পবিত্র বাইবেল

সমসাময়িক সংস্করণ খুলুন (OCV)
সামুয়েল ২

সামুয়েল ২ অধ্যায় 13

অম্নোন এবং তামর 1 2 কালক্রমে, দাউদের ছেলে অম্নোন দাউদের অপর ছেলে অবশালোমের নিজের সুন্দরী বোন তামরের প্রেমে পড়েছিল। 3 অম্নোন তার বোন তামরের প্রতি এমন মোহবিষ্ট হয়ে গেল যে সে নিজেকে অসুস্থই করে ফেলেছিল। তামর কুমারী ছিল, ও তার প্রতি কিছু করা অম্নোনের পক্ষে অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এদিকে দাউদের ভাই শিমিয়ের ছেলে যোনাদব ছিল অম্নোনের মন্ত্রণাদাতা। যোনাদব খুব ধুরন্ধর লোক ছিল। 4 সে অম্নোনকে জিজ্ঞাসা করল, “হে রাজার ছেলে, তোমাকে দিনের পর দিন কেন এত বিমর্ষ দেখাচ্ছে? তুমি কি আমাকে বলবে না?” 5 অম্নোন তাকে বলল, “আমি আমার ভাই অবশালোমের বোন তামরের প্রেমে পড়েছি।” 6 “বিছানায় গিয়ে অসুস্থ হওয়ার ভান করো,” যোনাদব বলল। “তোমার বাবা যখন তোমাকে দেখতে আসবেন, তাঁকে বোলো, ‘আমি চাই আমার বোন তামর এসে আমাকে কিছু খেতে দিক। সে আমার সামনেই খাবার তৈরি করুক, যেন আমি তাকে দেখতে দেখতে তার হাত থেকেই তা খেতে পারি।’ ” 7 তাই অম্নোন শুয়ে পড়েছিল ও অসুস্থ হওয়ার ভান করল। রাজামশাই যখন তাকে দেখতে এলেন, অম্নোন তাঁকে বলল, “আমি চাই, আমার বোন তামর এসে আমার সামনেই কয়েকটি বিশেষ ধরনের রুটি তৈরি করে দিক, যেন আমি তার হাত থেকেই সেগুলি খেতে পারি।” দাউদ রাজপ্রাসাদে তামরকে খবর পাঠালেন: “তোমার দাদা অম্নোনের বাসায় যাও ও তার জন্য কিছু খাবার তৈরি করে দাও।” 8 অতএব তামর তার দাদা অম্নোনের বাসায় গেল। সে তখন শুয়েছিল। তামর কিছুটা আটা মেখে অম্নোনের চোখের সামনেই রুটি বানিয়ে সেগুলি সেঁকে দিয়েছিল। 9 পরে সে তাওয়াশুদ্ধু রুটিগুলি নিয়ে গিয়ে অম্নোনের সামনে রেখেছিল, কিন্তু সে খেতে চায়নি। “সবাই এখান থেকে চলে যাক,” অম্নোন বলল। তাই সবাই তাকে ছেড়ে গেল। 10 তখন অম্নোন তামরকে বলল, “খাবারগুলি এখানে আমার শোওয়ার ঘরে নিয়ে এসো, যেন আমি তোমার হাত থেকেই সেগুলি খেতে পারি।” তামর তার তৈরি করা রুটিগুলি নিয়ে দাদা অম্নোনের শোওয়ার ঘরে গেল। 11 কিন্তু যখন সে তাকে খাওয়াতে যাচ্ছিল, সে তাকে জাপটে ধরে বলল, “বোন আমার, আমার সঙ্গে বিছানায় চলো।” 12 “না, দাদা না!” সে তাকে বলল। “আমার উপর জোর-জবরদস্তি কোরো না! ইস্রায়েলে এরকম হওয়া উচিত নয়! এরকম জঘন্য কাজ কোরো না। 13 আমার কী হবে? আমার এ কলঙ্ক আমি কোথায় গিয়ে মেটাব? আর তোমারই বা কী হবে? ইস্রায়েলে তোমার দশা হবে এক দুষ্ট নির্বোধের মতো। দয়া করে রাজামশাইকে বলো; তোমার সঙ্গে আমার বিয়ে দিতে তিনি অসম্মত হবেন না।” 