রাজাবলি ১ অধ্যায় 8
1. পরে শলোমন দায়ূদ-নগর অর্থাৎ সিয়োন হইতে সদাপ্রভুর নিয়ম-সিন্দুক উঠাইয়া আনিবার জন্য ইস্রায়েলের প্রাচীনগণকে ও সমস্ত বংশপতিকে, অর্থাৎ ইস্রায়েল-সন্তানগণের পিতৃকুলাধ্যক্ষদিগকে, যিরূশালেমে শলোমন রাজার নিকটে একত্র করিলেন।
2. তাহাতে এথানীম মাসে, অর্থাৎ সপ্তম মাসে, উৎসব সময়ে ইস্রায়েলের সমস্ত লোক শলোমন রাজার নিকটে একত্র হইল।
3. পরে ইস্রায়েলের সমস্ত প্রাচীনবর্গ উপস্থিত হইলে যাজকগণ সিন্দুকটী উঠাইল।
4. আর তাহারা সদাপ্রভুর সিন্দুক, সমাগম-তাম্বু ও তাম্বুর মধ্যস্থিত সমস্ত পবিত্র পাত্র উঠাইয়া আনিল; যাজকেরা ও লেবীয়েরা এই সকল উঠাইয়া আনিল।
5. আর শলোমন রাজা এবং তাঁহার কাছে সমাগত সমস্ত ইস্রায়েলমণ্ডলী তাঁহার সহিত সিন্দুকের সম্মুখে থাকিয়া অনেক মেষ ও গো বলিদান করিলেন; সে সমস্ত বাহুল্যপ্রযুক্ত অসংখ্য ও অগণ্য ছিল।
6. পরে যাজকেরা সদাপ্রভুর নিয়ম-সিন্দুক লইয়া গিয়া স্বস্থানে, গৃহের অন্তর্গৃহে, মহাপবিত্র স্থানে, দুই করূবের পক্ষের নীচে স্থাপন করিল।
7. সেই করূবেরা সিন্দুকের স্থানের উপরে পক্ষ বিস্তার করিয়া রহিল, আর ঊর্দ্ধে করূবেরা সিন্দুক ও তাহার দুই বহন-দণ্ড আচ্ছাদন করিয়া রহিল।
8. সেই দুই বহন-দণ্ড এমন লম্বা ছিল যে, তাহার অগ্রভাগ অন্তর্গৃহের সম্মুখে পবিত্র স্থান হইতে দৃষ্ট হইত, তথাপি তাহা বাহিরে দৃষ্ট হইত না; অদ্য পর্য্যন্ত তাহা সেই স্থানে আছে।
9. সিন্দুকের মধ্যে আর কিছু ছিল না, কেবল সেই দুইখানা প্রস্তরফলক ছিল, যাহা মোশি হোরেবে তাহার মধ্যে রাখিয়াছিলেন; সেই সময়ে, মিসর হইতে ইস্রায়েল-সন্তানগণের বাহির হইয়া আসিবার পর, সদাপ্রভু ইস্রায়েল-সন্তানগণের সহিত নিয়ম করিয়াছিলেন।
10. আর পবিত্র স্থানের মধ্য হইতে যাজকদের বাহির হইবার সময়ে সদাপ্রভুর গৃহ মেঘে এমন পরিপূর্ণ হইল যে,
11. মেঘ প্রযুক্ত যাজকেরা পরিচর্য্যা করিবার জন্য দাঁড়াইতে পারিল না; কেননা সদাপ্রভুর গৃহ সদাপ্রভুর প্রতাপে পরিপূর্ণ হইয়াছিল।
12. তখন শলোমন কহিলেন, সদাপ্রভু বলিয়াছেন যে, তিনি ঘোর অন্ধকারে বাস করিবেন।
13. আমি সত্যই তোমার এক বসতি-গৃহ নির্ম্মাণ করাইলাম; ইহা চিরকাল তোমার নিবাসস্থান।
14. পরে রাজা মুখ ফিরাইয়া সমস্ত ইস্রায়েল-সমাজকে আশীর্ব্বাদ করিলেন; আর সমস্ত ইস্রায়েল-সমাজ দণ্ডায়মান হইল।
15. আর তিনি কহিলেন, ধন্য সদাপ্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর। তিনি আমার পিতা দায়ূদের কাছে আপন মুখে এই কথা বলিয়াছিলেন, এবং আপন হস্ত দ্বারা ইহা সফল করিয়াছেন,
