পবিত্র বাইবেল

গডস গ্রেইস গিফট
যোব

যোব অধ্যায় 9

ইয়োব 1 2 পরে ইয়োব উত্তর দিলেন: “বাস্তবিক, আমি জানি যে তা সত্যি। কিন্তু ঈশ্বরের সামনে নিছক নশ্বর মানুষ কীভাবে তাদের নির্দোষিতা প্রমাণ করবে? 3 যদিও তারা তাঁর সাথে বাদানুবাদ করতে চায়, তবুও হাজার বারের মধ্যে একবারও তারা তাঁর কথার জবাব দিতে পারে না। 4 তাঁর জ্ঞান অগাধ, তাঁর শক্তি অসীম। তাঁর বিরোধিতা করে কে অক্ষত অবস্থায় বেরিয়ে আসতে পেরেছে? 5 পর্বতগুলির অজান্তে তিনি তাদের স্থানান্তরিত করেন ও তাঁর ক্রোধে সেগুলি উচ্ছেদ করেন। 6 তিনি পৃথিবীকে স্বস্থান থেকে নাড়িয়ে দেন, ও তার স্তম্ভগুলিকে টলিয়ে দেন। 7 তিনি সূর্যকে বারণ করেন ও তা দীপ্তি দেয় না; তিনি নক্ষত্রদের আলো নিভিয়ে দেন। 8 তিনি একাই আকাশমণ্ডলের বিস্তার ঘটান, ও সমুদ্রের ঢেউগুলিকে পদদলিত করেন। 9 তিনি সপ্তর্ষি* অথবা, সিংহরাশি ও কালপুরুষ, কৃত্তিকা ও দক্ষিণের নক্ষত্রপুঞ্জের নির্মাতা। 10 তিনি এমন সব আশ্চর্য কাজ করেন যা অনুধাবন করা যায় না, এমন সব অলৌকিক কাজ করেন যা গুনে রাখা যায় না। 11 তিনি যখন আমাকে পার করে চলে যান, আমি তাঁকে দেখতে পাই না; তিনি যখন কাছ দিয়ে যান, আমি তাঁকে চিনতে পারি না। 12 তিনি যদি কেড়ে নেন, কে তাঁকে থামাতে পারবে? কে তাঁকে বলতে পারবে, ‘তুমি কী করছ?’ 13 ঈশ্বর তাঁর ক্রোধ নিয়ন্ত্রণে রাখেন না; রহবের রহব হল সেই পৌরাণিক সমুদ্রদানবের নাম, যা প্রাচীন সাহিত্যে বিশৃঙ্খলার প্রতিনিধিত্বকারী বাহিনীও তাঁর পদতলে ভয়ে জড়সড় হয়ে থাকে। 14 “কীভাবে তবে আমি তাঁর সাথে বাদানুবাদ করব? কীভাবে আমি তাঁর সঙ্গে তর্ক করার জন্য শব্দ খুঁজে পাব? 15 আমি নির্দোষ হওয়া সত্ত্বেও, তাঁকে জবাব দিতে পারিনি; আমার বিচারকের কাছে শুধু আমি দয়াভিক্ষাই করতে পেরেছি। 16 আমি যদিও তাঁকে ডেকেছি ও তিনি সাড়া দিয়েছেন, তাও আমি বিশ্বাস করি না যে তিনি আমার কথায় কর্ণপাত করবেন। 17 এক ঝড় পাঠিয়ে তিনি আমাকে চূর্ণ করবেন, ও অকারণেই আমার ক্ষতস্থানগুলির সংখ্যা বৃদ্ধি করবেন। 18 তিনি আমাকে দম নেওয়ার সুযোগ দেবেন না কিন্তু দুর্দশা দিয়ে আমাকে আচ্ছন্ন করে তুলবেন। 19 এটি যদি শক্তির বিষয় হয়, তবে তিনি শক্তিমান! ও এটি যদি বিচার্য বিষয় হয়, তবে কে তাঁর অথবা, আমার বিরুদ্ধ আপত্তি তুলবে? 20 আমি যদি নির্দোষও হতাম, তাও আমার মুখই আমাকে দোষারোপ করত। আমি যদি অনিন্দনীয় হতাম, তাও তা আমায় দোষী সাব্যস্ত করত। 