14 কিন্তু সে তার কথা শুনতে রাজি হয়নি, ও যেহেতু সে তামরের তুলনায় বেশি শক্তিশালী ছিল, তাই সে তাকে ধর্ষণ করল। 15 16 পরে তীব্র বিরাগ নিয়ে সে তাকে ঘৃণা করল। প্রকৃতপক্ষে, সে তাকে যত ভালোবেসেছিল, তার চেয়েও বেশি ঘৃণা করল। অম্নোন তামরকে বলল, “ওঠো ও এখান থেকে বেরিয়ে যাও!” তামর তাকে বলল, “না, না! আমার প্রতি তুমি যা করেছ, আমাকে বের করে দিলে তো তার চেয়েও বেশি অন্যায় করা হয়ে যাবে।” কিন্তু সে তার কথা শুনতে চায়নি। 17 সে তার খাস চাকরকে ডেকে বলল, “এই মহিলাটিকে আমার চোখের সামনে থেকে দূর করে দাও ও দরজায় খিল দিয়ে দাও।” 18 তখন তার চাকরটি তামরকে বের করে দিয়ে দরজায় খিল লাগিয়ে দিয়েছিল। তামরের পরনে ছিল অলংকারসমৃদ্ধ এক পোশাক, কারণ কুমারী রাজার মেয়েরা এ ধরনের পোশাকই পরে থাকত। 19 তামর মাথায় ছাইভস্ম মেখে পরনের অলংকারসমৃদ্ধ পোশাকটি ছিঁড়ে ফেলেছিল। মাথায় হাত দিয়ে, জোরে কাঁদতে কাঁদতে সে বাইরে বেরিয়ে গেল। 20 21 তার দাদা অবশালোম তাকে বলল, “তোমার দাদা অম্নোন কি তোমার সঙ্গে ছিল? হে আমার বোন, আপাতত চুপচাপ থাকো; সে তো তোমারই দাদা। এটি নিয়ে মন খারাপ কোরো না।” সেই থেকে তামর এক নিঃসঙ্গ মহিলার মতো তার দাদা অবশালোমের বাসাতেই থাকতে শুরু করল। রাজা দাউদ এসব কথা শুনে রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে গেলেন। 22 অবশালোমও অম্নোনকে ভালোমন্দ—একটিও কথা বলেনি; সে অম্নোনকে ঘৃণা করতে শুরু করেছিল, যেহেতু সে তার নিজের বোন তামরকে কলঙ্কিত করল। অবশালোম অম্নোনকে হত্যা করল 23 দুই বছর পর, ইফ্রয়িমের সীমানার কাছে বায়াল-হাৎসোরে যখন অবশালোমের মেষগুলির গা থেকে লোম ছাঁটা হচ্ছিল, সে রাজার সব ছেলেকে সেখানে আসার নিমন্ত্রণ জানিয়েছিল। 24 অবশালোম রাজামশাই-এর কাছে গিয়ে বলল, “আপনার দাসের কাছে মেষের লোম ছাঁটার লোকেরা এসে গিয়েছে। রাজামশাই ও তাঁর কর্মচারীরা কি দয়া করে আমার সাথে যোগ দেবেন?” 25 26 “বাছা, না,” রাজামশাই উত্তর দিলেন। “আমাদের সকলের যাওয়া উচিত হবে না; আমরা শুধু তোমার বোঝাই হব।” যদিও অবশালোম তাঁকে পীড়াপীড়ি করল, তাও তিনি যেতে রাজি হননি, তবে তিনি তাকে আশীর্বাদ করলেন। তখন অবশালোম বলল, “আপনি যদি না যান, তবে অন্তত আমার ভাই অম্নোনকে আমাদের সঙ্গে যেতে দিন।” রাজামশাই তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “সে কেন তোমাদের সঙ্গে যাবে?” 27 কিন্তু যেহেতু অবশালোম তাঁকে পীড়াপীড়ি করল, তিনি অম্নোন ও অন্যান্য রাজার ছেলেদের তার সঙ্গে পাঠালেন। 