16. যথা, যে দিন আমার প্রজা ইস্রায়েলকে মিসর হইতে বাহির করিয়া আনিয়াছি, সেই দিন হইতে আমি আপন নাম স্থাপন জন্য গৃহ নির্ম্মাণার্থে ইস্রায়েলের সমস্ত বংশের মধ্যে কোন নগর মনোনীত করি নাই; কিন্তু আমার প্রজা ইস্রায়েলের অধ্যক্ষ হইবার জন্য দায়ূদকে মনোনীত করিয়াছি।
17. আর ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর নামের উদ্দেশে এক গৃহ নির্ম্মাণ করিতে আমার পিতা দায়ূদের মনোরথ ছিল।
18. কিন্তু সদাপ্রভু আমার পিতা দায়ূদকে কহিলেন, আমার নামের উদ্দেশে এক গৃহ নির্ম্মাণ করিতে তোমার মানস হইয়াছে; তোমার এইরূপ মনস্থ করা ভালই বটে।
19. তথাপি তুমি সেই গৃহ নির্ম্মাণ করিবে না, কিন্তু তোমার কটি হইতে উৎপন্ন পুত্রই আমার নামের উদ্দেশে গৃহ নির্ম্মাণ করিবে।
20. সদাপ্রভু এই যে কথা বলিয়াছিলেন, তাহা সফল করিলেন; সদাপ্রভুর প্রতিজ্ঞানুসারে আমি আপন পিতা দায়ূদের পদে উৎপন্ন ও ইস্রায়েলের সিংহাসনে উপবিষ্ট হইয়া ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর নামের উদ্দেশে এই গৃহ নির্ম্মাণ করিয়াছি।
21. আর সদাপ্রভু আমাদের পিতৃপুরুষদিগকে মিসর দেশ হইতে বাহির করিবার সময়ে তাহাদের সহিত যে নিয়ম করিয়াছিলেন, তাহার আধার যে সিন্দুক, সেই সিন্দুকের জন্য আমি এখানে একটী স্থান প্রস্তুত করিয়াছি।
22. পরে শলোমন সমস্ত ইস্রায়েল-সমাজের সাক্ষাতে সদাপ্রভুর যজ্ঞবেদির সম্মুখে দাঁড়াইয়া স্বর্গের দিকে অঞ্জলি বিস্তার করিলেন;
23. আর তিনি কহিলেন, হে সদাপ্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, উপরিস্থ স্বর্গে বা নীচস্থ পৃথিবীতে তোমার তুল্য ঈশ্বর নাই। সর্ব্বান্তঃকরণে যাহারা তোমার সাক্ষাতে চলে, তোমার সেই দাসগণের পক্ষে তুমি নিয়ম ও দয়া পালন করিয়া থাক;
24. তুমি তোমার দাস আমার পিতা দায়ূদের কাছে যাহা প্রতিজ্ঞা করিয়াছিলে, তাহা পালন করিয়াছ, যাহা আপন মুখে বলিয়াছিলে, তাহা আপন হস্ত দ্বারা সিদ্ধ করিয়াছ, যেমন অদ্য দেখা যাইতেছে।
25. এখন, হে সদাপ্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, তুমি আপন দাস আমার পিতা দায়ূদের নিকটে যাহা প্রতিজ্ঞা করিয়াছিলে, তাহা রক্ষা কর; তুমি বলিয়াছিলে, আমার দৃষ্টিতে ইস্রায়েলের সিংহাসনে বসিতে তোমার [বংশে] লোকের অভাব হইবে না; কেবলমাত্র যদি আমার সাক্ষাতে তুমি যেমন চলিয়াছ, তোমার সন্তানগণ আমার সাক্ষাতে তদ্রূপ চলিবার জন্য আপন আপন পথে সাবধান থাকে।
26. এখন, হে ইস্রায়েলের ঈশ্বর, বিনয় করি, তোমার দাস আমার পিতা দায়ূদের কাছে যে কথা তুমি বলিয়াছিলে, তাহা দৃঢ় হউক।
27. কিন্তু ঈশ্বর কি সত্য সত্যই পৃথিবীতে বাস করিবেন? দেখ, স্বর্গ ও স্বর্গের স্ব তোমাকে ধারণ করিতে পারে না, তবে আমার নির্ম্মিত এই গৃহ কি পারিবে?
