পবিত্র বাইবেল

গডস গ্রেইস গিফট
দ্বিতীয় বিবরণ

Notes

No Verse Added

দ্বিতীয় বিবরণ অধ্যায় 28

1. আমি তোমাকে অদ্য যে সকল আজ্ঞা আদেশ করিতেছি, যত্নপূর্ব্বক সেই সকল পালন করিবার জন্য যদি তুমি আপন ঈশ্বর সদাপ্রভুর রবে মনোযোগ সহকারে কর্ণপাত কর, তবে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু পৃথিবীস্থ সমস্ত জাতির উপরে তোমাকে উন্নত করিবেন; 2. আর তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর রবে কর্ণপাত করিলে এই সকল আশীর্ব্বাদ তোমার উপরে বর্ত্তিবে ও তোমাকে আশ্রয় করিবে। 3. তুমি নগরে আশীর্ব্বাদযুক্ত হইবে ও ক্ষেত্রে আশীর্ব্বাদযুক্ত হইবে। 4. তোমার শরীরের ফল, তোমার ভূমির ফল, তোমার পশুর ফল, তোমার গোরুদের বৎস ও তোমার মেষীদের শাবক আশীর্ব্বাদযুক্ত হইবে। 5. তোমার চুপড়ি ও তোমার ময়দার কাঠুয়া আশীর্ব্বাদযুক্ত হইবে। 6. ভিতরে আসিবার সময়ে তুমি আশীর্ব্বাদযুক্ত হইবে, এবং বাহিরে যাইবার সময়ে তুমি আশীর্ব্বাদযুক্ত হইবে। 7. তোমার যে শত্রুগণ তোমার বিরুদ্ধে উঠে, তাহাদিগকে সদাপ্রভু তোমার সম্মুখে আঘাত করাইবেন; তাহারা এক পথ দিয়া তোমার বিরুদ্ধে আসিবে, কিন্তু সাত পথ দিয়া তোমার সম্মুখ হইতে পলায়ন করিবে। 8. সদাপ্রভু আজ্ঞা করিয়া তোমার গোলাঘর সম্বন্ধে ও তুমি যে কোন কার্য্যে হস্তক্ষেপ কর, তৎসম্বন্ধে আশীর্ব্বাদকে তোমার সহচর করিবেন; এবং তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে যে দেশ দিতেছেন, তথায় তোমাকে আশীর্ব্বাদ করিবেন। 9. সদাপ্রভু আপন দিব্যানুসারে তোমাকে আপন পবিত্র প্রজা বলিয়া স্থাপন করিবেন; কেবল তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর আজ্ঞা পালন ও তাঁহার পথে গমন করিতে হইবে। 10. আর পৃথিবীস্থ সমস্ত জাতি দেখিতে পাইবে যে, তোমার উপরে সদাপ্রভুর নাম কীর্ত্তিত হইয়াছে, এবং তাহারা তোমা হইতে ভীত হইবে। 11. আর সদাপ্রভু তোমাকে যে দেশ দিতে তোমার পিতৃপুরুষদের কাছে দিব্য করিয়াছেন, সেই দেশে তিনি মঙ্গলার্থেই তোমার শরীরের ফলে, তোমার পশুর ফলে ও তোমার ভূমির ফলে তোমাকে ঐশ্বর্য্যশালী করিবেন। 12. যথাকালে তোমার ভূমির জন্য বৃষ্টি দিতে ও তোমার হস্তের সমস্ত কর্ম্মে আশীর্ব্বাদ করিতে সদাপ্রভু আপনার আকাশরূপ মঙ্গল-ভাণ্ডার খুলিয়া দিবেন; এবং তুমি অনেক জাতিকে ঋণ দিবে, কিন্তু আপনি ঋণ লইবে না। 13. আর সদাপ্রভু তোমাকে মস্তকস্বরূপ করিবেন, পুচ্ছস্বরূপ করিবেন না; তুমি অবনত না হইয়া কেবল উন্নত হইবে; কেবল তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর এই যে সকল আজ্ঞা যত্নপূর্ব্বক পালন করিতে আমি তোমাকে অদ্য আদেশ করিতেছি, এই সকলেতে কর্ণপাত করিতে হইবে; 14. আর অদ্য আমি তোমাদিগকে যে সকল কথা আজ্ঞা করিতেছি, অন্য দেবগণের সেবা করণার্থে তাহাদের অনুগামী হইবার জন্য তোমাকে সেই সকল কথার দক্ষিণে কি বামে ফিরিতে হইবে না। 15. কিন্তু যদি তুমি আপন ঈশ্বর সদাপ্রভুর রবে কর্ণপাত না কর, আমি অদ্য তোমাকে তাঁহার যে সমস্ত আজ্ঞা ও বিধি আদেশ করিতেছি, যত্নপূর্ব্বক সেই সকল পালন না কর, তবে এই সমস্ত অভিশাপ তোমার প্রতি বর্ত্তিবে ও তোমাকে আশ্রয় করিবে। 16. তুমি নগরে শাপগ্রস্ত হইবে ও ক্ষেত্রে শাপগ্রস্ত হইবে। 17. তোমার চুপড়ি ও তোমার ময়দার কাঠুয়া শাপগ্রস্ত হইবে। 18. তোমার শরীরের ফল, তোমার ভূমির ফল এবং তোমার গোরুর বৎস ও তোমার মেষীদের শাবক শাপগ্রস্ত হইবে। 