28 অবশালোম তার লোকজনকে আদেশ দিয়েছিল, “শুনে রাখো! অম্নোন যখন দ্রাক্ষারস পান করে বেশ খোশমেজাজে থাকবে ও আমি যখন তোমাদের বলব ‘অম্নোনকে মারো,’ তখন তাকে হত্যা কোরো। ভয় পেয়ো না। আমিই কি তোমাদের এই আদেশ দিইনি? শক্ত হও ও সাহস করো।” 29 তখন অবশালোমের লোকজন অম্নোনের প্রতি অবশালোমের আদেশমতোই কাজ করল। পরে রাজপুত্রেরা সবাই যে যার খচ্চরের পিঠে চেপে পালিয়েছিল। 30 তারা তখনও পথেই ছিল, আর এই খবরটি দাউদের কাছে পৌঁছে গেল: “অবশালোম রাজার সব ছেলেকে মেরে ফেলেছে; তাদের মধ্যে একজনও বেঁচে নেই।” 31 রাজামশাই উঠে দাঁড়িয়েছিলেন, কাপড়চোপড় ছিঁড়ে ফেলেছিলেন ও মেঝেতে শুয়ে পড়েছিলেন; আর তাঁর সব কর্মচারীও নিজেদের কাপড়চোপড় ছিঁড়ে তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছিল। 32 কিন্তু দাউদের ভাই শিমিয়ের ছেলে যোনাদব বলল, “আমার প্রভু মনে করবেন না যে তারা রাজার সব ছেলেকে মেরে ফেলেছে; শুধু অম্নোনই মরেছে। যেদিন অম্নোন অবশালোমের বোন তামরকে ধর্ষণ করল, সেদিন থেকেই অবশালোম এরকম করতে বদ্ধপরিকর ছিল। 33 আমার প্রভু মহারাজ এই খবর পেয়ে দুশ্চিন্তা করবেন না যে রাজার সব ছেলে মারা গিয়েছে। শুধু অম্নোনই মারা গিয়েছে।” 34 35 ইতিমধ্যে, অবশালোম পালিয়েছিল। একজন পাহারাদার চোখ তুলে চেয়ে দেখেছিল তার পশ্চিমদিকের পথে প্রচুর লোকজন পাহাড়ের পাশ থেকে নেমে আসছে। সেই পাহারাদার গিয়ে রাজামশাইকে বলল, “আমি দেখলাম হরোনয়ীমের দিক থেকে পাহাড়ের ঢাল বেয়ে কিছু লোক নেমে আসছে।”* কিছু কিছু প্রচীন অনুলিপিতে এই কথাগুলি অনুপস্থিত 36 যোনাদব রাজামশাইকে বলল, “দেখুন, রাজপুত্রেরা ফিরে আসছে; আপনার দাস যেমনটি বলল, ঠিক তেমনটিই হয়েছে।” 37 তার কথা শেষ হতে না হতেই, রাজপুত্রেরা জোর গলায় কাঁদতে কাঁদতে সেখানে পৌঁছে গেল। রাজা ও তাঁর কর্মচারীরাও জোর গলায় কাঁদতে শুরু করলেন। 38 অবশালোম পালিয়ে গশূরের রাজা অম্মীহূরের ছেলে তলময়ের কাছে গেল। কিন্তু রাজা দাউদ দীর্ঘদিন তাঁর ছেলের জন্য শোকপ্রকাশ করলেন। অবশালোম গশূরে পালিয়ে গিয়ে তিন বছর সেখানে ছিল। 39 রাজা দাউদ অবশালোমের কাছে যাওয়ার জন্য খুব আকাঙ্ক্ষিত হলেন, কারণ অম্নোনের মৃত্যুর বিষয়ে তিনি সান্তনা পেয়েছিলেন।
1. {#1অম্নোন এবং তামর } 2. কালক্রমে, দাউদের ছেলে অম্নোন দাউদের অপর ছেলে অবশালোমের নিজের সুন্দরী বোন তামরের প্রেমে পড়েছিল। 3. অম্নোন তার বোন তামরের প্রতি এমন মোহবিষ্ট হয়ে গেল যে সে নিজেকে অসুস্থই করে ফেলেছিল। তামর কুমারী ছিল, ও তার প্রতি কিছু করা অম্নোনের পক্ষে অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এদিকে দাউদের ভাই শিমিয়ের ছেলে যোনাদব ছিল অম্নোনের মন্ত্রণাদাতা। যোনাদব খুব ধুরন্ধর লোক ছিল। 