী মিসর দেশ হইতে বাহির হইল। 42. মিসর দেশ হইতে তাহাদিগকে বাহির করিয়া আনা হেতু এ সদাপ্রভুর উদ্দেশে অতীব পালনীয় রাত্রি। সমস্ত ইস্রায়েল-সন্তানের পুরুষানুক্রমে এই রাত্রি সদাপ্রভুর উদ্দেশে অতীব পালনীয়। 43. আর সদাপ্রভু মোশি ও হারোণকে কহিলেন, নিস্তারপর্ব্বীয় বলির বিধি এই; অন্য জাতীয় কোন লোক তাহা ভোজন করিবে না। 44. কিন্তু কোন ব্যক্তির যে দাস রৌপ্য দ্বারা ক্রীত হইয়াছে, সে যদি ছিন্নত্বক হয়, তবে খাইতে পাইবে। 45. প্রবাসী কিম্বা বেতনজীবী তাহা খাইতে পাইবে না। 46. তোমরা এক গৃহমধ্যে তাহা ভোজন করিও; সেই মাংসের কিছুই গৃহের বাহিরে লইয়া যাইও না; এবং তাহার এক অস্থিও ভগ্ন করিও না। 47. সমস্ত ইস্রায়েল-মণ্ডলী ইহা পালন করিবে। 48. আর তোমার সহিত প্রবাসী কোন বিদেশী লোক যদি সদাপ্রভুর উদ্দেশে নিস্তারপর্ব্ব পালন করিতে চাহে, তবে সে নিজ পুরুষ পরিবারের সহিত ছিন্নত্বক হইয়া ইহা পালনার্থে আগমন করুক, সে দেশজাত লোকের তুল্য হইবে; কিন্তু অচ্ছিন্নত্বক কোন লোক তাহা ভোজন করিবে না। 49. দেশজাত লোকের নিমিত্তে ও তোমাদের মধ্যে প্রবাসকারী বিদেশীয় লোকের নিমিত্তে একই বিধি হইবে। 50. সমস্ত ইস্রায়েল-সন্তান সেইরূপ করিল, সদাপ্রভু মোশি ও হারোণকে যাহা আজ্ঞা করিয়াছিলেন, তদনুসারেই করিল। 51. এইরূপে সদাপ্রভু সেই দিন বাহিনীক্রমে ইস্রায়েল-সন্তানদিগকে মিসর দেশ হইতে বাহির করিয়া আনিলেন।
1. আর মিসর দেশে সদাপ্রভু মোশি ও হারোণকে কহিলেন, .::. 2. এই মাস তোমাদের আদি মাস হইবে; বৎসরের সকল মাসের মধ্যে প্রথম হইবে। .::. 3. সমস্ত ইস্রায়েল-মণ্ডলীকে এই কথা বল, তোমরা এই মাসের দশম দিনে তোমাদের পিতৃকুলানুসারে প্রত্যেক গৃহস্থ এক এক বাটীর জন্য এক একটী মেষশাবক লইবে। .::. 4. আর মেষশাবক ভোজন করিতে যদি কাহারও পরিজন অল্প হয়, তবে সে ও তাহার গৃহের নিকটবর্ত্তী প্রতিবাসী প্রাণিগণের সংখ্যানুসারে একটী মেষশাবক লইবে। তোমরা এক এক জনের ভোজনশক্তি অনুসারে মেষশাবকের জন্য গণনা করিবে। .::. 5. তোমাদের সেই শাবকটী নির্দ্দোষ ও প্রথম বৎসরের পুংশাবক হইবে; তোমরা মেষপালের কিম্বা ছাগপালের মধ্য হইতে তাহা লইবে; .::. 6. আর এই মাসের চতুর্দ্দশ দিন পর্য্যন্ত রাখিবে; পরে ইস্রায়েল-মণ্ডলীর সমস্ত সমাজ সন্ধ্যাকালে সেই শাবকটী হনন করিবে। .::. 