19. ভিতরে আসিবার সময়ে তুমি শাপগ্রস্ত হইবে, ও বাহিরে যাইবার সময়ে তুমি শাপগ্রস্ত হইবে। 20. যে পর্য্যন্ত তোমার সংহার ও হঠাৎ বিনাশ না হয়, তাবৎ যে কোন কার্য্যে তুমি হস্তক্ষেপ কর, সেই কার্য্যে সদাপ্রভু তোমার উপরে অভিশাপ, উদ্বেগ ও ভর্ৎসনা প্রেরণ করিবেন; ইহার কারণ তোমার দুষ্ট কার্য্য সকল, যদ্দ্বারা তুমি আমাকে পরিত্যাগ করিয়াছ। 21. তুমি যে দেশ অধিকার করিতে যাইতেছ, সেই দেশ হইতে যাবৎ উচ্ছিন্ন না হও, তাবৎ সদাপ্রভু তোমাকে মহামারীর আশ্রয় করিবেন। 22. সদাপ্রভু ক্ষয়রোগ, জ্বর, জ্বালা, প্রচণ্ড উত্তাপ ও খড়গ এবং শস্যের শোষ ও ম্লানি দ্বারা তোমাকে আঘাত করিবেন; তোমার বিনাশ না হওয়া পর্য্যন্ত সে সকল তোমার অনুধাবন করিবে। 23. আর তোমার মস্তকের উপরিস্থিত আকাশ পিত্তল, ও নিম্নস্থিত ভূমি লৌহস্বরূপ হইবে। 24. সদাপ্রভু তোমার দেশে জলের পরিবর্ত্তে ধূলি ও বালি বর্ষণ করিবেন; যে পর্য্যন্ত তোমার বিনাশ না হয়, তাবৎ তাহা আকাশ হইতে নামিয়া তোমার উপরে পড়িবে। 25. সদাপ্রভু তোমার শত্রুদের সম্মুখে তোমাকে আঘাত করাইবেন; তুমি এক পথ দিয়া তাহাদের বিরুদ্ধে যাইবে, কিন্তু সাত পথ দিয়া তাহাদের সম্মুখ হইতে পলায়ন করিবে; এবং পৃথিবীর সমস্ত রাজ্যের মধ্যে ভাসিয়া বেড়াইবে। 26. আর তোমার শব খেচর পক্ষীসমূহের ও ভূচর পশুগণের ভক্ষ্য হইবে; কেহ তাহাদিগকে খেদাইয়া দিবে না। 27. সদাপ্রভু তোমাকে মিস্রীয় স্ফোটক, এবং মহামারীর স্ফোটক, পামা ও খুজলি, এই সকল রোগ দ্বারা এমন আঘাত করিবেন যে, তুমি আরোগ্য পাইতে পারিবে না। 28. সদাপ্রভু উন্মাদ, অন্ধতা ও চিত্তের স্তব্ধতাদ্বারা তোমাকে আঘাত করিবেন। 29. অন্ধ যেমন অন্ধকারে হাঁতড়িয়া বেড়ায়, তদ্রূপ তুমি মধ্যাহ্নকালে হাঁতড়িয়া বেড়াইবে, ও আপন পথে কৃতকার্য্য হইবে না, এবং সর্ব্বদা কেবল উপদ্রুত ও লুন্ঠিত হইবে, কেহ তোমাকে নিস্তার করিবে না। 30. তোমার প্রতি কন্যার বাগ্‌দান হইবে, কিন্তু অন্য পুরুষ তাহাতে উপগত হইবে; তুমি গৃহ নির্ম্মাণ করিবে, কিন্তু তাহাতে বাস করিতে পাইবে না; দ্রাক্ষাক্ষেত্র প্রস্তুত করিবে, কিন্তু তাহার ফল ভোগ করিবে না। 31. তোমার গোরু তোমার সম্মুখে হত হইবে, আর তুমি তাহার মাংস ভোজন করিতে পাইবে না; তোমার গর্দ্দভ তোমার সাক্ষাতে সবলে অপহৃত হইবে, তাহা তোমাকে ফিরাইয়া দেওয়া যাইবে না; তোমার মেষপাল তোমার শত্রুগণকে দত্ত হইবে, তোমার পক্ষে নিস্তারকর্ত্তা কেহ থাকিবে না। 32. তোমার পুত্রকন্যাগণ অন্য এক জাতিকে দত্ত হইবে, ও সমস্ত দিন তাহাদের অপেক্ষায় চাহিতে চাহিতে তোমার চক্ষু ক্ষীণ হইবে, এবং তোমার হস্তের কোন শক্তি থাকিবে না। 33. তোমার অজ্ঞাত এক জাতি তোমার ভূমির ফল ও তোমার শ্রমের সমস্ত ফল ভোগ করিবে; এবং তুমি সর্ব্বদা কেবল উপদ্রুত ও চূর্ণ হইবে; 34. আর তোমার চক্ষু যাহা দেখিবে, তৎপ্রযুক্ত তুমি উন্মত্ত হইবে। 35. সদাপ্রভু তোমার জানু, জংঘা ও পায়ের তলা হইতে মাথার তালু পর্য্যন্ত অপ্রতীকার্য্য দুষ্ট স্ফোটক দ্বারা আঘাত করিবেন। 36. সদাপ্রভু তোমাকে এবং যে রাজাকে তুমি আপনার উপরে নিযুক্ত করিবে, তাহাকে তোমার অজ্ঞাত এবং তোমার পিতৃপুরুষদের অজ্ঞাত এক জাতির কাছে লইয়া যাইবেন; সেইস্থানে তুমি অন্য দেবগণের, কাষ্ঠ ও প্রস্তরের, সেবা করিবে। 37. আর সদাপ্রভু তোমাকে যে সকল জাতির মধ্যে লইয়া যাইবেন, তাহাদের কাছে তুমি বিস্ময়ের, প্রবাদের ও উপহাসের আস্পদ হইবে। 38. তুমি বহু বীজ বহিয়া ক্ষেত্রে লইয়া যাইবে, কিন্তু অল্প সংগ্রহ করিবে; কেননা পঙ্গপাল তাহা বিনষ্ট করিবে। 