28. তথাপি হে সদাপ্রভু, আমার ঈশ্বর, তুমি আপন দাসের প্রার্থনায় ও বিনতিতে মনোযোগ কর, তোমার দাস অদ্য তোমার নিকটে যে কাকূক্তি ও প্রার্থনা করিতেছে, তাহা শুন।
29. যে স্থানের বিষয়ে তুমি বলিয়াছ, ‘আমার নাম সেই স্থানে থাকিবে,’ সে স্থানের অর্থাৎ এই গৃহের প্রতি তোমার চক্ষু দিবারাত্র উন্মীলীত থাকুক, এবং এই স্থানের অভিমুখে তোমার দাস যে প্রার্থনা করে, তাহা শুনিও।
30. আর তোমার দাস ও তোমার লোক ইস্রায়েল যখন এই স্থানের অভিমুখে প্রার্থনা করিবে, তখন তাহাদের বিনতিতে কর্ণপাত করিও; তোমার নিবাস-স্থান স্বর্গে তাহা শুনিও, এবং শুনিয়া ক্ষমা করিও।
31. কেহ আপন প্রতিবাসীর বিরুদ্ধে পাপ করিলে যদি তাহাকে দিব্য করাইবার জন্য কোন দিব্য নিশ্চিত হয়, আর সে আসিয়া এই গৃহে তোমার যজ্ঞবেদির সম্মুখে সেই দিব্য করে;
32. তবে তুমি স্বর্গে তাহা শুনিও, এবং নিষ্পত্তি করিয়া আপন দাসদের বিচার করিও; দোষীকে দোষী করিয়া তাহার কর্ম্মের ফল তাহার মস্তকে বর্ত্তাইও, এবং ধার্ম্মিককে ধার্ম্মিক করিয়া তাহার ধার্ম্মিকতানুযায়ী ফল দিও।
33. তোমার প্রজা ইস্রায়েল তোমার বিরুদ্ধে পাপ করণ প্রযুক্ত শত্রুর সম্মুখে আহত হইলে পর যদি পুনর্ব্বার তোমার দিকে ফিরে, এবং এই গৃহে তোমার নামের স্তব করিয়া তোমার নিকটে প্রার্থনা ও বিনতি করে;
34. তবে তুমি স্বর্গে তাহা শুনিও, এবং আপন প্রজা ইস্রায়েলের পাপ ক্ষমা করিও, আর তাহাদের পিতৃপুরুষদিগকে এই যে দেশ দিয়াছ, এখানে পুনর্ব্বার তাহাদিগকে আনিও।
35. তোমার বিরুদ্ধে তাহাদের পাপ প্রযুক্ত যদি আকাশ রুদ্ধ হয়, বৃষ্টি না হয়, আর লোকেরা যদি এই স্থানের অভিমুখে প্রার্থনা করে, তোমার নামের স্তব করে, এবং তোমা হইতে দুঃখ পাওয়াতে আপন আপন পাপ হইতে ফিরে;
36. তবে তুমি স্বর্গে তাহা শুনিও, এবং আপন দাসদের ও আপন প্রজা ইস্রায়েলের পাপ ক্ষমা করিও, ও তাহাদের গন্তব্য সৎপথ তাহাদিগকে দেখাইও; এবং তুমি আপন প্রজাদিগকে যে দেশ অধিকারার্থে দিয়াছ, তোমার সেই দেশে বৃষ্টি পাঠাইও।
37. দেশের মধ্যে যদি দুর্ভিক্ষ হয়, যদি মহামারী হয়, যদি শস্যের শোষ কি ম্লানি, পঙ্গপাল কি কীট হয়, যদি তাহাদের শত্রুগণ তাহাদের দেশে, নগরে নগরে, তাহাদিগকে অবরোধ করে, যদি কোন মারীর বা রোগের প্রাদুর্ভাব হয়;
