সামসঙ্গীত অধ্যায় 35
1. সদাপ্রভু, যাহারা আমার সঙ্গে বিবাদ করে, তাহাদের সহিত বিবাদ কর, যাহারা আমার সঙ্গে যুদ্ধ করে, তাহাদের সহিত যুদ্ধ কর।
2. তুমি ঢাল ও ফলক ধারণ কর, আমার সাহায্যের জন্য দণ্ডায়মান হও।
3. বড়শা ধর, আমার তাড়নাকারীদের সম্মুখে পথ রুদ্ধ কর; আমার প্রাণকে বল, আমিই তোমার পরিত্রাণ।
4. যাহারা আমার প্রাণের অন্বেষণ করে, তাহারা লজ্জিত ও অপমানিত হউক; যাহারা আমার অনিষ্টের সঙ্কল্প করে, তাহারা ফিরিয়া যাউক, হতাশ হউক।
5. তাহারা বায়ুচালিত তুষের ন্যায় হউক, সদাপ্রভুর দূত তাহাদিগকে তাড়া করুন।
6. তাহাদের পথ অন্ধকার ও পিচ্ছিল হউক; সদাপ্রভুর দূত তাহাদের পশ্চাতে ধাবমান হউন।
7. কেননা তাহারা অকারণে আমার জন্য গর্ত্তমধ্যে গুপ্ত জাল পাতিয়াছে, অকারণে আমার প্রাণের জন্য খাত খুঁড়িয়াছে।
8. অজ্ঞাতসারে তাহার সর্ব্বনাশ উপস্থিত হউক; সে গোপনে পাতা আপনার জালে আপনি ধৃত হউক, সেই সর্ব্বনাশে সে পতিত হউক।
9. আর আমার প্রাণ সদাপ্রভুতে উল্লাসিত হইবে, তাঁহার পরিত্রাণে আনন্দ করিবে।
10. আমার সকল অস্থি বলিবে, সদাপ্রভু, তোমার তুল্য কে? তুমিই দুঃখীকে তদপেক্ষা বলবান ব্যক্তি হইতে, দুঃখী দরিদ্রকে তাহার লুণ্ঠনকারী হইতে, উদ্ধার করিয়া থাক।
11. দুর্বৃত্ত সাক্ষিগণ উঠিতেছে, আমি যাহা জানি না, তাহা আমার কাছে চাহে।
12. তাহারা উপকারের পরিবর্ত্তে আমার অপকার করে, তাহাতে আমার প্রাণ অনাথ হয়।
13. কিন্তু তাহাদের পীড়ার সময়ে আমি চট পরিতাম, আমি উপবাস দ্বারা আপন প্রাণকে দুঃখ দিতাম, আমার প্রার্থনা আমার বক্ষে ফিরিয়া আসিবে।
14. আমি তাহাদিগকে নিজ বন্ধু বা নিজ ভ্রাতা বলিয়া মনে করিতাম, আমি মাতৃশোকাতুরের ন্যায় শোকার্ত্ত হইয়া অধোমুখে থাকিতাম।
15. তথাপি তাহারা আমার পদস্খলনে আনন্দিত হইল, ও সকলে একত্র হইল; অধম লোকেরা আমার অজ্ঞাতসারে আমার বিরুদ্ধে একত্র হইল, তাহারা আমাকে বিদীর্ণ করিল, ক্ষান্ত হইল না।
16. পামর উপহাসকারী পিণ্ডীশূরদের ন্যায় তাহারা আমার প্রতি দন্তঘর্ষণ করিল।
17. হে প্রভু, তুমি কত কাল দেখিবে? রক্ষা কর আমার প্রাণ তাহাদের ধ্বংস হইতে, আমার একমাত্র [আত্মা] সিংহগণ হইতে।
18. আমি মহাসমাজের মধ্যে তোমার স্তব করিব, বলবান জাতির মধ্যে তোমার প্রশংসা করিব।
19. আমার শত্রুগণকে আমার বিষয়ে অন্যায় আনন্দ করিতে দিও না, যাহারা অকারণে আমাকে দ্বেষ করে, তাহাদিগকে ভ্রূকুটি করিতে দিও না।
20. কেননা তাহারা শান্তির কথা কহে না, কিন্তু দেশস্থ শান্ত মনুষ্যগণের বিরুদ্ধে ছলের কথা কল্পনা করে।
21. তাহারা আমার বিরুদ্ধে মুখ ব্যাদান করিত; বলিত, ‘অহো! অহো! আমাদের চক্ষু দেখিয়াছে।’
22. সদাপ্রভু, তুমি দেখিয়াছ, নীরব থাকিও না; প্রভু, আমা হইতে দূরবর্ত্তী হইও না।
23. জাগিয়া উঠ, জাগ্রৎ হও, আমার বিচারার্থে, আমার ঈশ্বর, আমার প্রভু, আমার হেতুবাদ জন্য।
24. সদাপ্রভু, আমার ঈশ্বর, তোমার ধর্ম্মশীলতা অনুসারে আমার বিচার কর, উহারা আমার উপরে আনন্দ না করুক।
25. তাহারা মনে মনে না বলুক, ‘অহো! ইহাই আমাদের অভিলাষ;’ তাহারা না বলুক, ‘তাহাকে গ্রাস করিলাম’।
26. যাহারা আমার বিপদে আনন্দিত হয়, তাহারা একসঙ্গে লজ্জিত ও হতাশ হউক; যাহারা আমার বিরুদ্ধে শ্লাঘা করে, তাহারা লজ্জায় ও অপমানে আচ্ছন্ন হউক।
27. যাহারা আমার ধার্ম্মিকতায় প্রীত, তাহারা আনন্দধ্বনি করুক, আহ্লাদিত হউক, নিত্য নিত্য বলুক, সদাপ্রভু মহিমান্বিত হউন, যিনি নিজ দাসের কুশলে প্রীত।
28. আর আমার জিহ্বা তোমার ধর্ম্মশীলতার, ও সমস্ত দিন তোমার প্রশংসার কথা কহিবে।