39. তুমি দ্রাক্ষাক্ষেত্র প্রস্তুত করিয়া তাহার পাইট করিবে, কিন্তু দ্রাক্ষারস পান করিতে কি দ্রাক্ষাফল চয়ন করিতে পাইবে না; কেননা কীটে তাহা খাইয়া ফেলিবে। 40. তোমার সকল অঞ্চলে জিতবৃক্ষ হইবে, কিন্তু তুমি তৈল মর্দ্দন করিতে পাইবে না; কেননা তোমার জিতবৃক্ষের ফল ঝরিয়া পড়িবে। 41. তুমি পুত্রকন্যাগণের জন্ম দিবে, কিন্তু তাহারা তোমার হইবে না; কেননা তাহারা বন্দি হইয়া যাইবে। 42. পঙ্গপাল তোমার সমস্ত বৃক্ষ ও ভূমির ফল অধিকার করিবে। 43. তোমার মধ্যবর্ত্তী বিদেশী তোমা হইতে উত্তর উত্তর উন্নত হইবে, ও তুমি উত্তর উত্তর অবনত হইবে। 44. সে তোমাকে ঋণ দিবে, কিন্তু তুমি তাহাকে ঋণ দিবে না; সে মস্তক স্বরূপ হইবে, ও তুমি পুচ্ছস্বরূপ হইবে। 45. এই সমস্ত অভিশাপ তোমার উপরে আসিবে, তোমার অনুধাবন করিয়া তোমার বিনাশ পর্য্যন্ত তোমাকে আশ্রয় করিবে; কেননা তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে যে সকল আজ্ঞা ও বিধি দিয়াছেন, তুমি সে সকল পালনার্থে তাঁহার রবে কর্ণপাত করিলে না। 46. এ সমস্ত তোমার ও যুগে যুগে তোমার বংশের উপরে চিহ্ন ও অদ্ভুত লক্ষণস্বরূপ থাকিবে। 47. যেহেতুক সর্ব্বপ্রকার সম্পত্তির বাহুল্যপ্রযুক্ত তুমি আনন্দপূর্ব্বক প্রফুল্লচিত্তে আপন ঈশ্বর সদাপ্রভুর দাসত্ব করিতে না; 48. এই জন্য সদাপ্রভু তোমার বিরুদ্ধে যে শত্রুগণকে পাঠাইবেন, তুমি ক্ষুধায়, তৃষ্ণায়, উলঙ্গতায়, ও সকল বিষয়ের অভাব ভোগ করিতে করিতে তাহাদের দাসত্ব করিবে; এবং যে পর্য্যন্ত তিনি তোমার বিনাশ না করেন, সে পর্য্যন্ত তোমার গ্রীবাতে লৌহের যোঁয়ালি দিয়া রাখিবেন। 49. সদাপ্রভু তোমার বিরুদ্ধে অতি দূর হইতে, পৃথিবীর প্রান্ত হইতে এক জাতিকে আনিবেন; যেমন ঈগল পক্ষী উড়িয়া আইসে, [সে সেইরূপ আসিবে]; সেই জাতির ভাষা তুমি বুঝিতে পারিবে না। 50. সেই জাতি ভয়ঙ্কর-বদন, সে বৃদ্ধের মুখাপেক্ষা করিবে না, ও বালকের প্রতি কৃপা করিবে না। 51. আর যে পর্য্যন্ত তোমার বিনাশ না হইবে, তাবৎ সে তোমার পশুর ফল ও তোমার ভূমির ফল ভোজন করিবে; যাবৎ সে তোমার বিনাশ সাধন না করিবে, তাবৎ তোমার জন্য শস্য, দ্রাক্ষারস কিম্বা তৈল, তোমার গোরুর বৎস কিম্বা তোমার মেষীর শাবক অবশিষ্ট রাখিবে না। 52. আর তোমার সমস্ত দেশে যে সকল উচ্চ ও সুরক্ষিত প্রাচীরে তুমি বিশ্বাস করিতে, সে সকল যাবৎ ভূমিসাৎ না হইবে, তাবৎ সে তোমার সমস্ত নগর-দ্বারে তোমাকে অবরোধ করিবে; তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর দত্ত তোমার সমস্ত দেশে সমস্ত নগরদ্বারে সে তোমাকে অবরোধ করিবে। 53. আর যখন তোমার শত্রুগণ কর্ত্তৃক তুমি অবরুদ্ধ ও ক্লিষ্ট হইবে, তখন তুমি আপন শরীরের ফল, তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর দত্ত নিজ পুত্রকন্যাদিগের মাংস, ভোজন করিবে। 54. যখন সমস্ত নগরদ্বারে শত্রুগণকর্ত্তৃক তুমি অবরুদ্ধ ও ক্লিষ্ট হইবে, তখন তোমার মধ্যে যে পুরুষ কোমল ও অতিশয় সুখভোগী, আপন ভ্রাতার, বক্ষঃস্থিতা ভার্য্যার ও অবশিষ্ট সন্তানদের প্রতি তাহার এমন চক্ষু টাটাইবে যে, 55. সে তাহাদের কাহাকেও আপন সন্তানদের মাংসের কিছুই দিবে না; তাহার কিছুমাত্র অবশিষ্ট না থাকা প্রযুক্ত সে তাহাদিগকে খাইবে। 