38. তাহা হইলে কোন ব্যক্তি বা তোমার সমস্ত প্রজা ইস্রায়েল, যাহারা প্রত্যেকে আপন আপন মনের মারী জানে, এবং এই গৃহের দিকে অঞ্জলি বিস্তার করিয়া কোন প্রার্থনা কি বিনতি করে;
39. তবে তুমি তোমার নিবাস-স্থান স্বর্গে তাহা শুনিও, এবং ক্ষমা করিও, কার্য্য করিও, এবং প্রত্যেক জনকে স্ব স্ব পথ অনুযায়ী প্রতিফল দিও—তুমি ত তাহাদের অন্তঃকরণ জান, কেননা একমাত্র তুমিই যাবতীয় মনুষ্য-সন্তানের অন্তঃকরণ জ্ঞাত আছ;
40. —যেন আমাদের পিতৃপুরুষদিগকে তুমি যে দেশ দিয়াছ, এই দেশে তাহারা যত দিন জীবিত থাকিবে, তাবৎ তোমাকে ভয় করে।
41. অধিকন্তু তোমার প্রজা ইস্রায়েল গোষ্ঠীয় নয়, এমন কোন বিদেশী যখন তোমার নামের অনুরোধে দূর দেশ হইতে আসিবে,
42. —কারণ তাহারা তোমার মহানাম, তোমার বলবান হস্ত ও তোমার বিস্তারিত বাহুর কথা শ্রবণ করিবে; —যখন সে আসিয়া এই গৃহের অভিমুখে প্রার্থনা করিবে,
43. তখন তুমি তোমার নিবাস-স্থান স্বর্গে তাহা শুনিও; এবং সেই বিদেশী তোমার নিকটে যে কিছু প্রার্থনা করিবে, তদনুসারে করিও; যেন তোমার প্রজা ইস্রায়েলের ন্যায় তোমাকে ভয় করণার্থে পৃথিবীস্থ সমস্ত জাতি তোমার নাম জ্ঞাত হয়, এবং তাহারা জানিতে পায় যে, আমার নির্ম্মিত এই গৃহের উপরে তোমারই নাম কীর্ত্তিত।
44. তুমি আপন প্রজাদিগকে কোন পথে প্রেরণ করিলে যদি তাহারা আপন শত্রুগণের সহিত যুদ্ধ করিতে বাহির হয়, এবং তোমার মনোনীত নগরের অভিমুখে ও তোমার নামের জন্য আমার নির্ম্মিত গৃহের অভিমুখে সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করে;
45. তবে তুমি স্বর্গে তাহাদের প্রার্থনা ও বিনতি শুনিও, এবং তাহাদের বিচার নিষ্পত্তি করিও।
46. তাহারা যদি তোমার বিরুদ্ধে পাপ করে —কেননা পাপ না করে এমন কোন মনুষ্য নাই—এবং তুমি যদি তাহাদের প্রতি ক্রুদ্ধ হইয়া শত্রুর হস্তে তাহাদিগকে সমর্পণ কর, ও শত্রুগণ তাহাদিগকে বন্দি করিয়া দূরস্থ কিম্বা নিকটস্থ শত্রু—দেশে লইয়া যায়;