7. আর তাহারা তাহার কিঞ্চিৎ রক্ত লইবে, এবং যে যে গৃহমধ্যে মেষশাবক ভোজন করিবে, সেই সেই গৃহের দ্বারের দুই বাজুতে ও কপালীতে তাহা লেপিয়া দিবে। .::. 8. পরে সেই রাত্রিতে তাহার মাংস ভোজন করিবে; অগ্নিতে দগ্ধ করিয়া তাড়ীশূন্য রুটী ও তিক্ত শাকের সহিত তাহা ভোজন করিবে। .::. 9. তোমরা তাহার মাংস কাঁচা কিম্বা জলে সিদ্ধ করিয়া খাইও না, কিন্তু অগ্নিতে দগ্ধ করিও; তাহার মুণ্ড, জঙ্ঘা ও অন্তরস্থ ভাগ। .::. 10. আর প্রাতঃকাল পর্য্যন্ত তাহার কিছুই রাখিও না; কিন্তু প্রাতঃকাল পর্য্যন্ত যাহা অবশিষ্ট থাকে, তাহা অগ্নিতে পোড়াইয়া ফেলিও। .::. 11. আর তোমরা এইরূপে তাহা ভোজন করিবে; কটিবন্ধন করিবে, চরণে পাদুকা দিবে, হস্তে যষ্টি লইবে ও ত্বরান্বিত হইয়া তাহা ভোজন করিবে; ইহা সদাপ্রভুর নিস্তারপর্ব্ব। .::. 12. কেননা সেই রাত্রিতে আমি মিসর দেশের মধ্য দিয়া যাইব, এবং মিসর দেশস্থ মনুষ্যের ও পশুর যাবতীয় প্রথমজাতকে আঘাত করিব, এবং মিসরের যাবতীয় দেবের বিচার করিয়া দণ্ড দিব; আমিই সদাপ্রভু। .::. 13. অতএব তোমরা যে যে গৃহে থাক, তোমাদের পক্ষে ঐ রক্ত চিহ্নস্বরূপে সেই সেই গৃহের উপরে থাকিবে; তাহাতে আমি যখন মিসর দেশকে আঘাত করিব, তখন সেই রক্ত দেখিলে তোমাদিগকে ছাড়িয়া অগ্রে যাইব, সংহারের আঘাত তোমাদের উপরে পড়িবে না। .::. 14. আর এই দিন তোমাদের স্মরণীয় হইবে, এবং তোমরা এই দিনকে সদাপ্রভুর উৎসব বলিয়া পালন করিবে; পুরুষানুক্রমে চিরস্থায়ী বিধিমতে এই উৎসব পালন করিবে। .::. 15. তোমরা সাত দিন তাড়ীশূন্য রুটী খাইবে; প্রথম দিনেই আপন আপন গৃহ হইতে তাড়ী দূর করিবে, কেননা যে কেহ প্রথম দিন হইতে সপ্তম দিন পর্য্যন্ত তাড়ীযুক্ত ভক্ষ্য খাইবে, সেই প্রাণী ইস্রায়েল হইতে উচ্ছিন্ন হইবে। .::. 16. আর প্রথম দিনে তোমাদের পবিত্র সভা হইবে, এবং সপ্তম দিনেও তোমাদের পবিত্র সভা হইবে; সেই দুই দিন প্রত্যেক প্রাণীর খাদ্য আয়োজন ব্যতিরেকে অন্য কোন কর্ম্ম করিবে না, কেবল সেই কর্ম্ম করিতে পারিবে। .::. 17. এইরূপে তোমরা তাড়ীশূন্য রুটীর পর্ব্ব পালন করিবে, কেননা এই দিনে আমি তোমাদের বাহিনীদিগকে মিসর দেশ হইতে বাহির করিয়া আনিলাম; অতএব তোমরা পুরুষানুক্রমে চিরস্থায়ী বিধিমতে এই দিন পালন করিবে। .::. 18. তোমরা প্রথম মাসের চতুর্দ্দশ দিনের সন্ধ্যাকাল হইতে একবিংশ দিনের সন্ধ্যাকাল পর্য্যন্ত তাড়ীশূন্য রুটী ভোজন করিও। .::. 