4. সে অম্নোনকে জিজ্ঞাসা করল, “হে রাজার ছেলে, তোমাকে দিনের পর দিন কেন এত বিমর্ষ দেখাচ্ছে? তুমি কি আমাকে বলবে না?” 5. অম্নোন তাকে বলল, “আমি আমার ভাই অবশালোমের বোন তামরের প্রেমে পড়েছি।” 6. “বিছানায় গিয়ে অসুস্থ হওয়ার ভান করো,” যোনাদব বলল। “তোমার বাবা যখন তোমাকে দেখতে আসবেন, তাঁকে বোলো, ‘আমি চাই আমার বোন তামর এসে আমাকে কিছু খেতে দিক। সে আমার সামনেই খাবার তৈরি করুক, যেন আমি তাকে দেখতে দেখতে তার হাত থেকেই তা খেতে পারি।’ ” 7. তাই অম্নোন শুয়ে পড়েছিল ও অসুস্থ হওয়ার ভান করল। রাজামশাই যখন তাকে দেখতে এলেন, অম্নোন তাঁকে বলল, “আমি চাই, আমার বোন তামর এসে আমার সামনেই কয়েকটি বিশেষ ধরনের রুটি তৈরি করে দিক, যেন আমি তার হাত থেকেই সেগুলি খেতে পারি।” দাউদ রাজপ্রাসাদে তামরকে খবর পাঠালেন: “তোমার দাদা অম্নোনের বাসায় যাও ও তার জন্য কিছু খাবার তৈরি করে দাও।” 8. অতএব তামর তার দাদা অম্নোনের বাসায় গেল। সে তখন শুয়েছিল। তামর কিছুটা আটা মেখে অম্নোনের চোখের সামনেই রুটি বানিয়ে সেগুলি সেঁকে দিয়েছিল। 9. পরে সে তাওয়াশুদ্ধু রুটিগুলি নিয়ে গিয়ে অম্নোনের সামনে রেখেছিল, কিন্তু সে খেতে চায়নি। “সবাই এখান থেকে চলে যাক,” অম্নোন বলল। তাই সবাই তাকে ছেড়ে গেল। 10. তখন অম্নোন তামরকে বলল, “খাবারগুলি এখানে আমার শোওয়ার ঘরে নিয়ে এসো, যেন আমি তোমার হাত থেকেই সেগুলি খেতে পারি।” তামর তার তৈরি করা রুটিগুলি নিয়ে দাদা অম্নোনের শোওয়ার ঘরে গেল। 11. কিন্তু যখন সে তাকে খাওয়াতে যাচ্ছিল, সে তাকে জাপটে ধরে বলল, “বোন আমার, আমার সঙ্গে বিছানায় চলো।” 12. “না, দাদা না!” সে তাকে বলল। “আমার উপর জোর-জবরদস্তি কোরো না! ইস্রায়েলে এরকম হওয়া উচিত নয়! এরকম জঘন্য কাজ কোরো না। 13. আমার কী হবে? আমার এ কলঙ্ক আমি কোথায় গিয়ে মেটাব? আর তোমারই বা কী হবে? ইস্রায়েলে তোমার দশা হবে এক দুষ্ট নির্বোধের মতো। দয়া করে রাজামশাইকে বলো; তোমার সঙ্গে আমার বিয়ে দিতে তিনি অসম্মত হবেন না।” 14. কিন্তু সে তার কথা শুনতে রাজি হয়নি, ও যেহেতু সে তামরের তুলনায় বেশি শক্তিশালী ছিল, তাই সে তাকে ধর্ষণ করল। 15. 16. পরে তীব্র বিরাগ নিয়ে সে তাকে ঘৃণা করল। প্রকৃতপক্ষে, সে তাকে যত ভালোবেসেছিল, তার চেয়েও বেশি ঘৃণা করল। অম্নোন তামরকে বলল, “ওঠো ও এখান থেকে বেরিয়ে যাও!” তামর তাকে বলল, “না, না! আমার প্রতি তুমি যা করেছ, আমাকে বের করে দিলে তো তার চেয়েও বেশি অন্যায় করা হয়ে যাবে।” কিন্তু সে তার কথা শুনতে চায়নি। 