যোব অধ্যায় 37
1. ইহাতেও আমার হৃদয় কম্পমান হইতেছে, স্বস্থানে থাকিয়া দুপ্ দুপ্ করিতেছে।
2. শুন শুন, ঐ তাঁহার রবের নির্ঘোষ, ঐ তাঁহার মুখ হইতে নির্গত স্বর।
3. তিনি সমস্ত আকাশের নীচে তাহা পাঠান, পৃথিবীর অন্ত পর্য্যন্ত আপন বিদ্যুৎ চালান।
4. তৎপশ্চাতে এক রব নাদ করে, তিনি আপন মহত্ত্বের রবে বজ্রনাদ করেন; তাঁহার রব শুনা যায়, তিনি ঐ সকল রোধ করেন না।
5. ঈশ্বর স্বীয় রবে আশ্চর্য্যরূপ গর্জ্জন করেন, আমাদের বোধের অগম্য মহৎ মহৎ কার্য্য করেন।
6. ফলে তিনি হিমানীকে বলেন, পৃথিবীতে পড়, সামান্য বৃষ্টিকেও তাহা বলেন, তাঁহার পরাক্রমের বৃষ্টিকেও বলেন।
7. তিনি মনুষ্যমাত্রের হস্ত মুদ্রাঙ্কিত করেন, যেন তাঁহার নির্ম্মিত সকল মনুষ্যই জ্ঞান পায়।
8. তখন পশুগণ আশ্রয়-স্থানে প্রবেশ করে, আপন আপন গহ্বরে থাকে।
9. [দক্ষিণস্থ] কক্ষ হইতে ঝটিকা আইসে, উত্তর হইতে শীত আইসে।
10. ঈশ্বরের নিঃশ্বাস হইতে নীহার জন্মে, এবং বিস্তারিত জল সঙ্কুচিত হইয়া পড়ে।
11. আরও ঈশ্বর ঘন মেঘে জল ভরেন, আপন বিজলির মেঘ বিস্তার করেন।
12. তাঁহার পরিচালনে তাহা ঘূরে, যেন তাহারা তাঁহার আজ্ঞানুসারে কার্য্য করে, সমস্ত ভূমণ্ডলেই যেন করে।
13. তিনি কখনও দণ্ডের, কখনও নিজ দেশের নিমিত্ত, কখনও বা দয়ার নিমিত্ত এই সকল ঘটান।
14. হে ইয়োব, আপনি ইহাতে কর্ণপাত করুন, স্থির থাকুন, ঈশ্বরের আশ্চর্য্য কার্য্য সকল বিবেচনা করুন।
15. আপনি কি জানেন, ঈশ্বর কিরূপে এই সকলের উপরে ভার রাখেন, আর আপন মেঘের দীপ্তি বিরাজমান করেন?
16. আপনি কি মেঘমালার দোলন জানেন? পরম জ্ঞানীর আশ্চর্য্য ক্রিয়া সকল জানেন?
17. যখন দক্ষিণ বায়ুতে পৃথিবী স্তব্ধ হয়, তখন তোমার বস্ত্র কেমন উষ্ণ হয়?
18. আপনি কি তাঁহার সঙ্গে আকাশমণ্ডল বিস্তার করিয়াছেন, যাহা ছাঁচে ঢালা দর্পণের ন্যায় দৃঢ়?
19. আমাদিগকে জানান, তাঁহাকে কি বলিব? কেননা আমরা অন্ধকার হেতু বাক্য বিন্যাস করিতে পারি না।
20. তাঁহাকে কি বলা যাইবে যে, আমি কথা কহিব? কেহ কি কবলিত হইতে ইচ্ছা করিবে?
21. এখন মনুষ্য দীপ্তি দেখিতে পারে না, যখন তাহা আকাশে উজ্জ্বল হয়, যখন বায়ু বহিয়া তাহা পরিষ্কার করিয়াছে।
22. উত্তরদিক্ হইতে কাঞ্চনাভা আইসে, ঈশ্বরের ঊর্দ্ধে ভয়ানক প্রভা থাকে।
23. সর্ব্বশক্তিমান্! তিনি আমাদের বোধের অগম্য; তিনি পরাক্রমে মহান্, তিনি ন্যায়বিচার ও প্রচুর ধর্ম্মগুণ বিপরীত করেন না।
24. এ কারণ মনুষ্যগণ তাঁহাকে ভয় করে, তিনি বিজ্ঞচিত্তদের মুখাপেক্ষা করেন না।