21 “যদিও আমি অনিন্দনীয়, আমি নিজের বিষয়ে চিন্তিত নই; আমার নিজের জীবনকেই আমি ঘৃণা করি। 22 এসবই সমান; তাই আমি বলি, ‘অনিন্দনীয় ও দুষ্ট উভয়কেই তিনি ধ্বংস করেন।’ 23 এক কশা যখন আকস্মিক মৃত্যু ডেকে আনে, তিনি তখন নির্দোষের হতাশা দেখে বিদ্রুপ করেন। 24 দেশ§ অথবা, পৃথিবী যখন দুষ্টের হাতে গিয়ে পড়ে, তখন তিনি সেখানকার বিচারকদের চোখ বেঁধে দেন। যদি তিনি এ কাজ না করেন, তবে কে তা করে? 25 “আমার দিনগুলি একজন ডাকহরকরার চেয়েও দ্রুতগামী; সেগুলি আনন্দের কোনও আভাস ছাড়াই উড়ে যায়। 26 নলখাগড়ার নৌকার মতো সেগুলি অদৃশ্য হয়ে যায়, যেভাবে ঈগল পাখি তার শিকারের উপরে নেমে আসে। 27 আমি যদি বলি, ‘আমি আমার অভিযোগ ভুলে যাব, আমি আমার অভিব্যক্তি পালটে ফেলব, ও হাসব,’ 28 তাও আমি এখনও আমার সব দুঃখকষ্টকে ভয় করি, কারণ আমি জানি তুমি আমাকে নির্দোষ গণ্য করবে না। 29 যেহেতু আমি ইতিমধ্যেই দোষী সাব্যস্ত হয়েছি, তবে কেন আমি অনর্থক সংগ্রাম করব? 30 আমি যদিও সাবান দিয়ে নিজেকে ধুয়ে ফেলি ও পরিষ্কার করার সোডা দিয়ে আমার হাত পরিষ্কার করি, 31 তাও তুমি আমাকে পাঁকে ভরা খন্দে ডোবাবে যেন আমার পোশাকও আমায় ঘৃণা করে। 32 “তিনি আমার মতো নিছক এক নশ্বর মানুষ নন যে আমি তাঁকে উত্তর দেব, ও আদালতে আমরা পরস্পরের সম্মুখীন হব। 33 শুধু যদি আমাদের মধ্যে মধ্যস্থতা করার মতো কেউ থাকত, যদি আমাদের একসঙ্গে মিলিত করার মতো কেউ থাকত, 34 যদি আমার কাছ থেকে ঈশ্বরের লাঠি দূর করার মতো কেউ থাকত, যেন তাঁর আতঙ্ক আমাকে আর আতঙ্কিত করতে না পারে। 35 তবে তাঁকে ভয় না করে আমি কথা বলতে পারতাম, কিন্তু এখন আমার যা অবস্থা, আমি তা পারব না।
ইয়োব 1 .::. 2 পরে ইয়োব উত্তর দিলেন: “বাস্তবিক, আমি জানি যে তা সত্যি। কিন্তু ঈশ্বরের সামনে নিছক নশ্বর মানুষ কীভাবে তাদের নির্দোষিতা প্রমাণ করবে? .::. 3 যদিও তারা তাঁর সাথে বাদানুবাদ করতে চায়, তবুও হাজার বারের মধ্যে একবারও তারা তাঁর কথার জবাব দিতে পারে না। .::. 4 তাঁর জ্ঞান অগাধ, তাঁর শক্তি অসীম। তাঁর বিরোধিতা করে কে অক্ষত অবস্থায় বেরিয়ে আসতে পেরেছে? .::. 5 পর্বতগুলির অজান্তে তিনি তাদের স্থানান্তরিত করেন ও তাঁর ক্রোধে সেগুলি উচ্ছেদ করেন। .::. 6 তিনি পৃথিবীকে স্বস্থান থেকে নাড়িয়ে দেন, ও তার স্তম্ভগুলিকে টলিয়ে দেন। .::. 7 তিনি সূর্যকে বারণ করেন ও তা দীপ্তি দেয় না; তিনি নক্ষত্রদের আলো নিভিয়ে দেন। .::. 