17. সে তার খাস চাকরকে ডেকে বলল, “এই মহিলাটিকে আমার চোখের সামনে থেকে দূর করে দাও ও দরজায় খিল দিয়ে দাও।” 18. তখন তার চাকরটি তামরকে বের করে দিয়ে দরজায় খিল লাগিয়ে দিয়েছিল। তামরের পরনে ছিল অলংকারসমৃদ্ধ এক পোশাক, কারণ কুমারী রাজার মেয়েরা এ ধরনের পোশাকই পরে থাকত। 19. তামর মাথায় ছাইভস্ম মেখে পরনের অলংকারসমৃদ্ধ পোশাকটি ছিঁড়ে ফেলেছিল। মাথায় হাত দিয়ে, জোরে কাঁদতে কাঁদতে সে বাইরে বেরিয়ে গেল। 20. 21. তার দাদা অবশালোম তাকে বলল, “তোমার দাদা অম্নোন কি তোমার সঙ্গে ছিল? হে আমার বোন, আপাতত চুপচাপ থাকো; সে তো তোমারই দাদা। এটি নিয়ে মন খারাপ কোরো না।” সেই থেকে তামর এক নিঃসঙ্গ মহিলার মতো তার দাদা অবশালোমের বাসাতেই থাকতে শুরু করল। রাজা দাউদ এসব কথা শুনে রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে গেলেন। 22. অবশালোমও অম্নোনকে ভালোমন্দ—একটিও কথা বলেনি; সে অম্নোনকে ঘৃণা করতে শুরু করেছিল, যেহেতু সে তার নিজের বোন তামরকে কলঙ্কিত করল। 23. {#1অবশালোম অম্নোনকে হত্যা করল } দুই বছর পর, ইফ্রয়িমের সীমানার কাছে বায়াল-হাৎসোরে যখন অবশালোমের মেষগুলির গা থেকে লোম ছাঁটা হচ্ছিল, সে রাজার সব ছেলেকে সেখানে আসার নিমন্ত্রণ জানিয়েছিল। 24. অবশালোম রাজামশাই-এর কাছে গিয়ে বলল, “আপনার দাসের কাছে মেষের লোম ছাঁটার লোকেরা এসে গিয়েছে। রাজামশাই ও তাঁর কর্মচারীরা কি দয়া করে আমার সাথে যোগ দেবেন?” 25. 26. “বাছা, না,” রাজামশাই উত্তর দিলেন। “আমাদের সকলের যাওয়া উচিত হবে না; আমরা শুধু তোমার বোঝাই হব।” যদিও অবশালোম তাঁকে পীড়াপীড়ি করল, তাও তিনি যেতে রাজি হননি, তবে তিনি তাকে আশীর্বাদ করলেন। তখন অবশালোম বলল, “আপনি যদি না যান, তবে অন্তত আমার ভাই অম্নোনকে আমাদের সঙ্গে যেতে দিন।” রাজামশাই তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “সে কেন তোমাদের সঙ্গে যাবে?” 27. কিন্তু যেহেতু অবশালোম তাঁকে পীড়াপীড়ি করল, তিনি অম্নোন ও অন্যান্য রাজার ছেলেদের তার সঙ্গে পাঠালেন। 28. অবশালোম তার লোকজনকে আদেশ দিয়েছিল, “শুনে রাখো! অম্নোন যখন দ্রাক্ষারস পান করে বেশ খোশমেজাজে থাকবে ও আমি যখন তোমাদের বলব ‘অম্নোনকে মারো,’ তখন তাকে হত্যা কোরো। ভয় পেয়ো না। আমিই কি তোমাদের এই আদেশ দিইনি? শক্ত হও ও সাহস করো।” 29. তখন অবশালোমের লোকজন অম্নোনের প্রতি অবশালোমের আদেশমতোই কাজ করল। পরে রাজপুত্রেরা সবাই যে যার খচ্চরের পিঠে চেপে পালিয়েছিল। 30. তারা তখনও পথেই ছিল, আর এই খবরটি দাউদের কাছে পৌঁছে গেল: “অবশালোম রাজার সব ছেলেকে মেরে ফেলেছে; তাদের মধ্যে একজনও বেঁচে নেই।” 