19. সাত দিন তোমাদের গৃহে যেন তাড়ীর লেশ না থাকে; কেননা কি প্রবাসী কি দেশজাত, যে কোন প্রাণী তাড়ীমিশ্রিত দ্রব্য খাইবে, সে ইস্রায়েল-মণ্ডলী হইতে উচ্ছিন্ন হইবে। .::. 20. তোমরা তাড়ীযুক্ত কোন দ্রব্য খাইও না; তোমরা আপনাদের সমস্ত বাসস্থানে তাড়ীশূন্য রুটী খাইও। .::. 21. তখন মোশি ইস্রায়েলের সমস্ত প্রাচীনবর্গকে ডাকাইয়া কহিলেন, তোমরা আপন আপন গোষ্ঠী অনুসারে এক একটী মেষশাবক বাহির করিয়া লও, নিস্তারপর্ব্বীয় বলি হনন কর। .::. 22. আর এক আটি এসোব লইয়া ডাবরে স্থিত রক্তে ডুবাইয়া দ্বারের কপালীতে ও দুই বাজুতে ডাবরে স্থিত রক্তের কিঞ্চিৎ লাগাইয়া দিবে, এবং প্রভাত পর্য্যন্ত তোমরা কেহই গৃহদ্বারের বাহিরে যাইবে না। .::. 23. কেননা সদাপ্রভু মিস্রীয়দিগকে আঘাত করিবার জন্য তোমাদের নিকট দিয়া গমন করিবেন, তাহাতে দ্বারের কপালীতে ও দুই বাজুতে সেই রক্ত দেখিলে সদাপ্রভু সেই দ্বার ছাড়িয়া অগ্রে যাইবেন, তোমাদের গৃহে সংহারকর্ত্তাকে প্রবেশ করিয়া আঘাত করিতে দিবেন না। .::. 24. আর তোমরা ও যুগানুক্রমে তোমাদের সন্তানেরা বিধি বলিয়া এই রীতি পালন করিবে। .::. 25. আর সদাপ্রভু আপন প্রতিজ্ঞানুসারে তোমাদিগকে যে দেশ দিবেন, সেই দেশে যখন প্রবিষ্ট হইবে, তখনও এই সেবার অনুষ্ঠান করিবে। .::. 26. আর তোমাদের সন্তানগণ যখন তোমাদিগকে বলিবে, তোমাদের এই সেবার তাৎপর্য্য কি? .::. 27. তোমরা কহিবে, ইহা সদাপ্রভুর উদ্দেশে নিস্তারপর্ব্বীয় যজ্ঞ, মিস্রীয়দিগকে আঘাত করিবার সময়ে তিনি মিসরে ইস্রায়েল-সন্তানদের গৃহ সকল ছাড়িয়া অগ্রে গিয়াছিলেন, আমাদের গৃহ রক্ষা করিয়াছিলেন। তখন লোকেরা মস্তক নমনপূর্ব্বক প্রণিপাত করিল। .::. 28. পরে ইস্রায়েল-সন্তানেরা গিয়া, সদাপ্রভু মোশি ও হারোণকে যেরূপ আজ্ঞা করিয়াছিলেন, সেইরূপ করিল। .::. 29. পরে অর্দ্ধরাত্রে এই ঘটনা হইল, সদাপ্রভু সিংহাসনে উপবিষ্ট ফরৌণের প্রথমজাত সন্তান অবধি কারাকূপস্থ বন্দির প্রথমজাত সন্তান পর্য্যন্ত মিসর দেশস্থ সমস্ত প্রথমজাত সন্তানকে ও পশুদের প্রথমজাত শাবকগণকে নিহনন করিলেন। .::. 30. তাহাতে ফরৌণ ও তাঁহার দাসগণ এবং সমস্ত মিস্রীয় লোক রাত্রিতে উঠিল, এবং মিসরে মহাক্রন্দন হইল; কেননা যে ঘরে কেহ মরে নাই, এমন ঘরই ছিল না। .::. 