56. যখন সমস্ত নগর-দ্বারে শত্রুগণকর্ত্তৃক তুমি অবরুদ্ধ ও ক্লিষ্ট হইবে, তখন যে স্ত্রী কোমলতা ও সুখভোগ প্রযুক্ত আপন পদতল ভূমিতে রাখিতে সাহস করিত না, তোমার মধ্যবর্ত্তিনী এমন কোমলাঙ্গী ও সুখভোগিনী মহিলার চক্ষু আপন বক্ষঃস্থিত স্বামীর, আপন পুত্রের ও কন্যার উপরে, এমন কি, 57. আপনার দুই পায়ের মধ্য হইতে নির্গত গর্ভপুষ্পের ও আপনার প্রসবিত শিশুদের উপরে টাটাইবে; কারণ সমস্তের অভাব প্রযুক্ত সে ইহাদিগকে গোপনে খাইবে। 58. তুমি যদি এই পুস্তকে লিখিত ব্যবস্থার সমস্ত কথা যত্নপূর্ব্বক পালন না কর; এইরূপে যদি “তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু” এই গৌরবান্বিত ও ভয়াবহ নামকে ভয় না কর; 59. তবে সদাপ্রভু তোমাকে ও তোমার বংশকে আশ্চর্য্য আঘাত করিবেন; ফলতঃ বহুকালস্থায়ী মহাঘাত ও বহুকালস্থায়ী ব্যথাজনক রোগ দ্বারা আঘাত করিবেন। 60. আর তুমি যাহা হইতে উদ্বিগ্ন হইতে, সেই মিস্রীয় সমস্ত ব্যাধি আবার তোমার উপরে আনিবেন; সে সকল তোমার সঙ্গের সাথী হইবে। 61. আর‍ও যাহা এই ব্যবস্থাপুস্তকে লিখিত নাই, এমন প্রত্যেক রোগ ও আঘাত সদাপ্রভু তোমার বিনাশ না হওয়া পর্য্যন্ত তোমার উপরে আনিবেন। 62. তাহাতে আকাশের তারার ন্যায় বহুসংখ্যক ছিলে যে তোমরা, তোমার অল্পসংখ্যক অবশিষ্ট থাকিবে; কেননা তুমি আপন ঈশ্বর সদাপ্রভুর রবে কর্ণপাত করিতে না। 63. আর তোমাদের মঙ্গল ও বৃদ্ধি করিতে যেমন সদাপ্রভু তোমাদের সম্বন্ধে আনন্দ করিতেন, সেইরূপ তোমাদের বিনাশ ও লোপ করিতে সদাপ্রভু তোমাদের সম্বন্ধে আনন্দ করিবেন; এবং তুমি যে দেশ অধিকার করিতে যাইতেছ, তথা হইতে তোমরা উন্মূলিত হইবে। 64. আর সদাপ্রভু তোমাকে পৃথিবীর এক প্রান্ত হইতে অপর প্রান্ত পর্য্যন্ত সমস্ত জাতির মধ্যে ছিন্নিভন্ন করিবেন; সেই স্থানে তুমি আপনার ও আপন পিতৃপুরুষদের অজ্ঞাত অন্য দেবগণের, কাষ্ঠ ও প্রস্তরের, সেবা করিবে। 65. আর তুমি সেই জাতিগণের মধ্যে কিছু সুখ পাইবে না, ও তোমার পদতলের জন্য বিশ্রামস্থান থাকিবে না, কিন্তু সদাপ্রভু সেই স্থানে তোমাকে হৃৎকম্প, চক্ষুর ক্ষীণতা ও প্রাণের শুষ্কতা দিবেন। 66. আর তোমার জীবন তোমার দৃষ্টিতে সংশয়ে দোলায়মান হইবে, এবং তুমি দিবারাত্র শঙ্কা করিবে, ও আপন জীবনের বিষয়ে তোমার বিশ্বাস থাকিবে না। 67. তুমি হৃদয়ে যে শঙ্কা করিবে ও চক্ষুতে যে ভয়ঙ্কর দৃশ্য দেখিবে, তৎপ্রযুক্ত প্রাতঃকালে বলিবে, হায় হায়, কখন্‌ সন্ধ্যা হইবে? এবং সন্ধ্যাকালে বলিবে, হায় হায়, কখন্‌ প্রাতঃকাল হইবে? 68. আর যে পথের বিষয়ে আমি তোমাকে বলিয়াছি, তুমি তাহা আর দেখিবে না, সদাপ্রভু সেই মিসর দেশের পথে জাহাজে করিয়া তোমাকে পুনর্ব্বার লইয়া যাইবেন; এবং সেই স্থানে তোমরা দাসদাসীরূপে আপন শত্রুদের কাছে বিক্রীত হইতে চাহিবে; কিন্তু কেহ তোমাদিগকে ক্রয় করিবে না।
1. আমি তোমাকে অদ্য যে সকল আজ্ঞা আদেশ করিতেছি, যত্নপূর্ব্বক সেই সকল পালন করিবার জন্য যদি তুমি আপন ঈশ্বর সদাপ্রভুর রবে মনোযোগ সহকারে কর্ণপাত কর, তবে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু পৃথিবীস্থ সমস্ত জাতির উপরে তোমাকে উন্নত করিবেন; .::. 2. আর তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর রবে কর্ণপাত করিলে এই সকল আশীর্ব্বাদ তোমার উপরে বর্ত্তিবে ও তোমাকে আশ্রয় করিবে। .::. 3. তুমি নগরে আশীর্ব্বাদযুক্ত হইবে ও ক্ষেত্রে আশীর্ব্বাদযুক্ত হইবে। .::. 4. তোমার শরীরের ফল, তোমার ভূমির ফল, তোমার পশুর ফল, তোমার গোরুদের বৎস ও তোমার মেষীদের শাবক আশীর্ব্বাদযুক্ত হইবে। .::. 5. তোমার চুপড়ি ও তোমার ময়দার কাঠুয়া আশীর্ব্বাদযুক্ত হইবে। .::. 