31. রাজামশাই উঠে দাঁড়িয়েছিলেন, কাপড়চোপড় ছিঁড়ে ফেলেছিলেন ও মেঝেতে শুয়ে পড়েছিলেন; আর তাঁর সব কর্মচারীও নিজেদের কাপড়চোপড় ছিঁড়ে তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছিল। 32. কিন্তু দাউদের ভাই শিমিয়ের ছেলে যোনাদব বলল, “আমার প্রভু মনে করবেন না যে তারা রাজার সব ছেলেকে মেরে ফেলেছে; শুধু অম্নোনই মরেছে। যেদিন অম্নোন অবশালোমের বোন তামরকে ধর্ষণ করল, সেদিন থেকেই অবশালোম এরকম করতে বদ্ধপরিকর ছিল। 33. আমার প্রভু মহারাজ এই খবর পেয়ে দুশ্চিন্তা করবেন না যে রাজার সব ছেলে মারা গিয়েছে। শুধু অম্নোনই মারা গিয়েছে।” 34. 35. ইতিমধ্যে, অবশালোম পালিয়েছিল। একজন পাহারাদার চোখ তুলে চেয়ে দেখেছিল তার পশ্চিমদিকের পথে প্রচুর লোকজন পাহাড়ের পাশ থেকে নেমে আসছে। সেই পাহারাদার গিয়ে রাজামশাইকে বলল, “আমি দেখলাম হরোনয়ীমের দিক থেকে পাহাড়ের ঢাল বেয়ে কিছু লোক নেমে আসছে।”[* কিছু কিছু প্রচীন অনুলিপিতে এই কথাগুলি অনুপস্থিত ] 36. যোনাদব রাজামশাইকে বলল, “দেখুন, রাজপুত্রেরা ফিরে আসছে; আপনার দাস যেমনটি বলল, ঠিক তেমনটিই হয়েছে।” 37. তার কথা শেষ হতে না হতেই, রাজপুত্রেরা জোর গলায় কাঁদতে কাঁদতে সেখানে পৌঁছে গেল। রাজা ও তাঁর কর্মচারীরাও জোর গলায় কাঁদতে শুরু করলেন। 38. অবশালোম পালিয়ে গশূরের রাজা অম্মীহূরের ছেলে তলময়ের কাছে গেল। কিন্তু রাজা দাউদ দীর্ঘদিন তাঁর ছেলের জন্য শোকপ্রকাশ করলেন। অবশালোম গশূরে পালিয়ে গিয়ে তিন বছর সেখানে ছিল। 39. রাজা দাউদ অবশালোমের কাছে যাওয়ার জন্য খুব আকাঙ্ক্ষিত হলেন, কারণ অম্নোনের মৃত্যুর বিষয়ে তিনি সান্তনা পেয়েছিলেন।
  • সামুয়েল ২ অধ্যায় 1  
  • সামুয়েল ২ অধ্যায় 2  
  • সামুয়েল ২ অধ্যায় 3  
  • সামুয়েল ২ অধ্যায় 4  
  • সামুয়েল ২ অধ্যায় 5  
  • সামুয়েল ২ অধ্যায় 6  
  • সামুয়েল ২ অধ্যায় 7  
  • সামুয়েল ২ অধ্যায় 8  
  • সামুয়েল ২ অধ্যায় 9  
  • সামুয়েল ২ অধ্যায় 10  
  • সামুয়েল ২ অধ্যায় 11  
  • সামুয়েল ২ অধ্যায় 12  
  • সামুয়েল ২ অধ্যায় 13  
  • সামুয়েল ২ অধ্যায় 14  
  • সামুয়েল ২ অধ্যায় 15  
  • সামুয়েল ২ অধ্যায় 16  
  • সামুয়েল ২ অধ্যায় 17  
  • সামুয়েল ২ অধ্যায় 18  
  • সামুয়েল ২ অধ্যায় 19  
  • সামুয়েল ২ অধ্যায় 20  
  • সামুয়েল ২ অধ্যায় 21  
  • সামুয়েল ২ অধ্যায় 22  
  • সামুয়েল ২ অধ্যায় 23  
  • সামুয়েল ২ অধ্যায় 24  
×

Alert

×

Bengali Letters Keypad References