31. তখন রাত্রিকালেই ফরৌণ মোশি ও হারোণকে ডাকাইয়া কহিলেন, তোমরা উঠ, ইস্রায়েল-সন্তানদিগকে লইয়া আমার প্রজাদের মধ্য হইতে বাহির হও, তোমরা যাও, তোমাদের কথানুসারে সদাপ্রভুর সেবা কর গিয়া। .::. 32. তোমাদের কথানুসারে মেষপাল ও গোপাল সকল সঙ্গে লইয়া চলিয়া যাও, এবং আমাকেও আশীর্ব্বাদ কর। .::. 33. তখন লোকদিগকে শীঘ্র দেশ হইতে বিদায় করণার্থে মিস্রীয়েরা ব্যগ্র হইল; কেননা তাহারা কহিল, আমরা সকলে মারা পড়িলাম। .::. 34. তাহাতে ময়দার তালে তাড়ী মিশাইবার পূর্ব্বে লোকেরা তাহা লইয়া কাঠুয়া সকল আপন আপন বস্ত্রে বাঁধিয়া স্কন্ধে করিল। .::. 35. আর ইস্রায়েল-সন্তানেরা মোশির বাক্যানুসারে কার্য্য করিল; ফলে তাহারা মিস্রীয়দের কাছে রৌপ্যালঙ্কার, স্বর্ণালঙ্কার ও বস্ত্র চাহিল; .::. 36. আর সদাপ্রভু মিস্রীয়দের দৃষ্টিতে তাহাদিগকে অনুগ্রহপাত্র করিলেন, তাই তাহারা যাহা চাহিল, মিস্রীয়েরা তাহাদিগকে তাহাই দিল। এইরূপে তাহারা মিস্রীয়দের ধন হরণ করিল। .::. 37. তখন ইস্রায়েল-সন্তানেরা বালক ছাড়া কমবেশ ছয় লক্ষ পদাতিক পুরুষ রামিষেষ হইতে সুক্কোতে যাত্রা করিল। .::. 38. আর তাহাদের সহিত মিশ্রিত লোকদের মহাজনতা এবং মেষ ও গো, অতি বিস্তর পশু প্রস্থান করিল। .::. 39. পরে তাহারা মিসর হইতে আনীত ছানা ময়দার তাল দিয়া তাড়ীশূন্য পিষ্টক প্রস্তুত করিল, কেননা তাহাতে তাড়ী মিশান হয় নাই, কারণ তাহারা মিসর হইতে বহিষ্কৃত হইয়াছিল সুতরাং বিলম্ব করিতে না পারাতে আপনাদের জন্য খাদ্য দ্রব্য প্রস্তুত করে নাই। .::. 40. ইস্রায়েল-সন্তানেরা চারি শত ত্রিশ বৎসর কাল মিসরে প্রবাস করিয়াছিল সেই চারি শত ত্রিশ বৎসরের শেষে, .::. 41. ঐ দিনে, সদাপ্রভুর সমস্ত বাহিনী মিসর দেশ হইতে বাহির হইল। .::. 42. মিসর দেশ হইতে তাহাদিগকে বাহির করিয়া আনা হেতু এ সদাপ্রভুর উদ্দেশে অতীব পালনীয় রাত্রি। সমস্ত ইস্রায়েল-সন্তানের পুরুষানুক্রমে এই রাত্রি সদাপ্রভুর উদ্দেশে অতীব পালনীয়। .::. 43. আর সদাপ্রভু মোশি ও হারোণকে কহিলেন, নিস্তারপর্ব্বীয় বলির বিধি এই; অন্য জাতীয় কোন লোক তাহা ভোজন করিবে না। .::. 44. কিন্তু কোন ব্যক্তির যে দাস রৌপ্য দ্বারা ক্রীত হইয়াছে, সে যদি ছিন্নত্বক হয়, তবে খাইতে পাইবে। .::. 45. প্রবাসী কিম্বা বেতনজীবী তাহা খাইতে পাইবে না। .::. 46. তোমরা এক গৃহমধ্যে তাহা ভোজন করিও; সেই মাংসের কিছুই গৃহের বাহিরে লইয়া যাইও না; এবং তাহার এক অস্থিও ভগ্ন করিও না। .::. 