6. ভিতরে আসিবার সময়ে তুমি আশীর্ব্বাদযুক্ত হইবে, এবং বাহিরে যাইবার সময়ে তুমি আশীর্ব্বাদযুক্ত হইবে। .::. 7. তোমার যে শত্রুগণ তোমার বিরুদ্ধে উঠে, তাহাদিগকে সদাপ্রভু তোমার সম্মুখে আঘাত করাইবেন; তাহারা এক পথ দিয়া তোমার বিরুদ্ধে আসিবে, কিন্তু সাত পথ দিয়া তোমার সম্মুখ হইতে পলায়ন করিবে। .::. 8. সদাপ্রভু আজ্ঞা করিয়া তোমার গোলাঘর সম্বন্ধে ও তুমি যে কোন কার্য্যে হস্তক্ষেপ কর, তৎসম্বন্ধে আশীর্ব্বাদকে তোমার সহচর করিবেন; এবং তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে যে দেশ দিতেছেন, তথায় তোমাকে আশীর্ব্বাদ করিবেন। .::. 9. সদাপ্রভু আপন দিব্যানুসারে তোমাকে আপন পবিত্র প্রজা বলিয়া স্থাপন করিবেন; কেবল তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর আজ্ঞা পালন ও তাঁহার পথে গমন করিতে হইবে। .::. 10. আর পৃথিবীস্থ সমস্ত জাতি দেখিতে পাইবে যে, তোমার উপরে সদাপ্রভুর নাম কীর্ত্তিত হইয়াছে, এবং তাহারা তোমা হইতে ভীত হইবে। .::. 11. আর সদাপ্রভু তোমাকে যে দেশ দিতে তোমার পিতৃপুরুষদের কাছে দিব্য করিয়াছেন, সেই দেশে তিনি মঙ্গলার্থেই তোমার শরীরের ফলে, তোমার পশুর ফলে ও তোমার ভূমির ফলে তোমাকে ঐশ্বর্য্যশালী করিবেন। .::. 12. যথাকালে তোমার ভূমির জন্য বৃষ্টি দিতে ও তোমার হস্তের সমস্ত কর্ম্মে আশীর্ব্বাদ করিতে সদাপ্রভু আপনার আকাশরূপ মঙ্গল-ভাণ্ডার খুলিয়া দিবেন; এবং তুমি অনেক জাতিকে ঋণ দিবে, কিন্তু আপনি ঋণ লইবে না। .::. 13. আর সদাপ্রভু তোমাকে মস্তকস্বরূপ করিবেন, পুচ্ছস্বরূপ করিবেন না; তুমি অবনত না হইয়া কেবল উন্নত হইবে; কেবল তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর এই যে সকল আজ্ঞা যত্নপূর্ব্বক পালন করিতে আমি তোমাকে অদ্য আদেশ করিতেছি, এই সকলেতে কর্ণপাত করিতে হইবে; .::. 14. আর অদ্য আমি তোমাদিগকে যে সকল কথা আজ্ঞা করিতেছি, অন্য দেবগণের সেবা করণার্থে তাহাদের অনুগামী হইবার জন্য তোমাকে সেই সকল কথার দক্ষিণে কি বামে ফিরিতে হইবে না। .::. 15. কিন্তু যদি তুমি আপন ঈশ্বর সদাপ্রভুর রবে কর্ণপাত না কর, আমি অদ্য তোমাকে তাঁহার যে সমস্ত আজ্ঞা ও বিধি আদেশ করিতেছি, যত্নপূর্ব্বক সেই সকল পালন না কর, তবে এই সমস্ত অভিশাপ তোমার প্রতি বর্ত্তিবে ও তোমাকে আশ্রয় করিবে। .::. 16. তুমি নগরে শাপগ্রস্ত হইবে ও ক্ষেত্রে শাপগ্রস্ত হইবে। .::. 17. তোমার চুপড়ি ও তোমার ময়দার কাঠুয়া শাপগ্রস্ত হইবে। .::. 18. তোমার শরীরের ফল, তোমার ভূমির ফল এবং তোমার গোরুর বৎস ও তোমার মেষীদের শাবক শাপগ্রস্ত হইবে। .::. 19. ভিতরে আসিবার সময়ে তুমি শাপগ্রস্ত হইবে, ও বাহিরে যাইবার সময়ে তুমি শাপগ্রস্ত হইবে। .::. 20. যে পর্য্যন্ত তোমার সংহার ও হঠাৎ বিনাশ না হয়, তাবৎ যে কোন কার্য্যে তুমি হস্তক্ষেপ কর, সেই কার্য্যে সদাপ্রভু তোমার উপরে অভিশাপ, উদ্বেগ ও ভর্ৎসনা প্রেরণ করিবেন; ইহার কারণ তোমার দুষ্ট কার্য্য সকল, যদ্দ্বারা তুমি আমাকে পরিত্যাগ করিয়াছ। .::. 21. তুমি যে দেশ অধিকার করিতে যাইতেছ, সেই দেশ হইতে যাবৎ উচ্ছিন্ন না হও, তাবৎ সদাপ্রভু তোমাকে মহামারীর আশ্রয় করিবেন। .::. 22. সদাপ্রভু ক্ষয়রোগ, জ্বর, জ্বালা, প্রচণ্ড উত্তাপ ও খড়গ এবং শস্যের শোষ ও ম্লানি দ্বারা তোমাকে আঘাত করিবেন; তোমার বিনাশ না হওয়া পর্য্যন্ত সে সকল তোমার অনুধাবন করিবে। .::. 23. আর তোমার মস্তকের উপরিস্থিত আকাশ পিত্তল, ও নিম্নস্থিত ভূমি লৌহস্বরূপ হইবে। .::. 