8 তিনি একাই আকাশমণ্ডলের বিস্তার ঘটান, ও সমুদ্রের ঢেউগুলিকে পদদলিত করেন। .::. 9 তিনি সপ্তর্ষি* অথবা, সিংহরাশি ও কালপুরুষ, কৃত্তিকা ও দক্ষিণের নক্ষত্রপুঞ্জের নির্মাতা। .::. 10 তিনি এমন সব আশ্চর্য কাজ করেন যা অনুধাবন করা যায় না, এমন সব অলৌকিক কাজ করেন যা গুনে রাখা যায় না। .::. 11 তিনি যখন আমাকে পার করে চলে যান, আমি তাঁকে দেখতে পাই না; তিনি যখন কাছ দিয়ে যান, আমি তাঁকে চিনতে পারি না। .::. 12 তিনি যদি কেড়ে নেন, কে তাঁকে থামাতে পারবে? কে তাঁকে বলতে পারবে, ‘তুমি কী করছ?’ .::. 13 ঈশ্বর তাঁর ক্রোধ নিয়ন্ত্রণে রাখেন না; রহবের রহব হল সেই পৌরাণিক সমুদ্রদানবের নাম, যা প্রাচীন সাহিত্যে বিশৃঙ্খলার প্রতিনিধিত্বকারী বাহিনীও তাঁর পদতলে ভয়ে জড়সড় হয়ে থাকে। .::. 14 “কীভাবে তবে আমি তাঁর সাথে বাদানুবাদ করব? কীভাবে আমি তাঁর সঙ্গে তর্ক করার জন্য শব্দ খুঁজে পাব? .::. 15 আমি নির্দোষ হওয়া সত্ত্বেও, তাঁকে জবাব দিতে পারিনি; আমার বিচারকের কাছে শুধু আমি দয়াভিক্ষাই করতে পেরেছি। .::. 16 আমি যদিও তাঁকে ডেকেছি ও তিনি সাড়া দিয়েছেন, তাও আমি বিশ্বাস করি না যে তিনি আমার কথায় কর্ণপাত করবেন। .::. 17 এক ঝড় পাঠিয়ে তিনি আমাকে চূর্ণ করবেন, ও অকারণেই আমার ক্ষতস্থানগুলির সংখ্যা বৃদ্ধি করবেন। .::. 18 তিনি আমাকে দম নেওয়ার সুযোগ দেবেন না কিন্তু দুর্দশা দিয়ে আমাকে আচ্ছন্ন করে তুলবেন। .::. 19 এটি যদি শক্তির বিষয় হয়, তবে তিনি শক্তিমান! ও এটি যদি বিচার্য বিষয় হয়, তবে কে তাঁর অথবা, আমার বিরুদ্ধ আপত্তি তুলবে? .::. 20 আমি যদি নির্দোষও হতাম, তাও আমার মুখই আমাকে দোষারোপ করত। আমি যদি অনিন্দনীয় হতাম, তাও তা আমায় দোষী সাব্যস্ত করত। .::. 21 “যদিও আমি অনিন্দনীয়, আমি নিজের বিষয়ে চিন্তিত নই; আমার নিজের জীবনকেই আমি ঘৃণা করি। .::. 22 এসবই সমান; তাই আমি বলি, ‘অনিন্দনীয় ও দুষ্ট উভয়কেই তিনি ধ্বংস করেন।’ .::. 23 এক কশা যখন আকস্মিক মৃত্যু ডেকে আনে, তিনি তখন নির্দোষের হতাশা দেখে বিদ্রুপ করেন। .::. 24 দেশ§ অথবা, পৃথিবী যখন দুষ্টের হাতে গিয়ে পড়ে, তখন তিনি সেখানকার বিচারকদের চোখ বেঁধে দেন। যদি তিনি এ কাজ না করেন, তবে কে তা করে? .::. 25 “আমার দিনগুলি একজন ডাকহরকরার চেয়েও দ্রুতগামী; সেগুলি আনন্দের কোনও আভাস ছাড়াই উড়ে যায়। .::. 26 নলখাগড়ার নৌকার মতো সেগুলি অদৃশ্য হয়ে যায়, যেভাবে ঈগল পাখি তার শিকারের উপরে নেমে আসে। .::. 