47. সমস্ত ইস্রায়েল-মণ্ডলী ইহা পালন করিবে। .::. 48. আর তোমার সহিত প্রবাসী কোন বিদেশী লোক যদি সদাপ্রভুর উদ্দেশে নিস্তারপর্ব্ব পালন করিতে চাহে, তবে সে নিজ পুরুষ পরিবারের সহিত ছিন্নত্বক হইয়া ইহা পালনার্থে আগমন করুক, সে দেশজাত লোকের তুল্য হইবে; কিন্তু অচ্ছিন্নত্বক কোন লোক তাহা ভোজন করিবে না। .::. 49. দেশজাত লোকের নিমিত্তে ও তোমাদের মধ্যে প্রবাসকারী বিদেশীয় লোকের নিমিত্তে একই বিধি হইবে। .::. 50. সমস্ত ইস্রায়েল-সন্তান সেইরূপ করিল, সদাপ্রভু মোশি ও হারোণকে যাহা আজ্ঞা করিয়াছিলেন, তদনুসারেই করিল। .::. 51. এইরূপে সদাপ্রভু সেই দিন বাহিনীক্রমে ইস্রায়েল-সন্তানদিগকে মিসর দেশ হইতে বাহির করিয়া আনিলেন। .::.
  • যাত্রাপুস্তক অধ্যায় 1  
  • যাত্রাপুস্তক অধ্যায় 2  
  • যাত্রাপুস্তক অধ্যায় 3  
  • যাত্রাপুস্তক অধ্যায় 4  
  • যাত্রাপুস্তক অধ্যায় 5  
  • যাত্রাপুস্তক অধ্যায় 6  
  • যাত্রাপুস্তক অধ্যায় 7  
  • যাত্রাপুস্তক অধ্যায় 8  
  • যাত্রাপুস্তক অধ্যায় 9  
  • যাত্রাপুস্তক অধ্যায় 10  
  • যাত্রাপুস্তক অধ্যায় 11  
  • যাত্রাপুস্তক অধ্যায় 12  
  • যাত্রাপুস্তক অধ্যায় 13  
  • যাত্রাপুস্তক অধ্যায় 14  
  • যাত্রাপুস্তক অধ্যায় 15  
  • যাত্রাপুস্তক অধ্যায় 16  
  • যাত্রাপুস্তক অধ্যায় 17  
  • যাত্রাপুস্তক অধ্যায় 18  
  • যাত্রাপুস্তক অধ্যায় 19  
  • যাত্রাপুস্তক অধ্যায় 20  
  • যাত্রাপুস্তক অধ্যায় 21  
  • যাত্রাপুস্তক অধ্যায় 22  
  • যাত্রাপুস্তক অধ্যায় 23  
  • যাত্রাপুস্তক অধ্যায় 24  
  • যাত্রাপুস্তক অধ্যায় 25  
  • যাত্রাপুস্তক অধ্যায় 26  
  • যাত্রাপুস্তক অধ্যায় 27  
  • যাত্রাপুস্তক অধ্যায় 28  
  • যাত্রাপুস্তক অধ্যায় 29  
  • যাত্রাপুস্তক অধ্যায় 30  
  • যাত্রাপুস্তক অধ্যায় 31  
  • যাত্রাপুস্তক অধ্যায় 32  
  • যাত্রাপুস্তক অধ্যায় 33  
  • যাত্রাপুস্তক অধ্যায় 34  
  • যাত্রাপুস্তক অধ্যায় 35  
  • যাত্রাপুস্তক অধ্যায় 36  
  • যাত্রাপুস্তক অধ্যায় 37  
  • যাত্রাপুস্তক অধ্যায় 38  
  • যাত্রাপুস্তক অধ্যায় 39  
  • যাত্রাপুস্তক অধ্যায় 40  
×

Alert

×

bengali Letters Keypad References