24. সদাপ্রভু তোমার দেশে জলের পরিবর্ত্তে ধূলি ও বালি বর্ষণ করিবেন; যে পর্য্যন্ত তোমার বিনাশ না হয়, তাবৎ তাহা আকাশ হইতে নামিয়া তোমার উপরে পড়িবে। .::. 25. সদাপ্রভু তোমার শত্রুদের সম্মুখে তোমাকে আঘাত করাইবেন; তুমি এক পথ দিয়া তাহাদের বিরুদ্ধে যাইবে, কিন্তু সাত পথ দিয়া তাহাদের সম্মুখ হইতে পলায়ন করিবে; এবং পৃথিবীর সমস্ত রাজ্যের মধ্যে ভাসিয়া বেড়াইবে। .::. 26. আর তোমার শব খেচর পক্ষীসমূহের ও ভূচর পশুগণের ভক্ষ্য হইবে; কেহ তাহাদিগকে খেদাইয়া দিবে না। .::. 27. সদাপ্রভু তোমাকে মিস্রীয় স্ফোটক, এবং মহামারীর স্ফোটক, পামা ও খুজলি, এই সকল রোগ দ্বারা এমন আঘাত করিবেন যে, তুমি আরোগ্য পাইতে পারিবে না। .::. 28. সদাপ্রভু উন্মাদ, অন্ধতা ও চিত্তের স্তব্ধতাদ্বারা তোমাকে আঘাত করিবেন। .::. 29. অন্ধ যেমন অন্ধকারে হাঁতড়িয়া বেড়ায়, তদ্রূপ তুমি মধ্যাহ্নকালে হাঁতড়িয়া বেড়াইবে, ও আপন পথে কৃতকার্য্য হইবে না, এবং সর্ব্বদা কেবল উপদ্রুত ও লুন্ঠিত হইবে, কেহ তোমাকে নিস্তার করিবে না। .::. 30. তোমার প্রতি কন্যার বাগ্‌দান হইবে, কিন্তু অন্য পুরুষ তাহাতে উপগত হইবে; তুমি গৃহ নির্ম্মাণ করিবে, কিন্তু তাহাতে বাস করিতে পাইবে না; দ্রাক্ষাক্ষেত্র প্রস্তুত করিবে, কিন্তু তাহার ফল ভোগ করিবে না। .::. 31. তোমার গোরু তোমার সম্মুখে হত হইবে, আর তুমি তাহার মাংস ভোজন করিতে পাইবে না; তোমার গর্দ্দভ তোমার সাক্ষাতে সবলে অপহৃত হইবে, তাহা তোমাকে ফিরাইয়া দেওয়া যাইবে না; তোমার মেষপাল তোমার শত্রুগণকে দত্ত হইবে, তোমার পক্ষে নিস্তারকর্ত্তা কেহ থাকিবে না। .::. 32. তোমার পুত্রকন্যাগণ অন্য এক জাতিকে দত্ত হইবে, ও সমস্ত দিন তাহাদের অপেক্ষায় চাহিতে চাহিতে তোমার চক্ষু ক্ষীণ হইবে, এবং তোমার হস্তের কোন শক্তি থাকিবে না। .::. 33. তোমার অজ্ঞাত এক জাতি তোমার ভূমির ফল ও তোমার শ্রমের সমস্ত ফল ভোগ করিবে; এবং তুমি সর্ব্বদা কেবল উপদ্রুত ও চূর্ণ হইবে; .::. 34. আর তোমার চক্ষু যাহা দেখিবে, তৎপ্রযুক্ত তুমি উন্মত্ত হইবে। .::. 35. সদাপ্রভু তোমার জানু, জংঘা ও পায়ের তলা হইতে মাথার তালু পর্য্যন্ত অপ্রতীকার্য্য দুষ্ট স্ফোটক দ্বারা আঘাত করিবেন। .::. 36. সদাপ্রভু তোমাকে এবং যে রাজাকে তুমি আপনার উপরে নিযুক্ত করিবে, তাহাকে তোমার অজ্ঞাত এবং তোমার পিতৃপুরুষদের অজ্ঞাত এক জাতির কাছে লইয়া যাইবেন; সেইস্থানে তুমি অন্য দেবগণের, কাষ্ঠ ও প্রস্তরের, সেবা করিবে। .::. 37. আর সদাপ্রভু তোমাকে যে সকল জাতির মধ্যে লইয়া যাইবেন, তাহাদের কাছে তুমি বিস্ময়ের, প্রবাদের ও উপহাসের আস্পদ হইবে। .::. 38. তুমি বহু বীজ বহিয়া ক্ষেত্রে লইয়া যাইবে, কিন্তু অল্প সংগ্রহ করিবে; কেননা পঙ্গপাল তাহা বিনষ্ট করিবে। .::. 39. তুমি দ্রাক্ষাক্ষেত্র প্রস্তুত করিয়া তাহার পাইট করিবে, কিন্তু দ্রাক্ষারস পান করিতে কি দ্রাক্ষাফল চয়ন করিতে পাইবে না; কেননা কীটে তাহা খাইয়া ফেলিবে। .::. 40. তোমার সকল অঞ্চলে জিতবৃক্ষ হইবে, কিন্তু তুমি তৈল মর্দ্দন করিতে পাইবে না; কেননা তোমার জিতবৃক্ষের ফল ঝরিয়া পড়িবে। .::. 41. তুমি পুত্রকন্যাগণের জন্ম দিবে, কিন্তু তাহারা তোমার হইবে না; কেননা তাহারা বন্দি হইয়া যাইবে। .::. 42. পঙ্গপাল তোমার সমস্ত বৃক্ষ ও ভূমির ফল অধিকার করিবে। .::. 43. তোমার মধ্যবর্ত্তী বিদেশী তোমা হইতে উত্তর উত্তর উন্নত হইবে, ও তুমি উত্তর উত্তর অবনত হইবে। .::. 