27 আমি যদি বলি, ‘আমি আমার অভিযোগ ভুলে যাব, আমি আমার অভিব্যক্তি পালটে ফেলব, ও হাসব,’ .::. 28 তাও আমি এখনও আমার সব দুঃখকষ্টকে ভয় করি, কারণ আমি জানি তুমি আমাকে নির্দোষ গণ্য করবে না। .::. 29 যেহেতু আমি ইতিমধ্যেই দোষী সাব্যস্ত হয়েছি, তবে কেন আমি অনর্থক সংগ্রাম করব? .::. 30 আমি যদিও সাবান দিয়ে নিজেকে ধুয়ে ফেলি ও পরিষ্কার করার সোডা দিয়ে আমার হাত পরিষ্কার করি, .::. 31 তাও তুমি আমাকে পাঁকে ভরা খন্দে ডোবাবে যেন আমার পোশাকও আমায় ঘৃণা করে। .::. 32 “তিনি আমার মতো নিছক এক নশ্বর মানুষ নন যে আমি তাঁকে উত্তর দেব, ও আদালতে আমরা পরস্পরের সম্মুখীন হব। .::. 33 শুধু যদি আমাদের মধ্যে মধ্যস্থতা করার মতো কেউ থাকত, যদি আমাদের একসঙ্গে মিলিত করার মতো কেউ থাকত, .::. 34 যদি আমার কাছ থেকে ঈশ্বরের লাঠি দূর করার মতো কেউ থাকত, যেন তাঁর আতঙ্ক আমাকে আর আতঙ্কিত করতে না পারে। .::. 35 তবে তাঁকে ভয় না করে আমি কথা বলতে পারতাম, কিন্তু এখন আমার যা অবস্থা, আমি তা পারব না।
  • সামসঙ্গীত অধ্যায় 1  
  • সামসঙ্গীত অধ্যায় 2  
  • সামসঙ্গীত অধ্যায় 3  
  • সামসঙ্গীত অধ্যায় 4  
  • সামসঙ্গীত অধ্যায় 5  
  • সামসঙ্গীত অধ্যায় 6  
  • সামসঙ্গীত অধ্যায় 7  
  • সামসঙ্গীত অধ্যায় 8  
  • সামসঙ্গীত অধ্যায় 9  
  • সামসঙ্গীত অধ্যায় 10  
  • সামসঙ্গীত অধ্যায় 11  
  • সামসঙ্গীত অধ্যায় 12  
  • সামসঙ্গীত অধ্যায় 13  
  • সামসঙ্গীত অধ্যায় 14  
  • সামসঙ্গীত অধ্যায় 15  
  • সামসঙ্গীত অধ্যায় 16  
  • সামসঙ্গীত অধ্যায় 17  
  • সামসঙ্গীত অধ্যায় 18  
  • সামসঙ্গীত অধ্যায় 19  
  • সামসঙ্গীত অধ্যায় 20  
  • সামসঙ্গীত অধ্যায় 21  
  • সামসঙ্গীত অধ্যায় 22  
  • সামসঙ্গীত অধ্যায় 23  
  • সামসঙ্গীত অধ্যায় 24  
  • সামসঙ্গীত অধ্যায় 25  
  • সামসঙ্গীত অধ্যায় 26  
  • সামসঙ্গীত অধ্যায় 27  
  • সামসঙ্গীত অধ্যায় 28  
  • সামসঙ্গীত অধ্যায় 29  
  • সামসঙ্গীত অধ্যায় 30  
  • সামসঙ্গীত অধ্যায় 31  
  • সামসঙ্গীত অধ্যায় 32  
  • সামসঙ্গীত অধ্যায় 33  
  • সামসঙ্গীত অধ্যায় 34  
  • সামসঙ্গীত অধ্যায় 35  
  • সামসঙ্গীত অধ্যায় 36  
  • সামসঙ্গীত অধ্যায় 37  
  • সামসঙ্গীত অধ্যায় 38  
  • সামসঙ্গীত অধ্যায় 39  
  • সামসঙ্গীত অধ্যায় 40  
  • সামসঙ্গীত অধ্যায় 41  
  • সামসঙ্গীত অধ্যায় 42  
×

Alert

×

Bengali Letters Keypad References