47. তথাপি যে দেশে তাহারা বন্দিরূপে নীত হইয়াছে, সেই দেশে যদি মনে মনে বিবেচনা করে, ও ফিরে এবং যাহারা তাহাদিগকে বন্দি করিয়া লইয়া গিয়াছে, তাহাদের দেশে যদি তোমার কাছে বিনতি করিয়া বলে, আমরা পাপ করিয়াছি, অপরাধী হইয়াছি, দুষ্টামি করিয়াছি;
48. যে শত্রুগণ তাহাদিগকে লইয়া গিয়াছে, তাহাদের দেশে যদি সমস্ত অন্তঃকরণ ও সমস্ত প্রাণের সহিত তোমার কাছে ফিরিয়া আইসে এবং তুমি তাহাদের পিতৃপুরুষদিগকে যে দেশ দিয়াছ, আপনাদের সেই দেশের অভিমুখে, তোমার মনোনীত নগরের অভিমুখে ও তোমার নামের জন্য আমার নির্ম্মিত গৃহের অভিমুখে যদি তোমার কাছে প্রার্থনা করে;
49. তবে তুমি তোমার নিবাস-স্থান স্বর্গে তাহাদের প্রার্থনা ও বিনতি শুনিও, এবং তাহাদের বিচার নিষ্পত্তি করিও;
50. আর তোমার যে প্রজারা তোমার বিরুদ্ধে পাপ করিয়াছে, তাহাদিগকে ক্ষমা করিও, এবং তোমার বিরুদ্ধে কৃত তাহাদের সমস্ত অধর্ম্ম মার্জ্জনা করিও; আর যাহারা তাহাদিগকে বন্দি করিয়া লইয়া যায়, তাহাদের করুণার পাত্র করিও, তাহারা যেন ইহাদের প্রতি করুণা করে।
51. কেননা ইহারা তোমারই প্রজা ও তোমারই অধিকার; তুমি ইহাদিগকে মিসর হইতে, লৌহের হাপরের মধ্য হইতে, বাহির করিয়া আনিয়াছ।
52. এইরূপে তোমার এই দাসের বিনতিতে ও তোমার প্রজা ইস্রায়েলের বিনতিতে তোমার চক্ষু উন্মীলিত হউক, আর তাহারা যে কোন বিষয়ে তোমাকে ডাকে, তুমি তাহাদের কথায় কর্ণপাত করিও।
53. কেননা হে প্রভু সদাপ্রভু, যখন তুমি আমাদের পিতৃপুরুষদিগকে মিসর হইতে বাহির করিয়া আনিয়াছিলে, তখন আপন দাস মোশি দ্বারা যেমন বলিয়াছিলে, তদ্রূপ তুমিই আপনার অধিকার বলিয়া তাহাদিগকে পৃথিবীস্থ সকল জাতি হইতে পৃথক্ করিয়াছ।
54. সদাপ্রভুর নিকটে এই সমস্ত প্রার্থনা ও বিনতি সাঙ্গ করিয়া শলোমন সদাপ্রভুর যজ্ঞবেদির সম্মুখে হাঁটু পাতন ও স্বর্গের দিকে অঞ্জলি বিস্তার করণ হইতে উঠিলেন।
55. আর তিনি দাঁড়াইয়া উচ্চৈঃস্বরে সমস্ত ইস্রায়েল-সমাজকে আশীর্ব্বাদ করিলেন,
56. বলিলেন; ধন্য সদাপ্রভু, যিনি আপনার সকল প্রতিজ্ঞানুসারে আপন প্রজা ইস্রায়েলকে বিশ্রাম দিয়াছেন; তিনি আপন দাস মোশির দ্বারা যে প্রতিজ্ঞা করিয়াছিলেন, সেই উত্তম প্রতিজ্ঞার একটী কথাও পতিত হয় নাই।
57. আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু যেমন আমাদের পিতৃপুরুষদের সহবর্ত্তী ছিলেন, তেমনি আমাদেরও সহবর্ত্তী থাকুন, তিনি আমাদিগকে ত্যাগ না করুন, আমাদিগকে ছাড়িয়া না যাউন।
58. তাঁহার সমস্ত পথে চলিতে ও আমাদের পিতৃপুরুষদিগকে তিনি যাহা যাহা আদেশ করিয়াছিলেন, তাঁহার সেই সকল আজ্ঞা, বিধি ও শাসন পালন করিতে আমাদের চিত্ত আপনার প্রতি আকর্ষণ করুন।
59. আর এই যে সকল কথার দ্বারা আমি সদাপ্রভুর কাছে অনুরোধ করিলাম, আমার এই সকল কথা দিবারাত্র আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সম্মুখে থাকুক; এবং দিন দিন যেমন প্রয়োজন, তেমনি তিনি আপন দাসের ও আপন প্রজা ইস্রায়েলের বিচার সিদ্ধ করুন;
60. যেন পৃথিবীর সমস্ত জাতি জানিতে পারে যে, সদাপ্রভুই ঈশ্বর, আর কেহ নাই।
61. অতএব তাঁহার বিধিপথে চলিতে ও তাঁহার আজ্ঞা পালন করিতে আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর কাছে তোমাদের অন্তঃকরণ একাগ্র হউক, যেমন অদ্য দেখা যাইতেছে।
62. পরে রাজা ও তাঁহার সহিত সমস্ত ইস্রায়েল সদাপ্রভুর সম্মুখে যজ্ঞ করিলেন।
63. শলোমন সদাপ্রভুর উদ্দেশে বাইশ সহস্র গোরু ও এক লক্ষ বিশ সহস্র মেষ মঙ্গলার্থক বলিরূপে উৎসর্গ করিলেন। এইরূপে রাজা ও সমস্ত ইস্রায়েল-সন্তান সদাপ্রভুর গৃহ প্রতিষ্ঠা করিলেন।
64. সেই দিন রাজা সদাপ্রভুর গৃহের সম্মুখস্থ প্রাঙ্গণের মধ্যদেশ পবিত্র করিলেন, কেননা তিনি সে স্থানে হোমবলি, ও ভক্ষ্য-নৈবেদ্য, এবং মঙ্গলার্থক বলির মেদ উৎসর্গ করিলেন; কারণ হোমবলি, ও ভক্ষ্য-নৈবেদ্য, এবং মঙ্গলার্থক বলির মেদ গ্রহণ পক্ষে সদাপ্রভুর সম্মুখস্থ পিত্তলময় যজ্ঞবেদি ছোট ছিল।
65. এইরূপে সেই সময়ে শলোমন ও তাঁহার সঙ্গে সমস্ত ইস্রায়েল, হমাতের প্রবেশস্থান অবধি মিসরের স্রোত পর্য্যন্ত [দেশবাসী] মহাসমাজ, সাত দিন আর সাত দিন, চৌদ্দ দিন আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সম্মুখে উৎসব করিলেন।
66. অষ্টম দিনে তিনি লোকদিগকে বিদায় করিলেন, ও তাহারা রাজাকে ধন্যবাদ করিল, এবং সদাপ্রভু আপন দাস দায়ূদের ও আপন প্রজা ইস্রায়েলের যে সকল মঙ্গল করিয়াছিলেন, সেই সকলের জন্য আনন্দিত ও হৃষ্টচিত্ত হইয়া আপন আপন তাম্বুতে চলিয়া গেল।