44. সে তোমাকে ঋণ দিবে, কিন্তু তুমি তাহাকে ঋণ দিবে না; সে মস্তক স্বরূপ হইবে, ও তুমি পুচ্ছস্বরূপ হইবে। .::. 45. এই সমস্ত অভিশাপ তোমার উপরে আসিবে, তোমার অনুধাবন করিয়া তোমার বিনাশ পর্য্যন্ত তোমাকে আশ্রয় করিবে; কেননা তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে যে সকল আজ্ঞা ও বিধি দিয়াছেন, তুমি সে সকল পালনার্থে তাঁহার রবে কর্ণপাত করিলে না। .::. 46. এ সমস্ত তোমার ও যুগে যুগে তোমার বংশের উপরে চিহ্ন ও অদ্ভুত লক্ষণস্বরূপ থাকিবে। .::. 47. যেহেতুক সর্ব্বপ্রকার সম্পত্তির বাহুল্যপ্রযুক্ত তুমি আনন্দপূর্ব্বক প্রফুল্লচিত্তে আপন ঈশ্বর সদাপ্রভুর দাসত্ব করিতে না; .::. 48. এই জন্য সদাপ্রভু তোমার বিরুদ্ধে যে শত্রুগণকে পাঠাইবেন, তুমি ক্ষুধায়, তৃষ্ণায়, উলঙ্গতায়, ও সকল বিষয়ের অভাব ভোগ করিতে করিতে তাহাদের দাসত্ব করিবে; এবং যে পর্য্যন্ত তিনি তোমার বিনাশ না করেন, সে পর্য্যন্ত তোমার গ্রীবাতে লৌহের যোঁয়ালি দিয়া রাখিবেন। .::. 49. সদাপ্রভু তোমার বিরুদ্ধে অতি দূর হইতে, পৃথিবীর প্রান্ত হইতে এক জাতিকে আনিবেন; যেমন ঈগল পক্ষী উড়িয়া আইসে, [সে সেইরূপ আসিবে]; সেই জাতির ভাষা তুমি বুঝিতে পারিবে না। .::. 50. সেই জাতি ভয়ঙ্কর-বদন, সে বৃদ্ধের মুখাপেক্ষা করিবে না, ও বালকের প্রতি কৃপা করিবে না। .::. 51. আর যে পর্য্যন্ত তোমার বিনাশ না হইবে, তাবৎ সে তোমার পশুর ফল ও তোমার ভূমির ফল ভোজন করিবে; যাবৎ সে তোমার বিনাশ সাধন না করিবে, তাবৎ তোমার জন্য শস্য, দ্রাক্ষারস কিম্বা তৈল, তোমার গোরুর বৎস কিম্বা তোমার মেষীর শাবক অবশিষ্ট রাখিবে না। .::. 52. আর তোমার সমস্ত দেশে যে সকল উচ্চ ও সুরক্ষিত প্রাচীরে তুমি বিশ্বাস করিতে, সে সকল যাবৎ ভূমিসাৎ না হইবে, তাবৎ সে তোমার সমস্ত নগর-দ্বারে তোমাকে অবরোধ করিবে; তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর দত্ত তোমার সমস্ত দেশে সমস্ত নগরদ্বারে সে তোমাকে অবরোধ করিবে। .::. 53. আর যখন তোমার শত্রুগণ কর্ত্তৃক তুমি অবরুদ্ধ ও ক্লিষ্ট হইবে, তখন তুমি আপন শরীরের ফল, তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর দত্ত নিজ পুত্রকন্যাদিগের মাংস, ভোজন করিবে। .::. 54. যখন সমস্ত নগরদ্বারে শত্রুগণকর্ত্তৃক তুমি অবরুদ্ধ ও ক্লিষ্ট হইবে, তখন তোমার মধ্যে যে পুরুষ কোমল ও অতিশয় সুখভোগী, আপন ভ্রাতার, বক্ষঃস্থিতা ভার্য্যার ও অবশিষ্ট সন্তানদের প্রতি তাহার এমন চক্ষু টাটাইবে যে, .::. 55. সে তাহাদের কাহাকেও আপন সন্তানদের মাংসের কিছুই দিবে না; তাহার কিছুমাত্র অবশিষ্ট না থাকা প্রযুক্ত সে তাহাদিগকে খাইবে। .::. 56. যখন সমস্ত নগর-দ্বারে শত্রুগণকর্ত্তৃক তুমি অবরুদ্ধ ও ক্লিষ্ট হইবে, তখন যে স্ত্রী কোমলতা ও সুখভোগ প্রযুক্ত আপন পদতল ভূমিতে রাখিতে সাহস করিত না, তোমার মধ্যবর্ত্তিনী এমন কোমলাঙ্গী ও সুখভোগিনী মহিলার চক্ষু আপন বক্ষঃস্থিত স্বামীর, আপন পুত্রের ও কন্যার উপরে, এমন কি, .::. 57. আপনার দুই পায়ের মধ্য হইতে নির্গত গর্ভপুষ্পের ও আপনার প্রসবিত শিশুদের উপরে টাটাইবে; কারণ সমস্তের অভাব প্রযুক্ত সে ইহাদিগকে গোপনে খাইবে। .::. 58. তুমি যদি এই পুস্তকে লিখিত ব্যবস্থার সমস্ত কথা যত্নপূর্ব্বক পালন না কর; এইরূপে যদি “তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু” এই গৌরবান্বিত ও ভয়াবহ নামকে ভয় না কর; .::. 59. তবে সদাপ্রভু তোমাকে ও তোমার বংশকে আশ্চর্য্য আঘাত করিবেন; ফলতঃ বহুকালস্থায়ী মহাঘাত ও বহুকালস্থায়ী ব্যথাজনক রোগ দ্বারা আঘাত করিবেন। .::. 60. আর তুমি যাহা হইতে উদ্বিগ্ন হইতে, সেই মিস্রীয় সমস্ত ব্যাধি আবার তোমার উপরে আনিবেন; সে সকল তোমার সঙ্গের সাথী হইবে। .::. 61. আর‍ও যাহা এই ব্যবস্থাপুস্তকে লিখিত নাই, এমন প্রত্যেক রোগ ও আঘাত সদাপ্রভু তোমার বিনাশ না হওয়া পর্য্যন্ত তোমার উপরে আনিবেন। .::. 62. তাহাতে আকাশের তারার ন্যায় বহুসংখ্যক ছিলে যে তোমরা, তোমার অল্পসংখ্যক অবশিষ্ট থাকিবে; কেননা তুমি আপন ঈশ্বর সদাপ্রভুর রবে কর্ণপাত করিতে না। .::. 63. আর তোমাদের মঙ্গল ও বৃদ্ধি করিতে যেমন সদাপ্রভু তোমাদের সম্বন্ধে আনন্দ করিতেন, সেইরূপ তোমাদের বিনাশ ও লোপ করিতে সদাপ্রভু তোমাদের সম্বন্ধে আনন্দ করিবেন; এবং তুমি যে দেশ অধিকার করিতে যাইতেছ, তথা হইতে তোমরা উন্মূলিত হইবে। .::. 64. আর সদাপ্রভু তোমাকে পৃথিবীর এক প্রান্ত হইতে অপর প্রান্ত পর্য্যন্ত সমস্ত জাতির মধ্যে ছিন্নিভন্ন করিবেন; সেই স্থানে তুমি আপনার ও আপন পিতৃপুরুষদের অজ্ঞাত অন্য দেবগণের, কাষ্ঠ ও প্রস্তরের, সেবা করিবে। .::. 65. আর তুমি সেই জাতিগণের মধ্যে কিছু সুখ পাইবে না, ও তোমার পদতলের জন্য বিশ্রামস্থান থাকিবে না, কিন্তু সদাপ্রভু সেই স্থানে তোমাকে হৃৎকম্প, চক্ষুর ক্ষীণতা ও প্রাণের শুষ্কতা দিবেন। .::. 66. আর তোমার জীবন তোমার দৃষ্টিতে সংশয়ে দোলায়মান হইবে, এবং তুমি দিবারাত্র শঙ্কা করিবে, ও আপন জীবনের বিষয়ে তোমার বিশ্বাস থাকিবে না। .::. 67. তুমি হৃদয়ে যে শঙ্কা করিবে ও চক্ষুতে যে ভয়ঙ্কর দৃশ্য দেখিবে, তৎপ্রযুক্ত প্রাতঃকালে বলিবে, হায় হায়, কখন্‌ সন্ধ্যা হইবে? এবং সন্ধ্যাকালে বলিবে, হায় হায়, কখন্‌ প্রাতঃকাল হইবে? .::. 68. আর যে পথের বিষয়ে আমি তোমাকে বলিয়াছি, তুমি তাহা আর দেখিবে না, সদাপ্রভু সেই মিসর দেশের পথে জাহাজে করিয়া তোমাকে পুনর্ব্বার লইয়া যাইবেন; এবং সেই স্থানে তোমরা দাসদাসীরূপে আপন শত্রুদের কাছে বিক্রীত হইতে চাহিবে; কিন্তু কেহ তোমাদিগকে ক্রয় করিবে না। .::.
  • দ্বিতীয় বিবরণ অধ্যায় 1  
  • দ্বিতীয় বিবরণ অধ্যায় 2  
  • দ্বিতীয় বিবরণ অধ্যায় 3  
  • দ্বিতীয় বিবরণ অধ্যায় 4  
  • দ্বিতীয় বিবরণ অধ্যায় 5  
  • দ্বিতীয় বিবরণ অধ্যায় 6  
  • দ্বিতীয় বিবরণ অধ্যায় 7  
  • দ্বিতীয় বিবরণ অধ্যায় 8  
  • দ্বিতীয় বিবরণ অধ্যায় 9  
  • দ্বিতীয় বিবরণ অধ্যায় 10  
  • দ্বিতীয় বিবরণ অধ্যায় 11  
  • দ্বিতীয় বিবরণ অধ্যায় 12  
  • দ্বিতীয় বিবরণ অধ্যায় 13  
  • দ্বিতীয় বিবরণ অধ্যায় 14  
  • দ্বিতীয় বিবরণ অধ্যায় 15  
  • দ্বিতীয় বিবরণ অধ্যায় 16  
  • দ্বিতীয় বিবরণ অধ্যায় 17  
  • দ্বিতীয় বিবরণ অধ্যায় 18  
  • দ্বিতীয় বিবরণ অধ্যায় 19  
  • দ্বিতীয় বিবরণ অধ্যায় 20  
  • দ্বিতীয় বিবরণ অধ্যায় 21  
  • দ্বিতীয় বিবরণ অধ্যায় 22  
  • দ্বিতীয় বিবরণ অধ্যায় 23  
  • দ্বিতীয় বিবরণ অধ্যায় 24  
  • দ্বিতীয় বিবরণ অধ্যায় 25  
  • দ্বিতীয় বিবরণ অধ্যায় 26  
  • দ্বিতীয় বিবরণ অধ্যায় 27  
  • দ্বিতীয় বিবরণ অধ্যায় 28  
  • দ্বিতীয় বিবরণ অধ্যায় 29  
  • দ্বিতীয় বিবরণ অধ্যায় 30  
  • দ্বিতীয় বিবরণ অধ্যায় 31  
  • দ্বিতীয় বিবরণ অধ্যায় 32  
  • দ্বিতীয় বিবরণ অধ্যায় 33  
  • দ্বিতীয় বিবরণ অধ্যায় 34  
×

Alert

×

bengali Letters Keypad References